বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
দেহের মাঝে সর্বচ্চ রাগ নিয়ে ঘরের দরজা
চাপিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে বসে আছে নওশিন।
ইমুর মাঝেও আজ নওশিনের সমান সমান রাগ।
ইমু ঘরে ঢুকতেই নওশিন বলে উঠলো---
--এসে পরেছিস! আমি এতক্ষণ তোর জন্যই
অপেক্ষা করছিলাম। আমি চলে যাচ্ছি! আর
কোনদিনও ফিরবোনা। নিজের খেয়াল
রাখিস। আর শুন! গরমটা অনেক বেশি তাই
বেশি করে পানি পান করিস!
.
ইমু ঢের টের পাচ্ছে নওশিন অনেক রেগে
আছে। কারণ রেগে গেলেই নওশিন কেবল
ইমুকে তুইতোকারি বলা শুরু করে। তবে তার
মাঝেও রয়েছে সীমাহীন ভালবাসা। যা
শুধু ইমু নিজেই উপলদ্ধি করতে পারে। ইমু কি
হয়েছে, না হয়েছে জিজ্ঞাসু না করে
বলল---
--ঐ যে আলমারির ড্রয়ারটায় কিছু টাকা
রাখা আছে! ঐ টাকাটা নিয়ে যা, পথে
লাগতে পারে।
--এলিয়েন! তুই কিন্তু এইবার আমার পিছুপিছু
ছুটবিনা!
--ঠিকাছে! ঠিকাছে! তোর পিছুপিছু ছুটতে
আমার বয়েই গেছে। তা কোথায় যাবি
সিদ্ধান্ত নিয়েছিস? টিকিট কেটেছিস?
না কাটলে বল, আমিই একটা টিকিট কেটে
দিচ্ছি!
--তোকে বলবো কেন? আমার যে দিকে
দুচোখ যায় সেদিকে চলে যাবো! তোর
টিকিট কাটা লাগবেনা!
--তোর দুচোখতো বাবার বাড়ি ছাড়া আর
কোনদিকেই যায়না! চল তোকে এগিয়ে
দিয়ে আসি!
--তোর এগিয়ে দিতে হবেনা। আমি একাই
যেতে পারবো।
--তাহলে এইবারের মতো আমার জন্য
টেবিলে খাবারটা বেরে রেখে দিয়ে
যা!
--খবরদার! একদম আমার রাগ কমানোর চেষ্টা
করবিনা। এইবার বাবা তোর একটা বিহিত
করবে। তবেই ফিরবো, নয়তো না!
--আরে যা যা, খাবারটা বেরে দিয়ে চলে
যা, বাবা আমাকে খুব ভালো করেই জানে,
আমি কেমন! আর এটাও জানে তার মেয়েটা
কেমন!
--হ্যা যাচ্ছি, জিন্স প্যান গুলা যখন কাঁচবি
তখন কাঁদবি আর বলবি, "কি ভুলটাই না করলাম"
যখন সকাল বেলা আরামের ঘুম ভেঙ্গে
রান্না করে খেয়ে যেতে হবে, 'তখন শুধু
কষ্টে চোখের পানি আর নাকের পানি
ফেলবি। আমি যাচ্ছি....!
--যা, বাবাকে গিয়ে আমায় একটা ফোন
দিতে বলিস।
--চিন্তা করিসনা, উনি এখানে আসতেও
পারে। অল্প দুরত্ব তো! ফোন নাও দিতে
পারে!
--মানে?
--হা হা হা, তুই ভেবেছিস আমি আমার
বাবার কাছে যাবও তাইনা! ভুল ভেবেছিস,
আমিতো আমার শ্বশুর আব্বাজানের কাছে
চলে যাচ্ছি! তারপর সেই তোকে এসে
বুঝাবে "কত ধানে, কত চাউল"!
.
ইমু একটু থমকে গেলো নওশিনের কথা শুনে।
ভাবছে বাবাকে ও কিছু বললে আমায় আস্ত
রাখবেনা। পুরও কাহিনীটা তখন
উল্টোদিকে মোড় নেবে। ইমু একটু কাপা
কন্ঠে বলল---
--কেন! কেন! তুই আমার বাবার কাছে যাবি
কেন?
--বারে তুইয়ি তো বসর রাতে বলেছিলি!
