বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
- আমাকে তুমি একটা চড় দিতে পারলে আমিও তোমাকে দুইটা চড় দিয়ে বুঝিয়ে দেব যে আমিও পারি ( মিম)
মিমের মুখে এমন একটা কথা শুনে নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি চলে আসলো । কোনোদিন ভাবতেই পারিনি ও এরকম কোনো কথা বলতে পারবে ।
- ......... ( আমি )
- হ্যালো ?
- .........
- কি হলো কথা বলছো না কেন ? কথা বলতে ভালো লাগছে না ?
- টুট টুট টুট
কেটে দিলাম ফোনটা । নিঃশব্দে এখনো পানি ঝরছে চোখ দিয়ে । আটকাতেই পারছিনা ।
.
প্রায় দুই বছর হতে চললো সম্পর্কের । আমাদের এ অবস্থার জন্য মিম সবসময় আমাকেই দায়ী করে । আমি শুধু চুপ করে শুনি যে ও কতদূর বলতে পারে ।
নাহ । যতটুকু ভাবতাম তার চেয়ে অনেকবেশি বলে ফেলে । পরিবর্তন কি এটাকেই বলে ??
.
রিলেশনের শুরুতে যখন আমি একটা কিছু বলতাম , তখন কোনো কথার তোয়াক্কা না করে আমার কথাটা শুনতো ও । আর আজ ?
আগে যখন ধমক দিতাম তখন আমি বুঝতে পারতাম যে ও কাঁদছে । তাই যতটা পারতাম নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করতাম । আমার সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করতাম যাতে ও কখনো কষ্ট না পায় ।
.
একদিন হঠাৎ ফোনে কিছু একটা নিয়ে তর্ক হচ্ছিল । কেউই হার মানতে রাজি না । তাই , কথায় কথায় সেটা থেকে বড় ঝগড়ার সৃষ্টি হলো ।
.
ঝগড়ার পর ফোনটা কেটে দিয়ে সাথে সাথে ফোনটা অফ করে ফেল্লাম । খুব মেজাজ খারাপ হচ্ছে । ছাদে গিয়ে দাড়িয়ে আছি একা একা । গান শুনছি । গান হচ্ছে আমার ২য় অক্সিজেন । এটা ছাড়া আমার চলেই না । রাত তখন ১.৩০ । ফুল সাউন্ডে rock zircon এ গান বাজছে ।
বুঝতে পারছি কষ্ট হচ্ছে । বুকের বাম পাশটা চিন চিন করছে । মেয়েটাকে এভাবে বলা উচিৎ হয়নি । তবে ঔ তো কম যায় না । আমি একটা কথা বল্লেই ওর দুইটা কথা শুনায় দিতে হবে ? আমি আগেই বলেছিলাম যে , আমার যখন রাগ হবে , তখন তুমি একটা কথাও বলবানা । চুপচাপ শুনবা শুধু ।
মেয়েটার একথা মনেই নেই । তাই আমিও বকে দিয়েছি ইচ্ছে মতো । এখন বুঝুক মানুষকে কষ্ট দিলে কেমন লাগে ।
.
রাত ২ টা । কি ভেবে জানি ল্যাপটপটা নিলাম । ভালো লাগছে না কিছুই । রেখে দিলাম ।
পরদিন ঘুম থেকে উঠলাম দুপুর ১ টায় । ফোন তখনো বন্ধ । আর খুলবোনা আমি । থাক এভাবে ।
ফ্রেশ হয়ে খেতে বসলাম । খাওয়া শেষ করে বের হলাম । কাজ আছে একটু । কাজ শেষ করে ফিরতে রাত হয়ে গেল ।
- কোথায় ছিলে এতক্ষণ ? আর ফোন বন্ধ কেন তোমার ? ( আম্মু )
- ফোনে চার্জ শেষ ( শার্ট খুলতে খুলতে )
- ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নাও । খাবার টেবিলে রাখা আছে । আমি ঘুমালাম ।
.
