বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
৪)
- জনাব,আপ লোগোকে লিয়ে লারকী লে আয়া,দেখ লিজিয়ে।
পান খাওয়া কালো কালো দাঁত কেলিয়ে হাসি দিলো রাজাকারটা। ওর পেছনে আরও কয়েকজন,কয়েকটা মেয়েকে শক্ত করে ধরে রেখেছে ওরা। মেয়েগুলো কাঁদছে আকুল হয়ে। ওদের এই কান্নায় ক্যাপ্টেন ইরফানের মন গলে না। লোলুপ দৃষ্টিতে মেয়েগুলোকে দেখতে লাগলো সে। কমান্ডিং অফিসার হিসেবে বেছে নেবার প্রথম সুযোগটা সেই পায়। তের চোদ্দ বছরের একটা মেয়ের দিকে এগিয়ে গেল সে। মেয়েটা ভয়ে জমে গেছে যেন,ভয়ার্ত অপলক চোখে তাকিয়ে আছে ইরফানের দিকে। ওদের ঘিরে রেখেছে মিলিটারির দলটা,অশ্লীল হাসি আর রসিকতা করছে। ইরফান এগিয়ে গিয়ে হাতের উলটো পিঠ দিয়ে মেয়েটার গাল স্পর্শ করে। সেই হাত নেমে যায় নীচে,মেয়েটা ছাড়া পাবার জন্য, পালিয়ে যাবার জন্য ছটফট করছে। মিলিটারিরা চরম মজা পাচ্ছে দেখে। ক্যাম্প পাহারায় থাকা রাজাকার গুলোও ওদিকে ঘুরে মজা দেখছে।
হাসানের রাইফেলের প্রথম গুলিটা এসে লাগে দাঁত কেলিয়ে থাকা রাজাকারটার গলায়,গলা চীরে বেড়িয়ে যায় তপ্ত বুলেট। রক্ত ছিটকে পড়ে ইরফানের মুখে। মিলিটারিরা মুক্তি মুক্তি বলে ঝাঁপিয়ে পড়ে মাটিতে। রাজাকারগুলো কলে পড়া ইঁদুরের মত ছুটোছুটি করতে থাকে। শুরু হয় গুলির নিশানা লক্ষ্য করে পালটা গুলি বর্ষণ। মেয়ে গুলোও ছুটে পালায় দিক্বিদিক জ্ঞ্যান শূন্য হয়ে।
ক্যাম্পের পেছন দিকে খুব কাছেই এমবুশ করে ছিল কমলের নিয়ন্ত্রণে থাকা দলটি। কয়েকজন মিলিটারিকে ক্রল করে এদিকে এগিয়ে আসা দেখে ওরা বুঝে যায় এখানেই কোথাও আছে ওদের রেডিও ট্রান্সমিটার। ক্যাম্পের পরিস্থিতি এখনই জানিয়ে দেবে হেড কোয়াটারে আর সাহায্য চাইবে। মুক্তিযোদ্ধাদের নির্ভুল নিশানা একে একে মাটিতে শুইয়ে দেয় ওদের সব ক’টাকে।
চারিদিক থেকে অতর্কিত আক্রমণে দিশেহারা হয়ে রাজাকারের দল পালিয়ে যায় নদীর দিকে। সেখানে তৈরি হয়েই ছিল রহিম শেখের দলবল। আস্তিনের ভেতরকার সাপগুলোকে লাঠির আঘাতে মাটিতে শুইয়ে দিতে ওদের বেশী সময় লাগে না।
হাসানের লক্ষ্য ছিল অস্ত্রাগারটার দিকে। প্রচণ্ড লড়াই বেধে যায় সেদিকটাতে। মিলিটারিদের দামী সব অস্ত্র ও ট্রেনিং থাকতে পারে,কিন্তু সাহস আর মনোবলের দিক দিয়ে ওরা অনেক নিচু শ্রেণীর। আট দশজন খান সেনা লুটিয়ে পড়তেই ওরা পালানোর পথ খোঁজে।
ক্যাপ্টেন ইরফান বা হাতে গুলি খেয়েও কোন এক ফাঁকে পালাতে গিয়ে পড়ে যায় ভীত সন্ত্রস্ত মেয়েগুলোর সামনে। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। মেয়েগুলো এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকে ইরফানকে। আজ সবার রক্তে স্বাধীনতার আগুন।
ঘণ্টা দুই যুদ্ধের পর ক্যাম্প থেকে আর গুলির শব্দ শোনা যায় না। অসম সাহসী মুক্তিযোদ্ধারা দখল করে নেয় মিলিটারিদের ক্যাম্প। কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার আত্মদান আর কয়েকজন আহতের রক্তে অর্জিত হয় বিজয়। ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে নিজ গ্রামে ফিরে আসে পূর্ব পাড়ার মানুষগুলো। পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া ভিটে মাটিতে বসে থাকে বিজয়ের আনন্দে উজ্জ্বল মানুষগুলো।
মুক্তিযোদ্ধার দলটি হাসানের নেতৃত্বে নতুন পরিকল্পনায় নামে। মিলিটারিদের বড় একটি দল হামলা চালাতে পারে এদিকে। ওদের রুখতে হবে যে। স্বাধীন করতে হবে বাংলার প্রতি ইঞ্চি মাটি। বদলা নিতে হবে স্বজন হারানোর। আকাশে বাতাসে এখন স্বাধীনতার সুবাস।
--------------------------------------
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now