'আজ থেকে তোর মা, আমার মা! তোর বাবা,
আমার বাবা! তোর ছোটভাই, আমার
ছোটভাই! আমিতো সেদিন থেকেই তাদের
নিজের মা-বাবাই জেনেছি। তাই আমার
বাবার কাছে আমি চলে যাচ্ছি।
--তোর বাবাতো বগুরাতে সেখানে যা!
আমার বাবার কাছে যাবি কেন?
--তোর বাবা বগুরা, তুই বললিনা, 'বাবা
আমাকে ভাল করেই জানে' দেখি কতটা
জানে!
--পাখি শুন, তোর কোথাও যাওয়া
লাগবেনা। আমি তোকে কাল বিকেলে
ঠিকি ঘুরতে নিয়ে যাবো,
--তোর এমন কাল আমি বিয়ের পর থেকেই
শুনছি। কতদিন হলো একটু বাইরে সবুজে ঢাকা
লেকের পারে গিয়ে বসিনা। একটু
বাতাসে দাঁড়াই না। চার দেয়ালের মধ্যে
থাকতে থাকতে আমার সব কোলাহল দিন
দিন নিমেষ হয়ে যাচ্ছে।
.
ইমু মনে মনে বলল, 'এমনিতেই যে
কোলাহলময়ী, এর পরেও আবার কোলাহল
বাড়াতে চাচ্ছে"
--বললাম তো কাল তোমায় নিয়ে সত্যি
বেড় হবো,
--সত্যিতো?
--সত্যি,
--না! না! তুই এইবারও মিথ্যা বলছিস!
.
কথাটা বলেই নওশিন ব্যাগের হুট টেনে
হাটা শুরু করলো। ইমু দৌড়ে গিয়ে সামনে
দু'হাত মেলে দাঁড়িয়ে বলল---
--পাখি প্লিজ যেওনা, আমি তোমায় সত্যি
বলছি কাল বেড়াতে নিয়ে যাবো।
.
নওশিন একটু আড়চোখে ইমুর দিকে তাকিয়ে
বলল--
--কি ব্যাপার আদরটা এতো বাড়লো কেন!
অনেক বেশি বেশিই লাগছে! ও তোর
বাবার বাড়িতে যাবার কথা বলেছি বলে
তাইনা? আমি সত্যিই যাচ্ছি, ভালো
থাকিস।
--প্লিজ যেওনা পাখি,
--বাবাকে দেখে তোর খুব ভয় লাগে?
--হুম, তুমিতো সেটা জানোই!
--ঠিকাছে আমি যাবোনা, তবে তোকে
এখন একটা কাজ করতে হবে।
--কি বলো, তুমি যা বলবে আমি তাই করবো।
পাপ্পি দিতে হবে! খায়িয়ে দিতে হবে!
মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম আনাতে হবে?
--জ্বী না, আপাতত নিচে নেমে আমার
জন্যে একটা আইসক্রিম আনলেই হবে।
--আমিতো মাত্র উঠলাম, এখন আইসক্রিম
খেতে হবেনা পাখি। তার চেয়ে ভালো,
চলো তোমায় ভাত খায়িয়ে দেই।
--ঐ তুই যাবিনা, আচ্ছা যেতে হবেনা,
আমিই চললাম!
.
নওশিন কথাটা বলেই ব্যাগের হুট আবার
ধরলো। ইমুও নওশিনের সাথে সাথে হাত
দিয়ে ব্যাগের হুট ধরে বলল---
--ঠিকাছে, ঠিকাছে, আমি যাচ্ছি। তুমি
একটু আমার জন্য খাবারটা বেরে রাইখো
কেমন!
--ঠিকাছে যা....
.
ইমু মুখটা মলিন করে টেনে টেনে কয়েক পা
বাড়িয়ে দরজার সামনে যাওয়াতেই নওশিন
ডাকলো---
--এই শোন এলিয়েন! কষ্ট করে আর এখন নামতে
হবেনা। যা গিয়ে ফ্রেস হয়ে নে, আমি
টেবিলে খাবার দিচ্ছি। তুই আইসক্রিম
আনার বদলে শুয়ে শুয়ে আমার মাথায় হাত
বুলিয়ে দিবি।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Lutfun Nahar (Sabira)
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেMH2 (Mysterious Some one)
GJ Writer ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে