বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

"মায়া"

"জীবনের গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Oliver Queen(ShuvO) (০ পয়েন্ট)

X একবার কলিংবেলে চাপ দিতেই খট করে দরজাটি খুলে গেলো। সামনে তাকিয়ে দেখি নিলা। সচারচর ওদের বাড়ির কাজের মেয়ে ফাতেমাই দরজা খোলে। আমি ওর পাশ কাটিয়ে ড্রয়িংরুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম তখনই পেছন থেকে নিলা বললো, 'স্যার দেখেন তো আমাকে কেমন লাগছে?' 'ভালো।' 'আপনি তো আমার দিকে তাকালেনই না। একটা বার ভালো করে তাকিয়ে বলুন না কেমন লাগছে।' আমি বিরক্ত মাখা মুখ নিয়ে নিলার দিকে তাকিয়ে দেখি ও নিল শাড়ি, নিল চুড়ি পড়ে সেজেগুজে দাড়িয়ে আছে। আমার থেকে কিছু শোনার জন্য খুব আগ্রহ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। 'বেশ ভালো লাগছে। তা কোথাও কি যাবে? আমাকে আসতে বললে যে?' 'না না স্যার কোথাও যাবো না। এমনি সাজলাম।' 'ওহ্ বেশ ভালো। তা আন্টিকে দেখছি না যে?' 'বাসায় তো কেউ নাই সবাই বেড়াতে গেছে।' 'আগে বলতে তাহলে আসতাম না।' 'স্যার আমি তো সে জন্যই আপনাকে এখন আসতে বলেছি।' 'মানে!' 'না মানে স্যার [হুট করে এসে আমার হাত টা ধরে বললো] আমি আপনাকে খুব ভালোবাসি। অনেক দিন ধরেই বলতে চাইতেছি তবে সুযোগ পাই নি ।' আমি হাত টা ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম, 'দেখো নিলা, আমি তোমার শিক্ষক। তোমাকে প্রায় দু'বছর ধরে পড়াই। আমি তোমাকে আমার ছোট বোনের মত দেখি। তাই এসব কথা রেখে এখন পড়তে বসো।' 'কিন্তু স্যার আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি।' 'নিলা তুমি কি চাও আমি আর কখনো এ বাড়িতে না আসি?' 'না স্যার চাই না।' 'তাহলে পড়তে বসো।' 'কিন্তু স্যার!' ' নিলা তুমি সবে মাত্র ইন্টার এ পড়ো। তোমার এখনো জীবন নিয়ে কোন ধারনাই নেই। তুমি কল্পনার জগত টাকে প্রাধান্য দিচ্ছো। বড় হও বুঝতে পারবা। আর তুমি দেখতে অনেক অনেক সুন্দর। তুমি বড় হও খুব ভালো বর পাবে।' 'আমি এত কিছু শুনতে চাই না। আপনি শুধু বলুন আমাকে ভালোবাসবেন কি না?' 'না।' 'খুব দেমাগ না আপনার? কিসের বড়াই এত আপনার হ্যাঁ? আমি মেয়ে হয়ে ভালোবাসি বললাম বলে ভাব ধরছেন হ্যাঁ? আপনি জানেন কলেজের কত্ত ছেলে আমার জন্য পাগল। কত বড়লোকের ছেলেরা আমাকে পেতে ব্যকুল। আর সেখানে আমি আপনার মত থার্ড ক্লাস ব্যাকডেটেড ছেলেকে ভালোবাসি বলেছি বলে দেমাগ করছেন?' 'যদি এটাই ভাবো তো তাই।' 'ওকে ঠিক আছে। লাগবে না আপনাকে। আপনি আর আমাকে পড়াতেও আসবেন না।' 