বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
রক্তিম খেলা ঘর
লেখা - সাদ আহমেদ
তারপরের দিন!!
প্রায় সব পেপারেই এই ঘটনাটা হাইলাইট করে উপস্থাপন করা হয়েছিলো!
ছয় খুনির ছবিও দেওয়া হয়েছিলো.. কিন্তু খুনিদের মুখের ছবি ব্লার করে দেওয়া হয়েছিলো...
বসে বসে পেপারে সেই সংবাদই পড়ছিলো সিধু.. আর শোনাচ্ছিলো বাকি সাবাইকে, যে পেপারের ঘটনা, কি ঘটেছিলো সেই দ্বীপে..
খুব আনন্দময় সময় কাটাচ্ছিলো সিধু আর রকিরা.. সবাই খোশ মেজাজে ছিলো..
ঘর থেকে কাচ্চিবিরিয়ানি কাবাব ইত্যাদির সুঘ্রাণ আসছিলো.. কারর জন্য অপেক্ষা করছিলো সিধুরা..
অবশেষে একটা গাড়ির আওয়াজ পাওয়া গেল বাইরে..
সদর দরজায় অভ্যার্থনা জানাতে চলে গেলো সিধুর দলবলসমেত...
পুলিশজীপ থেকে বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স এর সিনিয়র কমান্ডার আল জাবীর, কমান্ডার মুনতাসির,আফজাল সাহেব সহ আরো দুইজন নামলেন
সবাই তাদের সাদর সম্ভার্ধনা জানালো.. এসে রুমে বসলো সবাই..
হালকা খাবারের একটা পর্ব শুরু হয়ে গেলো..
তো ঘটনা ডিটেলস বলো..খেতে খেতেইই বললেন কমান্ডার আল জাবীর..
বলা শুরু করলো সিধু ওরফে মেজর কমান্ডার সাদিকুজ্জামান..
আসলে ঘটনার শুরু অনেক আগে থেকেই.. বাশবাড়িয়া গ্রামটা একটা নিবিড় গ্রাম ছিলো.. শান্তিময় একটা পরিবেশ.. কোন অরাজকতা নেই.. ছিমছাম একটা গ্রাম
কিন্তু গ্রামের এই শান্ত পরিবেশের শিকে ছিরলো কিছু লোভি আর নিষ্ঠুর মানুষ দের জন্য..
গ্রাম ক্ষমতার কাছে বন্দি হয়ে গিয়েছিলো.
এবং কিছু নামধারী ক্ষমতাশালীরর যেমন রিয়াজুল হোসেন,রফিক হোসেন,রাশিদা বেগম,জাকির সহ কিছু লোক..
রাশিদা বেগম গ্রামের সহজ সরলা গরিব মেয়েদের ফুসলিয়ে বিদেশে বিক্রি করে দিত.. সেই সব হতভাগা মেয়েদের কপালে জুটতো কোন নাইট ক্লাবের বা ক্যাসিনর কর্ল গার্ল এর পোশাক..
আর এই কাজে তাকে সহযোগিতা জাকির.. সে পুলিশের একজন তালিকাবদ্ধ ধর্ষক ছিলো.. এবং ঠান্ডামাথার খুনি!
গ্রামের গরিব পরিবারের মেয়ে ছিলো তার প্রথম টার্গেট..
ফুসলিয়ে ফাসলিয়ে... অতঃপর নাটক সাজিয়ে বিদেশে বেচে দিত.. কাড়িকাড়ি টাকার পাহাড় জমিয়েছিলো তারা ...
গ্রামের সাধারন মানুষ তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছিলো ...
আর সব কিছুতে সহযোগিতা করতো রফিক হোসেন আর রিয়াজুল সাহেব.. তারা নামকরা নেতা এই গ্রামের! তাই অনেকে জানলেও কিছু বলতে সাহস পেতনা..আর ভালোমানুষির মুখোশ পরে গ্রামের মধ্যে বুক ফুলিয়ে চলত তারা ...
যাই হোক আজ থেকে ৮ মাষ আগে গ্রামের এক সহজ সরলা মেয়ে নাম তার রহিমা. যার অনেক স্বপ্ন ছিলো.. সে বিমান চালানোর স্বপ্ন দেখেছিলো..
আর তাকে এই স্বপ্নে উৎসাহ দিচ্ছিলো কমান্ডার আসিফ.. তারা একে অপরের কাজিন ছিলো.. পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ের ব্যাপারে কথা হয়ে গিয়েছিলো.. আর আসিফ অই পরিবার টিকে আগলে রাখার প্রচেষ্টা করছিলো..
জানেন এই আসিফ কে?? আসিফ ছিলো আমার কমান্ডিং ইউনিটের ব্যাচ মেট..খুব কাছের বন্ধু ... আপন ভাই এর থেকেও বেশি কিছু ...
সিধুর চোখের কোনে জল চিকচিক করছিলো...
আসিফের অনেক স্বপ্ন ছিলো রহিমাকে নিয়ে.. আমাকে প্রায়ই বলত সে..
কিন্তু ট্রেনিং আর কমান্ডিং এর চাপে সময় দিতে পারেনি আসিফ.. আর অল্প কদিন পরেই সে ছুটি পাচ্ছিলো..
কিন্তু হঠ্যাৎ করে এক নিমিষে সব কেমন লন্ডভন্ড হয়ে গেলো..
গ্রামের অবস্থা আগে থেকেই জানতাম আমরা.. আমরা একটা মিশন নিতে চেয়েছিলাম গ্রামের ব্যাপারে কিন্তু তার আগেই অই হায়েনাদের চোখ পরে রহিমার উপর..
রহিমাকে নিষ্ঠুর ভাবে ধর্ষণ এবং খুন হতে হয়. এই সব জানোয়ার দের হাতে..
এই সংবাদ শুনে আসিফ বাচ্চাদের মত হাঊমাঊ করে কেদেছিলো..এখনো আমার চোখে ভাসে আসিফের সেই আর্তনাদ গুলো ... কোন কমান্ডার তো দূরে থাক কোন পুরুষ মানুষ ও এভাবে কাদেনা ... যেভাবে আসিফ কেঁদেছিল ...
গলা ধরে আসছিলো সিধুর.. চোখ জালা করতে লাগছিলো কান্নায়..
আমাদের না বলেই গ্রামে চলে আসে আসিফ.. রুখে দারায় তাদের বিরুদ্ধে! ... জীবন বলে আসিফের কিছু আর অবশিষ্ট ছিলোনা ... সে মরেই গিয়েছিলো ...জিজ্ঞেস করতেই গিয়েছিলো কেন মরতে হলো রহিমার ? ... কিন্তু আসিফ ওদের কাছে হুমকি হয়ে দারায়.. এরপরে, এক সপ্তাহ পরে গ্রামের একটা ডোবায় আসিফের লাশ পাওয়া যায়..
গ্রাম জুড়ে রটে দেওয়া হয় যে সে আত্বহত্যা করেছে..
চুপ হয়ে গেলো সিধু..
কিন্তু আমরা কেউই বিশ্বাস করিনা যে সে আত্বহত্যা করতে পারে..
স্যার এর পরেই আমাদের মিশন শুরু হয়..নর্দমা আর অপরাধের শিকড় উপড়ে ফেলার জন্য..
মিশন শুরু হয় প্রতিঘাতের...
স্যার আপনি অনেকটাই জানেন..
তাদের অনেক বার ওয়ার্নিং ও দেওয়া হয়েছে কিন্তু তারা এটা আমাদের দুর্বলতা হিশেবে ধরে নিয়েছে.. এর পরে সিনিয়র অফিসার দের থেকেই আমাদের পাঠানো হয় আগাছা পরিষ্কার করার জন্য..
আর এইযে ফাইল.. এখানে রাশিদা বেগম, জাকির, রিয়াজ, রফিক হোসেনের ক্রাইম, ধর্ষন,লুটপাট, গুমের রিপোর্ট..
আর এছাড়াওও যাদের নাম আছে তাদের লিস্টও আছে এখানে..
আচ্ছা থাক এগুলো.. কালই বাকিদের উপর একশন নেওয়া হবে..
বললেন ক্যাপ্টেন মুনতাসির..
এখন খেতে বসা যাক.. অবশেষে একটা অপরাধের সমাপ্তিতো হলো.. ক্রাইমে একটা কথা তো বলাই হয় - "No such thing as a perfect Crime"
পরিবেশ টা হালকা করলেন ক্যাপ্টেন
চোখ মুছে মনে মনে বললো সিধু - "নিখুঁত অপরাধ বলে কোন কিছু নেই"
ঊঠে গিয়ে জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো সিধু.. ক্যাপ্টেন সাদিকুজ্জামান
আকাশের দিকে তাকালো
আকাশ কত বিশাল!! আকাশে কত রঙ !! আকাশে কত স্বপ্ন !!
ভালো থাকিস আসিফ, ভালো থেকো রহিমা..
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now