বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

না দেখে

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Merina Afrin Mou (০ পয়েন্ট)

X সকাল নয়টা। অর্কের ফোনে বেজে উঠল পাইরেটস অব দ্যা ক্যারিবিয়ান মুভির রিংটোন। ঘুম ভেঙে গেল তার। রিংটোন টা তার খুব পছন্দের হলেও এই মুহুর্তে অসহ্য লাগছে। বালিশের আশেপাশে হাতিয়ে ফোনটা খুঁজে বের করে চোখের সামনে ধরল। রাতুল ফোন দিয়েছে। কোন রকমে রিসিভ করে ঘুম জড়িত কন্ঠে বলল, - হ্যালো - কি রে ক্লাস করবি না? - না। - কেন? - কারন ক্লাসের চেয়েও ঘুমটা আমার কাছে বেশি ইম্পোর্টেন্ট। - ঠিক আছে। ঘুমা। এই বলে ফোনটা কেটে দিল রাতুল। অর্ক আরো কিছুক্ষণ এপাশ ওপাশ করতে লাগল। তারপর ভাবল ফেসবুকে ঢুকা যাক। ফেসবুকে ঢুকার পর দেখতে পেল একটি ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। কত রিকোয়েস্টই তো আসে। এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল অর্ক। কিন্তু নামটায় চোখ আটকে গেল। অর্পা। অর্পা!!! নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারল না। তাড়াতাড়ি প্রোফাইল পিকচারে ক্লিক করল। হ্যাঁ। এটা তো অর্পাই। সেই অর্পা যাকে সে পাঁচ বছর আগে শেষ দেখেছিল স্কুল জীবনে। সেই অর্পা যাকে সে ক্লাস নাইন থেকে ভালোবাসে কিন্তু কথনোই মুখ ফোঁটে বলা হয় নি। পাঁচ বছরে বেশ ভালো একটা পরিবর্তন এসেছে ওর মাঝে। খুকি খুকি ভাবটা আর নেই চেহারায়। অনেকক্ষন ধরে ছবিটার দিকে তাকিয়ে রইল অর্ক। তারপর মিউচুয়াল ফ্রেন্ডলিস্ট চেক করল। স্কুল লাইফের পুরোনো কিছু বন্ধু বান্ধবী। তার মানে আইডি এটা ফেক না। রিয়েল। কেমন যেন লাগছে তার। অদ্ভুত এক অনুভূতি। এই কয়েক বছরে প্রায় ভুলেই গিয়েছিল অর্পাকে। কিন্তু এত দিনের লুকিয়ে থাকা অনুভূতি গুলো যেন আজ হঠাত্‍ করেই এক লাফে বেরিয়ে এসেছে। কি করবে বুঝতে পারছে না ও। রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করবে নাকি ঝুলিয়ে রাখবে? অর্পা তার ফ্রেন্ড হতে চাচ্ছে এটা দেখতেও ভালো লাগছে। একসেপ্ট করলে তো আর দেখা যাবে না এটা। Snigdha Orpa wants to be your friend লেখাটা দেখতেই ভালো লাগছে। কিছুক্ষণ ভাবনা চিন্তার পর শেষ পর্যন্ত একসেপ্ট করে ফেলল। একটা মেসেজ দিবো কি? মনে মনে ভাবল অর্ক। তারপরই আবার বলল, না থাক। এত তাড়াতাড়ি দেয়ার দরকার নেই। কি না কি মনে করবে। হাত মুখ ধুয়ে নাস্তা করে বাইরে বের হয়ে এল অর্ক। মেজাজটাই আজ অন্যরকম ভালো। দেরীতে হলেও পরের ক্লাসগুলো করে ফেলল। আজ এই বোরিং ক্লাসগুলোকেও বোরিং মনে হচ্ছে না। একসময় ছুটি হল। তারপর বন্ধুদের সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরল। রাত সাড়ে নয়টা। ফেসবুকে লগ ইন করল অর্ক। অর্পার টাইমলাইনটা একবার চেক করল। কয়েকটা স্ট্যাটাস আর ছবি দেখতে পেল। ইচ্ছা করছে ওর সবগুলো ছবিতে একহাজারটা লাইক দিতে। কিন্তু তা তো আর সম্ভব না।একটা মেসেজ না দিলে মনটা শান্ত হচ্ছে না। কি মেসেজ দেয়া যায়? ইচ্ছা করছে প্রথমেই বলে দিতে, 'আই লাভ ইউ। কিন্তু এটা করা আর নিজেকে বলদ প্রমানিত করা একই কথা। অনেক ভাবনা চিন্তার পর ছোট্ট একটা মেসেজ দিল, 'কেমন আছ?' দেয়ার পরই মাথায় চিন্তা এল, ও রিপ্লাই দেবে তো? যদি না দেয়? কিন্তু তার ধারণাকে ভুল প্রমানিত করে আধঘন্টা পরই অনলাইনে অর্পাকে দেখা গেল এবং রিপ্লাই আসল, ভালো। তুমি কেমন আছ? এভাবেই কনভার্সেশনটা শুরু হল। প্রতিদিনই চ্যাট হতো ওদের।