বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
অন্ধকার ঘরে শুয়ে আছে রাহাত। আজকে সারাদিন অনেক খাটনি গেছে, প্রচন্ড ক্লান্ত, কখন যে বিছানায় শুয়ে থাকতে থাকতে টের ও পায়নি। এখন ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছা করছে না। রান্না ঘর থেকে মা ডাকলেন, রাহাত, আর কতো ঘুমাবি? আলসেমির একটা সীমা থাকা দরকার! ওঠ এখন। চা খা।"
মোবাইলে সময় দেখলো রাহাত। তার পর অনেক কষ্টে নিজেকে টেনে উঠিয়ে অযু করতে গেলো। মাগরিবের আজান দিয়েছে অনেক্ষন হয়েছে, আর বেশী সময় নেই। নাহ্ এতো দেরি করা ঠিক হয়নি। বালতিতে হাত পা ডুবিয়ে দুই সেকেন্ডে অযু করল।
তারপর তাড়াহুড়ো করে নামাজ শুরু করলো
" আল্লাহ্হু আকবার!"
"আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন''..... দুপুরে কিছু খাইনি ক্ষুধা লেগেছে।
"কুলহুআল্লাহু আহাদ''.......আম্মু কি চায়ের সাথে কিছু নাস্তা বানিয়েছে?
"সুবহানা রাব্বিলয়াল আলা"......সেজদায় শুয়ে থাকতে ইচ্ছা করছে............
হঠাৎ মাটি অসম্ভব জোরে কেঁপে উঠলো। সেজদা থেকে উলটিয়ে পড়ে গেলো রাহাত। ব্যথায় কুঁকড়ে গেলো শরীর। মুখে কিসের যেন গুড়ো পড়েছে। উপরে তাকিয়ে দেখলো, বাড়ীর ছাদ ভেঙ্গে পড়ছে! ছুটে ও ঘর থেকে বেরুলো। বেরিয়ে ও যা দেখলো, তাতে ওর চোখ কপালে উঠে যাওয়ার অবস্থা। ওর বাড়ী ঘর কি করে যেন অদৃশ্য হয়ে গেছে।
সেখানে আছে শুধু এক বিশাল ধব ধবে সাদা মাঠ সেই মাঠে দাঁড়িয়ে আছে পিঁপড়ার মতো পিলপিল করা মানুষ।
যদিও নিজের চোখে দেখতে হবে ভাবেনি, এসব দৃশ্যের বর্ননা ও বইয়ে পড়েছে। তাই ব্যপারটা বুঝতে ওর দেরি হলোনা- সে চোখের সামনে কেয়ামত দেখতে পারছে।
বুকটা ধক করে উঠলো। এখনি কি আমার হিসাব হবে? এতো তারাতাড়ি? কিছুই তো করার সময় পেলাম না। কতো ভুল করেছি, যে গুলোর ক্ষমা চাওয়া হয়নি, কতো সময় নষ্ট করেছি, কতো কিছু করতে পারতাম, করা হয়নি।
নাহ্, তবুও রাহাত প্রতিদিন নামাজ পড়ছে। কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম হিসাব হবে নামাজের। নামাজ ঠিক তো সব ঠিক।
হিসাব শুরু হয়ে গেছে। শীঘ্রই ওর পালা.............
"রাহাত মাহামুদ"
মানুষের ভীড় দুই ভাগ হয়ে ওকে যাওয়ার রাস্তা করে দিলো। ফেরেশতারা ওর খাতার হিসাব করছে। ওর পাল্লায় ভারি হয়ে আসছে! হায় হায়! এতো গুনাহ্ করেছে ও বুঝতেই পারেনি।
শেষে ওকে স্বীকৃতি দেওয়া হলো যাহান্নামের বাসিন্দ বলে!
দুই ফেরেশতা ওর কপালের চুল ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সবাই তাকিয়ে আছে ওর দিকে। এক অবিশ্বাস্য ভংয়কর আগুনের দিকে ওকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এই আমার পরিনতি! এ কি করে সম্ভব, আমি তো নামাজ পড়েছি! আমার নামাজ আমাকে বাঁচাচ্ছেনা কেন? আমি যে এতো নামাজ পড়েছি সব বৃথা? আমার নামাজ.......... আমার নামাজ!
ফেরেশতা দুজন তুলে তাকে আগুনে নিক্ষেপ করলো। ওর বুক ফেটে বের হলো অমানবীক আর্তনাদ- "না"!
জাহান্নামের আগুনে পুড়তে লাগলো রাহাত। হঠাৎ কে যেন ওর হাত ধরে ফেলল টান দিয়ে উপরে উঠালো তাকে।
অস্তত্বে কেঁদে ফেলল রাহাত। ' এই জঘন্য পরিণতি থেকে আমাকে বাঁচালে কে তুমি??
" আমি তোমার নামাজ"।
" ওহ্"! হঠাৎ রাগ হলো রাহাতের।
" এতো দেরি হলো কেন তোমার? আমি তো প্রায় জাহান্নামে পড়েই গেছিলাম।
তুমি দেরি করতে না নামাজে পড়তে? শেষ সময় পার হবার বিন্দু মাত্র আগে? তাই আমার ও দেরি হয়েছে তোমাকে বাঁচাতে, জাহান্নামে পড়ার বিন্দু মাত্র আগে!
চোখ খুললো রাহাত চোখে সবুজ দেখছে। বুঝতে একটু সময় লাগলো যে এটা ওর জায়নামাজের অংশ সেজদা থেকে মাথা উঠালো সে।
আমি বেঁচে আছি!
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার!
এশার আযান দিচ্ছে। ক্ষুধা টুধা ভুলে মসজিদের দিকে দৌড় দিলো রাহাত। এর পর আর কোনদিন নামাজে দাড়াতে দেরি করার চিন্তাও করবে না ও, সে এই প্রতিঙ্গা করলো মনে মনে।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...