বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

অভিমান

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান অনভুতিহীন লেখক (০ পয়েন্ট)

X গল্প : ♥ অভিমান ♥ . . . > আপনি প্রতিদিন আমার পিছু পিছু আসেন কেন? (রাগী চেহারায় আমার দিকে তাকিয়ে কথাটা জিজ্ঞেস করলো) > কো.. কোই না তো। আমি আপনার পিছু নিতে যাবো কেন? (কথাটা বলার সময় ভয়ে তোতলানো শুরু করছিলাম) > সেটা আপনিই ভালো জানেন। তবে কিছুদিন ধরে আমি লক্ষ করছি আপনি আমাকে ফলো করেন। > আসলে এই রাস্তা দিয়ে আমি অফিসে যাই। আর আপনিও হয়তো ঠিক সেই সময় বের হোন। তাই আপনার মনে হয় আমি আপনাকে ফলো করছি।(বাঁচার জন্য একটু মিথ্যে বললাম) > হয়তো.... তারপর সে চলে গেলো। ওহহহহ.... এবারের যাত্রায় বেঁচে গেলাম। যেভাবে আমার দিকে তাকাচ্ছিলো তাতে তো আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম। . এবারে পরিচয়টা দেয়া যাক... আমি তানিম। এবারে অনার্স ২য় বর্ষে পড়াশুনা করছি। পড়ালেখায় আমি কোনোকালেই ততটা ভাল ছিলাম না। তাই হয়তো কাউকে পটাতেও পারিনি। তবে হ্যাঁ, একটা মেয়েকে দেখে অনেক ভাল লাগছিল। তাই তার পিছনে ঘুরতে শুরু করলাম। আর সেই মেয়েটি হলো এতক্ষন যার সাথে কথা বলছিলাম। ওর নাম সিন্থিয়া। আসলে সিন্থিয়ার সাথে আমার দেখাটা ছিল একটা ফুলের দোকানে বসে। আমি আমার ফ্রেন্ডের জন্মদিনের উপহারের জন্য কিছু ফুল কিনতে গিয়েছিলাম। আর সিন্থিয়াও তখন ঐখানে ফুল কিনতে আসে। তখন সিন্থিয়াকে দেখে আমার খুব ভালো লেগে যায়। সিন্থিয়ার গায়ের রং ততটা ফর্সা না হলেও তার শ্যামলা বর্নের মাঝে একটা মায়া বিরাজ করে। মুখের দিকে তাকালে মনে হয় কিছু না বলা কথা বলতে চাইছে। আর তার চোখদুটি চারদিকে কি যেন খুঁজছে। সিন্থিয়াকে নিয়ে একটু ভাবনার মধ্যে চলে গিয়েছিলাম। ভাবনা থেকে যেই বাস্তবে পদার্পন করলাম দেখি সিন্থিয়া চলে যাচ্ছে। আমি ওর পিছু পিছু ছুটে গেলাম। এর মধ্যে রিক্সায় উঠে চলে গেল। কি আর করার! আমিও চলে আসলাম। রাতে কিছুতেই ঘুম আসছে না। শুধু সিন্থিয়ার অপরূপ সৌন্দর্যময় চোখদুটি শুভ্র মেঘের বেলার মত আমার সামনে ভাসছে। অনেক কষ্টে রাতে একটু নিদ্রায় গেলাম। পরেরদিন সকালে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি। কিছুক্ষন পর হঠাৎ আমার চোখ একটা জায়গায় আটকে যায়। কারন সেখানে আমি সিন্থিয়ার মত কাউকে দেখতে পেয়েছি। তারপর সেখানে চলে গেলাম। গিয়ে তো আমি পুরোই অবাক। কারন আমি যাকে দেখছি সে সিন্থিয়াই ছিল। ও আমাদের ভার্সিটিতে পড়ে সেটাই আমি জানতাম না। তারপরে সিন্থিয়ার প্রতি ভালবাসাটা যেন আরও বেড়ে গেল। পরেরদিন ভার্সিটিতে এসে প্রথমে সিন্থিয়াকে খুঁজতে থাকি। অবশেষে তাকে দেখতে পাই একাকী বসে