খাওয়ার কথা ভুলেই গেলাম । খুব ক্লান্ত লাগছে । বিশ্রাম নিতে গিয়ে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি নিজেই বুঝতে পারিনি । উঠে দেখি রাত সাড়ে তিনটা । হঠাৎ মিমের কথা মনে হলো ।
ও খেয়েছে তো ? সারাদিন কোনো কথা হয়নি ওর সাথে ।
ফোনটা অন করলাম । ভাবলাম অনেকগুলো অভিমান ভরা মেসেজ আসবে । ওর যখন কষ্ট হয় তখন ও এরকম ই করে ।
কিন্তু একটা মেসেজ ও দেয়নি আমাকে । আমি যতটা না কষ্ট পেয়েছিলাম তার থেকে বেশি অবাক হলাম । একটা মেসেজ ও দেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি ও ?
.
উঠে বসলাম । টেবিলের ড্রয়ার থেকে চাবি নিয়ে ছাদে গেলাম । চারিদিকে অসম্ভব নিঃস্তব্ধতা । ঝি ঝি পোকারা নিজেদের ভাষায় কথা বলছে । চাদের আলোটা ঠিক মাথার উপরে । একটু একটু শীতল বাতাস একাকীত্বটাকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে । আকাশে তারা নেই একটাও । আমার মনের মতো আকাশের মনেও মেঘ জমেছে । সম্পর্কটা তো এমন ছিল না আমাদের । অন্যদের মতো আমরাও একে অপরকে ভালোবাসতাম । খুব বেশিই ভালোবাসতাম । আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি আর ভাবছি প্রথম দিনগুলোর কথা ।
প্রথম যখন কথা হতো তখন আমাদের এরকম ঝগড়া হতো না । একটু রোমান্স , একটু ভালোবাসা , একটু রাগ , একটু অভিমান নিয়ে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছিল আমাদের ভালোবাসা ।
.
আগে আমার সাথে কথা না বলে এক দিন তো দূরে থাক , এক ঘণ্টাও থাকতে পারতো না । তখন ওর সবকিছুই ছিলাম আমি । ও কখন কি করবে , কিভাবে করবে সব আমার কথায় হতো । খুব ভালোবাসতাম আমি মিমকে । আমি না খেলে ও কখনো খেতে চাইতো না । আমি ওর একটা কথা না শুনলে অভিমানে কথা বলা বন্ধ করে দিত । এককথায় ওর সব ছিলাম আমি । আমিই ছিলাম ওর জীবন ।
এসব কথা ভাবতে ভাবতে বুক থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে আসলো । ভালো লাগছে না । শুধু শুধু নিজেকে কষ্ট দেয়া । তাই রুমে চলে এলাম । ঘুম আসছে না । খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছে মিমের সাথে । ও আমাকে সারাদিনে একটা মেসেজ দেয়ারও প্রয়োজন মনে করলো না ? এতটাই দূরের হয়ে গেছি আমি ? শুধু তো রাগে একটু বকে দিয়েছি , তার জন্য এত বড় শাস্তি ? শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে ।
ঘুম থেকে উঠে দেখি সকাল এগারোটা । আজ প্রাইভেট মিস । ৯ টায় ছিল প্রাইভেট ।
এভাবে আজকের দিনটিও কেটে গেল । পরদিন রাতে ফোন অন করলাম । তখন ও মিমের কোনো মেসেজ নেই । কষ্ট পাবো নাকি অবাক হবো , বুঝতে পারছিলাম না । এভাবে ৬ দিন পার হয়ে গেল । কোনো যোগাযোগ নেই মিমের সাথে । একটা কথাও হয়নি । আমি কেমন আছি ওর কি একবারো জানতে ইচ্ছে করে না ? এতদিন এ ও আমাকে একটা ফোন বা মেসেজ কিছুই দেয়নি । দেখছিলাম, কতদিন ও কথা না বলে থাকতে পারে ।
.