একফাঁকে ও জেনেও নিল অর্পা এখনো সিঙ্গেল। অর্ক ওকে প্রপোজ করার চিন্তাটা একাধিক বার মাথায় এনেও আবার সরিয়ে দিয়েছে। যদি রাজি না হয়? যদি ব্লক মেরে দেয়! তারচেয়ে যেমন আছে তেমনি চলতে থাক। অনেক বিষয় নিয়ে কথা হত ওদের। নিজেদের প্রিয় বিষয়, কাজ, কবিতা, গান, লেখক, রাজনীতি, ধর্ম কোনটাই বাদ না। অর্ক অবাক হয়ে লক্ষ্য করল এই মেয়েটি স্কুলে থাকতে বেশ লাজুক ছিল। কিন্তু এখন তার সাথে বেশ সাবলীল ভাবেই ফেসবুকে আলাপচারিতা করে। দুজনের বন্ধুত্বটা বেশ গাঢ় হচ্ছিল। অনেক রাত পর্যন্ত চ্যাট করায় ঘুমটা বেশ দেরিতে ভাঙলো ওর। প্রতিদিনের মত আজকেও ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকে ঢ়ুকল অর্ক। গুড মর্নিং দিতে হবে অর্পাকে। কিন্ত মেসেজ দিত গিয়ে অবাক হয়ে লক্ষ করল, অর্পার আগের মেসেজগুলো একটিও দেখা যাচ্ছে না এবং নামটিও কালো হয়ে গেছে। মেসেজও দেয়া যাচ্ছে না। যার অর্থ খুবই পরিষ্কার। ফেসবুক থেকে অর্পার আইডি ব্লক করে দেয়া হয়েছে। ক্ষনিকের জন্য হতভম্ব হয়ে গেল অর্ক। কি করবে বুঝতে পারছে না। মার্ক জোকারবার্গকে ইচ্ছা মত কিছুক্ষণ গালিগালাজ করল। অর্পার মোবাইল নাম্বারটাও রাখে নি যে যোগাযোগ করবে। নিজেকে খুবই একা মনে হতে লাগল। এতদিন শুন্যস্থানটা অনেকটাই পূরণ হয়ে গিয়েছিল। এখন আবার একা হয়ে গেল। সারাটা দিন মনমরা হয়েই পার করল। রাতে খেতেও পারল না ঠিক মত। চুপচাপ বিছানায় শুয়ে ভাবতে লাগল, আচ্ছা অর্পা তো চেষ্টা করলে এই আইডি টা ঠিক করতে পারে। না পারলে আরেকটা নতুন আইডি খুলতে পারে। তাহলে খুলছে না কেন? নাকি আইডি ব্লকের সাথে সাথে অর্পাও এই ফেসবুক দুনিয়া থেকে একেবার চলে গেল? এসব ভাবতে ভাবতেই একসময় ঘুমিয়ে পড়ল। তারপর দিন অনেকবার ফেসবুকে ঢ়ুকল অর্ক। অর্পার আইডি ঠিক হল কি না অথবা নতুন আইডি খুললো কিনা। কিন্তু তাকে হতাশ করে দিয়ে সেরকম কিছুই হল না। এখন ফেসবুকে থাকতেও তার ভালো লাগেনা। আজ শুক্রবার। অর্পার আইডি ব্লক হয়েছে আজ সাত দিন হয়। এই সাত দিনে তার সাথে একবারও যোগাযোগ হয়নি অর্পার। মনে মনে নিজের ভাগ্যকে দোষ দিল অর্ক। তার কপালটাই এমন। কিছু পাওয়ার আগেই হারিয়ে যায়। ধ্যাত। মোবাইলটা হাতে নিল। ফেসবুকে ঢুকতে ইচ্ছা করছে না। তাও একবার ঢুঁ মেরে আসা যাক। অবশেষে ঢুকলো এবং ঢুকার সাথে সাথেই মুখে আনন্দের একটা হাসি ফুটে উঠল। হ্যাঁ। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টই এসেছে নতুন আইডি থেকে। একই নাম, একই ব্যাক্তি। সাথে একটা মেসেজও আছে, I am soo sorry. আগের বারের থেকেও আরো বেশি ভালো লাগছে অর্কের। এবার আর একসেপ্ট করতে দেরি করল না। মনে মনে সিন্ধান্তটা নিয়েই ফেলল সে। এবার আর হারিয়ে যেতে দেবে না অর্পাকে। হারিয়ে যাতে না যায় সে ব্যবস্থাই করবে। মনের কথাটা বলেই ফেলবে এবার। যা হয় হোক। রাজি হোক বা না হোক তাতে কিছু যায় আসে না। ঝুঁকিটা সে নিবেই। কে যেন বলেছিলেন, ঝুকি না নিলে কোন কিছুতেই সফল হওয়া যায় না। লোকটার নামটা ঠিক মনে পড়ছে না। তবে তাতে অর্কের কিছু যায় আসে না। নিজের ভাগ্যটাকে আরেকবার পরীক্ষা করার সুযোগটা হাতছাড়া করা ঠিক হবে না। যা থাক কপালে। তাই অর্ক অর্পাকে বলল যে সে তাকে একটি কথা বলতে চায়। তখন অর্পা বলল যে সে নির্ভয়ে বলতে। সাথে সাথেই অর্ক বলে ফেলল "আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি "। এ কথা শুনার পর অর্পা আর রিপ্লাই দিলো না। তখন অর্ক ভাবলো যে হয়তো অর্পা রাগ করেছে, তাকে sorry বলা উচিৎ, ঠিক তখনি অর্পার আইডি থেকে রিপ্লাই আসলো "আমিও তোমাকে ভালোবাসি "।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩৯৪ জন


এ জাতীয় গল্প

→ মেয়েদের অতীত দেখেশুনে বিয়ে করবেন,সাবধান!!
→ মানুষ তোমার সামনে যা প্রকাশ করে তা দেখে প্রভাবিত হয়ে যেয়ো না
→ মুখ না দেখে ভালোবাসা
→ আল্লাহকে না দেখে বিশ্বাস করব কীভাবে?আল-কোরআনই বা সত্যে বলছে বুঝব কীভাবে?
→ বাস্তবিক কিছু কথা।হাসতে পারেন কিনা দেখেন।
→ তোমার সেই চিঠিগুলো দেখে আজও কাঁদি ....
→ প্রথম দেখেই ভালোলাগা
→ ভালোবাস মন দেখে মুখ দেখে নয়
→ চেহারা দেখে মানুষ চেনা যায়?
→ তারপরও বেকার যুবকেরা একটি সপ্ন দেখে,,,,
→ মেয়েটা আমাকে দেখে হাসলো কেন ?
→ মুখ দেখে মানুষ চেনা যায় না
→ বিয়ে করার আগে দেখে নিন...
→ মানুষ তোমার সামনে যা প্রকাশ করে তা দেখে প্রভাবিত হয়ে যেয়ো না।

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • ajmir
    Guest ৬ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    well