বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

জমিদার বাড়ি রহস্য পর্ব-১

"রহস্য" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিয়েন সরকার (০ পয়েন্ট)

X জমিদার বাড়ি রহস্য পর্ব-১ লেখক-RN EFTY কথায় আছে না। ভাগিনা মানে বাঁশ। কিন্তু বাঁশ নাকি বাঁশের ঝাড় সেটা আমার থেকে ভাল কেউ জানে না। আমার মুড়ির টিনের কপাল যে, রিওর মত একটা ভাগিনা জুটেছে। আসলে কপালের আর দোষ দিয়ে লাভ কি?কাজের কথা আসি। অনেক টায়ার্ড হয়ে বিকাল চারটা নাগাদ বাসায় এসে মেজাজ বিগড়ে গেল।কারণ বাসায় ঢুকে প্রথমে ভেবেছিলাম ভাগিনা দিনের বেলায় মশার কয়েল জালিয়েছে।কিন্তু পরক্ষনে বুঝলাম, মশার কয়েল নয়। নিজের কয়েল জ্বালাচ্ছে।সিগারেটের গন্ধে সারা বাড়ি সুভাষ ছড়াচ্ছে। অনেকটা রেগেই রিওর রুমে ঢুকলাম।আজ এর একটা হেস্ত নেস্ত করতে হবে।কিন্তু রুমে আমাকে ঢুকতে দেখে সে যা বলল তাতে চুপশে না গিয়ে আর উপায় ছিল না। আমায় দেখেই হেসে দিয়ে বললঃ আরে প্রফেসর।তোমার অপেক্ষা করছিলাম।এই যা, তোমার দেখি মন খারাপ। ভার্সিটি থেকে ফেরার পথে তুলির বাসায় গিয়েছিলে নিশ্চয়? আর মামির এত আবেগ কেন? আহারে, অতি সামন্য বিষয়ে তোমায় জড়িয়ে ধরে কান্না কাটি করেছে মেয়েটা। কোথায় ভাগিনাকে আজ বকা দিব বলে আসলাম।আর সে আমায় উল্টে ঘোল খাইয়ে দিল।কিন্তু আমি প্রতিদিন এই সময়ে ভার্সিটি থেকেই আসি।আজ কি দেরি হয়েছে?ঘড়িতে সময় ঠিকই আছে।এই সময়ে প্রতিদিন আসি।কিন্তু ভাগিনা কি করে বুঝল।ঘরের বিষয় পরে জানলে কি ভাল লাগে? অনেকটা হেসে দিয়ে বললামঃ এই ১৫ মিনিটেই নিউজ পেপারে এসে গেল খবরটা? -নিউজ পেপারে নয়।তোমায় গায়ে।(রিও) -মানে? -বুঝেও না বোঝার ভান কর মামা? -সত্যি বলছি, বুঝতে পারিনি। -তার মানে, স্বীকার করছ। আমি তোমায় চমকে দিতে পারছি? -হুম। -কিন্তু একটু পর যখন আমি সব বুঝিয়ে দিব। তখন বলবে এটা অনেক সোজা ছিল। -আরে বল না। -ওকে। -দেখ! তুমি প্রতিদিন বাসায় আস ভার্সিটির গাড়ি দিয়ে।কিন্তু আজ এসেছো হেটে।কারন তোমার কালো জুতা পুরো ধুলাময় হয়ে গেছে।মেইন রোডে এত ধুলা নেই।তার মানে গলি রোডে হেটেছো?আর আমার মামা গলির রোডে কার বাড়ি যায়, সেটা আমি ভাল করে জানি। -হতে পারে আমি আমার বন্ধু সাইফের বাসায় গিয়েছিলাম। তুলির বাসায় নয়।কারন তুলির বাসার পাশেই সাইফের বাসা। -হতে পারত কিন্তু হয়নি যে মামা। -কেন? -নিশ্চয় তোমার বন্ধুর বউ তোমায় জড়িয়ে ধরে কাদবে না। -কি যে বলিস এসব? -আরে তোমার শার্টের দিকে কি খেয়াল করেছ?নাকের পানি আর চোখের পানির মিশ্রনের দাগটা কি স্পস্ট দেখা যাচ্ছে। -নিজের দিকে খেলায় করে দেখলাম। সত্যি।তুলি যখন কাঁদছিল তখন ও আমার বুকেই ছিল।আর সাদা শার্টে নাকের পানির দাগ দেখা যাচ্ছে। আবার বললামঃকিন্তু ভাগিনা। কান্নার কারণ যে, অতি অল্প সেটা কি করে বুঝলে? -আরে প্রফেসর। এত প্রশ্ন করনা তুমি?শোন, মেয়েরা যদি ছোট খাট বিষয়ে কষ্ট পায় তবে আপন মানুষটা এভাবে ধরে কাদে।যা তুলি করেছে। -আর বেশি রাগলে? -পুরো উল্টা, তোমার কাছে আসাতো দূরের কথা।তোমার দিকে তাকাবেও না। -বুঝলাম রিওর কথার লজিক আছে। একে নিয়ে কোন কালেই পারা যাবে না।আমার বাঁশ খেতে খেতেই জীবন যাবে। ফ্রেশ হয়ে রিওর পাশে গিয়ে বসে টিভি অন করব এমন সময় একটা চিঠি বের করে আমার হাতে দিয়ে বললঃপড়। কত রকমের পাগল আছে দুনিয়ায়? -পাগল মানে?বললাম আমি -যে দেশে ৩৪ভাগ মানুষ তিন বেলা ঠিক মত খেতে পারে না।সে দেশের মানুষ শখ করেওএত কিছু করে। আজব পাবলিক, মামা। চিঠিটা হাতে নিয়ে পড়া শুরু করলাম। সেখানে লেখাঃ- জনাব রিও, ডাইমন্ড ভ্যালি রহস্য পড়ে আপনার কথা জানতে পারলাম।আমি আমার অতি গোপনীয় কিছু বিষয়ে আপনার পরামর্শ কামনা করছি।যদি আমাকে সাহায্য করেন, অতি উপকার হয়। দেখা করার সময়টা নিচের মেইলে জানিয়ে দিবেন। ইতি আর, এক্স mail:rx@——–.com চিঠিটা পড়া শেষ করতেই রিও বললঃকি বুঝলে? -বুঝলাম তিনি তুষারের কেসটার কথা বলেছেন। -আরে সেটাতো একটা পাগলও বুঝবে।চিঠির লেখক সম্পর্কে কিছু বল? -আজব!লেখকের নাম পর্যন্ত স্পষ্ট নয় চিঠিতে।আর তুই বলছিস লেখক সম্পর্কে কিছু বলতে।আজ কি সিগারেটের সাথে অন্য কিছু খেয়েছিস নাকি? -মামা। ভাল করে চিঠিটা দেখ সব পাবে। -আমি প্রায় দশ মিনিট ধরে উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখলাম চিঠিটা।কিন্তু কিছুই পেলাম না। শুধু দেখলাম, চিঠিটাতে বেশ কিছু নকসা করা।সেটা অনেকটা নকশি কাঁথার নকশা হবে হয়ত। এরপর রিওর হাতে চিঠিটা দিয়ে বললামঃকিছু বুঝলাম না। _-মামা আমি কিন্তু অনেক কিছু দেখতে পাচ্ছি।(রিও) -কি দেখতে পাচ্ছিস? -যিনি চিঠিটা লিখেছেন তার আর্থিক অবস্থা বেশ ভাল।পুরানো জিনিস সংগ্রহের বাতিক আছে।বয়স সম্ভবত ৬০+।আর হ্যাঁ তেমন কোন দরকারি বিষয় নিয়েতিনি আসছেন না। হুদায়, অকাজ আর কি? ওহ হ্যাঁ, তিনি একজন মহিলা। আর, আর, আর, দেখতে পাচ্ছি তিনি চিঠিটা গ্রামে বসে লিখেছেন। -আমি অবাক হয়ে রিওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম। কারন ভাগিনা চাপা বাজিও শিখে গেছে।আর সহ্য করতে পারছিলাম না। তাই বললামঃ কি করে বুঝলি? -আসলে মামা তুমিতো জানো আমি যা বলি সেটার ভিতরে লজিক থাকে।লজিক ছাড়া কোন কথা আমি বলি না। কাগজটা দেখ। এটা একটু আলো সামনে ধরলে এর ভিতর একটা জল ছাপ দেখতে পাবে। যেটাই লেখা আছে AKH. মানে বাংলাদেশের বিখ্যাত কাগজ উৎপাদন কোম্পানি। -তাতে কি?কথাটা শেষ করতেই রিও কাগজটা জগের পানির ভিতর ছেড়ে দিলো। এবং সাথে সাথে তুলেও নিলো। এবার কাগজটা ঝাকি দিল। আমি অবাক হয়ে গেলাম। কারন কাগজ থেকে আপনা আপনি পানি ঝরে গেল। আমি হেসে দিয়ে বললামঃআরে এটা কাগজ নাকি কচুর পাতা? -এই জন্য বললাম মামা চিঠির লেখকের আর্থিক অবস্থা ভাল। কারন প্রায় বিশ বছর আগে AKH এই কাগজ বাজারে লঞ্চ করে। কিন্তু সখের তোলা আশি টাকা মামা। তাই কিছু দিনের মাঝে ঊৎপাদন বন্ধ করে দিতে হয়।