৬ দিন পর হঠাৎ ও নিজেই ফোন দিলো । ১৮ তম কল হওয়ার পর রিসিভ করলাম -
- ............ ( মিম) ( কাঁদছে )
- ............ ( আমি )
- রবি আমাকে এত কষ্ট দেয়ার আগে একবারো ভাবলানা ? মরে যাবো আমি । আর নিতে পারছিনা ।
- ............
- কথা বলোনা কেন ? এতদিন একটা ফোন , মেসেজ কিচ্ছু দাওনি । কেন ? আমি এর উত্তর জানতে চাই
- এমনি
- এমনি মানে কি হ্যাঁ ? উত্তর দাও আমার । উত্তর চাই
- আমি তোমাকে উত্তর দিতে বাধ্য না
- কেন না ? আমাকেই দিতে বাধ্য তুমি ( কান্না আরো বেড়ে গেছে )
- কান্না থামাও
- .............
- বলছিনা কান্না থামাতে ? ( একটু জোরেই বল্লাম )
- ............
- কান্না থামিয়ে যাও ফ্রেশ হয়ে আসো । পরে ফোন দিও ।
ফোনটা কেটে দিলাম । এই মূহুর্তে ওর সাথে কথা বলার একটু মাত্র শক্তিও আমার অবশিষ্ট নেই । ওর কান্না আমার একদম সহ্য হয় না । তাই ফোনটা রেখে দিলাম । খুব কষ্ট হচ্ছে । একটু পর ফোন আসলো । কথা বল্লাম । এখন সব ঠিকঠাক ।
.
সময় এগোতে লাগলো । পরিবর্তনটা শুরু তখন থেকেই । আমি কিছু বল্লেই ও রেগে যেত । পাল্টা উত্তর শুনিয়ে দিত । ওর এরকম ব্যবহারে সত্যিই খুব খারাপ লাগতো । তবুও কিছু বলতাম না । আমি সবকিছু এমনভাবে ওকে বোঝাতাম যেন , আমি কিছুই মনে করিনি ।
.
বুঝতে পারছিলাম , আমার আর কোনো কথায় ই কাজ হবেনা । পুরোনো হয়ে গেছিলাম তো !
আপনি যখন একটা নতুন আইফোন কিনবেন , তখন সেটার উপর ভালোবাসা , গুরুত্ব ও যত্ন সবই সমান থাকবে । দিন অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে আইফোনটা একই থাকবে , তার প্রতি ভালোবাসাটাও একি থাকবে , শুধু সেটাকে সময় দেয়াটা একটু কমে যাবে । সে সাথে কমে যাবে গুরুত্বটাও । একটা সময়ে এক প্রকার জীর্ণ শীর্ণ হয়েই পড়ে থাকবে বিছানার কোণে । ভালোবাসাটাও এরকম , ভালোবাসাটা একই থাকবে , শুধু তাকে সময় দেয়াটা কমে যাবে ।
শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম এসব কথা । সবটা ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়েছিলাম ।
এই মূহুর্তেই ফোন আসলো মিমের। রিসিভ করলাম ।
- আমার আইডিটার কি যেন হয়েছে । একটু দেখবা ? ( মিম)
- কি হয়েছে ?
- কাউকে মেসেজ করতে পারছিনা ।
- IP প্রবলেম । ঠিক হয়ে যাবে ।
- ওহ ওকে । কি কর
- কিছুনা
- টুট টুট টুট
একটু পর মেসেজ আসলো , আম্মু আসছে । মেসেজ করো ।
মিথ্যা ভরা মেসেজটার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলাম একা একাই । ফোন দিলাম সাথে সাথেই । সাথে সাথে অচেনা এক যান্ত্রিক নারী কণ্ঠ বলে উঠল -
" your call is now in wai . . . . . "
কেটে দিলাম । আর ইচ্ছা করছে না শুনতে ।
আমি জানি মিম আমাকে খুব ভালোবাসা । তবে কেন ও আমাকে এত কষ্ট দিচ্ছে ? ও কি বুঝতে পারছেনা কিছুই ?
.
১৭ ই মার্চ ওর জন্মদিন । আর এখন আমাদের অবস্থা । এসব ভাবতে ভাবতে বের হয়ে এলাম ।
রাত সাড়ে ১১ টা । বসে আছি একা একা রেললাইনে । হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো । আম্মু ফোন দিয়েছে । কেটে দিলাম । বুঝতে পারলাম দেরি হয়ে গেছে । তাই উঠে হাটা শুরু করলাম । আবার ফোন আসলো । এবার বাজতেই থাকলো । রিসিভ করলাম না ।
বাসায় পৌছে দেখি আব্বু । আব্বুকে একটু বেশিই ভয় পাই । রাতে বাসা থেকে বের হওয়া একদম পছন্দ করেনা আব্বু । কিন্তু সেদিন কিছুই বললো না । আমি ফ্রেশ হতে যাবো , তখনি আম্মু বলে উঠলো - মিম ফোন দিয়েছিলো ।
কথাটা শুনে এক মূহুর্তের জন্য দাড়িয়ে গেলাম । কথাটা আব্বুও শুনলো । আমি কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না । কিছু না বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম ।
.
এসে খেয়ে নিলাম আব্বুর সাথে । সবসময় আব্বুর সাথেই খাই । আমি ভাবছি হঠাৎ মিম কেন ফোন দিতে যাবে । খাওয়া শেষ করে ছাদে গেলাম । শীতকাল হলেও হালকা গরম পড়েছে ।
গান শুনছি । এর মধ্যে মেসেজ আসার শব্দ পেলাম । এত রাতে যে কে মেসেজ দিতে পারে সেটা বোঝার বাকি রইলো না । কথা বলা শেষ করে রুমে চলে এলাম ।
.
এভাবে আর থাকতে পারছি না । ফোন দিলাম মিমকে ।
- একটু দেখা করতে পারবা ? ( আমি )
- এখন ? কিভাবে ? ( মিম)
- আজব । আমি কি এখন দেখা করতে বলেছি ?
- তাহলে ? কবে ?
- কাল বিকেল ৫ টায় ।
- কোথায় ?
- সেটা আমি পরে বলে দেব ।
- আচ্ছা ।
.
অনেক হয়ে গেছে । এভাবে আর চলতে পারেনা । সব নতুন করে শুরু হবে । তাই হঠাৎ করে দেখা করতে চাওয়া ।
.
পরদিন বিকেলে বসে আছি একটা পার্কে । আমার সামনে নদী । একটা বেঞ্চে বসে আছি । আমার আশেপাশে কাপল ঘুরাঘুরি করছে । ভাবতাম আমিই বোকা । এখন তো দেখছি পুরো উল্টো । ছাত্রজীবনে প্রেম করা মানে অন্যের বউকে পাহাড়া দেয়া । নিজেই তো দিচ্ছি , আবার মানুষকে বলছি । এসব ভাবছি আর আশপাশটা দেখছি ।
.
হঠাৎ করে হাসিমুখের একটা মেয়ে কোথাথেকে এসে বলল -
- বসতে পারি ভাইয়া ?
- ( দেখতে তো খারাপ না , ভাইয়াও বলছে । ব্যাপারটা কি ? আজকালকার মেয়ে , কোনো বিশ্বাস নেই )
- কি ভাবছেন এতো ? বসবো নাকি দাড়িয়েই থাকবো ?
- ( দেখতে তো সরলই লাগছে , তবুও কোনো চান্স নেয়া যাবে না ) জ্বী অবশ্যই । ( আমি বেঞ্চের এক কোণায় এসে বসেছি )
( আমার এরকম আচরণে মেয়েটিকে একটু অবাক দেখালো )
এসব উপেক্ষা করে , মেয়েটা বলে উঠলো -
- আসলে ভাইয়া , আমার বয়ফ্রেন্ড আসার কথা ছিল । আমার ফোনের চার্জ শেষ । তাই তার সাথে একটু কথা বলবো । আপনার ফোনটা কি একটু দেয়া যাবে ?
- এই নিন ( ফোন দিতে দিতে )
( কোনোদিকে না তাকিয়ে , তাড়াতাড়ি ফোন নাম্বার ডায়াল করে ফোন দিল । ওপাশ থেকে কি কথা হলো কিছুই শুনতে পেলাম না । শুধু হাসিমুখে মেয়েটার আচ্ছা শব্দটি শুনে ফোনটা রেখে দিতে দেখলাম )
- আপনাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দেবো ভাইয়া । ( ফোন আমার কাছে দিতে দিতে )
- ধন্যবাদ লাগবে না । It's ok.
- আচ্ছা ভাইয়া . আসি ( মুচকি হেসে )
( আমি শুধু তাকালাম , কিছু বল্লামনা )
চলে গেল মেয়েটি । ১ ঘণ্টা ধরে বসে আছি , তার আসার নামই নেই । কত নাটক সিনেমায় , ফেসবুকের গল্প গুলোতেও পরেছি যে , গার্লফ্রেন্ড আগে এসে বসে থাকে , বয়ফ্রেন্ড এসে রাগ ভাঙ্গায় । আমার বেলায় তো ঠিক উল্টোটা হচ্ছে । খুব রাগ হচ্ছে মিমের উপর ।
না পেরে ফোন দিলাম । ফোনটা কেটে দিল । তার মানে এসে গেছে ।
দেখতে পেলাম ও আসছে । এসে আমার পাশে বসলো । কিন্তু একটু দূরে ।
২ ঘণ্টা ধরে বসে আছি , এমনিই মেজাজ খুব খারাপ । তার উপর এরকম ব্যবহার মোটেই সহ্য করার মত নয় । তবুও কিছু বল্লাম না ।
আমি কিছু বলতে যাবো , তার আগেই ও বলে উঠলো -
- মেয়েটি কে ছিলো ? ( হালকা রাগে )
- চিনিনা । আমার ফোন দিয়ে কথা বল্লো ( শান্ত হয়ে )
- ও আচ্ছা । তুমি চিনোনা ? কিন্তু ফোন করার জন্য তোমার ফোন তাকে দিয়ে দিলে ?
- তেমন কিছুই না . ওনার ফোনো চার্জ ছিলো না , তাই ওনার বয়ফ্রেন্ডকে ফোন দেয়ার জন্য আমার কাছে ফোনটা চাইলো । আমি দিলাম ।
- ও আচ্ছা । সেটা তো অন্যকারোর ফোন দিয়েও দিতে পারতো । পার্কে কি অন্য মানুষ ছিল না ?
- ( ওর এরকম কথা শুনে আস্তে আস্তে মেজাজ আরো খারাপ হচ্ছে ) এটা কেমন কথা ? আমাকে সন্দেহ করছো ? এরকম করে বলছো যেন ঐ মেয়ের সাথে আমি প্রেম করি ?
- এই তো সত্যি কথা বের হলো
- মানে
- আর কয়টা মেয়ের সাথে এরকম করেছ ?
ঠাসসসসস . . . . . !!
- কি সমস্যা তোমার ? হু ? আজকাল দেখছি তুমি সাধারণ বিষয়গুলো নিয়ে আমাকে সন্দেহ করছো । মেয়েটাকে আমি চিনিনা । এর মধ্যে প্রেম আসলো কোথা থেকে ?
- প্রেম ই তো করো । আমার মতো আরো মেয়ের জীবন নষ্ট করেছো তুমি । মেয়েদের জীবন নিয়ে খেলা করো ।
ঠাসসসস . . . . .!
