বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা) -০৬

"ইসলামিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান আরাফাত হোসেন (০ পয়েন্ট)

X মূল: এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ অনুবাদ: আসাদ বিন হাফিজ _________________ আশেপাশের সমস্ত গোত্রকেও আমরা সাথে নিচ্ছি। মক্কায় সমবেত হওয়া ইতোমধ্যে শুরুও হয়ে গেছে।” “সমগ্র আরব একত্রিত করলেও তোমরা মুসলমানদের পরাজিত করতে পারবে না।” ওলীদ বলে- “বলতে পারি না যে, মুহাম্মাদের হাতে কোন জাদু আছে কি-না বা তার ধর্মবিশ্বাসই সত্য কি-না যে, তাদের হাতে বন্দি হয়েও তাদেরকে আমার খারাপ মনে হয়নি।” “তাহলে তো তুমি জাতির গাদ্দার।” হিশাম বলে ওঠে-“হয় তুমি গাদ্দার নতুবা জাদুগ্ৰস্ত। ঐ ইহুদী সরদারতো ঠিকই বলেছে যে, মুহাম্মাদের নিকট মূলত কোন নতুন আকীদা-ধর্ম নেই। সে এক অদ্ভুত জাদুর শক্তি প্রাপ্ত হয়েছে মাত্র।” “জাদুই হবে, অন্যথায় কুরাইশ বাহিনী বদরে পরাজিত হবার নয়।” খালিদ বলেন । ওলীদ তাদের কথা যেন শুনছিলই না। তার ঠোঁটে ছিল মুচকি হাসির রেখা। সে বার বার ঘাড় ফিরিয়ে মদীনার পানে তাকাচ্ছিল। মদীনার অদূরে জুলহুলায়ফা নামক স্থানে তিন ভাই যখন পৌঁছে তখন রাত হয়ে যায়। গাঢ় অন্ধকারে ছেয়ে যায় জগৎ । রাত যাপনের উদ্দেশে তারা সেখানেই যাত্রা বিরতি করে । ভোরে দেখা যায় ওলীদ লোপাত্তা। তার ঘোড়াটিও নেই। খালিদ ও হিশাম কিছুক্ষণ চিন্তার পর এ সিদ্ধান্তে পীেছল যে, ওলীদ মদীনায় ফিরে গেছে। তারা তার উপর এক ধরনের প্রভাব অনুভব করছিল। আর তা ছিল মুসলমানদেরই প্রভাব। শেষে দু’ভাই মক্কায় ফিরে আসে। কিছুদিন পর মদীনা হতে ওলীদের মৌখিক বার্তা পায় যে, সে মুহাম্মাদকে আল্লাহ্র রাসূল হিসেবে মেনে নিয়েছে এবং রাসূল (স)-এর ব্যক্তিত্ব ও কথায় এতই প্রভাবিত হয় যে, অবশেষে ইসলামই গ্ৰহণ করে ফেলে। ঐতিহাসিকগণ লিখেন, ওলীদ ইবনে ওলীদ (রা) নবী করীম (স)-এর বিশেষ দৃষ্টি লাভ করে। ধন্য হন এবং দৃঢ় ধমীয় বিশ্বাসসহ কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করে ব্যাপক সুখ্যাতি অর্জন করেন। দুই কারণে সেদিন খালিদ ক্রোধাম্বিত হয়। প্রথমত তার ভাই চলে গেছে। দ্বিতীয়ত অনৰ্থক চার হাজার দিরহাম গেল। মুসলমান ও কুরাইশদের মধ্যে ভয়ানক শক্ৰতা সৃষ্টি হওয়ার কারণে মুসলমানরা এ অর্থ ফেরৎ দেয় না। অর্থ ফেরৎ না দেয়ার অন্য কারণ হলো, ওলীদ (রা) রাসূল (স)কে জানিয়ে দেন যে, কুরাইশরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আঘাত হানতে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং এ উদ্দেশে বেশুমার অর্থকড়ি জোগাড় করেছে। খালিদ মদীনা পানে চলছেন সম্মুখের দিক থেকে উটের কুচের ন্যায় বিশাল কি যেন জমিন ফুড়ে উপরে উঠতে থাকে। খালিদ জানতেন এটা মদীনার ৪ মাইল উত্তরে উহুদ পাহাড়। ইতােমধ্যে খালিদ অপেক্ষাকৃত উঁচু টিলায় উঠতে শুরু করে । “উহুদ... উহুদ।” খালিদের মুখ থেকে এক অস্ফুট আওয়াজ বের হয় এবং তাকে তাঁর উচু আওয়াজ শুনাতে থাকে-“আমি আবু সুলাইমান... আমি সুলাইমানের বাবা।” এর সাথেই একটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ভয়ঙ্কর ধ্বনি এবং হাজার হাজার অশ্বের হ্রেষাধবনি ও তরবারির ঝনঝনি আওয়াজও তার কানে বাজতে থাকে। তিনি এ যুদ্ধের জন্য বড় অস্থির হয়ে অপেক্ষা করছিলেন এবং অপূর্ব রণকৌশলে যুদ্ধও করেন। চার বছর আগের ঘটনা। তৃতীয় হিজরী সন মোতাবেক ৬২৫ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে মদীনা হামলা করতে প্ৰস্তুত সেনাবাহিনী মক্কায় সমবেত হয়ে এদের সংখ্যা ৩ হাজার। ৭শত বর্মধারী দু’শ অশ্বারোহী। তিন হাজার উট ছিল যুদ্ধান্ত্র ও রসদপত্রে বোঝাই। এ বিশালবাহিনী যাত্রার জন্য নির্দেশের অপেক্ষায় ছিল। গতকালের ঘটনার মত খালিদ-এর মনে পড়ে যে, তিনি এ বিশাল বাহিনী দেখে অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছিলেন। প্ৰতিশোধের দাবানল নির্বাপিত করার সময় এসে গিয়েছিল। আবু সুফিয়ান ছিল এ বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। খালিদ ছিলেন। এক ব্যাটালিয়ন সৈন্যের কমান্ডার। তার বোনও এ বাহিনীর সাথে গিয়েছিল। এ ছাড়া আরো চৌদ্দ জন নারী যেতে প্ৰস্তুত ছিল। এদের মধ্যে আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দাসহ আমর ইবনুল আস এবং আবু জাহেলের পুত্র ইকরামার বিবিরাও ছিল। অবশিষ্টরা ছিল শিল্পী-গায়িকা শ্রেণীর। সকলের কষ্ঠে ছিল হৃদয়বিদারক আওয়াজ। তাদের সাথে বাদ্যযন্ত্রও ছিল। যুদ্ধ ক্ষেত্রে এসব উত্তেজনাকর ও আবেগঘন গীত গেয়ে গেয়ে সৈনিকদের মনোেবল চাঙ্গা রাখা এবং বদর যুদ্ধে নিহতদের কথা বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়া। আফ্রিকার এক হাবশী গোলামের কথা খালিদের বিশেষভাবে স্মরণ হয়। তার নাম ছিল ওয়াহাশী বিন হারব। সে কুরাইশ সর্দার যুবাইর বিন মুতঙ্গমের ক্ৰীতদাস ছিল। সে দীর্ঘকায়, কৃষঞাঙ্গ এবং খুবই শক্তিশালী ছিল। বর্শা নিক্ষেপে সে ছিল সিদ্ধহস্ত। তার কাছে ছিল আফ্রিকার তৈরী বর্শা। তার আফ্ৰিকী আরেকটি নাম ছিল যুদ্ধ প্রিয় দেখে মুনিব যুবাইর তার এই আরবী নাম রেখেছিল। “বিন হারব।” যুদ্ধ যাত্রার আগে যুবাইর বিন মুতঙ্গম তাকে বলে- “আমি আমার চাচার খুনের প্রতিশোধ নিতে চাই। কিন্তু আমার সে সুযোগ হয়ত হবে। না। বদর রণাঙ্গনে মুহাম্মাদের চাচা হামযা আমার চাচাকে খুন করেছে। এ যুদ্ধে হামযাকে খুন করতে পারলে তুমি আযাদ । “হামযা আমার নিক্ষিপ্ত বিশায় নিহত হবে।” মানিবের (আবেগময়) প্ৰস্তাবে সাড়া দিয়ে ওয়াহশী বলে। সৈন্যদের সাথে আগত মহিলারা যেখানে ছিল সেখান দিয়ে এই উষ্টারোহী হাবশী গোলাম যাচ্ছিল। “আবু ওসামা” হঠাৎ করে কোন মহিলা ডাক দেয়। এটা ওয়াহশীর আরেক নাম। ডাক শুনেই সে থমকে দাঁড়ায়। আওয়াজ অনুসরণ করে দৃষ্টিপাত করতেই দেখতে পায় যে, আবু সুফিয়ানের স্ত্রী তাকে ডাকছে। সে তার কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। “আবু ওসামা” হিন্দা বলতে শুরু করে ভয় নেই। আমিই তোমাকে ডেকেছি। আমার হৃদয়ে প্রতিশোধের বহ্নিশিখা দাউ দাউ করে জ্বলছে। তুমি এ আগুন ঠাণ্ডা কর আবু ওসামা!” “বলুন, আমি কি করতে পারি।” গোলাম আবেগতাড়িত হয়ে বলল “সেনাপতির স্ত্রীর হুকুমে নিজে কুরবান হতে আমি প্রস্তুত আছি।” “বদরে আমার পিতাকে খুন করেছে। হামযা।” হিন্দা বলে “হামযাকে তুমি ভাল করেই চেন। চেয়ে দেখ, আমার সমস্ত শরীর স্বর্ণালঙ্কারে ঢেকে রয়েছে। হামযাকে খুন করতে পারলে এসব অলঙ্কারের মালিক হবে তুমি।” ওয়াহশী হিন্দার শরীরস্থ অলঙ্কারের প্রতি একবার লোভাতুর দৃষ্টি দিয়ে মুচকি হেসে দৃঢ়কণ্ঠে বলল অবশ্যই আমি হামযাকে হত্যা করব।” উহুদ যুদ্ধে সৈন্যদের গমনাগমনের কথা খালিদের মনে পড়ে। যে পথে তিনি যাচ্ছেন সে পথ দিয়েই সৈন্যরা সেদিন মদীনায় পৌছেছিল। তিনি সেদিন একটি উচুটিলায় দাঁড়িয়ে সৈন্যদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। তখন গর্বে তার বুক ফুলে গিয়েছিল। মদীনার মুসলমানদের প্রতিও তার অন্তরে সামান্য দয়ার উদ্রেক হয়েছিল। কিন্তু এই দয়ানুভব সেদিন তাকে ব্যথিত করেনি, বরং আনন্দিতই করেছিল। কেননা এটা ছিল রক্তের বৈরীতা। সরাসরি মান-মৰ্যাদার বিষয়। মুসলমানদের পিষ্ট করাই ছিল তার একমাত্র অঙ্গীকার। উহুদ যুদ্ধের বহু দিন পর খালিদ জানতে পারেন যে, মক্কায় সৈন্যদের উপস্থিতি ও যুদ্ধ-প্ৰস্তুতির সংবাদ রাসূল (স) পূর্বেই জানতে পেরেছিলেন। শুধু তাই নয়, সৈন্যদের যাত্রা, চলার গতি-বিধি, যাত্রাবিরতি এবং মদীনা থেকে তারা কতটুকু দূরত্বে আছে তারও সঠিক খবর তিনি যথারীতি রেখেছিলেন। মদীনার উদ্দেশে সৈন্যদের মক্কা ত্যাগের খবর হযরত আব্বাস (রা) সুকৌশলে নবী করীম (স)কে অবহিত করেছিলেন। মদীনার অনতি দূরে উহুদ পাহাড়ের কাছাকাছি একটি স্থানে কুরাইশ বাহিনী তাঁবু স্থাপন করে। স্থানটি ছিল সবুজ-শ্যামল এবং চমৎকার। পর্যাপ্ত পানিও ছিল। খালিদ ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি যে, ইতোমধ্যেই দু’ মুসলিম গুপ্তচর এসে সমগ্ৰ বাহিনীর উপর হাল্কা জরীপ চালিয়ে মদীনায় গিয়ে নবী করীম (স)কে বিস্তারিত খবর অবগত করেছেন। ৬২৫ খিষ্টাব্দের ২১ শে মার্চ, এদিন রাসূলে করীম (স) মুসলিম বাহিনীকে যাত্রার নির্দেশ দেন। শাইখাইন’ নামক একটি পাহাড়ের পাদদেশে এসে মুসলিম বাহিনী তাঁবু ফেলেন। নবীজীর সঙ্গে সৈন্য সংখ্যা ছিল একহাজার। একশ সৈন্যের মাথায় শোভা পাচ্ছিল