কারন কেউ একটা ডাইরির পিছে দশ হাজার খসাতে চাইবে না।আর যে চাইবে তিনি সোখিন এবং বিশ বছর আগের কাগজ যার কাছে যার কাছে পাওয়া যায় তিনি পুরানো জিনিস সংগ্রহ করে এটা বলা যায়।কেননা, চিঠিটা বলপেন নয় দোয়াত কালি দিয়ে লেখা।দোয়াতের কালি দিয়ে এখন কেউ লেখেন না।আর যে লিখে সে শখে এটা করে। -হুম। বুঝলাম। এই যে বললে, তিনি মহিলা।সেটা কি করে বুঝলে? -দেখ। চিঠির চার পাশে হাতে নকশা করা।নকশাটা প্রাচীন কালের নকশি কাথায় করা হত।এই যুগের ছেলে মেয়েরা এত নিখুত ভাবে এটা আকতে পারবে না।আর যিনি এঁকেছেন তিনিঅনেক পারদর্শী। কাঁথাও সেলাই করেছে, তাই এত নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন হয়ত। তাই বলেছি তিনি মহিলা আর বয়সে প্রাচীন।অন্তত ৬০ তো হবে ই। -বেশ। চমৎকার। আসলে ভাগিনা তুইও পারিস বটে।কি বলব ভেবে পাচ্ছি না। তাই বললামঃ কিন্তু বললি যে, চিঠিটা গ্রামে বসে লেখা।আর তিনি যে কাজটা নিয়ে আসছেন।সেটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। _হ্যাঁ। দেখ। চিঠির এক কোনে একটা দাগ দেখা যাচ্ছে।ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে দেখলে বুঝবে সেটা মোমের দাগ। তার মানে তিনি মোম বাতি জালিয়ে এটি লিখেছেন।সেটা শহরেও হতে পারত।কিন্তু শেষ এক মাস এক মুহুর্তের জন্য লোডশেডিং হয়নি শহরে।এটা গ্রাম অঞ্চলে হয় মামা। আর যিনি একটা চিঠি পনের দিন আগে লিখে এখন সেন্ড করতে পারেন।তার প্রয়োজনটা কতটা গুরুতপুর্ণ সেটা বোঝায় যাচ্ছে। এবার চিঠির খামের দিকে তাকিয়ে দেখলাম। সত্যিইতো তারিখটা ১৫ দিন আগের।ভাগিনার ইনভেস্টিগেশন দেখে মনে হল আসলেই জিনিয়াস।আমি আবার বললামঃকেসটা কি নিবি? -আগে মহিলাকে দেখি।তারপর বিষয়টা জানি।তখন যদি মনে হয়, বিষয়টা ইন্টারেস্টিং।তাহলে নিব নতুবা নিব না।(রিও) -সেটা তোর ইচ্ছা। কিন্তু আমার কেন যেন ইন্টারেস্ট ফিল হচ্ছে। -ওকে। একটা মেইল করে দাও যে, আগামী পরশু সন্ধা ছয়টায় এপায়েন্টমেন্ট। -ওকে। চলবে,,,,


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৫৬৭ জন


এ জাতীয় গল্প

→ জমিদার বাড়ি রহস্য
→ জমিদার বাড়ি রহস্য
→ জমিদার বাড়ি রহস্য পর্ব ৫
→ জমিদার বাড়ি রহস্য পর্ব - ৪
→ জমিদার বাড়ি রহস্য পর্ব ৩
→ জমিদার বাড়ি রহস্য পর্ব-২য়
→ জমিদার বাড়ি রহস্য ৯ম এবং শেষ পর্ব
→ জমিদার বাড়ির রহস্য পর্ব ৮
→ জমিদার বাড়ি রহস্য পর্ব ৭
→ জমিদার বাড়ি রহস্য পর্ব ৬
→ জমিদার বাড়ির রহস্য পর্ব ৮
→ জমিদার বাড়ির রহস্য পর্ব ৮
→ জমিদার বাড়ি রহস্য পর্ব ৯
→ জমিদার বাড়ি রহস্য পর্ব ৬

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now