- খেলা তো তুমি আমার সাথে করছো । যেদিন থেকে আমাদের ঝগড়া হয়েছে ঐদিন থেকে তুমি আমার সাথে এরকম সন্দেহ করা শুরু করেছো । আমি কি ক্ষমা চাইনি ঐ ঝগড়ার জন্য ? তারপরোও কেন এসব ? সারাদিনে কয়টা ছেলের সাথে কথা বলো তুমি ? কি করো সারাদিন ফেসবুকে ? আমার মেসেজগুলোর তো রিপ্লে আসেনা । কিছু বুঝিনা আমি ? কিন্তু ফেসবুকে তো ঠিকই সারাদিন থাকো , কয়টা ছেলেকে ছবি দিছো ? চেন একটা ছেলেকেও ? না করিনি অচেনা ছেলেদের ছবি দিতে ? আমি চ্যাট গুলো দেখিনি ভাবছো ? প্রত্যেকটা ছেলের সাথে চ্যাট দেখেছি আমি , আর সবাইকেই তুমি ছবি দিয়েছ । আর কয়টা আইডি চালাও ? কোনোদিন দেখেছো যে একটা মেয়ের সাথে আমি কথা বলেছি ফেসবুকে । তোমার জন্য আমি ফেসবুকে কথা বলাই বন্ধ করে দিয়েছি । ইমেইলটাও তোমাকে দিয়েছি , তারপরও তুমি আমাকে বলছো আমি প্রেম করি ? লজ্জ্বা হয় না তোমার ? আমার মেসেজগুলোর রিপ্লেও দেরি করে দাও , সারাদিন চ্যাট করো অন্য ছেলেদের সাথে , কিছু বলেছি সে জন্যে ? আমাকে আর ভালো লাগে না সেটা বল্লেই তো পারো । ঝগড়ার পর আমি তোমাকে বলিনি যে , এরকম না করতে ? সম্পর্ক ঠিক করতে চাইনি আমি ? তোমার জন্য আম্মুকে দেয়া প্রতিজ্ঞাও ভঙ্গ করেছি । আর কি চাও তুমি ? সারাদিন অন্য ছেলেদের সাথে মেসেজ , চ্যাট , ছবি দেওয়া , আর আজ আমাকে বলছো যে আমি কয়টা মেয়ের সাথে প্রেম করি । আগে নিজে ঠিক হও তারপর অন্যকে বলো
.
একবারে কথা গুলো বলে শেষ করলাম । চোখ দিয়ে পানি পড়ছে মিমের । এতক্ষণ একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে । আমার কাছ থেকে এরকম কোনো কথা আশা করেনি ও ।
দাড়িয়ে আছি বেঞ্চের একপাশে । মিম উঠে চলে যাচ্ছে ।
আমি তাকিয়ে আছি অন্যদিকে । বুঝতে পারছি চোখের কোণে পানি জমেছে ।
- কোথায় যাচ্ছো ? ( আমি )
- ...........
- মিম দাড়াও । যেও না
( ও কথা শুনছেই না , হেঁটেই যাচ্ছে )
- মিম দাড়াও বলছি
আমার কথা শুনলোই না । গাড়িতে উঠে চলে গেলো ।
আর পারলাম না ধরে রাখতে , চোখ থেকে এক ফোটা পানি গাল বেয়ে পড়লো । আমি দাড়িয়ে আছি এখনো । ২ বছরে এই প্রথম মিমের গায়ে হাত তুললাম । রাগটাকে কন্ট্রোলে রাখতে পারিনি ।
.
কাল মিমের জন্মদিন । ও এখনো পরিবর্তিত হয়নি । আগের মতোই আছে । আমিও আর কিছু বলিনি । যে যেভাবে খুশি থাকতে চায় , তাকে সেভাবেই থাকতে দেয়া ভালো ।
.
