বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার
হালিউরা গ্রামে 3 বর্গ কিমি. জায়গা
জুরে অবস্থিত কুখ্যাত কুকিয়ার জঙ্গল...
জঙ্গলে আছে নানা প্রজাতির গাছ, কিছু
বুনো প্রাণী... কিন্তু কিছুদিন আগেও মানুষ
এই জঙ্গলে যাওয়ার সাহস পেতনা... কারন
কি...?? জায়গাটি নিয়ে ছিল নানা
ভৌতিক কাহিনি... ছোটবেলা থেকেই
আমি এই জায়গাটি নিয়ে নানা কাহিনি
শুনে আসছি... এই জঙ্গলে রাতের বেলা তো
দুরের কথা মানুষ দিনের বেলাতেও কেও
যায়নি... জংগলের ধার দিয়ে দিনের
বেলাই মানুষ একলা গেলে শুনতে পেত
নানা ভৌতিক শব্দ... আর রাতের বেলা
কেও একা অথবা সাথে নিয়েও গেলেও
দেখত জঙ্গলের ভিতর সাদা পোশাক ধারি
কয়েকজন হাঁটছে... আবার মাঝে মাঝে
ধর্মীয় তপ ধ্বনি শোনা যেত... আর
জঙ্গলের পাশ দিয়েই চলে গিয়েছিল একে
বেকে একটি খাল... খালের অই পারে ছিল
রাস্তা... তবু অই রাস্তা দিয়ে রাতের
বেলা তো দুরের কথা দিনের বেলাই কেও
একলা যাওয়ার সাহস পেতনা... কেও যদি
ভুল করে কনদিন অই জঙ্গলে একা চলে
গিয়েছিল সে আর সুস্থ শরীর নিয়ে
ফিরতনা... সবারি একটা সমস্যা হত এসে
কেও কথা বলতে পারতনা এবং হঠাত করে
একটু পর পর আসছে এই যে আসছে বলে
চিৎকার করে উঠত... তারপর ৪-৫ ঘণ্টার
মধ্যে দেখা দিত জ্বর আর রক্তবমি... এক
থেকে দের দিনের মাথায় লোকটি মারা
যেত বা কেও যদি বেচে থাকতো সে হয়ে
যেত পাগল... কিন্তু ডাক্তার রা কখনো
মরার আসল কারন বলতে পারেনি... আবার
কারো কারো শরীরে মরার পর ভেসে উঠত
হাতের আঙ্গুলের ছাপ আবার অনেক সময়
দেখা যেত গলার মধ্যে আঙ্গুলের ছাপ...
তবে সবসময় ৩ আঙ্গুলের ছাপ পাওয়া যেত...
এভাবে কিছু ঘটনা ঘটার পর থেকে অই
জঙ্গলে কেও যাওয়ার সাহস করেনি... প্রায়
৫০ বছরের মধ্যে অই জঙ্গলে একজন
গিয়েছিল... সে সম্পর্কে আমার
পারাপ্রতিবেশির মামা হত... আমি তাকে
কখনো দেখিনি... ঘটনা শুনেছি মাত্র...
জঙ্গলের আরেক পাশ দিয়ে যে পাশে খাল
যায়নি সেপাশে ছিল কিছু জমি... কেও
সেখানে চাষ করতনা... কারন ধান
লাগালে দেখা যেত পরদিন ধান খেতে কে
যেন পারিয়ে রেখে গেছে... মনে হত
কমপক্ষে কয়েকশো লোক এসে খেত নস্ত
করেছে... কিন্তু ওখানে দিনের বেলাই
মানুষ ধান চাষ করতে ১০-১৫ জন একসাথে
এবং সন্ধার আযানের ৩০ মিনিট আগে
সবাই ফিরে আসত... সেখানে রাতের
বেলাই ধান ভাঙবে কে...!!!! কিন্তু আমার
সেই মামা ছিল সাহসী... ধান খেতের
পাশেই জঙ্গলের একটু ভিতরে ছিল এক
বিশাল তেতুল গাছ... গাছে প্রচুর তেতুল হত
এবং গ্রামের মানুষ দূর থেকে শুধু দেখত
কিন্তু কখনো আনবার সাহস করেনি... আজ
থেকে ২০ বছর আগে যখন আমার জন্ম হয়নি
তখন এক তেতুল এর সময়ে মামা তেতুল
গাছে তেতুল দেখে ভাবল কি আর হবে
গিয়ে কিছু তেতুল নিয়ে আসি... যেই ভাবা
সেই কাজ উনি কাও কে না জানিয়ে চলে
গেল তেতুল আনতে... কিন্তু সেই যে গেল
আর ফিরে আসেনি... আজ পর্যন্ত তার আর
কোন খবর পাওয়া যায়নি... এর পর থেকে
আর কেও যায়নি ওখানে আর গ্রামের
লোকজন জঙ্গল থেকে আরও দূর দিয়ে
রাস্তা তৈরি করে...
