বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

স্বার্থপর

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান আরমান হোসেন (০ পয়েন্ট)

X স্বার্থপর .. .. অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জান্নাতকে। ও আমার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে। অপারেশন থিয়েটারে ঢোকার কিছুক্ষন আগে হঠাৎ সে বলে উঠলো, - যদি আমার কিছু হয়ে যায় প্লীজ তুমি আরেকটা বিয়ে করে নিয়ো। কথা দাও। - আরে ধূর পাগলী তোমার কিছুই হবে না। দেখবে আমাদের কোল আলো করে আসবে একটা ফুটফুটে রাজকন্যা। - আল্লাহ যেন তাই করেন। .. অপারেশন থিয়েটারে প্রায় দুইঘন্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই শেষে পরাজিত হয় জান্নাত, আমার জান্নাত। যে ছিল আমার হৃদয়ের পুরোটা জুড়ে, ছিল আমার হৃদস্পন্দন হয়ে। হৃদস্পদন না থাকলে মানুষ কি বেঁচে থাকে? আমিও হয়তো বাঁচতাম না। তবে আমি এখনো বেঁচে আছি। কারণ জান্নাত আমাকে একা রেখে যায়নি। সে আমায় দিয়ে গেছে তারই এক ক্ষুদ্র সংস্করনকে। আমার মেয়ে নুসরাতকে। .. - বাবা ও বাবা উঠো না। দেখো সকাল হয়ে গেছে। সূর্য মামা ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করছে। - হুহ বাবুনি তুমি এত সকালে উঠেছ কেন? - ঘুম আসেনা তো। - কেন আসেনা? - তুমি আমায় কাল গল্প শোনাওনি তাই। - ও আচ্ছা। ঠিক আছে চলো হাত মুখ ধুয়ে আসি। - নাহ যাবোনা। আমি ঘুমাবো। - একটু আগে কি বলেছো? - নাহ ঘুমাবো না। চলো দাঁত ব্রাশ করি। আজ অনেক মজা। - কেন আজ মজা? - আজ স্কুল বন্ধ। তাই এত্তোগুলো মজা। .. এ আমার মেয়ে নুসরাত। সবেমাত্র সাত বছর পার হয়েছে। তৃতীয় শ্রেনীতে উঠেছে কিছুদিন আগে। জান্নাত চলে যাওয়ার পর নুসরাতই আমার বেঁচে থাকার সকল প্রেরনা। - বাবা বাবা আমি পার্কে যাবো। - আচ্ছা যাবো তবে তার আগে পেট ভরে ভাত খেতে হবে। - যদি না খাই? - তাহলে পার্কের আঙ্কেলরা পার্কে ঢুকতে দেবে না। - ওওওওওওওওওও। .. বিকেলে পার্কে গেলাম নুসরাতকে নিয়ে। ও শুধু লাফাচ্ছে। সেদিন টিভিতে একটা ব্যাঙ এর কার্টুন দেখেছে। তার পর থেকেও ও ব্যাঙয়ের মত লাফাচ্ছে। হাঁটতে গেলেই ও লাফ দেয়। - বাবুনি তুমি ব্যাথা পাবে। - নাহ পাবোনা। ব্যাঙ ব্যাথা পায় না। - তুমি কি ব্যাঙ বাবুনি? - হ্যা ইয়া বড় নীল ব্যাঙ। গাল দুটো ফোলা। এই কথা বলেই ও তার গালদুটো ফুলিয়ে দেখালো। এমন সময় কেউ একজন বলে উঠলো, - বাহ নীল ব্যাঙয়ের গালদুটো তো অনেক সুন্দর। আমি চমকে গেলাম কন্ঠটা শুনে। কারন এটা আমার অতি পরিচিত কারো কন্ঠস্বর। অতি আরাধ্য কন্ঠস্বর, যা শোনার জন্য রাতের পর রাত আমি জেগে থাকতাম। .. নীলু এসে দাঁড়িয়েছে আমার পাশে। আজ নয় বছর পর নীলুর সাথে দেখা হলো আমার। আমার জীবনের প্রথম প্রেম ছিল নীলু। দুই বছর চুটিয়ে প্রেম করেছি আমরা। তবে আমাদের ভাগ্যে হয়তো একসাথে জীবন কাটানো লেখা ছিল না। তাই হঠাৎ একদিন বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতই কোন খবর ছাড়াই নীলুর বিয়ে হয়ে যায়। নীলু আমাকে বিদায় পর্যন্ত জানায়নি। সে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। এতদিন পর তাকে দেখে আমি খুবই অবাক হয়েছি। .. - ও কি তোমার মেয়ে? (নীলু) - হ্যা আমার মেয়ে। (আমি) - বাহ দেখতে খুব কিউট। ভাবিও নিশ্চয়ই খুব সুন্দর। - হুম তোমার চেয়েও। - ভাবিকে দেখছি না যে। - নুসরাতের জন্মের সময়ই আমাকে রেখে অজানায় পাড়ি জমিয়েছে। .. আমার এই কথা শুনে নীলু বজ্রাহতের মত দাঁড়িয়ে রইলো। আমি ততক্ষনে নুসরাতকে কোলে তুলে নিলাম। আজ একটু বেশিই দুষ্টুমি করছে ও। শুয়ে থাকা একটা নেড়ি কুকুরের বাচ্চার লেজ নিয়ে টানাটানি করছিল। - বাবুনি, কুকুর তো ভাল না। ধরলে আমি বকা দেব। - তাহলে আমাকে ব্যাঙ এনে দাও। - আচ্ছা কালকে এনে দিব। - নাহ এখনি লাগবে। কি মুশকিল! এখন ব্যাঙ কোথা থেকে আনবো? - আসো মামণি আমার কাছে। (নীলু) নীলা হয়তে এতক্ষনে নিজেকে সামলে নিয়েছে। সে বলতেই নুসরাত নীলুর হাতের আঙ্গুল ধরে হাঁটতে শুরু করলো। - চলোনা কোথাও গিয়ে বসি। (নীলু) - হুম চলো ওই রেষ্টুরেন্টে বসা যাক। .. - মামণি তুমি কি খাবে? (নীলু) - আমি আইসক্রীম খাবো। (নুসরাত) - নাহ বাবুনি এই শীতে আইসক্রীম খেলে সর্দি লাগবে। (আমি) - তাহলে আমাকে ব্যাঙ এনে দাও। এত্তোগুলো ব্যাঙ। হাতের ইশারায় নুসরাত যতগুলো ব্যাঙ দেখালো ততগুলো ব্যাঙ এই ঢাকা শহরে পাবো কিনা সন্দেহ। তাই ওকে আইসক্রীমই খেতে দিলাম। - তা কেমন আছো তুমি? (নীলু) - ভাল আছি খুবই। (আমি) - আমাকে জীজ্ঞেস করবেনা? - ভাল থাকার জন্যই তো আমাকে ছেড়ে গিয়েছিলে। আশা করি ভাল আছো। - অমন করে বলোনা প্লীজ। খুব কষ্ট হয়। - কষ্ট হওয়ার কারণ দেখছি না। - আমার উপর এখনো রেগে আছো? - আপন মানুষ ছাড়া অন্য কারো উপর রাগ করার অধিকার আমার নেই। - কখনই কি আপন ছিলাম না? - আপন ভাবতাম। তবে সেটা আমার ভুল ছিল। আমি ভুলেই গিয়েছিলাম ধনী আর মধ্যবিত্তের মধ্যে কখনোই মিল হয় না। - বিশ্বাস করো আমি তোমাকে সত্যি ভালবাসতাম। - তাহলে কেন হঠাৎ করে ওই আমেরিকা ফেরত ছেলেকে বিয়ে করেছিলে? - আমি আসলে..........। - তুমি চেয়েছিলে নিজের ভবিষ্যৎকে নিরাপদ করে নিতে। কারন আমাকে বিয়ে করলে তোমার ভবিষ্যৎ অন্ধকারের মুখে পড়লেও পড়তে পারতো। কারন আমার নিজের ভবিষ্যৎই ছিল অন্ধকার। - আরমান প্লীজ আর......... - নীলু আমার যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। নুসরাত আবার সন্ধ্যার সাথে সাথেই ঘুমিয়ে পড়ে। এখন না গেলে ওকে আর রাতের খাবার খাওয়াতে পারবোনা। - আরেকটু থেকে যাও। - সময় নেই নীলু। ভাল থেকো। - আর কি দেখা হবে না? - না হওয়াটাই ভাল। .. নীলু চোখে পানি। আমারো চোখটা ঝাপসা হয়ে আসছে। শত হলেও প্রথম ভালবাসা। চাইলেও ভুলতে পারবো না। তবে হাজার শুকরিয়া যে নীলুকে আমার অর্ধাঙ্গিনী হতে হয়নি। নইলে যে আমি আমার জান্নাতকে পেতাম না। আর পেতাম না নুসরাত নামের এই ছোট্ট জান্নাতকে। - বাবা আমাকে ব্যাঙ এনে দিবা? - কয়টা লাগবে? - এত্তোগুলো নীল ব্যাঙ। - আচ্ছা কাল এনে দিব। চলো আমার কাঁধে উঠো। - হি হি কি মজা কি মজা। নাহ কাল নুসরাতকে কয়েকটা খেলনা ব্যাঙ এনে দিতেই হবে। .. লেখকঃ আরমান হোসেন


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৬৮৮ জন


এ জাতীয় গল্প

→ আমরা সবাই স্বার্থপর হয়ে গেছি:(:(:(
→ স্বার্থপর
→ স্বার্থপর লোক
→ আমি স্বার্থপর নই..
→ স্বার্থপর প্রেম
→ স্বার্থপর মেয়ে
→ #স্বার্থপর দুনিয়া পর্বঃ২
→ #স্বার্থপর দুনিয়া পর্বঃ১
→ স্বার্থপর মেয়ে
→ গল্প স্বার্থপর প্রেমিক লেখক => রাসেল খান
→ এক স্বার্থপর লোকের ঘটনা
→ স্বার্থপর ২
→ স্বার্থপর
→ স্বার্থপর

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন