বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

তিন গোয়েন্দা - কঙ্কাল দ্বীপ (চ্যাপ্টার ৩)

"গোয়েন্দা কাহিনি" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিয়েন সরকার (০ পয়েন্ট)

X (৩) তাদেরকে হস্তে নামিয়ে দিয়ে গেল কেন হান্ট ? এই ভয়াবহ ঝড়ের রাতে নির্জনদ্বীপে ফেলে রেখে গেল কেন? মুসা আমান: “এখানে নামিয়ে দিয়ে গেল কেন হান্ট,” কপালে লেগে থাকা পানির কণা মুছতে মুছতে বলল মুসা, “বুঝতে পারছি না।” রবিন মিলফোর্ড: “ভুল করেছে হয়ত। কঙ্কাল দ্বীপভেবে হস্তে নামিয়ে দিয়েগেছে।” কিশোর পাশা: “না। ভুল করেনি। ইচ্ছে করেই এখানে ফেলে গেছে ব্যাটা। প্রথম থেকেই লোকটাকে ভাল লাগেনি। আমরা গোয়েন্দা, জানল কি করে ? কোথাও কিছু একটা গোলমাল হয়েছে !” মুসা আমান: “যা খুশি হোকগে,” মুসার গলায় হতাশা। “না খেয়ে না মরলেই হল। কেউ আমাদেরকে খুঁজে . . . ” কিশোর পাশা: “সকালে খুঁজেপাবে। ভোর রাতেই মাছ ধরতেবেরোয় জেলেরা।” রবিন মিলফোর্ড: “কিন্তু এদিকে কোন জেলে-নৌকা আসারকথা না,” রবিনের গলায় সন্দেহ। “পড়নি, এক ধরনের লাল পরজীবী কীটের আক্রমণে নষ্ট হয়ে গেছে এখানকার ঝিনুক ? খাওয়া নিরাপদ নয়। মেলভিলের একেবারে দক্ষিণে ঝিনুক তুলতে যায়এখন জেলেরা। ফিশিং-পোর্টের এদিকে আসে না। আরকিছুদিন এভাবে চললে গ্রামছেড়ে চলে যাবে সবাই।” কিশোর পাশা: “তবু, কেউ না কেউ আসবেই। আমরা নিরুদ্দেশ হয়েছি, জানবেনরাফাত চাচা। খোঁজখবর শুরুহয়ে যাবে। আজ এখানে নেমেবরং ভালই হল। ফোয়ারাটা দেখতে পেলাম।” আর বিশেষ কিছু বলার নেই কারও। চুপ হয়ে গেল ওরা। বাইরে ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু খোঁড়লের ভেতর মোটামুটি নিরাপদ। যেমন হঠাৎ আসে, তেমনি হঠাৎই আবার চলে যায় এ-অঞ্চলের ঝড়। তিন কিশোর আশা করল, সকাল নাগাদ থেমে যাবে। শিগগিরই ঢুলতে শুরু করল ওরা। হঠাৎ তন্দ্রা টুটে গেল মুসার। কোথায় আছে বুঝতেইপেরিয়ে গেল কয়েক মুহূর্ত। তারা চোখে পড়ল।ঝড় থেমে গেছে। তন্দ্রা ছুটে যাবার এটাই কি কারণ? না। চোখে আলো পড়েছিল। এখন আবার পড়ল। শ’খানেক গজ দূর থেকে আসছে, তীব্র আলোর রশ্মি। এক মুহূর্ত স্থির থাকল, তারপরেই সরে গেল আবার আলো। লাফিয়ে দাঁড়াতে গিয়ে মাথায় বাড়ি খেল মুসা।”ইয়াল্লা !” বলে চেঁচিয়ে উঠে আবার বসে পড়ল। সাবধানে হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে এলো খোঁড়লের বাইরে। গা থেকে রেনকোট খুলে নাড়ে নাড়তেচেঁচিয়ে বলল, মুসা আমান: “এখানে ! আমরা এ-খা-নে !” মুসার পাশে এসে দাঁড়াল রবিন আর কিশোর। আবার আলো পড়ল মুসার গায়ে। তারপরেই সরে এসে পড়ল রবিন আর কিশোরের ওপর। এক মুহূর্ত স্থির রইল। চকিতের জন্যে একবার উঠে গেল আকাশের দিকে। একশো গজ দূরে নৌকার পাল দেখতে পেল তিন গোয়েন্দা। মুসা আমান: “দ্বীপের গায়ে ভিড়েছে নৌকা ! আমাদেরকে যেতে বলছে . . . ” আকাশে তারার আলো। আবছা অন্ধকার। হাঁটতে শুরু করলতিন গোয়েন্দা। আবার জ্বলে উঠল টর্চ। রবিন মিলফোর্ড: “দেখ দেখ !