বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
গল্প : অনুভবে ভালোবাসা
.
.
"এত চুপচাপ থাকিস কেন ?সবার সাথে মিশলে
কি তোর খুব ক্ষতি হয়ে যাবে ?"
.
আমি আবিদ ।মাস্টাস্ এ পড়ছি । কম্প্যাসে
একটা গাছের নিঁচে একা একা বসে বই
পড়তেছিলাম । এমন সময় উপরের কথাটা শুনতে
পেলাম ।
.
আমি এদিক-ওদিক তাকালাম ।হ্যাঁ আমার
থেকে কিছুদূরে ।৪-৫ জন বন্ধু-বান্ধবি মিলে
আড্ডা দিচ্ছে ।এর মধ্যে একজন মেয়ে রীতিমত
ভাষণের ন্যায় কথা বলে যাচ্ছে ।
.
এই মেয়েটা আমি ভালো করেই চিনি -
মেয়েটির নাম ইমু ।এবার অনার্স ১ম বর্ষে পড়ে
।খুবই চঞ্চল ।
.
আমি জানি কথাগুলো আমাকে উদ্দেশ্য করে
বলছে ।আমি কিছুক্ষণ ইমুর দিকে তাকিয়ে
থাকলাম ।ইমু কথা বলছে আর আমার দিকে আড়-
চোঁখে তাকাচ্ছে ।
.
আমি কিছুই বললাম না।একতা মুচকি হাসি
দিয়ে বইটা ব্যাগে রেখে সেই স্থান ত্যাগ
করলাম ।আর চলতে চলতে ভাবতে থাকলাম
প্রথম ইমুর নামের চঞ্চল মেয়েটির সাথে কথা
বলার সেই মুহূর্তটি ।
.
ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতেই আমার
ডিপার্টমেন্ট সামনে দেখলাম -একটা মেয়ে
এলোমেলো ভাবে পায়চারী করছে ।আমি
তাকে সাহায্য করার জন্য ।তার সামনে দিয়ে
হেঁটে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলাম ।
.
তার সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়
মেয়েটি আমার সামনে এসে দাড়ালো এবং
বলল-আমি ইমু ।এবার ভর্তি হয়েছি ।এই
ডিপার্টমেন্ট এ আবিদ নামের কেউ কি
আছে ???
.
আমি তার দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে
তাকালাম ।
.
ইমু আমতা আমতা করে বলল-না_মানে, ছেলেটি
ভালো ছাএ হলেও ।ছেলেটির নাকি খুব ভাব ।
সবার সাথে প্রয়োজন ব্যাতীত কথা বলে না ।
একা একা থাকে ?ছেলেটাকে আমার দেখার
খুব শখ ।
.
আমি বললাম -আপনি তার সম্পর্কে ঠিক
শুনেছেন ।
.
ইমু তখন প্রাণবন্ত কন্ঠেই বলল-আবিদ নামের
ছেলেটি মনে হয় প্রেম করে ছেঁকা খাইছে
তাই এই রকম হইছে ।আহারে ছেলেটার কি
কষ্ট ?
.
আমি দৃঢ় কন্ঠে বললাম-মোটেও সে ছেঁকা খাই
নাই।আসি .....।
.
ইমু আরও কিছু বলতে ছিল কিন্তু আমি সেখান
থেকে চলে আসি ।
.
ইমু পরে হয়ত জেনে ছিল যে ,আমিই আবিদ ।
পরে এসে সরি বলে গেছে ।এরপর থেকে
কখনো পড়ার বিষয় নিয়ে আবার কখনো অন্য
বিষয় নিয়ে আমার কাছে আসত ইমু ।
.
আমার সাথে কথা বলার কোন সুযোগ না পেয়ে
বা বলার সাহস না পেয়ে । দূর থেকে আমাকে
উদ্দেশ্য করে আমি যেন শুনতে পারি এইভাবে
কত কথা বলত ।এই যেমন :-একটু স্ট্যাইল করবি
,জিন্স পড়বি ভালো লাগবে । শার্টের হাতা
ভাঁজ করে রাখবি ,আর মাঝে মাঝে নীল
পাঞ্জাবী পড়বি ঠিক আছে এগুলো আমার খুব
পছন্দের।কিন্তু আমি কিছুই বলতাম না ।
.
এইভাবেই চলল কিছুদিন ....
আজ হঠাৎ করে ইমু এসে বলল -আপনার সাথে
আমার কিছু কথা আছে ?
.
আমি বললাম-হুম বল ?
.
ইমু (কিছুটা স্বাভাবিক ভাবেই বলতে চেষ্টা
করল কিন্তু অবশেষে না বলতে পেরে )বলল-
আআ্পনি কি কিছুই্ই বুঝেন না ???
.
আমি ভ্রু দুটি কিছুটা কুজকে তার দিকে
তাকিয়ে থাকলাম ।
.
ইমু( এবার মনে হয় কিছুটা বিব্রত বোধ করছে ।
সে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে দীর্ঘ একটা
নিশ্বাস নিয়ে বলতে শুরু )করল-আপনি জানেন
,আমার পিছে কত ছেলে ঘুরে ?কিন্তু আমার
কাউকেই ভালো লাগে না ।কারন আমার মনটা
একজনের কাছে গচ্ছিত আছে ।সে কে
জানেন ???
.
আমি (নরম স্বরে )বললাম -তা জেনে আমি কি
করব ?
.
ইমু উচ্চস্বরেই বলল-কি করবেন মানে ?
আপনাকে জানতে হবেই ।কেন সেই মেয়েটি
বেহায়ার মত আপনার কাছে গিয়ে কথা বলত
বার-বার । কেন সে কথা বলার সুযোগ না
পেয়ে ছেলেটিকে শুনিয়ে শুনিয়ে কথা বলত ।
যেই মেয়েটি কখনো লাইব্রেরীতে যেত না ।
সে কেন লাইব্রেরীতে সবসময় পড়ে থাকত ।এই
সব প্রশ্নের জবাব আপনার কাছেই আছে ।শুধু
আপনার কাছেই??
.
আমি কিছু না বলে একটা মুচকি হাসি দিয়ে
চলে এসেছিলাম ।
.
চলে যায় কিছুটা সময় ।বদলে যায় জীবন ।
সময়ের পরিক্রমায় ,আজ দাড়িয়ে আছি ইমুদের
বাসার ছাঁদে ।
.
আজ আমি পড়েছি নীল পাঞ্জাবী ।হাতে
ব্ল্যাক কালারের ঘড়ি ।চুলটা আজ ডান দিকে
সিথী করা নয় ।
.
ইমু (আমার পাশে এসে দাড়ালো ।কিছুক্ষণ
আমাকে দেখল পা থেকে মাথা পর্যন্ত।
এরপর )বলল-আপনার সাহসতো কম না আমার
বাসার বিয়ে প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন ।
.
আমি সেই আগের মত একটা হাসি দিলাম ।
.
ইমু (রাগী স্বরেই) বলল-এভাবে হাসবেন না ।
আমার কথার উওর দিন ??
.
আমি (নরম স্বরে)বললাম -ভালোবাসি ।
.
ইমু (স্বাভাবিক ভাবেই) বলল-কাকে ?
.
আমি বললাম -একটা মেয়ে আছে ,যে আমার
সাথে
কথা বলার জন্য বিভিন্ন বাহানা নিয়ে আমার
কাছে আসত ।
আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে কথা বলত ।
.
ইমু (কান্নার ভাব এনে) বলল -ছেলেটি যদি
মেয়েটিকে
ভালোবাসতো তাহলে এভাবে এতদিন কষ্ট
দিত না ।তার থেকে দূরেও থাকত না ।
.
আমি (নরম স্বরেই) বললাম- তোমার বিয়ে গুলো
কে ভেঙেছে ?? শুধু তুমি একাই পেয়েছ ??আমি
পাইনি??
.
ইমু (এবার গম্ভীর ভাবে) বলল-তাইতো বলি
আমি কত
কষ্ট করি বিয়ে ভাঙানো জন্য পারি না ।
কিন্তু পরে
ঠিকই বিয়ে ভেঙে যায় কেন ?
.
আমি মাথা নিঁচু করে আছি ।কিছুই বলছিনা ।
কিছুক্ষণ পর
কেউ আমাকে জড়িয়ে ধরেছে অনুভব করলাম ।
.
ইমু (আমাকে জড়িয়ে ধরেই কান্না মিশ্রিত
কন্ঠে
বলতে শুরু )করল-আমাকে আর কষ্ট দেওয়া যাবে
না
।খুব খুব ভালোবাসতে হবে ।
.
আমি কিছু না বলে একহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে
অন্য
হাত দিয়ে তার মাথার হাত বুলাতে লাগলাম ।
.
ভালোবাসা জিনিসটা একেক জনের কাছে
একেক ভাবে উপস্থিত হয় ।তাই যেন ,কারও
প্রেম কাহিনীর সাথে কারও প্রেম কাহিনী
পুরোপুরি মিলে না । ভালোবাসা জিনিসটা
প্রত্যক জন আলাদা আলাদা ভাবে অনুভব করে
।
.
ভালোবাসার মানুষগুলোর থাকনা কিছু মুহূর্ত
স্মৃতিপটে বন্দি।বেঁচে থাকুক অনুভূতি।বেঁচে
থাকুক ভালবাসা অনন্ত কাল।
. ♥♥♥জয় ♥♥
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now