বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
- হ্যাই!!
- হুম ।হ্যালো!!
- কি কর এখন ? হাতে ফোন কেনো তোমার?
- বারান্দায় দাঁড়িয়ে!!তুমি মেসেজ দিলে এই জন্য ফোন হাতে নিয়ে মেসেজ বেক করলাম !! তুমি কি কর ?
- গিটারের সুর তোলার চেষ্টা করি!! যাও পড়তে বসো !!
-আরেট্টু থাকি?
-নো ওয়ে !
-পঁচা... বান্দর , ডিম .........
--হুম জা...নি। এবার যাও !
..
রাগে গজগজ করতে করতে মিথিলা পড়তে যায়। সে আবিরের সবচেয়ে ভালোবাসার মানুষ। মেসেঞ্জারে কথা হচ্ছিলো তাদের। মিথিলার সামনে সেমিস্টার পরীক্ষা । সারাক্ষণ মোবাইলে গেম খেলে যতক্ষণ পর্যন্ত আবির কল বা মেসেজ না দিয়ে বলবে পড়তে বস ততক্ষণ পর্যন্ত মিথিলা বই খুলতে ভুলে যায়। আবির কাল্পনিক কান টেনে ধরে মিথিলাকে পড়তে পাঠায়।
কিছুক্ষণ পর আবিরের মোবাইলে মেসেজ আসে..
--লাভ ইউ পঁচা !!
মেসেজটি আর কেউ পাঠায় নি পাঠিয়েছে মিথিলা।মিথিলার মেসেজটি দেখে মুচকি হেসে
গিটারটা নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ে আবির। এখন আবিরের আড্ডা দেবার সময়ের কথা বললে ভুল হবে এখন তার শেষ বিকেলের আলোতে গিটারের টুং টাং টুং টাং ছন্দটা তোলা পছন্দের কাজ। গিটারের টুং টাং শব্দ শুনে খুব সহজে আবিরের পাশে দুই চারটা বন্ধু বসে পড়ে ।
কাছের বন্ধু অভীক তাকে দেখে বলে,
- আজ যে গিটারের খুব সুর তুলছিস ??
আবির অভীকের কথার উওর না দিয়ে হাত ঘড়ির দিকে একবার সময় দেখে আবারও সেই চেনা সুর উঠালো। মাঝে মাঝে দুই চার লাইনের গান ও বলা শুরু করল!!!
অভীক আবারও একটু হেসে বলল,
- কি হলো দোস্ত!! কথা বলিস না কেনো?
গিটারের টুং টাং শব্দ থেমে আবির হেসে বলে, আজকাল গিটারের তারগুলো আমাকে খুব কাছে ডাকে !!!
- হুম , বুঝলাম । মিথিলার কি খবর?
- ভালো ! আসি .........দোস্ত ।
- এত তাড়া কিসের , দোস্ত ! আর একটু বস ফারিয়া আসবে এখন!! তোর গিটারের ছন্দটা আরও গভীর করতে ।।
আবির, অভীকের কথাগুলো জল মনে করে । মনে হয় এক নিঃশ্বাসে খেয়ে ফেলল!
ফারিয়া হলো, আবিরের ছোট বেলার বন্ধু । বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের দুজনের বন্ধুত্ব আর ও গভীর হয় । কলেজে লাইফ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলো ও তাদের এক সাথে কেটে যায় ভরপূর আড্ডায়। অভীকের পাশে বসে ফারিয়া। আজ খোলা চুলে এসেছে , খুব দারুণ লাগছিলো । কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর ফারিয়া অভিমানের সুরে বলে- আবির , আমি আর একটি বার তোমার প্রেমে পড়তে চাই গানটি গাও তো শুনি।
অভীক একটা জোরে হাসি দিয়ে বলে -
- কার প্রেমে আবার পড়তে চাস!!!
ফারিয়া মুচকি হেসে বলে -- গিটারওয়ালা!!
কথাগুলো পাত্তা না দিয়ে গিটারে টুংটাং শব্দে সুর তুলতে থাকে আবির। তার সঙ্গে সঙ্গে ফারিয়া ও গলা নেরে সুর উঠায় । জমে গেল গানের আসর ।
মিথিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ইয়ারের ছাত্রী । বয়সে তাদের সবার ছোট। থাকে ধানমন্ডি এলাকায়। আবিরের বাসা থেকে কিছুটা দুরে । ধানমন্ডি থেকে কিছুটা দুরে একটা আধো অন্ধকার রেস্টুরেন্টে আবির মিথিলার গালে প্রথম চুমু খায় । বেচারি ভয়ে সেই দিন খুব ভয় পেয়েছিল । এইটাকে অবশ্য ঢং বলা যাবে না। এমনই মিথিলা। সরল, আলাভোলা, আকাশ আর গাছের দিকে তাকিয়ে এমনভাবে হাঁটে- ধুপ করে প্রেমে পড়ে যাবে যে কেউ। কোচিং ক্লাস শেষ করে এক বিকেলে ঘরে ফিরবার সময় অপরিচিত নাম্বার থেকে তার মোবাইলে ফোন আসে। ফোনটা করেছিলো আবির। তখনো কেউ কাউকে চেনেনা। এভাবে রঙ নাম্বারে তাদের পরিচয়।
একদিন দেখা হয় তাদের দুজনের।সেই দিন দুজনে হাত ধরে অনেক হেঁটেছিল।
যাবার সময় মিথিলা আস্তে করে বলে, আপনার মনটা খুব ভালো !সেই দিন আবির মিথিলার প্রশ্নের উওর দিতে পারে নি কারণ প্রশ্নের উওর আবিরের জানা ছিল না ।
তার কিছুদিন পর ফোনে আবির মিথিলাকে বলে, তোমার মুখে" আপনি" নামক ডাকটি ভালো লাগে। !