আমাদেরকে পথ দেখাচ্ছে !” বৃষ্টিতে ভিজে পিচ্ছিল হয়ে আছে মাটি। দৌড়ানো তো দূরের কথা, তাড়াতাড়িহাঁটাই যাচ্ছে না। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে একবার আছার খেল মুসা। পাথরে ঘষা লেগে ছড়ে গেল হাঁটু। পানির কিনারে এসে থামল তিন গোয়েন্দা। তীরে ভিড়েছে ছোট একটা পালতোলানৌকা। পাশে বালিতে দাঁড়িয়ে আছে তাদেরই বয়সী এক কিশোর। পরনে পানি নিরোধক জ্যাকেট। প্যান্টটা গুটিয়ে হাঁটুর কাছে তুলে নিয়েছে। তিন গোয়েন্দার মুখে আলো ফেলল ছেলেটা। দেখল। তারপরনিজের মুখে আলো ফেলে দেখাল ওদেরকে। হাসিখুশি একটা মুখ। রোদেপোড়া তামাটে চামড়া। কোঁকড়া কালো চুল। কালো উজ্জ্বল এক জোড়া প্রাণবন্ত চোখ। –“হাল্লো !” ইংরেজিতে বলল ছেলেটা। কথায় বিদেশী টান। “তোমরা তিন গোয়েন্দা, না?” অবাক হল তিন কিশোর। তাদেরপরিচয় এখানে গোপন নেই কারও কাছেই ! ঢোল পিটিয়ে জানানো হয়েছে যেন ! পাপালো হারকুস: “স্কেলিটনআইল্যাণ্ড এখন পিছনে। গায়ের দিকে এগোচ্ছি আমরা।” পেছনে ফিরে চাইল তিন গোয়েন্দা। দেখা যাচ্ছে না দ্বীপ। শুধু কালো অন্ধকার। হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠল রবিন, রবিন মিলফোর্ড: “দেখ দেখ !আলো !” একসঙ্গে জ্বলে উঠেছে অনেকগুলো আলো, ঘুরছে। শোনা যাচ্ছে অদ্ভুত একটা ধাতব শব্দ। আস্তে আস্তে বাড়ছে ঘোরার বেগ। দেখতে দেখতে আলোর এক বিশাল আংটিতৈরি হয়ে গেল। মুসা আমান: “ইয়াল্লা !” ফিসফিস করে বলল মুসা। “নাগরদোলা ! নিশ্চয় ঘোড়ায় চেপে বসেছে স্যালি . . . ” কিশোর পাশা: “পাপু ! নৌকা ঘোরাও ! দেখব, কিসে ঘোরাচ্ছে নাগরদোলা !” পাপালো হারকুস: “আমি পারবনা ! স্যালির ভূত ! ঝড় থেমেছে একটু আগে। এখন এসেছে দোলায় চড়তে ! ইসস্, নৌকাটা আরও জোরে চলছে না কেন ! একটা মোটর যদি থাকত . . . ” সোজা ফিশিং-পোর্টের দিকে ছুটে চলেছে নৌকা। খুশিই হয়েছে মুসা আর রবিন। হতাশ হয়ে কিশোর। সত্যিকারের ভূত দেখার ইচ্ছে তার অনেকদিনের। এমনএকটা সুযোগ হাত-ছাড়া হয়ে গেল। অন্ধকারে উজ্জ্বল আলোর রিঙ তৈরি করে ঘুরেই চলেছেনাগরদোলা। বাইশ বছর আগে মরে যাওয়া তরুণীর প্রেতাত্মা . . . কথাটা ভাবতেই শিউরে উঠল রবিন। হঠাৎ থেমে গেল ধাতব শব্দ।নিভে গেল আলো। এত তাড়াতাড়ি নাগরদোলা চড়ার শখ মিটে গেল স্যালির প্রেতাত্মার . . . আশ্চর্য ! – ভাবল কিশোর। অন্ধকারের দিকে চেয়ে বসেআছে সে। চিমটি কাটছে নিচের ঠোঁটে। আরও আধ ঘণ্টা পর মিসেস ওয়েলটনের বোর্ডিং হাউসে এসে উঠল তিন গোয়েন্দা। সঙ্গে সঙ্গে টেলিফোনে সিনেমা কোম্পানিকে জানিয়ে দিল মিসেস। গরম পানিতে গোসল করল তিন গোয়েন্দা। খাওয়া সারল। গরম বিছানায় উঠল। কম্বলটা গায়ের ওপর টেনে দিতে দিতে বলল কিশোর, কিশোর পাশা: “ভূতটা দেখতেপারলে ভাল হত !” মুসা আমান: “আমার তা মনে হয় না,” ঘুম-জড়িত গলায় বলল মুসা। শুয়ে পড়ে কম্বলটাটেনে নিলো গায়ের ওপর। রবিন কিছু বলল না। ঘুমিয়ে পড়েছে। কয়েক মিনিট পর . . . দ্রুতগতি একটা স্পীডবোটে বসে আছে তিন গোয়েন্দা। কঙ্কাল দ্বীপের দিকে ছুটেচলেছে বোট। ফিশিং-পোর্টকে গ্রাম বলা হয়, আসলে ছোটখাটো শহর ওটা। ঘুরে দেখার ইচ্ছে ছিল ওদের, কিন্তু সময় মেলেনি। রাতের বেলা অন্ধকারে কিছুই দেখেনি ছেলেরা। এখনদেখল, অসংখ্য ডক আর জেটি ছড়িয়ে- ছিটিয়ে আছে এদিক ওদিক। সেই তুলনায় নৌকা-জাহাজ অনেক কম। বুঝতে পারল, ওগুলো সব চলে গেছে উপসাগরের দক্ষিণে। ফিশিং-পোর্টের সীমানা খুব বেশি বড় না। লোকসংখ্যা আগে অনেক ছিল, ইদানীং নাকি কমে গেছে। ব্যবসা ভাল না, থেকে কি করবে লোকে ? কৌতূহলী চোখেকঙ্কাল দ্বীপের দিকে তাকিয়ে আছে ওরা। মাইল-খানেক দূরে আছে এখনও। প্রচুর গাছপালা দ্বীপে। উত্তরপ্রান্তে একটা ছোট পাহাড়। কঙ্কাল দ্বীপের দক্ষিণে একটা পুরানো জেটির গায়ে এসে ভিড়ল বোট। পাশেই খুঁটিতে বাঁধা আরেকটা মোটর বোট। একপাশ থেকে ঝুলছে বিশেষ সিঁড়ি। স্কুবা ডাইভিঙের সময় খুবকাজে লাগে। জেটির ধার থেকে পথ চলে গেছে। আগে আগে চললেন মিস্টার আমান। পেছনে তিন কিশোর। শিগগিরই একটা খোলাজায়গায় এসে পৌঁছুল ওরা।ঝোপঝাড় কেটে পরিষ্কার করে ফেলা হয়ে জায়গাটা। একপাশে দুটো ট্রেলার দাঁড়িয়ে আছে। বড় বড় কয়েকটা তাঁবু খাটানো হয়েছে মাঝখানে। রাফাত আমান: “ওই যে, মিস্টার জন নেবার, ডিরেক্টর। গতকাল এসে পৌঁছেছেন ফিলাডেলফিয়া থেকে ! জরুরি কাজ সেরে আজইফিরে যাবেন আবার।” হর্ন-রিম চশমা পরা একজন লোক এগিয়ে আসছেন। বয়েস চল্লিশের কাছাকাছি। পেছনে তিনজন লোক। একজনের চুল ধূসর। সে-ই পিটার সিমনস, এসকেপের সহকারী পরিচালক, পরে জেনেছে তিন গোয়েন্দা। আরেকজনের চুল সোনালি, নাবিকদের মত ছোট ছোট করে ছাঁটা। যুবক। জোসেফ গ্র্যাহাম। তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে বিশাল-দেহী এক লোক। চওড়াবুকের ছাতি। বাঁ হাতটা ঝুলছে বেকায়দা ভঙ্গিতে, বোঝাই যায় অকেজো। কোমরে ঝুলছে রিভলভার। জিম রিভান, গার্ড। রাফাত আমান: “আমাদের ক্যাম্প,” তাঁবুগুলো দেখিয়ে বললেন মিস্টার আমান। “বার্জে করে আনা হয়েছে ভারি মালপত্র। আমরা এখন লোক কম। কয়েকদিন