বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

আমরা কেউ বাসায় নেই-৭

"উপন্যাস" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিয়েন সরকার (০ পয়েন্ট)

X আমি দুজনের মাঝখানে বসে আছি। ডান পাশের জনের পান-খাওয়া হলুদ দাঁত। এ-ই মনে হয় দলটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। সবাই তাকে ‘ব্যাঙা ভাই’ ডাকছে। ব্যাঙা কারোর নাম হতে পারে, তা-ই আমার ধারণা ছিল না। ব্যাঙা ভাই বেঁটেখাটো মানুষ। হাসিখুশি স্বভাব। তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ভয় খাইছেন নাকি, ভাই? আমি বললাম, ভয় কোনো খাওয়ার জিনিস না। ভয় হচ্ছে পাওয়ার জিনিস। আমি ভয় পাচ্ছি না। ব্যাঙা ভাই বললেন, ঘটনা মালেক গ্রুপের হাতে চলে গেছে, এটাই সমস্যা। মালেক গ্রুপ না থাকলে পুরা বিষয় ছিল পান্তাভাত। আমি বললাম, মালেক গ্রুপ ব্যাপারটা কী? মালেকের দল। মালেক হলো ট্রাক মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ। এটা ওনার বাইরের পরিচয়। ভেতরের পরিচয় ভিন্ন। বিরাট ডেনজার লোক। তবে উনি আমারে খাতির করে। সে জানে ব্যাঙা সহজ জিনিস না। আপনি কঠিন জিনিস? অবশ্যই। টগর ভাইয়ার সঙ্গে আপনার পরিচয় কীভাবে? সে এক ঘটনা। আরেক দিন শুনবেন। টেনশানের সময় গল্পগুজবে মন বসে না। আপনার টেনশান হচ্ছে? মালেকের গ্রুপ, টেনশান হবে না? বিপদের সময় আমি সঙ্গে মাওলানা রাখি। মাওলানা দোয়া-খায়ের করতে থাকে, যেন বিপদ হালকা হয়। অল্পের ওপর দিয়া যায়। আজ মনে হয় অল্পের ওপর দিয়ে যাবে না। বাতাস খারাপ। আগারগাঁওয়ের এক বস্তির কাছে মাইক্রোবাস থামল। মাওলানা আর আমাকে রেখে ব্যাঙা দলবল নিয়ে চলে গেল। ড্রাইভার তার সিটে বসা। তার দৃষ্টি তীক্ষ । ব্যাঙা যেদিকে গিয়েছে, ড্রাইভার সেদিকেই তাকিয়ে আছে। সেও নিশ্চয়ই এই দলের সঙ্গে যুক্ত। সামনের দিক থেকে একটা ইয়েলো ক্যাব এসে মাইক্রোবাসের পাশে থামল। সাফারি গায়ে মোটাসোটা একজন নামল। কিছুক্ষণ মাইক্রোবাসের দিকে তাকিয়ে থেকে সে বস্তির ভেতর ঢুকে গেল। মাইক্রোবাসের ড্রাইভার বলল, হাওয়া গরম, শামসু চলে আসছে। আমি বললাম, শামসু কে? ভেজালের জিনিস। শামসু আছে আর ভেজাল হয় নাই এমন কোনো দিন ঘটে নাই। কী রকম ভেজাল? লাশ পড়ে যায়। এই হলো ভেজাল। আমি হতভম্ব। ঘটছেটা কী? ড্রাইভার বলল, ভাইজান, আপনি ভয় খাইয়েন না। বিপদ দেখলে গাড়ি টান দিব। আপনেরে বিপদের বাইরে রাখার অর্ডার আছে। অর্ডার কে দিয়েছে? টগর ভাই? ড্রাইভার মধুর ভঙ্গিতে হাসল। আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বলল, সিগারেট ধরান। সিগারেটের ধোঁয়া টেনশানের আসল ওষুধ। আমি সিগারেট খাই না। খান না ভালো কথা। আজ খান। দেখেন, টেনশান ক্যামনে কমে। টেনশনে গাঁজা খেলে টেনশান বাড়ে। সিগারেট-গাঁজা দুটাই ধোঁয়া, কাজ দুই রকম। ড্রাইভার সিগারেটের প্যাকেট বাড়িয়ে দিল। আমি সিগারেট ধরিয়ে কাশতে কাশতে বললাম, আপনি তো খাচ্ছেন না। টেনশান নাই, খামাখা কী জন্যে সিগারেট খাব? গাড়ি থেকে বস্তির জীবনযাত্রা স্বাভাবিকই মনে হচ্ছে। বড় কিছু ঘটছে এমন কোনো আলামত দেখতে পাচ্ছি না। আধা নেংটা ছেলেপুলে হুটোপুটি করছে। সাইকেলের চাকা দিয়ে খেলছে। খেলার উত্তেজনা ছাড়া এদের মধ্যে বাড়তি কোনো উত্তেজনা নেই। কালো মাটির হাঁড়ি নিয়ে একজন চাকভাঙা মধু বিক্রি করছে। বস্তির মহিলাদের কেউ কেউ দরদাম করে কিনছে। মধুর সঙ্গে তারা চাকের একটা অংশও পাচ্ছে। এক বৃদ্ধকে দেখা গেল গাই দুয়াচ্ছে। গ্রাম বাংলার খানিকটা উঠে এসেছে। মাইক্রোবাসের পাশে জিনসের প্যান্ট ও কলারওয়ালা নীল গেঞ্জি পরা মধ্যবয়স্ক এক লোক এসে দাঁড়াল। তার গেঞ্জিতে অ আ ক খ লেখা। ফেব্রুয়ারি মাসের গেঞ্জি এপ্রিল মাসে পরে এসেছে। নীলগেঞ্জি আমার দিকে তাকিয়ে বলল, আপনাকে ডাকে। আসেন আমার সঙ্গে। আমি কিছু বলার আগেই ড্রাইভার বলল, কে ডাকে? শামসু ভাই ডাকে।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪২৯ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now