বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
নাইট অভ দ্য ভ্যাম্পায়ার
অনুবাদ:অনীশ দাস অপু
পর্ব--৬
'শোনো,' বলল ওয়াচ।' ভ্যাম্পায়ারের সামনে দাঁড়িয়ে এসব তর্ক করার কোনো মানে হয় না।ব্রাইস আমি তোমাকে সাহায্য করব।তোমরা সবাই পিছিয়ে যাও।চাই না ওটা জেগে উঠে তোমাদের কারো ওপর হামলে পড়ুক।'
' আমি তোমার সঙ্গে থাকছি,' বলল অ্যাডাম, ফ্লেয়ার নিয়ে রেডি।
'ওটা জেগে উঠা মাত্রই মুখে আগুন ছুড়ে মারব।'
' এই তো সাহসী ছেলের মত কথা,' বলে পিছিয়ে গেল স্যালি।
তিনটে ছেলে নিঃশব্দে এগোল ভ্যাম্পায়ারের দিকে।
মাটিতে প্রায় এক মিটার জায়গা জুড়ে শুয়ে আছে ওটা।চোখ বোজা।বুকের ওপর জড়ো করে রাখা হাত।গোঁজ ঢোকাতে হলে বুকের ওপর থেকে সরিয়ে দিতে হবে হাত।ভ্যাম্পায়ারটার বয়স চল্লিশের কোঠায়।ইউরোপীয় নিশ্চয়। নিথর মুখেও কেমন নিষ্ঠুর একটা ভাব।
ব্রাইস লোকটা বুকের দিকে হাত বাড়াল।
ওকে বাঁধা দিল ওয়াচ।' গোঁজ দিয়ে ঠেলে বুকের ওপর থেকে হাত সরিয়ে দাও।' পরামর্শ দিল সে। ' একান্ত প্রয়োজন না হলে শরীর স্পর্শ করব না।'
'ঠিক বলেছো,' বলল ব্রাইস।সে কাঠের গোঁজের ডগা ভ্যাম্পায়ারের কনুইয়ের ফাঁকে ঢুকিয়ে দিল।তারপর আস্তে আস্তে করে বুকের ওপর থেকে সরিয়ে দিল হাত। কী ঘটছে ভ্যাম্পায়ার যদি বুঝতে পেরেও থাকে চেহারায় কোনো ভাব ফুটল না।ভ্যাম্পায়ারের বুকে কাঠের গোঁজ ঠেকানোর সময় হাত কাঁপতে লাগল ব্রাইসের।ভ্যাম্পায়ার শিকারের কাজটা খুব কঠিন এবং ভংকর। কিন্তু কাউকে না কাউকে কাজটা তো করতেই হবে।কিন্তু ওরা ছাড়া কে করবে?
ব্রাইস ভ্যাম্পায়ারের কালো শার্টে গোঁজ ঠেকাল।
ভ্যাম্পায়ার আগের মতই নিশ্চল পড়ে আছে।
' রেডি?' ওয়াচ জিজ্ঞেস করল ব্রাইসকে।সে হাতুড়ি তুলল।
মাথা ঝাঁকাল ব্রাইস।আড়ষ্ট চেহারা।
' আমার হাতে আবার মেরে বসো না,' বলল ও।
' গোঁজটিকে নাড়িও না,' মাথার ওপর হাতুড়ি তুলল ওয়াচ।
' মারো এখন,' ফিসফিস করল অ্যাডাম।ফ্লেয়া ছোঁড়ার জন্য প্রস্তুত।
ওয়াচ নামিয়ে আনল হাতুড়ি।
তবে গোঁজের ওপর ওটা পড়ল না।
তার আগেই জেগে গেল ভ্যাম্পায়ার।
চট করে গোঁজটি ধরে ফেলল সে,টান মেরে ফেলে দিল।ওয়াচের হাতুড়ি সরাসরি পড়ল তার বুকের ওপর।ব্যথায় আর্তনাদ ছাড়ল ভ্যাম্পায়ার। হাঁ হয়ে গেল মুখ,হাতের ধারাল নখ বাগিয়ে ধরল সে।খপ করে চেপে ধরল ব্রাইসের দুই হাত।নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য ধস্তাধস্তি করতে লাগল ব্রাইস।কিন্তু নিষ্ফল হলো চেষ্টা। উঠে বসল ভ্যাম্পায়ার। ব্রাইসের ঘাড়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছে মুখ।
ওয়াচ দড়াম করে হাতুড়ির বাড়ি মেরে বসল ভ্যাম্পায়ারের মাথায়।
বাড়িটা মূহুর্তের জন্য বিমূঢ় করে তুলল দানবকে।
