বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

শেষ বিকেলের শহরে

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান আব্দুল কাইয়ুম (০ পয়েন্ট)

X খুবই বিরক্তিকর একটা অবস্থায় আছি এই মুহুর্তে আমি। বসে আছি বাস কাউন্টারে। আমার বড়ভাই ঢাকা থেকে খুলনা যাবেন। তাকে গাড়িতে তুলে দিতে এসেছি। অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়া একটা ছেলেকে গাড়িতে তুলে দেয়ার জন্য সাথে আরেকজনকে আসতে হবে ব্যাপারটা কিছুটা হাস্যকর। কিন্তু কাহিনী অন্য জায়গায়। বাস কাউন্টারে আসলে আমার বড় ভাইয়ের ঘন ঘন বাথরুম পায়। ছোটটা। কাজেই তিনি বাথরুমে গেলে সেই মুহুর্তে তার ব্যাগ দেখে রাখার জন্য কাউকে থাকতে হবে। এই মহান দায়িত্ব পালনের জন্যই আমার তার সাথে আসা। ওহ হ্যাঁ ,সাথে এসেছি বলেই যে বিরক্তিকর অবস্থায় আছি তা নয় , বিরক্তির কারন অন্য। কাউন্টার ভর্তি লোকজন। একটা ফাঁকা চেয়ার পেয়ে ভাইয়া আ্মাকে সেখানে বসিয়ে ব্যাগ পাহারার দায়িত্ব দিয়ে মিনারেল ওয়াটার কিনতে গেছে। আমি পা তুলে বসতে যেতেই পাশের হুজুর ভদ্রলোক বললেন, " ভাইসাহেব আপনার পা আমার গায়ে লাগতেছে, পা সরিয়ে বসেন"। আমি যারপরনাই বিব্রত হলাম! আমি খুব ভালোমত খেয়াল করে তবেই পায়ের উপর পা তুলেছিলাম, তাছাড়া আমি দেখেছি পা হুজুর সাহেবের গায়ে লাগে নি। যাই হোক, পা নামিয়ে বসলাম। কিন্তু আসল যন্ত্রনা শুরু হলো এরপর। হুজুর ক্রমাগত বকবক শুরু করলেন। "ভাইসাহেব আমার কথায় মনে কষ্ট নিয়েন না। মানুষের গায়ে পা লাগানো ঠিক না। মানুষ হচ্ছে আশরাফুল মাখলুকাত। ব্যাপারটা নিশ্চই আপনার জানা" আমি দুই চোখ ভর্তি বিরক্তি নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললাম, "এখন তো আর আপনার গায়ে পা লাগছে না"। এরপর কিছুক্ষন উশখুশ করে তিনি আবার শুরু করলেন, " কোথায় যাবেন? কয়টার সময় গাড়ি? রাস্তার অবস্থা কিছু জানেন? ফেরী ঘাটে কি জ্যাম আছে?" আমি হতাশ হয়ে তাকিয়ে রইলাম তার দিকে! . হুজুরের কথা বলতে বলতে তো আমার বড় ভাইয়ের কথাই বলা হলো না। প্রথমেই বলে নেই আমার বড় ভাই মারাত্বক ভালো ছাত্র। সিনেমা-নাটকে যেমন ভালো ছাত্র দেখা যায় তারচেয়েও ভালো। জীবনে কখনোই সেকেন্ড হয় নি। এস এস সি, ইন্টারে গোল্ডেন ফাইভ পাওয়া। বুয়েটে এডমিশন টেস্টে ফার্স্ট হয়ার পর বাবা মার গলা জড়িয়ে ধরে আছে ভাইয়া আর তার মুখের ভেতর মিষ্টি, এরকম একটা ছবি আমাদের শোবার ঘরে টানানো আছে। সাধারনত খুব ভালো ছাত্ররা খুবই স্বার্থপর হয় , সেই সাথে একটু বোরিং। ভাইয়া মোটেই তা না। চমৎকার হাসি খুশি একটা ছেলে। ভাইয়ার বন্ধুরা পরীক্ষার আগে তার কাছ থেকে এসে নোট নিয়ে যায়। প্রায়ই দেখা যায় আমাদের ড্রয়িং রুমে বসে ভাইয়া তার কোন বন্ধুকে কোন কিছু বুঝিয়ে দিচ্ছে। তবে বাবা এটা পছন্দ করেন না। তিনি মাঝে মাঝেই ভাইয়াকে ডেকে বলেন, " বন্ধুদের সাথে কম মিশবা। সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে" বাবা প্রবাদ বাক্য পছন্দ করেন , বলতে পারলে খুশি হন। তবে ইদানিং ভাইয়ার মধ্যে কিছু অস্বাভাবিকতা দেখতে পাচ্ছি। এ বিষয়ে পরে বলব। . " গাড়ি এসে গেছে , তুই এবার যা" , ব্যাগটা হাতে নিয়ে বলল ভাইয়া। " ভাইসাহেব আপনিই ইনার বড় ভাই ? আপনি যাবেন? , আমার পাশ থেকে বলে উঠল হুজুর! "জি , আমি যাবো" । "আপনার সিট নম্বর কত ? আমার পাশে? তাহলে দুই ভাই মিলে একসাথে গল্প করতে করতে চলে যাবো!" ব্যাগ বক্সে ঢুকানোর