১৬ ই মার্চ , রাত ১০ টা । ওর সাথে স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলছি । ওর মেসেজগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে যে ও খুব খুশি । তবে কষ্টও পাচ্ছে । আমার সাথে দেখা হবেনা বলে ।
এভাবেই কথা হচ্ছে ।
রাত ১১.৩০ -
আর আধঘণ্টা বাকি । সবার আগের Wish টা ও আমার কাছ থেকে পেতে চায় । ঠিক ১২ টার সময় ফোন দিতে বললো ।
আমি বললাম আচ্ছা ।
রাত ১১.৪০ -
আমি ফেসবুকে ঢুকলাম । দেখলাম চ্যাট লিস্টের সবার উপরে মিমকে একটিভ দেখাচ্ছে । রিফ্রেস করলাম ।
দেখলাম - " Active 1 minute ago "
.
ভাবছি আমাকে দেখেই চলে গেল নাকি , চ্যাট turn off করে ফেল্ল । ও তো আমাকে বলেছিল যে , ও চ্যাট turn off করতে জানেনা । তাহলে কি হলো ??
.
কি ভেবে আমি ওর আইডিতে ঢুকলাম ।
দেখলাম দিব্যি ৪ টা ছেলের সাথে চ্যাট চলছে । চ্যাট Turn off করা ।
একটা একটা করে মেসেজ দিচ্ছে আর ডিলিট করছে । একইসাথে ৪ জনের সাথে সুন্দর ভাবে চ্যাট চলছে । তার মধ্যে একজনের নিকনেম " জানু "
চোখে পানি জমতে শুরু করেছে । বুঝতে পারছি আর কিছুক্ষণ এগুলো দেখলে আমি ঠিক থাকতে পারবোনা ।
.
১২ টা বাজতে আর ১ মিনিট বাকি । আর দেখার ক্ষমতা নেই আমার । ওর আইডি থেকে বের হয়ে , সিমটা খুলে ফেল্লাম । তখন ঠিক বারোটা ।
চোখের পানিগুলো ভারী হতে শুরু করেছে । সিমটা ভেঙ্গে জানালা দিয়ে ফেলে দিলাম । আজ জন্মদিনের মতো এমন একটা দিনেও চেয়েছিলাম যে , তোমাকে একটুও কষ্ট দেবনা । একটুও না । পারলাম না মহারাণী । আজ তোমাকে Wish করার জন্য অনেকেই আছে । আমার wish টার অভাব , আজ অনেকের wish দ্বারা পূরণ হয়ে যাবে ।
.
সেদিনের মতো আজও চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ! তবে আজ আর সেটা দেখার কেউ নেই ! মুছে দেয়ারও কেউ নেই !!
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Tamim(FAN OF AKCENT)
User ৪ বছর, ৪ মাস পুর্বে☠Sajib Babu⚠
Golpobuzz ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বেSayaan Islam
User ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বে☠Sajib Babu⚠
Golpobuzz ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বেSayaan Islam
User ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বেSayaan Islam
User ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বেSajib Babu
Golpobuzz ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেআসহাব
Guest ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেআসহাব
Guest ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেআসহাব
Guest ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেsalman
User ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেঘুম বিলাসী লিখন
Golpobuzz ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেনীরব
Guest ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেআবরার রাহমান
User ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেরিহাব রানা
Guest ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেLeAVe ME AloNe
User ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেSajib Babu
Golpobuzz ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেMartin
Guest ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেSajib Babu
Golpobuzz ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেSajib Babu
Golpobuzz ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বে••RiHa••
Guest ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেSajib Babu
Golpobuzz ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বে••RiHa••
User ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেSajib Babu
Golpobuzz ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেSajib Babu
Golpobuzz ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেSajib Babu
Golpobuzz ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বে••RiHa••
User ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেSajib Babu
Golpobuzz ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেMehedi Hasan Fahim
Guest ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বে••RiHa••
User ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বে