আমি ছোটবেলা থেকে এই সব কাহিনি
শুনতাম... আর ভাবতাম কি আছে অই
জঙ্গলটাতে...!!! রাস্তা দিয়ে কারো সাথে
যাওয়ার সময় তাকিয়ে থাকতাম অই
জঙ্গলটার দিকে... কখনো চোখে পরেনি
কিছু... তারপর গত বছর ব্যাপারটা নিয়ে
আমি খুব কৌতূহলী হই... ঘটনার সূত্রপাত
পাত জানতে এখানে সেখানে ঘুরি...
কিন্তু কোথাও ভাল মত তথ্য পাইনা... তবে
একটা বিষয় জানতে পারি আজ থেকে
প্রায় ২০০ বছর আগে এখানে কিছু একটা
হয়েছিল জঙ্গলের ভিতরে... কিন্তু কি
হয়েছিল তা একেকজন একেক ভাবে বলে...
হঠাত একদিন এই বিষয়ে কথা বলি এই
গ্রামের প্রবীণ এবং একজন ঐতিহাসিক
গিয়াস উদ্দিন এর সাথে... উনি আমাকে
বলেন এই বেপারে বিস্তারিত...
ঘটনা হল আজ থেকে ২০০ বছর আগে
স্থানীয় জমিদার এর ব্যাবহার ছিল খুব
খারাপ... এখানে বেশি ছিল মুসলমান আর
হিন্দু... আর কিছু সংখ্যক ছিল বৌদ্ধ...
তারা তখন সংখ্যায় ছিল ৩০০ এর কিছু
বেশি... জমিদার খুবি অত্যাচারী ছিল...
বৌদ্ধদের কোন এক অজানা কারনে সে
দেখতে পারতনা... বৌদ্ধরা ছোট খাটো
অপরাধেও ফাসির সাজা পেত... এই নিয়ে
বৌদ্ধরা একদিন প্রতিবাদ করে... সেই দিন
রাতেই ঘটে আসল ঘটনা... মোট ২৭৯ জন
বৌদ্ধকে ধরে নিয়ে আসা হয় রাতের
আধারে... তারপর থেকে তাদের আর
কাওকে খুজে পাওয়া যায়নি... এর কিছুদিন
পর থেকেই সেই জঙ্গলের আসে পাশে
ঘটতে থাকে নানা কাহিনি... তারপর
থেকেই এই কাপর পরা লোক,কেও গেলে
ভাল ভাবে ফিরত আসা, এবং দুই দিনের
মাথায় মারা যাওয়া না হয় পাগল হওয়া
সহ নানা কাহিনি ঘটে... তখন থেকেই এই
জঙ্গলে এই অবস্থা... রাস্তা ঘাট, গ্রামে
উন্নয়ন, বিদ্যুতের আগমন ঘটলেও এই জঙ্গল্টি
থেকে যায় এখনো মানুষের অজানা... কেও
জানেনা কেন কাপর পরে কেও ঘুরে বা
এটা কে...?? আবার কেও জানেনা কেন ধান
খেত নষ্ট হয়... তবে অত্তাছার এখন আগের
মত না... এখন এত সমস্যা হয় না... তবু কেও
একলা যায়না সেখানে... দলবেঁধে যাওয়া
হয়ত সম্ভব কিন্তু কেও যায়নি...
ঘটনা জানার পর থেকে আমি ব্যাপারটা
নিয়ে কৌতূহলী হয়ে যাই... দিনের বেলায়
একদিন আমি আর আমার দুই তিন বন্ধু ৪-৫
ঘণ্টা অই জঙ্গলে ঘুরে আসি... কিন্তু
আমাদের কিছুই হয়নি... বেরে যায় সাহস...
আমি আর আমার বন্ধু সজীব আরেকদিন
চলে যাই দুই জন আবার সেই জঙ্গলে... আর
আমরা এই সাহস পাই আমার এক জসীম
নামের মামা থেকে... উনি আমাকে
বলেছিলেন ইমন ভয় পেলে কোনদিন
জয়করা যায়না... তারপর থেকেই বেরে যায়
আমার সাহস।
..............সমাপ্ত...............
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...