লৌহ শিরস্ত্রাণ। মোজাহিদদের নিকট ঘোড়া ছিল মাত্র দুটি। দুটাের একটি ছিল রাসূল (স)-এর কাছে। এ যুদ্ধে মুসলমান নামধারী মুনাফিকদের চেহারা থেকে কপটতার মুখোশ খুলে পড়ে। মদীনার কিছু লোক বাহ্যত ঈমান গ্ৰহণ করলেও আন্তরিকভাবে তারা ইসলাম গ্ৰহণ করেনি। কিন্তু তারা এতই ধূর্ত ও সতর্ক ছিল যে, তাদেরকে আলাদা করা ও চিহ্নিত করা ছিল খুবই কঠিন। উহুদ যুদ্ধ মুনাফিকদের কপটতা প্ৰকাশ করে দেয়। কে সাচ্চা মুসলমান আর কে কপটাচারী তা চিহ্নিত হয়ে পড়ে। মুজাহিদ বাহিনী মদীনা হতে শাইখাইন পাহাড়ের উদ্দেশে যাত্রা করলে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই নামে মদীনার এক প্রভাবশালী ব্যক্তি রাসূল (স)-এর কাছে এসে এই মর্মে আপত্তি তোলে যে, সংখ্যায় কুরাইশ বাহিনী মুসলিম বাহিনীর তিনগুণ। এমতাবস্থায় মদীনার বাইরে গিয়ে যুদ্ধ করা ঠিক হবে না; বরং আমরা মদীনার ভিতরে থেকে শক্রর আগমনের অপেক্ষা করি। এখানে বসেই আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে শক্রর মোকাবিলা করব। রাসূল (স) অন্যান্য নেতৃবৃন্দের নিকট পরামর্শ চাইলেন। কিন্তু অধিকাংশের মতামত আসে মদীনার বাইরে গিয়ে যুদ্ধ করার পক্ষে যদিও ব্যক্তিগতভাবে নবী করীম (স)-এর মতামত ছিল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই এর মত, তবুও রায়ের আধিক্যের দিকে বিবেচনা করে তিনি মুসলিম বাহিনীকে এগিয়ে যাবার নির্দেশ দেন। রাসূলের (স)-এর সিদ্ধান্ত আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই-মেনে নিতে পারেনি। সে মুসলিম বাহিনীর সাথে যেতে অস্বীকার করে। তার দেখাদেখি আরও ৩০০ সৈন্য তার অনুসরণ করে মূল বাহিনী থেকে পেছনে সরে যায়। এভাবে সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, এরা সকলেই মুনাফিক। আর আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই এদের নেতা। এখন তিন হাজারের মোকাবিলায় মুসলিম বাহিনী মাত্র ৭০০ । তারপরেও নবী করীম (স) ঘাবড়ে যাননি। তিনি এই মুষ্টিমেয় সৈন্য নিয়েই অগ্রসর হন এবং উহুদ পাহাড়ের নিকট শাইখাইন নামক স্থানে গিয়ে পুরো বাহিনীকে বিন্যস্ত করেন। খালিদ পাহাড়ের এক উচু শৃঙ্গে দাঁড়িয়ে মুসলিম বাহিনীর সুবিন্যাস স্বচক্ষে দেখেন এবং সর্বাধিনায়ক আবু সুফিয়ানের অনুমতিক্রমে স্বীয় অধীনস্থ সৈন্যদের জন্য একটি সুবিধাজনক স্থান বেছে নেন। রাসূলে করীম (স) মুসলিম বাহিনীকে প্রায় এক হাজার গজ দূর-দূরান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে দেন। পেছনে উপত্যকা। এক পাশে পাহাড়ের সারি, যা প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে পেছন দিক হতে মুসলিম বাহিনীকে রক্ষার জন্য উপযুক্ত ছিল। কিন্তু অপর পাশ ছিল সম্পূর্ণ খোলা। যে কোন সময় এ দিক দিয়ে শত্রুপক্ষের