পরে শূটিঙের কাজ শুরু হলেই আসবে আরও অনেকে। আসবে দামি যন্ত্রপাতি। তখন আর ওই তাঁবুতে কুলাবে না। আরও কয়েকটা ট্রেলার দরকার পড়বে।” কাছে এসে গেলেন পরিচালক। রাফাত আমান: “সরি, মিস্টার নেবার। দেরিই হয়ে গেল।” জন নেবার: “না না, ঠিক আছে,” হাত তুললেন পরিচালক। ছেলেদের দিকে একবার তাকালেন। আবার ফিরলেন মিস্টার আমানের দিকে। “কিন্তু এখানকার অবস্থা তো বিশেষ সুবিধের মনে হচ্ছে না। সবই বলেছে পিটার। আর হপ্তা- খানেকের ভেতর নাগরদোলাটা ঠিক না করা গেলে, স্কেলিটন আইল্যাণ্ডের আশা বাদই দেব। ক্যালিফোর্নিয়া য় ফিরে গিয়ে স্টুডিওতেই একটা পার্ক সাজিয়ে নেব। নাগরদোলা আনা যাবে ভাড়া করে। তবে এখানে করতে পারলে ভালই হত। সবকিছু আসল। তাছাড়া দ্বীপের দৃশ্য, উপসাগরের দৃশ্য, খুবই চমৎকার।” রাফাত আমান: “আশা করছি, ঠিক করে ফেলতে পারব। কাঠমিস্ত্রিকে খবর দিয়ে পাঠিয়েছি।” জন নেবার: “তা পাঠিয়েছেন, কিন্তু আসবে কিনা যথেষ্ট সন্দেহ আছে,” গম্ভীর গলায় বললেন পরিচালক। “সারা শহর জেনে গেছে, গতরাতে ভূত দেখা গিয়েছে।নাগরদোলা ঘুরেছে।” রাফাত আমান: “ভূত ভূত ভূত!” মুঠো হয়ে গেল মিস্টার আমানের হাত। চেহারা কঠোর, “ওই ভূতের শেষ দেখে ছাড়বআমি।” পায়ে পায়ে এসে পরিচালকের পেছনে দাঁড়িয়েছে জিম রিভান। আস্তে করে কেশে উঠল। জিম রিভান: “মাফ করবেন, স্যার, গতরাতের ভূতটা বোধহয় আমিই।” গাছপালার ভেতর দিয়ে পাহাড়ের দিকে উঠে গেছে একটা পায়ে চলা পথ। আগের রাতের ঝড়ে ভেঙে পড়েছে অনেক গাছপালা। পথের ওপর ডালপাতা বিছিয়ে আছে। ওসবের মধ্যে দিয়ে চলতে অসুবিধে হচ্ছে, বিশেষ করেরবিনের। তার ভাঙা পা সারেনি পুরোপুরি। {চলবে}


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৭১২ জন


এ জাতীয় গল্প

→ তিন গোয়েন্দা - কঙ্কাল দ্বীপ (চ্যাপ্টার -৬)
→ তিন গোয়েন্দা - কঙ্কাল দ্বীপ (চ্যাপ্টার ২)

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • রিয়েন সরকার
    Author ৭ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    ওকে

  • Mahi
    Guest ৭ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    বাকি গল্পটা দিয়ে দিন ভাইয়া,,আর এত ছোট ছোট না করে একটা গল্প তিন খন্ডে দিলেই ভালো হয়,,অল্প অল্প‌ করে পড়তে ভালো লাগে না gj

  • jaifa
    User ৭ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    তিন গোয়েন্দা সিরিজের আরো গল্প দিলে ভাল হত।।

  • ইসরাত ইমরোজ
    User ৭ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    ওয়াও

  • সাইমন জাফরি
    Admin ৭ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    চলুক...