সময় ভাইয়াকে বললাম,"হুজুরকে পাত্তা দিও না। বকবক করে মাথা নষ্ট করে দিবে " ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে হাসল, যেমনভাবে বড়রা হাসে ছোটদের অর্থহীন কথা শুনলে! রাত প্রায় এগারোটা বাজে। এত রাতে কি কল্যানপুর থেকে আজিমপুর যাওয়ার বাস পাওয়া যাবে? আমি রাস্তা পার হয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। বসন্তের রাত। কেমন একটা পাগলা বাতাস বইছে। আচ্ছা , আমি হিমু হয়ে গেলাম নাকি? . বারোটার দিকে বাসায় ফিরে এসে দেখি তুঘলকি কান্ড ঘটে গেছে। মা রান্নাঘরে ভূত দেখে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছি্লেন। আমার ছোট বোন মুনা চুলা থেকে তরকারি নামাতে গিয়ে উলটে ফেলে দিয়েছে কড়াই , তাতে পা পুড়েছে বুয়ার। বাবা গম্ভীর মুখে ড্রয়িং রুমে বসে আছেন। "তোমাকে সি এন জি তে আসার জন্য ভাড়া দেয়া হয়েছিলো " , কাটা কাটা গলায় বললেন বাবা। "এত রাতে সি এন জি পাইনি (পুরো মিথ্যে কথা। দুইজন সি এন জি ওয়ালা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো , কোথায় যাবো! ) " । আমার রুমে ঢুকতেই দেখি মুনা মুখ কালো করে বসে আছে । "সামান্য তরকারির জন্য এত মন খারাপের কিছু নেই ", গেঞ্জি খুলতে খুলতে বললাম আমি। " ভাইয়া ভুতটা আমিও দেখেছি ", মুখ নামিয়ে বলল মুনা। " দেখ মুনা অহেতুক মিথ্যা বলিস না । একটা ডিম ভেজে ভাত নিয়ে আয় । কাল পরীক্ষা আছে আমার। পড়তে বসব"। ভাত মুখে দেয়ার ঠিক আগ মুহুর্তে ফোন এলো আমার মোবাইলে। ফোন করেছে ভাইয়া। সে এখন সাভার থানায়। তার সাথে হুজুর ও আছে। তাদের দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাবাকে খবরটা দিয়ে আমি আর বাবা যখন বেরোচ্ছি সাভার যাওয়ার জন্য , তখনই আমাদের বাসার সামনে একটা সি এন জি এসে থামল। আমি ধাক্কা খেলাম বলতে গেলে। কারন সি এন জি থেকে যেই মেয়েটা নেমে এসেছে এরকম সুন্দর মেয়ে আমি কখনো দেখি নি। "এটা কি হাসানদের বাসা ", আমার দিকে তাকিয়ে সরাসরি জিজ্ঞেস করল, মেয়েটা। হাসান আমার বড় ভাইয়ের নাম । আমি উত্তর না দিয়ে মনে মনে বললাম , " এ টোটাল মেস, একটি পরিপূর্ন বিশৃঙ্খলা " ........ হয়তবা চলবে!


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪৫৮ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • Riaz
    User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে
    Nc

  • আব্দুল কাইয়ুম
    User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ আপু, ইনশাআল্লাহ পরের বার ভাল গল্প উপহার দিতে চেষ্টা করব।

  • 《Dream Girl》
    User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে
    গল্পটি সুন্দর হয়েছে কিন্তু শেষের দিক দিয়ে একটু অগোছালো হয়ে গেছে। আশা করি এর পরের বার নিশ্চয় ভালো গল্প পাবো।

  • আব্দুল কাইয়ুম
    User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে
    জ্বী আপু #সায়মা।

  • আব্দুল কাইয়ুম
    User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে
    আসলে গল্পটি শেষ আপু,আমার প্রথম গল্প তো মিলাতে পারিনি, আস্তে আস্তে হবে #Dream Girl

  • sayma
    User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে
    এখানেই কি শেষ?

  • 《Dream Girl》
    User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে
    ভাইয়া গল্পটা তোহ্ দারুন হইছে কিন্তু এইখানেই কী শেষ নাকি আরও আছে???