'জলদি অ্যাডাম।'চিৎকার দিল ওয়াচ।'ফ্লেয়ার জ্বালাও।'
অ্যাডামের হাতের ফ্লেয়ার জ্বলে উঠল।সে আগুন ছুঁড়ে দিল ভ্যাম্পায়ারের মুখ লক্ষ্য করে।বিকট আর্তনাদ করে ব্রাইসকে ছেড়ে দিল দানব।
তারপর অ্যাডামকে ধরার চেষ্টা করল।
ওয়াচ আবারও ভ্যাম্পায়ারের মাথায় কষিয়ে দিল হাতুড়ির বাড়ি।
' ফোম রাবারে ফ্লেয়ার ছোঁড়ো!' চেঁচাল সে।'জ্বালিয়ে দাও।'
অ্যাডাম তা-ই করল।
সাথে সাথে দাঊ দাঊ করে জ্বলে উঠল পুরানো ম্যাট্রেস।
ভ্যাম্পায়ার সিধে হওয়ার চেষ্টা করছে,দলটা লাফ মেরে পিছিয়ে এল।আগুন ছোবল মারল ভ্যাম্পায়ারকে।যন্ত্রনায় কাতরাতে লাগল ওটা।আগুনের শিখা দানবটাকে জড়িয়ে ধরেছে আষ্টেপৃষ্ঠে, ওটার চামড়া পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।টলতে টলতে ভ্যাম্পায়ার থাবা বাড়িয়ে ওদের দিকে এগোবার চেষ্টা করল।কিন্তু পারল না।পিছলে পড়ে গেল জ্বলন্ত ফোম রাবারের স্তুপে।
কালো ধোঁয়া উঠছে ছাদের দিকে।ধোঁয়ার দম বন্ধ হওয়ার দশা।ওরা সবাই কাশতে লাগল।
'এখান থেকে বেরোও সবাই।' চেঁচাল ওয়াচ।'পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে আগুন।'
ওরা জানালার দিকে ছুটল।কিন্তু ওখানে পৌঁছার আগেই ফোম রাবারের স্তুপগুলোতে একযোগে আগুন ধরে গেল।ওয়্যারহাউজের ভেতরটা বিষাক্ত অগ্নিশিখার বিরাট একটি খাদে পরিণত হলো।লম্বা লকলকে জিভ বের করে ছাদ ছুঁতে চাইছে অগ্নিশিখা। নিশ্বাস বন্ধ হয়ে সিন্ডির প্রায় জ্ঞান হারাবার দশা।অ্যাডাম ওকে জড়িয়ে ধরে টানতে টানতে নিয়ে চলল খোলা জানালায়।
ওদের পেছনে,অগ্নিকুণ্ডের নরক থেকে ভেসে এল জান্তব আর্তনাদ।
ওরা একটু পরে বেরিয়ে এল ওয়্যারহাউজ থেকে।গোটা ওয়্যারহাউজ জ্বলছে দাঊ দাঊ করর।তীব্র দাবদাহে চামড়া পুড়ে যাবার মত অবস্থা।ওরা ওয়্যারহাউজের সামনে থেকে সরে এল।
'আমরা পেরেছি,' খুশি খুশি গলায় বলল স্যালি।
' আগুনের কবল থেকে একটা ভ্যাম্পায়ারও বাঁচতে পারবে না,' বলল ব্রাইস।
অ্যাডাম ফিরল ওয়াচের দিকে।সে জ্বলন্ত ওয়্যারহাউজের দিকে আড়ষ্ট ভঙ্গি নিয়ে তাকিয়ে আছে। 'কী ব্যাপার?' জিজ্ঞেস করল অ্যাডাম।
' ওই ভ্যাম্পায়ারগুলোর যদি কোনো রানি থেকে থাকে,' বলল ওয়াচ।
' হয়তো অনেক প্রাচীন সে।তার মত প্রাচীন একজন ভ্যাম্পায়ার এত সহজে ধ্বংস হবার নয়।'
' আরও ভ্যাম্পায়ার বেঁচে আছে বলে মনে হয় না আমার,' বলল স্যালি।
' কিন্তু আমার মনে হচ্ছে,' বলল ওয়াচ।'কাজেই আমি তোমাদের মত খুশি হতে পারছি না।'
'তাহলে আমাদের করণীয় কী?' জিজ্ঞেস করল অ্যাডাম।
শার্ট দিয়ে চশমার কাঁচ পরিস্কার করতে করতে দীর্ঘশ্বাস ফেলল ওয়াচ।
'কোনো অভিজ্ঞ লোকের পরামর্শ নেয়া দরকার।'
(চলবে)
@নেকরে মানব
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now