বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

পরকীয়া

"রহস্য" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান এইচ আই ফাহাদ (০ পয়েন্ট)

X এই প্রথম স্বামীর অগোচরে অন্য একটা ছেলের সাথে রিকশায় হাত ধরে ঘনিষ্ঠ ভাবে ঘুরতে একটুও অস্বস্তি লাগল না লিমার।এই রনি ছেলেটাকে অনেক আগে থেকেই চিনে লিমা।অনেক দিন পর লিমার গায়ের উপর রনির হাতের স্পর্শ লিমার গায়ে শিহরণ বইয়ে দিচ্ছে,এ যেন এক নিষিদ্ধ আনন্দ।তবে লিমা অবাক না হয়ে পারল না,রনি তার প্রিয় খাবার,প্রিয় হোটেল,প্রিয় জায়গা এগুল সম্পর্কে যেন সব ভুলে গিয়েছে,কেমন বিষন্ন লাগছে তাকে,এগুল ভাবতে ভাবতে সে একদম ভুলেই গিয়েছিল একবছর আগে ফাহাদের সাথেও ঠিক এইভাবে ঘুরতে বের হয়েছিল লিমা।ফাহাদের সাথে সেদিন লিমার প্রথম দেখা ছিল।ফাহাদের সাথে কোন পছন্দের মিল ছিল না তার।তবুও কেন যেন ভালো লেগেছিল তাকে,এবং তার কয়েক মাস পড়েই তারা বিয়ে করে নিয়েছিল।সবই ঠিক ছিল।সুখের একটা সংসার ছিল। লিমা হয়ত কোনদিন ভাবেও নি এভাবে ফাহাদের হাত ছেড়ে অন্য একজনের হাত ধরে ঘোরার সুযোগ পাবে,তিন মাস আগে ফাহাদ প্রচন্ড গার্ড দিয়ে রাখত লিমা কে। আর এদিকে ফাহাদ খুশি মনে অফিসে বসে কম্পিউটার এ অনলাইন এ ভিজিট করছে।ফাহাদের পড়নে ছিল লম্বা একটা কোট।চুল দিয়ে বাম পাশের চোখ পুরোটাই ঢাকা।ফাহাদের মুখে সেই অদ্ভুত মিষ্টি হাসিটা লেগেই থাকে যেন। হঠাৎ টেবিল থেকে ফোন নিয়ে ফাহাদ ফোন দিল লিমা কে,দুপুরে লাঞ্চ করেছে কিনা,জানতে,কিন্তু লিমা ফোন তুলল না।ফাহাদ কি যেন একটু চিন্তা করে আবার অফিসের কাজে মনোযোগ দিল। এইদিকে একটি ভি আই পি হোটেলের খাটে বসে মদের গ্লাস থেকে এক চুমুক খেয়ে নিল লিমা,কাধের উপর রনির হাতের স্পর্শ যেন অন্যরকম একটা মাদকতা ধরিয়ে দিল।তারপর সেই মাদকতার আগুনে পুড়তে লাগল দুটি দেহ। কাজ শেষ করে বিকাল ৫ টায় অফিস থেকে বের হল ফাহাদ।লিমাও বের হল গোসল খানা থেকে,রনি কে একটু তাড়া দিয়ে বলল আজকে এখন ই বাসায় যেতে হবে।ফাহাদ হয়ত অফিস থেকে বেরিয়ে গিয়েছে।রনি কোন উত্তর না দিয়ে শুয়ে থাকল বিছানায়।নিজে নিজেই রেডি হল লিমা।রনিকে নিরুত্তর দেখে বাই বলেই বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হল লিমা। লিমা যাওয়ার পর উঠে আয়নার সামনে দাঁড়াল রনি।নিজেকে দেখে নিজেই চমকে গেল সে। আজ তার চোখে মুখে তৃপ্তির ছাপ থাকার কথা।কিন্তু না,তার মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। শংকায় বিন্দু বিদু ঘেমেও গিয়েছে ।তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়ল রনি।একটা ট্যাক্সি নিয়ে সরাসরি ডাক্তার এর কাছে চলে গেল । এদিকে ফাহাদ লাঞ্চপ্যাকেট নিয়ে বাসায় ফিরে লিমাকে ডেকে বলল লিমা!! তাড়াতাড়ি খাবার রেডি করে দাও।লিমাও ফাহাদের জন্য খাবার তৈরি করে দিল।নিজেও নিল।একসাথে খেতে খেতে ফাহাদের দিকে একবার তাকাল ফাহাদের দৃষ্টি খাবারের প্লেটের মাঝখানে।আস্তে আস্তে খেয়ে খাওয়া শেষ করে হাত ধুয়ে উঠে গেল।বরাবর এর মতই।লাস্ট তিন মাসে একবারের জন্যও লিমার দিকে তাকায় নি ফাহাদ।কথাও প্রয়োজন ছাড়া বলে নি।আর রাতে একসাথে ঘুমানোটাও যেন এখন অনেক দূরের অতীত। আগে কিছুই এমন ছিল না।মাস তিনেক আগের এক সকালে হঠাৎ করেই একটা ফোন পেয়ে বাইরে ছুটে যায় ফাহাদ,তারপর তিন দিন ফাহাদের ফোন বন্ধ।যেদিন বাড়ি আসে,সেদিন থেকেই কেমন অদ্ভুত আচরণ শুরু করে ফাহাদ।তারপর থেকে সব কিছু ই এলোমেলো। রাত ১২ টা চেয়ারে বসে কম্পিউটার এ কাজ করছে ফাহাদ। লিমা চা নিয়ে পিছনের টেবিলে দাঁড়িয়ে। উপস্থিতি টের পেয়ে বলল, : লিমা,রাতের ঔষধ খেয়েছ? : না।খাবো। : খেয়ে নাও যাও।যাওয়ার আগে দরজাটা চাপিয়ে যেও। :হুম। ফাহাদের কথামত দরজা চাপিয়ে ঔষধ খেয়ে ঘুমাতে যায় লিমা।ঘুমানোর আগে নিজেরর ফোন খুজে লিমা,কিন্তু খুজে পায়না।ভাবে হয়ত ঐ গেস্ট রুমেই ফেলে এসেছে ভুলে,আবার মনে মনে ভাবে রনি নিশ্চই পরে এসে দিয়ে যাবে ফোন টা। একরাশ হতাশা নিয়ে ঘুমিয়ে যায় সে। পরদিন সকালে ফাহাদের জন্য চা নিয়ে গিয়ে অবাক হয় লিমা,ফাহাদ বেডে নেই।লিমা মন মড়া অবস্থায় বাসা পরিষ্কার করতে করতে হঠাৎ লিমার মোবাইল দিয়ে ঢেকে রাখা একটা চিঠি পায় ফাহাদের টেবিলে।চিঠি টা পড়তে শুরু করে সে। লিমা... আমাকে খুঁজতে যেও না।অবশ্য চিঠিটা পড়ার পর আমাকে খুজার চেষ্টা ও তুমি করবে না। আমি জানি না এই চিঠি টা পড়ার পর তুমি আমাকে গালি দিবে কিনা,হয়ত গালি দেয়ার শক্তিও থাকবে না তোমার। মনে আছে নিশাত এর কথা!!তোমার বান্ধবী নিশাত?? লিমা এতটুকু পড়েই ধুপ করে ফ্লোরে বসে পড়ল। নিশাত এর সাথে ফাহাদের কি সম্পর্ক?!! পরে আবার পড়তে শুরু করল চিঠিটা, " কি অবাক হচ্ছ?? আরো অবাক হবে তুমি, কারণ তুমি জানো না।নিশাত ছিল আমার ওয়াইফ। আমরা দুজনে লুকিয়ে বিয়ে করেছিলাম।ও আর আমি ছাড়া সেটা জানত না কেউ ই।এতিম নিশাতের পৃথিবীতে শুধু মাত্র দুটো মানুষ ছিল।একজন হলে তুমি,আরেকজন আমি ছিলাম।আমার জীবনে নিশাত,আমার মা বাবা ছাড়া আর কেউ ই ছিল না।আমি অনেক অভাবে কোন রকম লেখাপড়া করে দিন পার করছিলাম।এমন সময় আমার লাইফে নিশাত এর আবির্ভাব। ও দুটো টিউশনি করাতো।সেখান থেকে আমাকে টাকা দিত।আমি নিজেও টিউশনি করাতাম।তারপর ছুটির দিনে আমরা দুজনে মিলে ঘুরতে যেতাম, রিকশায় বসে একসাথে ঘোরার সময় ওর উড়ন্ত চুল যখন আমার নাকে এসে লাগত,প্রান ভরে ঘ্রান নিতাম।তারপর ফুসকা খাইয়ে দিতাম।কতবার আমাদের এক সপ্তাহ বসে জমানো টাকা দিয়ে যে নৌকায় ঘুরেছি,তার হিসেব নেই।ওর সাথে ঘুরাঘুরি করার সময় ওর মুখে আমি ছাড়া আরেকটা নাম থাকত।সেটা হল লিমা।তোমার সম্পর্কে আমি অনেক বেশি ই শুনেছি। ভালো লাগত ওর হাশি মুখের চটপটিয়ে বলা কথা গুল শুনতে।ও তোমাকে এত বিশ্বাস করত যে,তোমাকে নিয়ে যখন কথা বলত,তখন ওর চোখের কোনায় চিক চিক করা আনন্দ আমি দেখতে পেতাম।সেবার আমি ভার্সিটি থেকে বৃত্তি পেয়ে দু বছরের জন্য বিদেশ চলে গেলাম।ও আমাকে খুব মিস করত।ওর সাথে আমার অনেক কথা হত এমন নয়।আমাকে বলেছিল,এখন ও নাকি ও প্রতি সপ্তাহে টাকা জমায়,একসাথে লেকে নৌকায় ঘোরার জন্য,আমি বলেছিলাম ওকে, লিমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হবা,আমার পছন্দের জায়গা গুলোতে ঘুরবা,তাহলে আমাকে মিস কম করবা,আমার কথামত ও তোমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হল,বেশ কয়েকদিন ওর সাথে ঘোরার পর তুমি তোমার ধনী এক ছেলে বন্ধুকে নিয়ে এলে ওর সাথে আড্ডা দেয়ার জন্য । আমার শুনে খারাপ লাগলেও বাধা দিতাম না। একসময় তোমার ঐ বন্ধুর পছন্দ হয় নিশাত কে।তোমাকে অনেক গুল টাকা অফার করায় তুমি তোমাদের রুমে তোমার বন্ধুকে রাতে চুপিসারে ঢুকিয়ে দাও।আমার নিষ্পাপ প্রাণ পাখিটা তখন কত কিউট করে ঘুমিয়ে ছিল কে জানে!! নরম দেহের উপরে ঝাপিয়ে পরে তোমার বন্ধু।সাহায্য কর তুমি। কিন্তু জানোয়ারটা ওকে ধর্ষণ করেই রেহাই দেয় নি, খুন করে আমার ভালবাসাটাকে ৭ তলার ফ্লাটের বেলকুনি থেকে রাস্তায় ফেলে দেয়।ঐদিন ও একা মারা যায় নি।ঐদিন মারা গিয়েছিল ফাহাদ নামের একজনও।এতিম থাকায়, থানায় কোন কেস হয়নি,কোন তদন্ত হয় নি।আমি প্রথমেই বিশ্বাস করি নি এটা সাধারণ আত্মহনন। কারন আমি ওকে চিনতাম,জানতাম।আমি জানি ও আত্মহত্যা করে নি,ও আমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখত।অনুভুতির সুক্ষ্ম সুতা দিয়ে বুনা জাল ও এভাবে ছিড়তে পারে না। এরপর আমি দেশে এসে ভাবলাম আসল রহস্য বের করব।এজন্যই আমার চাকরী আর টাকার লোভ দেখিয়ে তোমাকে বিয়ে করা।তুমি লোভী ছিলে।আমি প্রতিশোধ পরায়ণ ছিলাম।ব্যাস,হিসেব মিলে গেল।তোমার মত বহু পুরুষদেহ ভোগ করা মেয়েকে আমি চুপচাপ বিয়ে করলাম।একটা বছর আমি তোমাকে দিন রাত সুখ দিয়েছি। তোমাকে চাইলেই আমি খুন করতে পারতাম।কিন্তু খুন করলে শাস্তি টা তোমার জন্য খুব কম হয়ে যাবে।ভাবছ যে কি করেছি আমি তোমার সাথে,তাইনা?? তোমাকে লক্ষ্য করেছি।তুমি যে রনির সাথে যোগাযোগ রাখ,সেটাও জেনেছি।তারপর অপেক্ষায় ছিলাম সুযোগ এর,তিনমাস আগে রনি এক্সিডেন্ট করে হাসপাতালে ভর্তি হয়।হাসপাতালের ডাক্তার কে অনেক টাকা ঘুষ দিয়ে আমি রনির কেবিনে ঢুকার অনুমতি নেই।প্লান মত আমি নিজ থেকেই তোমাকে ইগনোর করি,তোমাকে সুযোগ দেই রনির সাথে মেলামেশা করার।আমার লোক তোমার ও রনির উপর নজর রাখে।যখন তুমি রনির সাথে হোটেলে সময় কাটাচ্ছ,তখন রনিকে আমি একটা মেসেজ দিয়েছি। তোমাকে ভোগ করা শেষ এ ও যখন ইনবক্স চেক করেছিল তখন, ও বুঝতে পেরেছিল ও কি শাস্তি পেয়েছে।আর তুমিও বুঝে যাবে।তোমার জন্য কি শাস্তি রয়েছে.. তোমার ফোনের টেক্সট চেক কর। --- তাড়াতাড়ি লিমা তার ফোনের ইনবক্স চেক করে, সেখানে রনির মেসেজ ছিল, "লিমা!! আমি এইচ আই ভি পজেটিভ,এইডস রোগী ছিলাম। আমাকে কেউ মেসেজ করেছিল,সে আমার শরীরে নাকি এইডস এর জীবাণু ঢুকিয়ে দিয়েছে আমাকে ও তোমাকে শাস্তি দেয়ার জন্য...ডাক্তার এর কাছে গিয়ে চেক করে দেখি ঘটনা সত্যি।আমার কাছ থেকে তুমিও তাহলে এখন এইডস আক্রান্ত। এখন আমরা কি করব লিমা??" _____ চিঠির উলটো পাশে বড় বড় করে লেখা,এবার তুমি নিজে আস্তে আস্তে কুঁকড়ে কুঁকড়ে মারা যাবে লিমা।তুমি তোমার অভিশপ্ত জীবনের শাস্তি পেয়েছ। দূরে কোথাও ক্ষীণ স্বরে একটা গান বেজে চলেছে, " পাপী শাস্তি পায়, পাপী শাস্তি পায়, দুনিয়ার নিয়মেই , ধ্বংস হয় অন্যায়!! লেখক: এইচ আই ফাহাদ


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ১৬৫৮ জন


এ জাতীয় গল্প

→ পরকীয়া-৩
→ পরকীয়া-২
→ পরকীয়া-১
→ পরকীয়া
→ পরকীয়া

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • মুঈদ
    Guest ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    পরকিয়া is too bad

  • Nazu tahsin
    Guest ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    Right speak

  • Hridoy
    User ৫ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    Just..Awesome

  • Riya
    Guest ৬ বছর পুর্বে
    Khub khub valo laglo...

  • RIAD
    User ৬ বছর পুর্বে
    joss golpo

  • Md akmol hosen
    User ৬ বছর পুর্বে
    ভালো

  • Dristi Afroz
    User ৬ বছর পুর্বে
    Osadharon.....

  • এইচ আই ফাহাদ
    User ৬ বছর পুর্বে
    ধন্যবাদ সবাইকে gj

  • সোহেল
    Guest ৬ বছর পুর্বে
    Very good

  • জীবন বদলাচ্ছে(তাসফিক)
    User ৬ বছর পুর্বে
    Bastob kauke rehai dei na..bastob khub kothor hate sb kicu domon kore...nc stry

  • GUEST
    Guest ৬ বছর পুর্বে
    Very realistic story...Good.

  • মো:সোহাগ
    Guest ৬ বছর পুর্বে
    Verry nice

  • ✨Pretty Princess Adrishy✨
    Guest ৬ বছর পুর্বে
    বাস্তবিক গল্প

  • কষ্ট নামের বাঁগিচা [Rupchan]
    Golpobuzz ৬ বছর পুর্বে
    এটাই বাস্তবতা...

  • Mst.Faujia Alam
    User ৬ বছর পুর্বে
    মন ছুঁয়ে গেল। আসলে আমাদের সমাজে এমন দৃশ্য দেখা যায়। গল্পের লেখক কে অসংখ্য ধন্যবাদ

  • নীল পরী
    Guest ৬ বছর পুর্বে
    জটিল।