বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
মক্কার কিছু দূরে হুদাইবিয়া গ্রাম।
বিরাট এক বৈঠক বসেছে। বৈঠকে
রয়েছেন মহানবী (সা) এবং
উল্লেখযোগ্য সব সাহাবি। মুশরিক
কুরাইশদের পক্ষ থেকে রয়েছে কয়েকজন
প্রভাবশালী সরদার। হুদাইবিয়ার
শর্তাবলী চুড়ান্ত হয়েছে। কিন্তু তখনও
লিখা শুরু হয়নি। এমন সময় মক্কা থেকে
আবু জান্দাল এসে সেখানে হাজির
হলো। তার হাতে পায়ে শিকল। সারা
গায়ে তার নির্যাতনের চিহ্ন। মুসলমান
হওয়ার অপ্রাধে তাকে আটকে রাখা
হয়েছিল। পুনরায় পৌত্তলিক ধর্মে
তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য তার
আত্মীয়-স্বজন তার উপর অকথ্য নির্যাতন
চালিয়েছে। কতদিন আর নির্যাতন সইবে
সে। মুক্তির আশায় সে পাগল হয়ে
উঠেছিল। এই সময় সে জানতে পারে,
মহানবীর (সা) তাঁর চৌদ্দশ’ সাহাবাসহ
হুদাইবিয়া পর্যন্ত এসে যাত্রা বিরতি
করেছেন। অনেক আশা তার মনে, একবার
কোন ক্রমে যদি মহানবীর (সা) কাছে
গিয়ে সে পৌঁছতে পারে, তাহলেই তার
জীবনে এসে যাবে চির মুক্তির সুবহে
সাদিক। আবু জান্দাল হুদাইবিয়ার সে
বৈঠকে হাজির হয়ে মহানবীকে (সা)
তার সব কথা জানিয়ে আশ্রয় প্রার্থনা
করলো। আবু জান্দালের নির্যাতনের
কাহিনী শুনে উপস্থিত মুসলমানদের
মনে বেদনার তরংগ বয়ে গেল।
আবু জান্দাল হুদাইবিয়ার বৈঠকে
পৌঁছার পর পরই আবু জান্দালের পিতা
সুহাইল তার মুখে কয়েক্তি চপোটঘাত
করল এবং আবু জান্দাল্কে তার হাতে
ফিরিয়ে দেবার জন্য মহানবীর (সা)
কাছে দাবী জানাল। সে বলল,
‘হুদাইবিয়া সন্ধির শর্তানুসারে আবু
জান্দালকে আপনারা রাখতে পারেন
না। তাকে আপনারা ফিরিয়ে দিতে
বাধ্য।’ (হুদাইবিয়ার সন্ধির একতি শর্ত
ছিল, মক্কার কোন লোক মুসলমান হয়ে
কিংবা অন্যভাবে মুসলমানদের আশ্রয়ে
গেলে তাকে মক্কাবাসীদের হাতে
ফিরিয়ে দিতে হবে)।
সুহাইলের কথা শুনে মহানবী (সা)
বললেন, ‘সন্ধি এখন লিখিত হয়নি,
স্বাক্ষর তো হয়ইনি। সুতরাং এর শর্ত এই
মূহূর্তে মেনে নেয়া কি খুবই জরুরী?’
সুহাইল কিন্তু নাছোড় বান্দা। সে বলল,
‘সন্ধি লিখিত ও স্বাক্ষরিত না হলেও
কথা তো পাকাপাকি হয়ে গেছে।
সুতরাং আবু জান্দালকে আমি অবশ্যই
ফিরে পাব।’
মহানবী (সা) সুহাইলের কথার জবাব
দিলেন না। সুহাইলের কথা যে অমূলক
নয়, তা তিনি জানেন। যা উভয় পক্ষে
স্বীকৃত ও নির্দিষ্ট হয়ে গেছে, তা
অস্বীকার করা যায় না। চিন্তিত হলেন
তিনি। মহানবীকে (সা) নীরব থাকতে
দেখে মুসলমানরাও আশংকিত হয়ে
পড়লেন। কি জানি, তাদের এক ভাইকে
নাকি আবার কাফিরদের হাতে
ফিরিয়ে দিতে হয়। মহানবী (সা)
আত্যন্ত নরম ভাষায় আবু জান্দালকে
ফেরত না চাইবার জন্য সুহাইলকে
অনুরোধ জানালেন। কিন্তু মহানবীর
(সা) বিনীত প্রার্থনাতেও সুহাইলের
মন গলল না।
মহানবীর (সা) সামনে তখন উভয় সংকট।
একদিকে সন্ধির শর্ত রক্ষা, অন্যদিকে
একজন মুসলমানকে কাফিরদের হাতে
ফেরত না দেয়া। সন্ধির শর্ত যেহেতু
আগেই নির্ধারিত হয়েছে, তাই সন্ধির
শর্ত পালনই তাঁর কাছে বড় হয়ে উঠল।
আবু জান্দাল যখন বুঝল যে, তাকে পুনরায়
কাফিরদের হাতে ফিড়িয়ে দেয়া হবে,
তখন সে করুণ ভাবে কেঁদে উঠল। বলল,
“আমি মুসলমান হয়ে আপনাদের কাছে
আশ্রয় নিলাম। আর আপনারা আমাকে
ফির্যে দিচ্ছেন। কত অত্যাচার, কত
যন্ত্রনা যে আমাকে ভোগ করতে হয়,
তাতো আপনারা জানেন না।”
আবু জান্দালের কথা শুনে উপস্থিত
প্রতিটি মুসলমানদের চোখ অশ্রুসিক্ত
হয়ে উঠল। মন তাদের বিদ্রোহী হয়ে
উঠতে চায়, না আমাদের ভাইকে আমরা
ফিরিয়ে দেবনা। দরকার হলে, তাকে
রক্ষার জন্য যে কোন পরিস্থির
মোকাবিলা করব। কিন্তু মহানবীর (সা)
সৌম্য শান্ত ভাবনার গভীরে
নিমজ্জিত মুখের দিকে চেয়ে তারা
কিছুই বলতে পারলেন না।
ব্যথা-বেদনার রাজপথ বেয়ে আবু
জান্দাল্কে বিদায় দেবার সময় মহানবী
(সা) তাকে সান্তনা দিয়ে বললেন, “আবু
জান্দাল, আল্লাহর নামে ধৈর্য ধর,
আল্লাহই তোমার মুক্তির ব্যবশ্তা করে
দেবেন।” চোখ মুছে আবু জান্দাল আবার
ফিরে চলল মক্কায়। ন্যায়-বিচার ও
স্বীকৃত নীতিবোধকে এ ভাবেই
মুসলমানরা সব সময় সবার উর্ধে স্থান
দিয়েছেন।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
River
Guest ৬ বছর, ১১ মাস পুর্বেRandhil
Guest ৬ বছর, ১১ মাস পুর্বে