শুনে মিথিলা টানা চার মিনিট ধরে হিহি হিহি করে হাসে! এর পর শুরু হয় মিথিলা আর আবিরের পথ চলা ।
গানের আসর চলার সময় কয়েকবার আবিরের মোবাইলে ফোন আসে মিথিলার। সুখের সাম্রাজ্যে মোবাইলের রিংটোন যথেষ্ট আওয়াজ তুলতে পারেনা।
এই প্রথম নয়। আরো বেশ কয়েকবার এমন হয়েছে। গানের সুর তুললে মিথিলার কথা ভুলে যায় আবির। মিথিলা কত যে গোপনে কেঁদেছে।
গানের আসর শেষ করে আবির ফোন বেক করলে , মিথিলা আস্তে করে ফোনের ওপাশে থেকে বলে উঠত অনেক রাত হয়েছে , ঘুমিয়ে পড়েন ।
আবির ফোন রেখে ঘুমিয়ে পড়ে। ভুল যায় মিথিলার জমানো গল্প গুলো শুনতে ।
গান পাগল আবির । গানের মধ্যে থাকলে আবির সব কিছু ভুলে যায়। এই দিকে মিথিলার বুকের যন্ত্রণাটা বেরেই চলছে। সব কথা যেন আবিরকে খুব সহজে বলতে পারেনি মিথিলা । সময় অনুয়ায়ী নিজেকে আবিরের কাছে গুছিয়ে নিতে পারে নি মিথিলা । সময় যেন দুজনকেই ধীরে ধীরে দুরে সরে দিচ্ছে ।অপরদিকে আবিরের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে ফারিয়া ।"মিথিলা "নামটি ফারিয়ার কাছে জঘন্যতম লাগে । আবিরের মন থেকে "মিথিলা "নামক মিষ্টি শব্দটি চিরদিনের জন্য মুছে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করেছে ফারিয়া । ইতিমধ্যে ফারিয়া আবিরকে ফাঁসানোর জন্য একটি সহজ ছক কষে ফেলে । বেচারা আবির সেই ফাঁদটি না বুঝতে পেরে পা দিয়ে ফেলে এক গভীর ফাঁদে । অশ্লীল কিছু ভিডিও সঙ্গে সঙ্গে মিথিলার ম্যাসেনজারে পৌঁছা যায় ফারিয়া নামক আইডি থেকে । ভিডিওটি দেখার পর মিথিলা শুধু হু হু করে কেঁদেছিল।অতঃপর মিথিলা আবিরকে মুখে কিছু বলতে না পারলেও ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার ধুপ..... শব্দটি ঠিকিই হয়েছিল ।এই দিকে আবির নিজে ও জানতনা তাকে মিথ্যা জালে ফাঁসানো হয়েছে ।পৃথিবী যেন হারিয়ে ফেলে এক সহজ সরল ভালো মনের মেয়েকে।
বাহিরে ঝিপ ঝিপ বৃষ্টি হচ্ছে। আবির জালানা খুলে গিটারের টুং টাং শব্দ তোলার চেষ্টা করে কিন্তু হাতের আঙ্গুলগুলো বার বারই গিটারের তারে আটকে যায়। বুকের বাম পাশে চিন চিন করে উঠে যেন আজ কাউকে হারানোর ভয় বেশি লাগছে । আবির আর চুপ করে বোকার মতো শান্তিতে না থাকতে পেরে হাতে ফোন নিয়ে মিথিলাকে ফোন দিলে সুরেলা কণ্ঠে এক ভদ্রমহিলা সেটি যোগাযোগবিচ্ছিন্ন আছে জানায়।
বার বার কল দেওয়ার পর শুধু একটি কথাই ভেসে আসে । আবির ধীরে ধীরে অস্থির হয়ে পড়ে।
রাতের গভীরতা বারার সাথে আবিরের অস্থিরতা কিছুটা কমলে জালানার পাশে শুয়ে বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে ফিস ফিস করে বলে- "তুমি আজ এত তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লে !! "কিন্তু আবির হয়তো আজ ও জানে না তার প্রিয় মানুষটি আর পৃথিবীতে নেই । পৃথিবীতে সে শুধুই এখন একা ।
আজও অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে আবির বালিশটা চোখের অশ্রু দিয়ে ভিজে ঘুমিয়ে পড়ে ।
আজও সেই অপেক্ষা .................মিষ্টি কন্ঠে "আপনি " নামক শব্দটি শোনার।।।।
????Badsha Bappi
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Mehedi Hasan
User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বেFahmida
Golpobuzz ৪ বছর, ৫ মাস পুর্বেরিয়েন সরকার
Author ৪ বছর, ৫ মাস পুর্বেFahmida
Golpobuzz ৪ বছর, ৫ মাস পুর্বে¤-ইশিকা-¤
User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে¤-ইশিকা-¤
User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে