বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

এ গুড বিজনেজ ডিল(দ্বিতীয় পর্ব)

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Opu Ahasan (০ পয়েন্ট)

X প্রথম পব পর..চাকরিতে জয়েন করার পর আরও ২১টা দিন পার হয়ে গেল । কোন প্রকার কোন ঘটনা ছাড়াই । মনের ভেতরে একটু অবাক লাগছিলো যে এখনও একবারের জন্যও নুশরাতের সাথে আমার দেখা হওয়ার কোন সুযোগ ঘটে নি । আর আমি কিভাবে ওর সাথে গিয়ে দেখা করবো ? ওদের কোম্পানীতে চাকরি পেয়েছি বলেই তো আর ওদের বাসায় গিয়ে হাজির হতে পারি না, গিয়ে বলতে পারি না যে শুনছো আমি তোমাদের কোম্পানীতে চাকরী করি, আসো আমরা প্রেম করি । কিন্তু এভাবে হাতের উপর হাত রেখে বসেও থাকতেও পারি না । অবশ্য আমি বসেও নেই । যে কাজের জন্য আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল সেই কাজ না করলেও আমাকে অফিসের কাজ ঠিকই করতে হচ্ছে । বলতে গেলে পুরো অফিসের সময়টুকু আমার দম ফেলার সময় থাকে না, ২১টা দিন কিভাবে পার হয়ে গেল টেরই পেলাম না । এখন তো মনে হচ্ছে নুশরাতের আব্বা আমাকে ওনার মেয়ের সাথে প্রেম করার জন্য ঠিক করেন নি বরং এখানে এভাবে খাটিয়ে মারার জন্য নিয়োগ দিয়েছে । এমনটাই যখন ভাবছি তখনই নুশরাতের সাথে আমার দেখা হয়ে গেল । অনেকটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই । আমি অফিস শেষ করে রিক্সা করে বাসার দিকে যাচ্ছিলাম । তখনই দেখতে পেলাম একটা সাদা রংয়ের গাড়ি রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আছে । গাড়ির সামনের ব্যানেট খোলা । একজন মানুষ ইঞ্জিনের ভেতরে কিছু দেখার চেষ্টা করছে । আর গাড়ির দরজার সামনে হেলান দিয়ে বিরক্ত মুখে নুশরাত দাড়িয়ে ! একবার মনে হল পাশ কাটিয়ে চলে যাই কিন্তু তারপরই মনে হল, চাকরি পেয়েছি এটা অনুযায়ী কাজ তো করতে হবে ! আমি ওর সামনেই রিক্সা থামালাম । রিক্সা থামাতে দেখে নুশরাত আমার দিকে কিছু সময়ে তাকিয়ে থেকেই আমাকে চিনে ফেললো । -তুমি অপু না ? -হ্যা ! আমি একটু হেসে রিক্সা থেকে নেমে পড়লাম । -এখানে ? -আর বল না । গাড়িটা হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেছে । -কোথায় যাচ্ছো ? -কোথাও না । তবে আকাশের অবস্থা ভাল না খুব বেশি । বাসায় ফিরা যাবো ভাবছি । তা তুমি কোথা থেকে আসতেছো ? -আমি !! অফিস থেকে ! -তাই নাকি ? কোথায় চাকরি কর তুমি ? আমি কোম্পানীর নাম বলার পর নুশরাত কিছু সময় আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো । তারপর বলল -তুমি আমাদের কোম্পানীতে জয়েন করেছো আর আমাকে বলও নাই একবারও ? -আসলে ........ -তোমার তো ফাইন হয়ে গেছে । আমার কাছে একটু অবাকই লাগছিলো । ক্যাম্পাসে আমার আর নুশরাতের কোন দিন কথা হয় নি । অবশ্য অনেকের সাথেই হয় নি । আমি খানিকটা নিশ্চুপ টাইপের মানুষ ছিলাম । আর নুশরাতও ছিল অন্য সার্কেলের সাথে । আর আজকে মেয়েটা এমন ভাবে কথা বলছে যেন কতই ভাল সম্পর্ক ছিল । নুশরাত আমার সাথে রিক্সায় উঠে এল । সেখান থেকে আমাকে সোজা বেইলি রোডের দিকেই নিয়ে গেল । বলল যে আজকে তাকে ট্রিট দিতেই হবে । অবশ্য আমার জন্য ভালই হল । আমি হয়তো এতো সহয়ে ওর সাথে কথা বার্তা এগোনো সহজ হত না ! যেন না চাইতেই সব কিছু সহজ হয়ে গেল ! নুশরাত অনেক কথা বলল । এমন কি আমার নাম্বার পর্যন্ত নিয়ে নিল । বলল যে ফোন দিবে । আর আমি ভাবছিলাম আজকের পরে ওর সাথে কিভাবে দেখা করবো । সেই সুযোগটা ও নিজেই আমাকে করে দিল । ও যখন নিজে ইচ্ছে করে ফোন নাম্বারটা আমাকে দিল তখন সামনে ওর সাথে যোগাযোগ করাটা খুব একটা কষ্টের হবে না । ওকে যখন বাসায় পৌছে দিতে গেলাম তখনই আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামলো । হুড তুলে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার কথা ভাবছি তখন নুশরাত একটা অবাক করার কাজ করলো । হুড খুলে ফেলে ভিজতে লাগলো ! সন্ধ্যা হয়ে গেছে অনেক আগেই কেবল ল্যাম্পপোস্টের আলো গুলোতে নুশরাতের চেহারা দেখা যাচ্ছে । আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম । এই মেয়ের সমস্যা কি ! মেয়েটা চলন্ত রিক্সাতে করে চোখ বন্ধ করে বৃষ্টিতে ভিজছে । ওর চেহারা দেখেই মনে হচ্ছে খুব আনন্দ হচ্ছে । নুশরাত চোখ খুলে আমার দিকে তাকিয়ে বলল -অনেক দিনের ইচ্ছে এমন ভাবে রিক্সায় করে বৃষ্টিতে ভিজবো । আমার আবার বৃষ্টিতে ভেজা একবারে নিষেধ । বাবা জানলে খুব রাগ করবে ! আমার আবার বৃষ্টিতে ভিজলেই জ্বর আসে ! -সেকি ! -আরে ভয় পাচ্ছো কেন ? -ভয় পাবো না ? তিনি আমার বস তুমি জানো না ? যদি জানে যে আমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজেছো তাহলে আমার চাকরি গেছে .... -আরে কিছু হবে না । আমি বলব নাকি তোমার নাম ? তবে আজকেই আমাদের দেখা হল আর আজকেই আমার বৃষ্টিতে ভেজার ইচ্ছেটা পূরন হয়ে গেল । আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আমাদের সামনের দিন গুলো ভাব হতে যাচ্ছে .... আজকে আসলেই আমি কার মুখ দেখে উঠেছিলাম জানি না । একদিনেই এতোটা হয়ে যাবে ভাবতে পারি নি । সব যেন আসলেই আমার গল্পের মত করে হয়ে যাচ্ছে । মনে মনে খুশি হয়ে উঠলাম তবে সেই সাথে একটু চিন্তিতও হলাম । নুশরাত বলছিল বৃষ্টিতে ভিজলেই নাকি ওর জ্বর । যখন ওকে ওদের বাসার গেটের কাছে নামিয়ে দিলাম তখনও বৃষ্টি পড়ছে বেশ ভাল ভাবেই । নুশরাত বলল -অনেক দিন পর তোমার সাথে দেখা হয়ে ভাল লাগলো ! -আমারও ! রাতের বেলা খানিকটা ইতস্তত করেই ফোন দিলাম ওকে । কয়েক ঘন্টা আগেই আমাদের দেখা হয়েছে তবুও মনে হচ্ছিলো যেন মেয়েটা আমাকে চিনতেই পারবে না । তবে আমার ধারনা মিথ্যা প্রমানিত হল । নুশরাত আমাকে ঠিকই চিনতে পারলো । -শরীরের কেমন অবস্থা এখন ? -জ্বর নিয়ে ভয় পাচ্ছো ? -একটু তো পাচ্ছিই । -এখনও আসে নি তবে আমি বুঝতে পারছি চলে আসবে ! -তাহলে ? -তাহলে আর কি । কালকে যখন জ্বর আসবে তখন একবার দেখতে এসো । কেমন ? -তোমাদের বাসায় ? -হ্যা । সমস্যা কি ? -না বাবা পারবো না । -শুনো এতো ভয়ের কিছু নেই । আমি আছি না ? এমন ভাবে আচ্ছা বললাম যেন আমি খুব অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজি হয়ে গেলাম । কিন্তু মেয়ে তো জানে না যে আমি আসলে চাইলেই ওদের বাসায় কত সহজে যেতে পারি । আচ্ছা ওর বাবা ওর জন্য যেটা করতেছে সেটা জানতে পারলে মেয়েটার মনের অবস্থা কেমন হবে ? ওর বাবা তো ওর জন্যই এসব করতেছে কিন্তু আমি ? আমি কিসের জন্য করতেছি ? টাকার জন্য ? তাই তো টাকার জন্যই তো । নুশরাত নিশ্চয়ই এটা জানার পর আমার দিকে কি ভাববে সেটা ভাবছি ! এই সব চিন্তা আমি মন থেকে দুর করে দিলাম । তা ছাড়া এতো দিকে চিন্তা করলে চলে না । সবাই কেবল নিজেরটা বোঝে । নিশি তো চমৎকার ভাবে নিজেরটা বুঝতে পেরে চলে গেছে আমি কি ভাববো সেটা ভাবে নি তাহলে আমি কেন এতো কিছু ভাববো ? ধরা পড়লে যা হবে দেখা যাবে !


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩৩৭ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now