বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

ডুবো পাহাড় চ্যাপ্টার- ১ বাকি অংশ

"সাইমুম সিরিজ" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিয়েন সরকার (০ পয়েন্ট)

X ডুবো পাহাড় চ্যাপ্টার- ১ বাকি অংশ শাহ বানু সোজা হয়ে বসেছিল। তার চোখে অপার বিস্ময় এবং অনেক প্রশ্ন। তার মুখ চিরেই যেন কথা বেরিয়ে এল, ‘তারপর আপনি কবে ফিরলেন আবার?’ প্রশ্ন শুনে চোখ বুজল আহমদ মুসা। মুখ নিচু হল তার। ধীরে ধীরে মুখটি উঁচু হল আবার। বেদনায় ভারী মুখ। বলল, ‘তারপর ঘটনার ¯্রােত আমাকে ভাসিয়ে নিল ককেশাসে, সেখান থেকে বলকানে, বলকান থেকে স্পেনে। স্পেনের পর দক্ষিণ ফ্রান্সে, দক্ষিণ ফ্রান্স থেকে দুঃসংবাদ পেলাম মেইলিগুলির আব্বা-আম্মা নিহত, মেইলিগুলি নিখোঁজ। ছুটে গেলাম সিংকিয়াংএ। আমি বন্দী হলাম। হাত-পা বাঁধার পরেও খাটের সাথে আমাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। আহত ও বন্দী মেইলিগুলিকে সেখানে আনা হল। সেই বিয়ের পর এই আমাদের প্রথম দেখা। আমার শত্রুর ইচ্ছা আমাদের দু’জনকে একত্রিত করা এবং আমার চোখের সামনে আমার স্ত্রীকে লাঞ্চিত করা। আমার শত্রুটি এগিয়ে আসছিল মেইলিগুলির দিকে। আমার শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা। মেইলিগুলি পাথরের মত ভাবলেশহীন। শেষ মুহূর্তে মেইলিগুলির হাত ওড়নার আড়াল থেকে বেরিয়ে এল ক্ষুদ্র এক রিভলবার নিয়ে। ক্ষুদ্র, কিন্তু অত্যন্ত পাওয়ারফুল এই রিভলবার। মেইলিগুলি সব সময় এটা সাথে রাখত শেষ মুহূর্তের মত ঘটনায় ব্যবহার করার জন্যে। গুলী করল সে। গুলী খেয়ে পড়ে গেল শত্রুটি। গুলী করেই আহত মেইলিগুলি উঠল আমার দিকে আসার জন্যে। ওদিকে শত্রুটি গুলী খেয়ে পড়ে গেলেও পরমুহূর্তেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তার হাতেও উঠে এসেছে রিভলবার। তার রিভলবার টার্গেট করেছে আমাকে। মেইলিগুলি শেষ মুহূর্তে টের পেল। তখন রিভলবারের ট্রিগারে আঙুল চাপছে শত্রু। মেইলিগুলি ঝাঁপিয়ে পড়ে আমাকে আড়াল করে দাঁড়াল। যে গুলীটা আমার বুক বিদ্ধ করতো, তা এসে বিদ্ধ করলো মেইলিগুলিকে। গুলী খেয়ে মেইলিগুলি পড়ে গেল খাটের উপর আমার গায়ে ঠেস দেয়া অবস্থায়। কিন্তু পড়ে গিয়েও রিভলবার ছাড়েনি মেইলিগুলি। সে সর্বশক্তি দিয়ে ডান হাত তুলে গুলী করল শত্রুকে। তার রিভলবারের সবগুলো গুলীই সে শেষ করল শত্রুর উপর। তার পরেই শরীর এলিয়ে পড়ল আমার উপর। গোলাগুলীর শব্দ শুনে উদ্ধার করতে আসা আমাদের সাথীরা এসে গেল। তারা বাঁধন খুলে দিল আমার। আমি মেইলিগুরীকে হাসপাতালে নিতে চাইলাম। কিন্তু আমাদের জন্য হাসপাতালের খোঁজ কেউ দিতে পারল না। মেইলিগুলির মাথা ছিল আমার কোলে। হাসপাতালে যাবার মত তার অবস্থাও ছিল না। সে কষ্ট করে বলল, ‘আব্বা-আম্মা নিহত হবার সময়ই আমি মরে যেতে পারতাম। সেখান থেকে পালাবার পর প্রতি মুহূর্তেই মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। তোমার সাথে সাক্ষাত পর্যন্ত আমি আল্লাহর কাছে জীবন ভিক্ষা চেয়েছিলাম। তা আমি পেয়েছি। আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। শুধু কয়েকটি কথা বলার আছে তোমাকে।’ সবটুকু শক্তি দিয়ে সে বলল শেষ কথা কয়টি। কথা কয়টি শেষ হবার সাথে সাথে সেও হারিয়ে গেল।’ থামল আহমদ মুসা। কারও মুখে কোন কথা নেই। সবারই মাথা নিচু। কারও চোখই শুকনা নেই। এক সময় নিরবতা ভাঙল সুস্মিতা বালাজী। বলল, ‘স্যরি ছোট ভাই, এমন কাহিনী শোনার জন্যে আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। কতকটা মজা করেই শুনতে চাচ্ছিলাম আপনার বিয়ের কাহিনী। সত্যি ছোট ভাই, বিয়েটা যেমন ছিল অসম্ভব এক রূপ কথা, তেমনি এর অকাল সমাপ্তিটাও অবিস্মরণীয় এক বিষাদগাথা। এই স্মৃতির মধ্যে কেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন বুঝলাম।’ থামল সুস্মিতা বালাজী। শাহ বানু মুখ তুলতেই পারেনি। বোবা এক বেদনায় সে নির্বাক হয়ে গেছে। সুস্মিতা বালাজী থামতেই সাহারা বানু বলল, ‘বৌমা শেষ কথাটা কি বলেছিল বেটা?’ ‘ধন্যবাদ খালাম্মা। আমারও মন চাচ্ছে শুনতে। কিন্তু জিজ্ঞাসা করতে সাহস হচ্ছিল না।’ বলল সুস্মিতা বালাজী। আহমদ মুসা গম্ভীর। তার মুখ বেদনায় নীল তখনও। সুস্মিতা বালাজীর কথায় আহমদ মুসার মুখে লজ্জাবিজড়িত ম্লান হাসি ফুটে উঠল। বলল, ‘তিনটি কথা বলেছিল মেইলিগুলি। এক. তার এবং তার পিতার বিশাল সম্পত্তি যেন আমি গ্রহণ করি এবং আমার ইচ্ছামত কাজে লাগাই। দ্বিতীয় বিষয়ে সে বলেছিল, ‘বছরে অন্তত একদিন তোমার সান্নিধ্য পাই, এমন এক জায়গায় তুমি আমার কবর দেবে। আর তৃতীয় বিষয় হলো, জেদ্দা ইসলামী ব্যাংকের একাউন্টে তার যে টাকা আছে, সে টাকা আমার ছেলে পাবে। তার মালার লকেটে ‘একাউন্ট কোড আছে।’ আহমদ মুসার কথা শেষ হতেই সাহারা বানু দ্রুত কণ্ঠে বলে উঠল, ‘তখন তোমার ছেলে কোত্থেকে এল। এই সেদিন না তোমার ছেলে হল?’ ‘ঠিক খালাম্মা।’ ‘ও তাহলে তুমি বিয়ে করবে, বাচ্চা হবে এটা ভেবেছিল সে।’ বলল সাহারা বানু। ‘না খালাম্মা, ভাবেনি। আমাদের ছোট ভাই যাতে বিয়ে করে, ঘর-সংসার করে পরোক্ষভাবে সে এই অনুরোধ করে গেছে, এই চাপই দিয়ে গেছে সে। আমাদের ভাবী মেইলিগুলির জীবনের এ আর এক মহত্তর দিক। মুমূর্ষূ অবস্থায়ও কত সুদূরপ্রসারী, কত বাস্তববাদী চিন্তা সে করেছে। তার ত্যাগ ও শুভ চিন্তার জাযাহ আল্লাহ তাঁকে দিন।’ সুস্মিতা বালাজী বলল। মুগ্ধতায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠল শাহ বানুর মুখ। মনের ভেতরে তার নানা কথার আলোড়ন, সত্যিই আহমদ মুসার যোগ্য সাথী মেইলিগুলি। সে শুধু নিজের জীবন দিয়ে আহমদ মুসার জীবনই বাঁচিয়ে যায়নি, আহমদ মুসাকে নতুন জীবন শুরু করতে বাধ্য করে গেছেন। জোসেফাইনও কি এরকম? সে তো ফরাসি রাজকন্যা। ওঁরা যখন ভালো হন, তখন আকাশ স্পর্শী হয়ে ওঠেন। শাহ বানু তার এই ভালো চিন্তার মধ্যেও তার মুগ্ধ মনের কোথাও যেন স্বস্তি অথবা অস্বস্তির একটা অস্তিত্ব অনুভব করছে। সেটা আকাশের চাঁদ ছুতে চাওয়ার ব্যর্থতা, না চাঁদ ছুঁতে চাওয়ার গর্ব থেকে উদ্ভুত তার হিসেব শাহ বানু মেলাতে চাইল না। অতীত যেমন তেমনই থাক না। তার যা তা তো এখন সামনের দিকে। কিছুক্ষণ আগের দু’চোখের সেই অঢেল অশ্রু ছিল তার নতুন জীবন জন্ম নেয়ার বেদনা সঙ্গীত। মনটা প্রসন্ন হয়ে উঠল শাহ বানুর। সুস্মিতা বালাজীর কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই সাহারা বানু ‘আমিন’ বলে উঠল। তারপর মুহূর্ত কয়েকের নিরবতা। নিরবতা ভেঙে সাহারা বানু বলে উঠল, ‘জোসেফাইন বৌমার কাহিনী নিশ্চয় এমন দুঃখের হবে না। আমরা সেটা শুনে মনটা ভালো করতে পারি বেটা।’ ম্লান হাসল আহমদ মুসা। বলল, ‘ঠিক খালাম্মা ওখানে এ ধরনের কোন কাহিনী নেই। তবে এ বিয়েটাও ছিল আকস্মিক। তাতিয়ানার দেয়া একটা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তার আত্মীয়া ও রুশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী জার রাজকন্যা ক্যাথারিনের স্বার্থে রাশিয়া যাওয়া অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল। ওদিকে ডোনা জোসেফাইনের পিতাকেও কিডন্যাপ করে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। সবমিলিয়ে রাশিয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। ডোনা জোসেফাইন গোঁ ধরল, সেও রাশিয়ায় যাবে আমার সাথে। আমি বললাম, ইসলামী বিধান মতে সম্পর্ক নেই এমন একটা মেয়েকে একা আমার সাথী করে নিতে পারি না। শুনে অনেকক্ষণ মুখ নিচু করে থাকে। তারপর ধীর ও ভারী কণ্ঠে বলে, আমি আগেই আব্বার মত নিয়েছি, আমার ইসলাম গ্রহণ করায় তাঁর আপত্তি নেই এবং আমি আপনাকে বিয়ে করলে তিনি আনন্দিত হবেন। দুঃখিত আপনার মত সুস্পষ্টভাবে আমি জেনে নিইনি। আপনার সম্মতি ছাড়াই আমি এতটা এগিয়ে আছি। এখন আপনি চাইলে আমাদের বিয়ে..........।’ কথা শেষ করতে পারে না ডোনা জোসেফাইন। কান্নায় তার কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে যায়। এরপর একটা মসজিদে গিয়ে আমাদের বিয়ে হয়। কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাক্সক্ষী হাজির ছিলেন অনুষ্ঠানে।’ মোবাইল বেজে উঠল আহমদ মুসার। কথা শেষ করেই মোবাইল তুলে নিল হাতে। আহমদ মুসা টেলিফোন তুলে ‘হ্যালো’ বলতেই ওপার থেকে বলল, ‘আমি বেগম হাজী আহমদ আলী আবদুল্লাহ বলছি। আপনি?’ আহমদ মুসা সালাম দিয়ে বলল, ‘হ্যাঁ আমি আহমদ মুসা। চাচাজানের খবর কি?’ ‘সেই খবর এবং আরও কিছু খবর দেবার জন্যেই তো গতকাল থেকে তোমাকে পাবার চেষ্টা করছি বাছা। তোমাকে পাচ্ছিলামই না।’ ‘সব খবর ভালো তো?’ ‘ভালো নয় বেটা। গতকাল বিকেলে আকস্মিকভাবে তাকে জেল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। বাড়ি আসার পথে তিনি নিখোঁজ হয়ে গেছেন। গত রাতে টেলিফোনে পুলিশ এ কথা আমাকে জানায়। আজ পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে।’ বলল বেগম হাজী আবদুল্লাহ কান্নাচাপা কণ্ঠে। ‘পত্রিকার খবরে কি লিখেছে খালাম্মা?’ ‘লিখেছে যে, ‘আন্দামানে এক সময়ের গোয়েন্দা প্রধান হাজী আবদুল আলী আবদুল্লাহ ডিটেনশন থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফেরার পথে সন্ধ্যার দিকে কিডন্যাপড হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে এটা জানা গেছে। পুলিশ এটা কনফারম করেছে। তার বাড়িতে যোগাযোগ করে জানা গেছে তিনি বাড়িতে পৌছাননি গভীর রাত পর্যন্ত। কে বা কারা কিডন্যাপ করতে পারে এ ব্যাপারে পুলিশ এবং হাজী সাহেবের বাড়ির লোকেরা কিছুই বলতে পারছেন না।’ সংক্ষেপে নিউজটা এই। কিন্তু সবচেয়ে উদ্বেগজন খবর হল, আজ সকালে একজন টেলিফোনে আমাকে বলেছে, আহমদ মুসাকে আমাদের হাতে তুলে দিলে আপনার স্বামীকে ছাড়া হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আহমদ মুসাকে না পেলে হাজী সাহেবকে হত্যা করা হবে।’ ‘আপনি কি বলেছেন?’ ‘আহমদ মুসা কে? আমরা তাকে কোথায় পাব? উত্তরে লোকটি বলেছে, কোথায় পাবেন তা জানেন, বলে টেলিফোন রেখে দিয়েছে লোকটি।’ ‘নির্দিষ্ট সময়ের কথা বলেছে। নির্দিষ্ট সময়টা কখন সেটা কি বলেছে?’ ‘না বলেনি।’ ‘ভাববেন না খালাম্মা। তারা আমাকে ঐ নির্দিষ্ট সময়টা জানানোর পর সে সময় পার হওয়ার আগে পর্যন্ত হাজী সাহেব নিরাপদ। এদিকে আমি দেখছি কি করা যায়।’ ‘ধন্যবাদ বেটা। আরেকটা জরুরি খবর। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আন্দামানে এসেছিলেন। গোপনে আমার সাথে দেখা করেছিলেন। তোমাকে খোঁজ করছেন তিনি। তিনি গভর্নর বালাজী বাজীরাও মাধবকেও তোমার কথা বলেছেন। তোমার টেলিফোন নাম্বার তখন আমার কাছে ছিল না বলে জানাতে পারিনি।’ ‘তার কোন টেলিফোন নাম্বার দিয়ে গেছেন?’ ‘একটা নেম কার্ড দিয়েছিলেন। দুঃখিত, আমি সেটা হারিয়ে ফেলেছি। তিনি বলেছিলেন, তুমি গভর্নর কিংবা গভর্নর অফিসে যোগাযোগ করলেই তারা যোগাযোগ করিয়ে দেবেন।’ মনে মনে হাসল আহমদ মুসা। সরিষায় যে ভূত, তাতো রাষ্ট্রদূত মহোদয় জানেন না। বলল আহমদ মুসা, ‘ঠিক আছে খালাম্মা। আমি জেনে নেব। দিল্লীর মার্কিন দূতাবাসের টেলিফোন নাম্বার যোগাড় করা কঠিন হবে না।’ ‘ঠিক আছে বেটা। শাহ বানুরা কেমন আছে?’ ‘ভালে আছে খালাম্মা। শাহ বানুরা আপাতত নিরাপদ। আপনাকে সাক্ষাতে সব কথা বলব। আমি আসব আপনার ওখানে।’ ‘আলহামদুলিল্লা। আল্লাহ ভরসা। শোন বেটা, পারলে প্রতিদিন খবর নিও, তোমার খবর জানিও। আর তুমি এস। এখন রাখছি টেলিফোন।’ আহম মুসা সালাম দিয়ে মোবাইল রেখে দিল। সবাই উদগ্রীবভাবে আহমদ মুসার কথা শুনছিল। সুস্মিতা বালাজী বলল, ‘কে টেলিফোন করেছিল? কোন দুঃসংবাদ মনে হচ্ছে!’ ‘হ্যাঁ আপা’, বলে আহমদ মুসা সব কথা তাদের জানিয়ে বলল, ‘হাজী সাহেবের পরিবার ও হাজী সাহেব সব রকম ঝুঁকি নিয়ে আমাকে ও শাহ বানুদের সাহায্য করেছে।’ মুহূর্তেই উদ্বেগ ও বেদনার একটা ঢেউ খেলে গেল গোটা ঘরে। কারো মুখে কোন কথা নেই। নিরবতা বেশ কিছুক্ষণ। আহমদ মুসা তখন তার মোবাইলের ফোন বুকে টেলিফোন নাম্বারগুলো চেক করছিল। এবারও কথা বলল, সুস্মিতা বালাজীই। বলল, ‘তার মানে আবার আপনি ফিরে যাচ্ছেন পোর্ট ব্লেয়ারে। কণ্ঠে হতাশার সুর।’ ‘হ্যাঁ আপা যেতে হবে।’ ‘এতবড় ঘটনা ঘটিয়ে আপনি এলেন। দু’একদিনও স্থির হয়ে বসবেন না?’ বলল সুস্মিতা বালাজী। ‘পৃথিবী স্থির নয় আপা। আমি আপনারা স্থির হবো কি করে? আমাদের এ পৃথিবীটা গতির উপর টিকে আছে। সবকিছুই এখানে গতিময়। গতিহীনতা মানেই এখানে মৃত্যু। সুতরাং স্থিরতা নয় গতি চাই আপা।’ ‘কথায় আমরা জিততে পারবো না। দেখি ভাবিকেই সব জানাতে হবে।’ বলে একটু থামল সুস্মিতা বালাজী। একটু আত্মস্থ হল। তারপর আবার বলা শুরু করল, ‘আমরা যে কথাটা বলতে এসেছিলাম, তা এখনও বলাই হয়নি।’ আবার একটু থামল সুস্মিতা বালাজী। বলতে শুরু করল আবার, ‘ছোট ভাই আমাদের সুষমা রাও একদম পাগল হয়ে উঠেছে। বার বার টেলিফোন করছে। বলছে, হয় আমাকে নিয়ে যান, না হয় আপনাকে আসতে হবে। তার এই জেদের কিভাবে মোকাবিলা করি বলুন।’ ‘আমি এ ব্যাপারটা নিয়ে ভেবেছি। আপনারা অনেকদিন বাইরে যাননি। আমার মনে হয় আপনারা পোর্ট ব্লেয়ার থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। সেখানে আপনারা বোনের বাড়িতে উঠবেন। হোটেলেও উঠতে পারেন।’ বলল আহমদ মুসা। ‘আমিও ভেবেছি। এটা হতে পারে, কিন্তু গ-গোলটা একটু না থামলে নয়।’ সুস্মিতা বালাজী বলল। ‘আমারও বাইরে যাবার জন্যে মন আকুলি-বিকুলি করছে। বিশেষ করে শংকরাচার্য মরে যাবার পর আমাদের সামনে সে রকম কোন আশংকাই আর বর্তমান নেই। কিন্তু সুস্মিতা ঠিকই বলেছে, এখন বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়। আদিবাসীদের এভাবে রেখে যাওয়া ঠিক হবে না।’ বলল ড্যানিশ দেবানন্দ। আহমদ মুসাও ভাবছিল। বলল, ‘ঠিকই বলেছেন, আদিবাসীদের এভাবে রেখে যাওয়া ঠিক হবে না। তাছাড়া শাহ বানুদেরকেও কোথাও মুভ করানো ঠিক হবে না।’ ‘তাহলে?’ ‘যেহেতু সুষমাকে আনাও অসম্ভব। তাই বুঝিয়েই সুষমাকে শান্ত করতে হবে। তারও এটা বুঝা দরকার যে, আহমদ শাহ আলমগীর ছাড়া না পাওয়া পর্যন্ত তার বাইরে মুভ না করাটা বেটার। আমরা যে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করছি তারা পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। তারা এমনকি সুষমাকে বিপদে ফেলে তার দায় আহমদ শাহ আলমগীরের পক্ষের লোকদের উপর চাপাতে পারে।’ চোখ ছানা-বড়া হয়ে উঠল সুস্মিতা বালাজীর। বলল, ‘শুনতে এটা অসম্ভব মনে হচ্ছে। কিন্তু সুষমাকে খেপিয়ে তুলে তাকে পক্ষে পাওয়া এবং মানুষের মধ্যে শাহ পরিবারের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছাড়াবার জন্যে অবশেষে তারা এটা করতে পারে। ধন্যবাদ ছোট ভাই। আমি সুষমাকে সব ব্যাপার বুঝিয়ে বলব।’ ‘ধন্যবাদ আপা।’ থামল একটু আহমদ মুসা। চারদিকে চেয়ে বলল, ‘তারিক কোথায়, তাকে তো দেখছি না?’ ‘সে আর্মস ষ্টোরে। অস্ত্র অস্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করছে। তার খোঁজ করছেন কেন? তাকেও সঙ্গে নেবেন নাকি?’ বলল সুস্মিতা বালাজী। ‘না পোর্ট ব্লেয়ারে এখন তার প্রয়োজন নেই। সে এখানেই থাক। তবে অস্ত্র জ্ঞানের দিকে মনোযোগ দিয়েছে এটাকে আমি ভালো মনে করছি না। অস্ত্র জ্ঞান নয়, আজ বেশি প্রয়োজন জ্ঞানের অস্ত্রকে শাণিত করা।’ আহমদ মুসা বলল। ‘কিন্তু আপনি! উল্টোটাই যে সত্য তা প্রমাণ করছেন।’ বলল শাহ বানু। হাসল আহমদ মুসা। বলল, ‘তুমি তো মোগল রক্ত! সামরিক বিবেচনা তোমাদের মজ্জাগত। তুমি তারিককে সৈনিক বানাতে চাও। কিন্তু শাহ বানু! আজ মোগলরা থাকলে, আমি যা বলছি তারা তাই বলত। জেনে রেখ শাহ বানু, অস্ত্রশক্তি কিংবা সৈন্য শক্তির অভাবে মোগলদের পতন হয়নি। পতন হয়েছে রাষ্ট্রজ্ঞানের অভাবে, অস্ত্র ও সৈন্য শক্তি ব্যবহারের জন্যে যে জ্ঞান দরকার তার অভাবে। আজ আন্দামানে আমাদের যে সংকট তার সমাধান অস্ত্র নয়, বুদ্ধির মাধ্যমেই আনতে হবে।’ ‘কিভাবে? অস্ত্রই তো এখানে মুখ্য দেখছি।’ শাহ বানু বলল। ‘কিভাবে আমি জানি না, কিন্তু এটা বিশ্বাস করি। অস্ত্রের যে উপস্থিতি তুমি দেখছ, সেটা সাময়িক অবস্থার একটা প্রয়োজন মাত্র।’ কথা শেষ করেই আহমদ মুুসা উঠে দাঁড়াল। বলল, ‘মাফ করবেন, আমি উঠছি। কয়েকটা কাজ সারতে হবে।’ ‘ছোট ভাই, আপনি যাত্রা করছেন কখন?’ জিজ্ঞাসা সুস্মিতা বালাজীর। আহম মুসা যাবার জন্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। আবার ফিরল। বলল সুস্মিতা বালাজী ও ড্যানিশ দেবানন্দকে উদ্দেশ্য করে, ‘আপা, ভাই সাহেব, অপরিচয়ের প্রাথমিক অবস্থা তো চলে গেছে। এখনো ছোট ভাইকে কি ‘আপনি’ বলতেই হবে?’ একটা গাম্ভীর্য নামল সুস্মিতা বালাজী ও ড্যানিশ দেবানন্দের মুখে। মুহূর্তের জন্যে দু’চোখ বন্ধ হয়েছিল সুস্মিতা বালাজীর। বোধ হয় সেটা নিজের ভেতরটাকে দেখার জন্যেই। বলল, ‘ধন্যবাদ, না আর বলব না ছোট ভাই। সত্যিই আহমদ মুসা এখন আমাদের ছোট ভাই হয়ে গেছে। তোমাকে ওয়েলকাম।’ ‘তোমাকে আমার পক্ষ থেকেও ওয়েলকাম।’ বলল ড্যানিশ দেবানন্দ। ‘ধন্যবাদ আপা, ভাই সাহেব।’ বলেই আহমদ মুসা আবার ঘুরে দাঁড়াল ঘর থেকে বের হবার জন্যে। হাতের রক্তাক্ত চাবুকটা ঘরে ঢোকার পরেই একপাশে ছুড়ে দিয়ে লোকটি এসে টেবিলের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়াল। লোকটি দীর্ঘদেহী। দেখেই মনে হয় পেশী দিয়ে পেঁচানো লোকটির দেহে তিলমাত্র মেদ নেই। লোকটি ঘর্মাক্ত। মুখভরা তার বিরক্তি ও হতাশা। টেবিলের ওপাশে ফুলসাইজ রিভলভিং চেয়ারে বসে আরেকজন লোক। লম্বা গেরুয়া দাড়ি ও মোচ এবং লম্বা গেরুয়া চুলে তার মুখ ও মাথা ঢেকে আছে। পরনেও তার গেরুয়া বসন। পাশেই দাঁড় করানো বিশাল ত্রিশুল। দেহ তার বিশাল না হলেও গড় সাইজের চেয়ে দর্শনীয়ভাবে বড়। চোখ দু’টি তার লাল। তার দাড়ির রং এবং তার গেরুয়া বসনের সাথে খুবই সংগতিশীল। ইনিই মহামুনি শিবদাস সংঘমিত্র। ইনি শিবাজী সন্তান সেনা ও শিবাজীবাদী আরও পাঁচটি সংগঠন নিয়ে গঠিত ‘মহাসংঘ’-এর আন্দামান এলাকার শীর্ষ সংঘপতি।’ বিশেষ সময় সন্ধিক্ষণ ছাড়া তিনি লোকচক্ষুর সামনে আসেন না। কিন্তু লোকরা সবাই তার চোখের সামনে থাকে সবসময়, মহাসংঘের সকলেই এটা ভালোভাবে জানে। আজকের বিশেষ সময় সন্ধিক্ষণে তিনি উদয় হয়েছেন রাস দ্বীপে শিবাজী সন্তান সেনা (সেসশি) এর হেড অফিসে। মহামুনি সংঘমিত্র তার মেরুদ- তীরের মত খাড়া রেখে সোজা হয়ে বসে দরজার দিকেই তাকিয়ে ছিল। ঘরে ঢোকা লোকটির চেহারার দিকে চোখ পড়তেই মহামুনি সংঘমিত্রের লাল চোখ দু’টি জ্বলে উঠল। কণ্ঠেও ধ্বনিত হল বজ্র নির্ঘোষ শব্দ, ‘কথা আদায় করতে পারনি?’ ‘প্রভু, মানুষকে যত রকমের নির্যাতন করা যায়, তার কোনটাই বাকি রাখা হয়নি। সে বার বার সংজ্ঞা হারাচ্ছে, কথাটি আদায় করা যাচ্ছে না। অবিরাম তার একটাই কথা, ‘বাক্স আমার কাছে নেই। এ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। প্রভু ব্যাপারটা কি এমন হতে পারে যে, ‘বিষয়টি শুধু তার মায়েরই জানা আছে।’ বলল লোকটি। লোকটির নাম কৃষ্ণ দাস তিলক। গুজরাটের ব্রাহ্মণ। ভারতীয় পুলিশ সার্ভিসের একজন ডাক সাইটে অফিসার ছিল। সে অত্যন্ত সাহসের সাথে ও গর্বের সাথে প্রকাশ্য ও অব্যাহতভাবে সাম্প্রদায়িক ভূমিকা পালন করতো। সর্বশেষ বোম্বাই-এর এক মুসলিম বিরোধী দাঙ্গাকালে কৃষ্ণদাসকে তার নিজের রিভলবার দিয়ে একটি ঘরে লুকানো কয়েকজন মুসলিম বালককে গুলী করে মারার ছবি পত্রিকায় প্রকাশিত হবার পর হিন্দুস্তান সরকার কৃষ্ণদাসকে বরখাস্ত করে এবং তার বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু আইনের ফাঁক গলিয়ে যথারীতি নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে সে বেরিয়ে আসে। তবে চারদিকের সমালোচনার মুখে সে আর চাকরিতে যোগ দেয় না। যোগদান করে সে ‘মহাসংঘ’ এর শিবাজী সন্তান সেনা দলে। যাকে হিন্দুস্তানের পুলিশের খাতায় ‘ব্ল্যাক আর্মি’ বলে ডাকা হয়। কৃষ্ণদাস তিলক সম্প্রতি আন্দামানে এসেছে এখানকার ‘ব্ল্যাক আর্মি’র দায়িত্ব নিয়ে। কৃষ্ণ দাস তিলকের কথা শেষ হলে মহামুনি সংঘমিত্র চেয়ারে হেলান দিল। তার চোখে-মুখে এখন ক্রোধের চেয়ে বিরক্তির চিহ্নই বেশি। বলল, ‘কৃষ্ণ দাস তুমিও পুঁচকে ছেলে আহমদ শাহ আলমগীরের কাছে পরাজিত হলে। বাক্সের সন্ধান তার কাছে নেই, এ কথা ঠিক নয়। মোগলসহ প্রত্যেক রাজবংশই তাদের বংশীয় কোন দায়িত্ব হস্তান্তর করে উত্তরাধিকারীর হাতে, অন্য কারও কাছে নয়। সুতরাং বাক্সটা আহমদ শাহ আলমগীরের কাছেই পাওয়া যাবে।’ ‘প্রভু, হাতিও এমন নির্যাতন সহ্য করতে পারবে না, কিন্তু তবু তো মুখ খুলছে না সে।’ ‘যারা মৃত্যুকে জয় করে। তারা যে কোন কষ্টকে জয় করতে পারে। এজন্যেই আহমদ শাহ আলমগীরের মা-বোনকে প্রয়োজন ছিল। এদের কাবু করতে হলে মানিসক আঘাত প্রয়োজন। তার সামনে যদি তার মা-বোনের গায়ে হাত পড়ত, তাহলে সে বাপ বাপ করে এসে পায়ে পড়ত।’ ‘প্রভু, তার মা-বোন সম্পর্কে নতুন কোন খবর পাওয়া গেছে?’ ‘এখনও নয়। তবে বিভেন বার্গম্যান ওরফে আহমদ মুসা পোর্ট ব্লেয়ারে আসছে। মনে করি আহমদ শাহ আলমগীরের মা-বোনরা পোর্ট ব্লেয়ারেই রয়েছে। তাদের খুঁজে বের করতেই হবে।’ ‘বিভেন বার্গম্যান কি আহমদ মুসা? কি করে জানা গেল?’ বিস্ময়ে চোখ কপালে তুলে বলল কৃষ্ণদাস। ‘হাজী আবদুল্লাহ আলীর বাসা ও হোটেলের টেলিফোন মনিটর করে। সে মনিটর থেকেই প্রথম জানতে পারি বিভেন বার্গম্যান আসলে আহমদ মুসা। পরে হাজী আবদুল্লাহকে কিডন্যাপকারী মোসাদ গোয়েন্দারাও জানায় এ কথা। এ খবর জানার পর আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে, কেন তার সাথে আমরা পেরে উঠছি না। ইসরাইলী ও পশ্চিমী গোয়েন্দারা যার কাছে অব্যাহতভাবে নাকানি চোবানী খাচ্ছে, তাকে আমরা এঁটে উঠব কি করে!’ বলল মহামুনি সংঘমিত্র। তখন কৃষ্ণদাসের চোখের ছানাবড়া ভাব কাটেনি। বলল উদ্বিগ্ন কণ্ঠে, ‘প্রভু, দুশ্চিন্তা বেড়ে গেল।’ ‘হ্যাঁ। কিন্তু আমরা তার সাথে লড়াইয়ে নামব না। আমরা তাকে পেলেই খুন করব। আর আমাদের টার্গেট বাক্স। বাক্স পেলেই হয়ে গেল। আর আমি নির্দেশ দিয়েছি, নিপাত প্রোগ্রাম বন্ধ রাখতে। এখন প্রথম কাজ আহমদ মুসাকে খুন করা, দ্বিতীয় বাক্স উদ্ধার করা। এদিকে সমস্যা দেখা দিয়েছে বিভেন বার্গম্যান ওরফে আহমদ মুসাকে নিয়েই।’ ‘কি সমস্যা প্রভু।’ কৃষ্ণদাসের চোখে বিস্ময়। ‘হাজী আবদুল্লাহ আলীর বাসার টেলিফোন মনিটর থেকে জানতে পেরেছি, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আন্দামানে বেড়াতে এসে বিভেন বার্গম্যানের খোঁজ করেছিরেন। তিনি একথা হাজী আবদুল্লাহ আলীর স্ত্রী সাথেও বলেছেন। আমাকেও তিনি বলেছেন বার্গম্যানের কথা। আবার নয়াদিল্লীতে ফিরেও টেলিফোন করে আন্দামান সরকারকে বিভেন বার্গম্যানের নিরাপত্তার প্রতি নজর রাখতে বলেন। সুতরাং খুব কৌশলে তাকে ড্রিল করতে হবে, যাতে সাপও মরে, লাঠিও না ভাঙে।’ ‘তাহলে সিআইএ’র লোক নয় তো সে?’ বলল কৃষ্ণদাস। ‘না তা নয়। সিআইএ’র লোক হলে ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’ এর নাম্বার ওয়ান গোয়েন্দা ক্রিষ্টোফার কোলম্যান কোহেনকে সে মারতো না।’ ‘তা ঠিক। তাহলে?’ ‘সে কে আমাদের জানার দরকার নেই। তাকে কৌশলে সরাতে হবে যাতে কোনওভাবে সরকার কিংবা ‘মহাসংঘ’ -এর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না থাকে।’ ‘ধন্যবাদ প্রভু, ঠিক বলেছেন।’ বলে একটু থেমেই আবার মুখ খুলল, ‘এখন আমরা কি করব। শয়তানটি তো মুখ খুলছে না।’ ‘বললাম তো, তার মা-বোনকে খুঁজে বের করতে হবে। এটা সম্ভব না হলে বিকল্প পথ খুঁজতে হবে। দেখতে হবে আন্দামানে তার আর কোন প্রিয়জন আছে কিনা।’ ‘এমন কেউ কি তার আছে আন্দামানে?’ হঠাৎ করেই মহামুনি শিবদাস সংঘ মিত্রের মুখটা মলিন হয়ে উঠল। বলল, ‘এ প্রসঙ্গ এখন থাক। আমি এখন উঠব। তুমি যাও। হাজী আবদুল্লাহ আলীর বাসার উপর নজর রাখার ক্ষেত্রে যেন শৈথিল্য না আসে। বিভেন বার্গম্যান পোর্ট ব্লেয়ারে থাকলে অবশ্যই হাজী আবদুল্লাহর স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করবেই, বাড়িতে কিংবা অন্য কোথাও। ওদের টেলিফোনও মনিটর করা হচ্ছে।’ বলে উঠে দাঁড়াল মহামুনি সংঘমিত্র। সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়াল কৃষ্ণদাস তিলকও।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩১৬ জন


এ জাতীয় গল্প

→ ডুবো পাহাড় চ্যাপ্টার- ৪ বাকি অংশ
→ ডুবো পাহাড় চ্যাপ্টার- ৩ বাকি অংশ
→ ডুবো পাহাড় চ্যাপ্টার- ২ বাকি অংশ

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now