আছে। তখন মনে মনে ভাবলাম, যাই এখন সিন্থিয়ার সাথে কথা বলি। কারন এটাই ছিল সিন্থিয়ার সাথে কথা বলার উপযুক্ত সময়। কিন্তু কথা বলা আর হয়ে উঠেনি। কারন আমি তার কাছে যাওয়ার আগেই সে চলে যায়। তারপর থেকেই তার পিছনে ঘুরতে থাকি। কিন্তু কখনও কথা বলতে পারিনি। কারন একটা ভয় কুড়েকুড়ে খাচ্ছিল। যদি সিন্থিয়া না করে দেয়। তাই সাহস করে কিছু বলিনি। তবে ওর পিছনে ঘুরতে ঘুরতে আমি নিজের থেকেও সিন্থিয়াকে অনেক বেশি ভালবেসে ফেলেছি। এতদিন তার পিছু নেয়ার পর আজকে সিন্থিয়া আমার সাথে কথা বলল। আর সেটা তো আগেই বললাম কি কথা হয়েছে। আমি নাকি তাকে ফলো করি। যাইহোক, এবারের যাত্রায় তো বেঁচে গেলাম। পরেরদিন সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে ভার্সিটিতে চলে যাই। আজকে সিন্থিয়াকে বলবোই যে,আমি তোমাকে ভালোবাসি! তবে সমস্যা হলো সিন্থিয়ার সামনে গেলেই আমার সব কথা যেন হারিয়ে যায়। এটাই হয়তো ভালোবাসা। কিছুক্ষনপর সিন্থিয়াকে দেখে আমি ওর সামনে গিয়ে দাড়াই। আমাকে দেখে সিন্থিয়া তো পুরোই অবাক! > আপনি? (সিন্থিয়া) > না মানে.. হ্যাঁ আমি, আপনি এখানে? (আমি) > প্রশ্নটা তো আমার। আপনি এই জায়গায় কি করছেন? (সিন্থিয়া) > আমি তো এই ভার্সিটিতে পড়ি।(আমি) > দাড়ান দাড়ান...তাহলে সেদিন যে বললেন আপনি কোথায় যেন কাজ করেন? (সিন্থিয়া একটু সন্দেহজনক ভাবে প্রশ্নটা করল) > না মানে...হ্যাঁ করিতো, সেটা পার্ট টাইম জব। (খুব ভয়ে ভয়ে উত্তরটা দিলাম) > ও আচ্ছা। এবারে বুঝলাম। আমি সিন্থিয়া, অনার্স ১ম বর্ষ। > আমি তানিম। আপনার থেকে একটু উপরে। > মানে? (সিন্থিয়া) > মানে,আমি অনার্স ২য় বর্ষে পড়ি। (আমি) ও...আচ্ছা, এখন তাহলে আসি। তারপর সিন্থিয়া চলে গেল। এই ১ম বার কোনো মেয়ের সামনে কম ভয় নিয়ে কথা বলতে পারলাম। তাও আবার সিন্থিয়ার সাথে। আসলে মেয়েটা ভিতর থেকে একরকম আর বাহির থেকে আরেকরকম। কখনও খুব চিন্তিত, কখনও খুব রাগী চেহারা নিয়ে বসে থাকে আবার কখনও খুব হাসিখুশি। সত্যিই মেয়েটাকে খুব অদ্ভুত লাগে। রাতে খাবার খেয়ে শুতে গেলাম। ঘুম আসছে না। আসবেই বা কি করে! সারাক্ষণ যদি সিন্থিয়াকে নিয়ে ভাবতে থাকি তাহলে তো ঘুম পালাবেই। আজকে সিন্থিয়াকে আমার ভালোবাসার কথা জানাবো এই প্রতিজ্ঞা করেই বাসা থেকে বের হয়েছি। ক্যাম্পাসে গিয়ে সিন্থিয়াকে খুঁজতে লাগলাম। কোথাও খুঁজে পাচ্ছিনা। খুব কষ্ট হচ্ছিল যখন সিন্থিয়াকে কোথাও পেলাম না। অবশেষে বাসায় চলে আসলাম। কয়েকদিন ধরে সিন্থিয়াকে অনেক খুঁজেছি কিন্তু কোথাও পাইনি। এতে কষ্টটা অনেক বাড়তে লাগলো। ভিবিন্ন চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিল। ওর কিছু হয়নি তো ! আজকে ভার্সিটি থেকে ফেরার পথে আমি সিন্থিয়াকে দেখতে পাই। দেখি একটা রিক্সায় করে যাচ্ছে। আমিও ওর পিছু নিতে থাকি। অবশেষে রিক্সা গিয়ে একটা বাড়ির সামনে দাড়ায়। আমি তাড়াতাড়ি সিন্থিয়ার কাছে চলে যাই। সিন্থিয়াকে পিছন থেকে ডাক দেই। > তুমি... এখানে? (সিন্থিয়া অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো) > তোমার সাথে একটা কথা ছিল। (আমি) > হ্যাঁ বলো! (সিন্থিয়া) > তুমি এতদিন ভার্সিটিতে যাওনি কেন? (আমি) > আসলে একটা কাজে ছিলাম তাই যাইনি। (সিন্থিয়া) > আসলে সিন্থিয়া কথাটা তোমাকে কিভাবে বলবো বুঝতে পারছি না। দেখো সিন্থিয়া আমি কখনো কোনো মেয়ের সাথে তেমন একটা কথা বলিনি। কাউকে ভালোও বাসিনি। তবে তোমাকে যেদিন প্রথমবার একটা ফুলের দোকানে দেখতে পাই, সেদিন থেকেই তোমার উপর আমার একটা দুর্বলতা কাজ করতে থাকে। তারপর তোমাকে যেদিন ভার্সিটিতে দেখতে পাই, সেদিন থেকে তোমার প্রতি আমার দুর্বলতাটা বেড়ে যায়। তুমি এতদিন ভার্সিটিতে না আসায় আমার অনেক কষ্ট হয়েছে। মনে হচ্ছিল আমি মনে হয় তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি সিন্থিয়া। আমি তোমাকে আর হারাতে চাইনা। কথাগুলো বলতে বলতে কখন যে চোখের কোন বেয়ে অশ্রু জড়ে পরছে তা খেয়ালই করিনি । সিন্থিয়া কিছুক্ষন চুপ থেকে যা বলল তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। সিন্থিয়া বলল তার নাকি বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। তাই আমি যেন তাকে আর ডিস্টার্ব না করি। কথাটা শুনে আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। কিছুক্ষনের জন্য মনে হচ্ছিল আমার প্রানটা যেন আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে। অবশেষে অনেক কষ্ট নিয়ে বাসায় চলে আসি। বাসায় বসে এক প্যাকেট সিগারেট শেষ করে শেষটায় টান দিচ্ছি আর সিন্থিয়ার কথা ভাবছি। আমার এতদিন বসে একটু একটু করে গড়ে তোলা স্বপ্নগুলোকে কিভাবে ভেঙে দিলো। অনেক কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু কিছুই করার ছিল না। প্রথমে যে ভয়টা পাচ্ছিলাম ঠিক সেটাই হলো। ভালোবাসা হাড়ানোর যন্ত্রনা যে এতটা কষ্টদায়ক তা আগে বুঝতে পারিনি। একমাস ধরে ভার্সিটিতে যাইনি। আসলে সিন্থিয়ার সামনে পরতে ইচ্ছা ছিল না। গেলেই তো ওর সাথে দেখা হবে তাই আর যাইনি। কিন্তু এভাবে তো আর চলবে না। এতে আমার তো পড়াশুনায় সমস্যা হবে। তাই অনেক ভেবে চিন্তে আজকে ভার্সিটিতে আসলাম। এসে অনেকের সাথে দেখা হয়েছে। অবশেষে আমার বেস্টফ্রেন্ড অনিকের সাথে দেখা হয়। অনিক আমাকে দেখে এসে জড়িয়ে ধরে। > দোস্ত তুই এতদিন কোথায় ছিলি। এদিকে কি হইছে তুই তো কিছুই জানো না। (অনিক) > কেন, কি হইছে? (আমি) > আরে তোকে কয়েকদিন ধরে সিন্থিয়া খুঁজছে। তোর বাসার ঠিকানা চেয়েছিল। আমি জানিনা বিধায় দিতে পারিনি। এই আজকেও তোর কথা জিজ্ঞেস করছিল। (অনিক) > ও এখন কোথায় আছে বলতে পারবি? (আমি) > মনে হয় ক্যাম্পাসের মধ্যেই আছে দেখ। (অনিক) আমি আর কথা না বলে দোড়ে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি সিন্থিয়া একাকী হাঁটছে।আমি ওর সামনে গিয়ে দাড়াই। আমাকে দেখে ও কিছু বলছে না। তারপর আমি ওকে জিজ্ঞেস করি, আমাকে খুঁজছিলে কেন? সিন্থিয়া কিছু না বলেই কাঁন্না করতে করতে আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না। তারপর সিন্থিয়া হঠাৎ বলে উঠলো... > তুমি এতদিন কোথায় ছিলে। তোমাকে কত খুঁজেছি কিন্তু কোথাও পাইনি। আসলে সেদিন আমাকে তোমার ভালোবাসার কথা জানানোর পর থেকে আমি প্রতিটা ক্ষনে তোমার কথা ভেবেছি। কেন ভেবেছি তা বলতে পারবো না। তবে না চাইতেও তোমাকে নিয়ে ভাবতে বাধ্য হয়েছি। অবশেষে বুঝতে পারলাম তোমাকে আমার খুব প্রয়োজন। আমিও তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি। তারপর ভার্সিটিতে এসে তোমাকে না পেয়ে অনেক কষ্ট হচ্ছিল। তুমি কেমন বলোতো। একটা মেয়েকে এতটা ভালোবাসো। আর তার একটা কথাই তাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিলে। একটা বার তো খবরও নিতে পারতে। (সিন্থিয়া) > আসলে কি করবো বলো। তুমিই তো বলছিলে তোমাকে যেন ডিস্টার্ব না করি। তাই আর তোমার সামনে আসতে চাইনি। (আমি) > ও,,, তাহলে এখন আসলে কেন? যাও চলে যাও। (সিন্থিয়া) > হ্যাঁ যাবো তো। তবে তোমাকে সাথে নিয়ে। (আমি) অতঃপর সিন্থিয়ার হাত ধরে একটান দিয়ে কাছে নিয়ে আসি। একে অপরের হাত শক্ত করে ধরে হাটতে থাকি সুখের গন্তব্যের দিকে। আর ভাবতে থাকি ওর উপর অভিমান করে একমাস ভার্সিটিতে না আসায় অনেক ভালোই হয়েছিল..... . . . (বিঃ দ্রঃ : ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪৩৬ জন


এ জাতীয় গল্প

→ অভিমানে আছো তুমি
→ "রাগ-অভিমান"
→ অভিমান
→ ❤️রাগ-অভিমান❤️
→ এক টুকরো অভিমান
→ স্কুল লাইফের অভিমান!
→ অভিমানী বউ
→ অভিমান
→ দুষ্টু মিষ্টি অভিমানে ঘেরা ভালোবাসা
→ বেষ্টফ্রেন্ডের অভিমান ৯ম পর্ব
→ বেষ্টফ্রেন্ডের অভিমান ৮ম পর্ব
→ বেষ্টফ্রেন্ডের অভিমান ৭ম পর্ব
→ বেষ্টফ্রেন্ডের অভিমান ৬ষ্ট পর্ব
→ বেষ্টফ্রেন্ডের অভিমান ৫ম পর্ব
→ বেষ্টফ্রেন্ডের অভিমান ৪র্থ পর্ব

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • অনভুতিহীন লেখক
    User ৬ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ সবাইকে

  • sondha
    Guest ৬ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    Nice

  • riyad
    User ৬ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    Nice