'আচ্ছা ঠিক আছে।' বলেই নিলাদের বাসা থেকে বেড়িয়ে এলাম। বড্ড খারাপই লাগছে। না নিলার জন্য না। এই টিউশনি টার জন্য। মাসে সাত হাজার টাকা করে পেতাম। ভালোই চলছিলো। তবে কিছুদিন ধরেই নিলার এমন পাগলামি ধরে ফেলতেছিলাম। আজ তা শেষ হলো। ব্যবসায়ী বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে নিলা। দেখতে যথেষ্ট রূপবতীও। আবেগ প্রবণ তাই বাস্তব কি হয়তো জানেই না। নাহ, টিউশনি গেছে না যায়। বড়লোকের মেয়ে ক'দিন পর এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। এসব ভাবতে ভাবতেই বাসায় চলে আসলাম। ঘটনার চারদিন পর বিকেলে একটা চাকরির ইন্টারভিউ দিয়ে বাসায় ফিরতেছি ঠিক তখনই পথে ফারিয়ার সাথে দেখা। [ফারিয়া আমার ক্লাস মেট] আমি সামনাসামনি না পড়ার জন্য তাড়াতাড়ি অন্য পথে যেতে গিয়েও ধরা খেয়ে গেলাম। আমাকে দেখেই তাড়াতাড়ি কাছে এসে বললো, ' কেমন আছো শুভ?' 'ভালো, তুমি?' 'এইতো মোটামুটি। তা কোথায় গেছিলে?' 'একটা ইন্টারভিউ ছিলো সেখান থেকেই ফিরছিলাম। তা তুমি কোথায় যাও?' 'এইতো এইদিকেই এসেছিলাম। তা তোমার সাথে যখন দেখা হয়েই গেলো তাহলে আর ছাড়ছি না।' 'মানে?' 'চলো ঐ পার্কটাতে গিয়ে বসি।' 'দেখো ফারিয়া তুমি জানো আমি কেমন। তাই এসব কথা বাদ দিয়ে কি বলতে চাও সেটা এখানেই বলো।আমার তাড়া আছে।' 'শুভ, তুমি কি আমাকে বুঝো না? না কি বুঝতে চাও না?' 'কি বুঝবো?' 'শুভ আমি তোমাকে ভালোবাসি। আর-আর এ'কথা তুমি অনেক আগে থেকেই জানো।তোমাকে এত বার বলি তাও এর উত্তর কেন দিচ্ছো না? আমাকে কি তোমার পছন্দ না?' 'ফারিয়া তুমি ভুল ভাবছো। তুমি দেখতে অনেক সুন্দর।' 'তাহলে আমাকে ভালেবাসতে বাঁধা কোথায়?' 'জানি না।' 'একটা সত্যি কথা বলবা?' 'যদি আমার সত্য টা জানা থাকে তো বলবো।' 'তুমি আমাকে ভালোবাাতে চাও না এই তো?' 'হ্যাঁ, ঠিক ধরেছো।' ' স্বার্থপর, তুমি কোনদিনও সুখি হবে না বলে দিলাম।' বলেই রাগে হনহন করতে করতে চলে গেল ফারিয়া। আমিও বাসার দিকে হাঁটা দিলাম। সেই ভার্সিটি লাইফ থেকেই ফারিয়ার জ্বালা সহ্য করছি। হা হা, ও ভালোবাসে আমাকে! নাকি সবাই কে? ওর চরিত্র সম্পর্কে আমি অবগত। তাই ভালোবাসার প্রশ্নই আসে না। নিলাকে আর পড়াতে যাই নি। এক মাসের বেতন পেতাম সেটা পেলে অবশ্য ভালোই হতো তবে কি আর করা। শুনলাম এ কয় দিনেই আরেকটা টিউটর পেয়ে গেছে। দরজায় ঠকঠক আওয়াজ শুনে ঘুম ভেঙে গেল। চোখ মুছতে মুছতে দরজা খুলে দেখি মায়া দাড়িয়ে। হাতে একটা টিফিন ক্যারিয়ার বাটি। কোন কথা না বলে বাটি টা আমার হাতে দিলো। অবাক না হয়ে বললাম, 'কি!' 'আপনার জন্য আব্বা খাবার পাঠাইতে বললো তাই দিতে আসলাম।' 'ও, আচ্ছা।' তাকিয়ে দেখি মায়া আমার দিকে চেয়ে আছে। তাই বললাম, 'কিছু বলবে?' 'না'। বলেই চলে গেল মেয়েটা। আমি হাতমুখ ধুয়ে এসে বাটি টা খুলতেই জিভে জল চলে এলো। চিংড়ি মাছ, পোলাও আর করলা ভাজি। সব গুলোই আমার প্রচণ্ড প্রিয় তাই গপগপ করে সবটুকু একদম চেটেপুটে খেয়ে নিলাম। রান্নাটা এক কথায় অসাধারন। মা বেঁচে থাকতে এমন ভালো ভালো রান্না খেতাম। খাওয়ার পর পেট টানটান করে শুয়ে আছি তখনই আবার দরজায় ঠকঠক আওয়াজ। বিছানা থেকে উঠে দরজা খুলে দেখি মায়া দাড়িয়ে। 'খাওয়া হয়েছে?' 'হ্যাঁ।' 'বাটি টা দিন।' আমি বাটি টা এনে মায়ার হাতে দিলাম। ও চলে না গিয়ে সেখানেই দাড়িয়ে রইলো দেখে বললাম, 'কিছু কি বলবে?' 