আক্রমণের সম্ভাবনা ছিল। রাসূলে করীম (স) সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করলেন। তিনি উন্মুক্ত গিরিপথের এক জায়গায় ৫০ জন সুনিপুণ তীরন্দাজ মোতায়েন করেন। হযরত আব্দুল্লাহ বিন জুবাইর (রা) ছিলেন এ তীরন্দাজ বাহিনীর অধিনায়ক। “দায়িত্ব বুঝে নাও আব্দুল্লাহ্” রাসূল (স) তাঁকে জরুরী দিক নির্দেশনা দান করতে গিয়ে বলেন- পেছনে সতর্ক দৃষ্টি রাখবে। আমাদের পেছনের দিক হতে দুশমনের আনাগোনা হতে পারে, যা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক। তাদের অশ্বারোহীর অভাব নেই। তারা পিছন দিক হতে আমাদের উপর আক্রমণ করতে পারে। তোমার তীরন্দাজ বাহিনীকে এই অশ্বারোহী সৈন্যদের মোকাবিলায় প্ৰস্তুত রাখবে। শত্রুপক্ষের পদাতিক বাহিনী নিয়ে আমার কোন ভয় নেই।” ওকিদী এবং ইবনে হিশামসহ সকল নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক লিখেন যে, রাসূলে করীম (স) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা)কে স্পষ্টভাবে এ কথা বলেছিলেন যে, “আমাদের পেছন দিক একমাত্র তোমার সতর্কতা ও বিচক্ষণতার ফলে রক্ষিত থাকবে। তোমার সামান্য ভুল কিংবা অসাবধানতা আমাদেরকে মারাত্মক ক্ষতি ও চরম পরাজয়ের দিকে ঠেলে দিতে পারে...। আব্দুল্লাহ। মনোযোগ দিয়ে শোন, শক্ৰদের পালিয়ে যেতে এবং আমাদের বিজয়ী হতে দেখলেও নিজ স্থান ছেড়ে যাবে না। অদ্রুপ আমাদের পরাজয়ের সম্মুখীন হতে দেখে তোমার বাহিনীর মাধ্যমে আমাদের সাহায্য করা প্রয়োজন মনে হলেও নিজেদের স্থান ত্যাগ করবে: না। পাহাড়ের এই উপরিভাগ যেন দুশমনদের দখলে চলে না যায়। এস্থান তোমাদের দখলে। এখান থেকে নিচে যতদূর পর্যন্ত তীরন্দাজদের তীর পৌঁছতে পারে সবটাই থাকবে তোমাদের কর্তৃত্বে।” খালিদ মুসলমানদের সৈন্যবিন্যাস গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে আবু সুফিয়ানকে বলে, আমার মনে হয় মুসলমানরা বিস্তীর্ণ ময়দানে যুদ্ধ করবে না। আবু সুফিয়ানের ছিল অধিক সৈন্যের গর্ব। ফলে সে চাচ্ছিল যুদ্ধ বিস্তীর্ণ ময়দানে হােক। যাতে তার পদাতিক ও অশ্বারোহী বিশাল বাহিনী মুসলমানদেরকে পদপিষ্ট করে নিশ্চিহ্ন ও নিস্পেষিত করে ফেলে। অপরদিকে খালিদ ছিলেন অভিজ্ঞ সমরকুশলী। অতর্কিতে পেছনে কিংবা কোনো পার্শ্বভাগে হামলা, গেরিলা হামলা, সৈন্য বিন্যাস এবং তাদের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ-এসবই ছিল তার যুদ্ধবিদ্যার অন্তৰ্গত। তিনি নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে মুসলিম বাহিনীর সৈন্য বিন্যস্তকরা দেখেই বুঝতে পারেন যে, নিঃসন্দেহে মুসলমানরা রণাঙ্গনে পূর্ণ নৈপুণ্য দেখাতে যাচ্ছে।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩২১ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now