'রান্না কেমন হয়েছিলো?' কথাটি বলেই উত্তরের অপেক্ষায় চাতক পাখির মত আমার দিকে চেয়ে রইলো মায়া। জানি, মেয়েটা উত্তর না নিয়ে চোখ সরাবে না, যাবেও না। আর এসব রান্না ওর বাবা পাঠাতে বলে নি। মিথ্যে অজুহাতে শুধু মাত্র আমাকে একপলক দেখতে আসা আর খাওয়ানোই ওর কাজ। ওকে বরাবরের মতোই নিরাশ করে বললাম, 'হলুদ বেশি হয়েছিলো। সাথে লবণ ও। তা ছাড়া ভালোই হয়েছে।' বরাবরের মতোই উত্তর শুনে মুখটা মলিন করে চলে গেল মায়া। জানি সে ঘরে গিয়ে বালিশে মুখ গুজে কাঁদবে। আমি এও জানি যে মায়া নামের মেয়েটা আমাকে ভালোবাসে। শুধু ভালোবাসে বললে কম হবে বলতে গেলে প্রচণ্ড রকমের ভালোবাসে। মায়া কে দেখলে যে কারোই ভালোবাসা জাগবে। নামের সাথে চেহারায় মিল খুব বেশি। শ্যামলা মেয়েটার যেন নিজস্ব আলো আছে, চাঁদের মত কৃত্রিম না। মুখটাও অদ্ভুত উজ্জল আভা ছড়ায়। মা যখন বেঁচে ছিলেন তখন থেকেই আমাদের বাসায় আসা যাওয়া ছিলো ওর। এখন একা থাকি তাই বারবার আসতে পারে না তবে হঠাৎই এভাবে রান্না করে নিয়ে আসে। পরেরদিন টিউশনি করে ফিরছিলাম ঠিক তখন পকেটের ভাঙা ফোন টা বেজে উঠলো। বের করে দেখি সেভ করা নাই নাম্বারটা । ধরে সালাম দিলাম। কে জানতে চাইলে বললো সে ফারিয়া। বুঝলাম কোন ফারিয়া। বললো সামনের একটা ক্যাফেতে যেতে। কি ভেবে যেন সেখানে চলে গেলাম। ভিতরে ঢুকে দেখি শেষের দিকের একটা কোণায় ফারিয়া বসে আছে। সাথে একটা ছেলেও। আমাকে দেখেই বসতে বললো। আমিও মুচকি হেয়ে বসে পড়লাম। 'ওর নাম ইমরান। আর ইমরান এই হলো সেই শুভ।' বললো ফারিয়া।আমি ইমরান নামের ছেলেটার সাথে পরিচিত হলাম। খাবারের অর্ডার হলো। খেতে খেতে ফারিয়া বললো, 'শুভ, এটা আমার বয়ফ্রেন্ড। অনেকদিন ধরেই ভালোবাসতো। তবে আমি তো তোকে ভালোবাসতাম তাই কিছু বলি নি। তবে সেদিন তোর না বলাতে দেখলাম এক তরফা ভালোবেসে কি লাভ? তাই ওকে একসেপ্ট করে নিলাম।' আমি জানি ফারিয়া আমাকে পরোক্ষ ভাবে ইনসাল্ট করতে চাইছে। তবে আমি এসবে ভাবি না। আরও অনেক কথা শুনে সন্ধ্যার আগে বাসায় ফিরলাম। শরীরটা কেমন যেন লাগছিলো তাই ছাদে উঠলাম। সচারচর ছাদে ওঠা হয় না। উঠেই দেখি ছাদের একপাশের ফুল গাছগুলো ফুলে ভর্তি। হরেক রকমের ফুল। এগুলো সব মায়ার হাতের তো তাই এত সুন্দর। ভেবে সামনে এগুতেই দেখি মায়া রেলিং ধর দাঁড়িয়ে আছে । আকাশপানে অপলক চেয়ে হয়তো ভালোবাসা ছুঁতে চাইছে। ওকে দেখে চুপচাপ নেমে এলাম। শুনলাম নিলা নাকি ওর নতুন টিউটরের সাথে পালিয়েছে। শুনে একটু হাসি পেলেও খারাপই লাগলো। বড়লোক বাবার মেয়েটা বড় বোকামি করলো। আর আজকালকার টিউটর গুলোও সুযোগসন্ধানী। সব মিলিয়ে ভালোই জমেছে। এসব কথাই ভাবছিলাম তখনই নিলার ফোন। নাম্বার টা সেভই করা ছিলো। ফোন ধরতেই বললো, 'কি খবর স্যার কেমন আছেন?' 'ভালো, তুমি?' 'খুব ভালো।' 'ওহ, কিছু বলবা?' 'অনেক ভালোবেসেছিলাম আপনাকে। বুঝলেন না। আসলে সবাই তো আর সোনা চিনে না। আমি বিয়ে করেছি ভালোবেসে এটা বলতেই ফোন দিলাম। ভালো থাকবেন।' ফোন টা কেটে গেলো। শুধু মুচকি হাসলাম আমি। কেটে গেলো কয়েকটা দিন। মাত্র টিউশনি থেকে ফিরলাম তখনই দরজায় আবার টক ঠক আওয়াজ। দরজা খুলে দেখি মায়া দাড়িয়ে। হাতে সেই টিফিন ক্যারিয়ার বাটি। আজ কিছু বলার আগেই ঘরে ঢুকে এলো। তারপর চুপচাপ বাটি টা খুলে মেঝেতে সাজালো। গরুর মাংস, পোলাও, সবজি আরও অনেক কিছু। ওর এভাবে ঘরে আসাতে আজ খানিক টা অবাকই হলাম। 'খেয়ে নিন।' বললো মায়া। কেমন যেন অগোছালো লাগছে মায়া কে। কখনো তো এভাবে কথা বলে না। চুপচাপ খেতে বসলাম। মায়ার হাতের রান্না বরাবরের মতোই অনেক ভালো তবে আজ কেন জানি গলা দিয়ে নামছে না। কোন রকমে খেয়ে হাতটা ধুয়ে খাটে বসতেই মায়া বললো, 'আজ অন্তত রান্না কেমন হয়েছে সত্যি করে বলুন।' কথাটা শুনে মায়ার দিকে তাকাতেই দেখি চোখটা ঘোলাটে হয়ে গেছে ওর। সব কিছুই কেমন যেন মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে । 'কি হলো বলবেন না?' আজ কেন জানি আর মিথ্যা বলতে মন চাইছিলো না তাই বললাম, 'তোমার রান্না বরাবরের মতোই খুব ভালো। ঠিক আমার মায়ের হাতের রান্নার মতো।' কথাটা বলে মায়ার দিকে তাকাতেই দেখি গাল বেয়ে টুপ করে জল গড়িয়ে পড়লো। 'শুভ!' 'হ্যা বলো।' 'তুমি কি কিছুই বুঝো না?' এই প্রথম তুমি করে বললো মায়া। 'কি বুঝবো?' 'তুমি কি সত্যি কিছুই বুঝো না?' আমি জানি মায়া কি বোঝার কথা বলছে। আর আমি এটা খুব ভালো করেই বুঝি। তবে আমি স্বার্থপর, নির্মম, মায়া হীন। যার জীবনে কিছুই নেই তার ভালোবাসা মানায় না। তাই বললাম, ' না তো। কী বুঝবো?' কথাটা শুনে খুবই আঘাত পায় মায়া। চোখ টা মুছে হতাশা ভরা আহত দৃষ্টিতে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো, 'আজ আমাকে দেখতে এসেছিলো। তাদের আমাকে পছন্দ হয়েছে। বিয়ের পাকা কথাও হয়ে গেছে। সামনের শুক্রবার আমার বিয়ে।' আমার মনে হলো মায়া যেন খুব কষ্ট করে কথাগুলো বলছে। 'আর হয়তো কোনদিন তোমাকে খাওয়াতে পারবো না তাই শেষ বারের মত খাওয়ালাম। শুভ তোমাকে একটা কথা বলি?' 'বলো।' 'নাহ থাক। ভালো থেকো কেমন। অনেক অগোছালো তুমি। একটু নিজেকে পরিপাটি রেখো। আর শরীরের যত্ন নিও কেমন?' আমি শুধু "হ্যাঁ" সূচক মাথা নাড়ালাম। মায়ার চোখ দিয়ে অঝর ধারায় জল পড়ছেই। 'বিয়ের দাওয়াত রইলো। ভালো থেকো।' বলেই বাটিটা নিয়ে চোখ মুছতে মুছতে দৌড়ে চলে গেলো মায়া। আমার চোখের কোণটা কখন যে ঝাপসা হয়ে এসেছে বুঝতেই পারি নি। তাড়াতাড়ি মুছে নিলাম চোখটা। নাহ আমার কোন মায়ায় আটকানো যাবে না। একবার এপাশ আবার ওপাশ করছি তবুও ঘুম আসছেই না আমার। আজ কেন যেন খারাপ লাগছে খুব। বারবার মায়ার সেই ঘোলাটে চাহনি চোখের সামনে ভাসছে। কিন্তু আমিও যে নিরুপায়। যে জীবনতরী নিয়ে যুদ্ধে নেমেছি তার অসংখ্যা ফুটো। পানি সেচতে সেচতেই আমি মৃত প্রায়। সেখানে এমন তরীতে আর কাউকে তুলে ডুবিয়ে মারা টা অন্যায়। দোতলা বাড়িটা ভালোই সাজানো হয়েছে। একমাত্র মেয়ে বলে কথা। বধু বেশে মায়াকে কোন এক মায়াপুরীর রাজকুমারীর মত লাগছে। আমি দূর থেকে শুধু চেয়ে দেখছি। নাহ আর সইতে পারলাম না। সোজা রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। আমার মায়ায় পড়া চলবে না। বেশ কয়েকবছর পর কোনো একদিন অফিস থেকে ফিরে শুয়ে আছি আমি। শরীরটা বেশি ভালোও না। খিদে লাগলেও রান্না করতে মন চাইছে না। দরজায় ঠক ঠক আওয়াজ পেয়ে উঠে বসলাম। এমন সময় কে আবার! উঠে দরজা খুলতেই বুকটা ধক করে উঠলো। মলিন মুখ, উজ্জল মুখটা কালো হয়ে গেছে! শুকিয়ে একদম কংকালসার। এই কি সেই মায়া! 'কেমন আছো শুভ ?' নিজেকে অনেক কষ্টে ঠিক রেখে বললাম, 'ভালো। আর তুমি?' 'এই তো ভালো। তা জব করছো শুনলাম। বিয়েশাদী করবে না?' কথাটা শুনে শুধু মুচকি হাসলাম আমি । কোথা থেকে যেন একটা তিন চার বছরের ছেলে আম্মু আম্মু বলে দৌড়ে এসে মায়ার কোলে উঠে গেল। 'তোমার ছেলে?' 'হ্যাঁ।' 'কি নাম রেখেছো?' 'শুভ'। বুকটা ধক করে উঠলো সাথে কয়েকটা পালস্ মিস করলো আমার। সেই ঘোলাটে দু'টো মায়াবী চোখ দিয়ে মায়া অপলক চেয়ে আছে আমার দিকে। নীচ থেকে মায়া - মায়া বলে ডাকার শব্দে মায়া ঘোলাটে চোখটা মুছে আস্তে আস্তে নীচে চলে গেলো। আজও হয়তো মায়া কিছু বলতে চেয়েছিলো। লেখক:- অলিভার কুইন(শুভ)।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৭৩৯ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • Nahin
    User ৪ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    সেরা

  • MAHIM
    User ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    sobi kopal

  • Oliver Queen(ShuvO)
    Author ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ আপনাকে #Nishat

  • Nishat khan
    Guest ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    Khubi Valo

  • Oliver Queen(ShuvO)
    Author ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে

  • ♣Blue Butterfly ♣
    User ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    অনেক সুন্দর .......

  • Shepon Ahmed Joy
    User ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    Anzaing

  • ♣Black Rose ♣
    Guest ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    Very Nice

  • Oliver Queen(ShuvO)
    Author ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    tnx

  • Dipti
    Guest ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    darun!!!!!!!!

  • Oliver Queen(ShuvO)
    Author ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    tnq

  • Abm.. salman
    User ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    Very... good