বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

একজন মজলুম ইমাম

"সত্য ঘটনা" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মানসূর আহমাদ (০ পয়েন্ট)

X প্রচন্ড ক্ষমতাধর বাদশাহ মুহতাসিম বিল্লাহ্। জমজমাট তার রাজ দরবার। চারদিকে কত শত উজির ও উপদেষ্টা। প্রত্যেকদিনের মত আজও রাজদরবার বসেছে। এমন সময় হাত পা বাধা অবস্থায় বাদশাহর সামনে হাজির করা হলো এক বৃদ্ধকে। সবার দৃষ্টি শুভ্র সাদা দাড়ির এ বৃদ্ধের দিকে। তিনি কি শুধুই বৃদ্ধ? তিনি একজনজগৎ বিখ্যাত ফকীহ, হাদীস বিশারদ, সর্বজন শ্রদ্ধেয়। উজির উপদেষ্টারা সবাই তাকে সম্মান করে, শ্রদ্ধা করে, কিন্তু বাদশাহর ভয়ে সবাই নিশ্চুপ। বাদশাহ প্রত্যেকদিনের মত আজও বৃদ্ধকে একটি মাসআলা বাদশাহর পক্ষে দিতে বললেন। কিন্তু বৃদ্ধ সাহসীকতার সাথে বাদশার বিপক্ষে ফতোয়া দিলেন। বাদশা রেগে গেলেন। না, যথেষ্ট সম্মান দেওয়া হয়েছে। বৃদ্ধকে আর সম্মান দেখানো যাবে না। বাদশার একটি ইশারায় সারা দেশ থরথর করে কাঁপে কিন্তু এ বৃদ্ধকে কিছুতেই বাগে আনতে পারছে না। আজ বৃদ্ধকে চরম শিক্ষা দিতে হবে। বাদশাহ রাজদরবারের সমস্ত জল্লাদদের ডাকলেন। বাদশাহ হুঙ্কার ছেড়ে বললেন ‘তাকে মারো। সর্বশক্তিদিয়ে বেত্রাঘাত করো। মেরে তারহাড্ডি ভেঙ্গে চুরমার করে দাও।‘ বাদশাকে খুশি করার জন্য জল্লাদরা তাকে মারতে লাগলো। একজন একজন করে জল্লাদ এসে বৃদ্ধকে মারে।মারতে মারতে ক্লান্ত হয়ে সে হাঁপাতে থাকে তখন আরেক জল্লাদ এসে সর্বশক্তি দিয়ে বৃদ্ধকে মারে।বার্ধক্যে জর্জরিত দুর্বল পিঠে জল্লাদরা মারতে মারতে সমস্ত জল্লাদ হাপিয়ে গেছে তবু বৃদ্ধ তার সিদ্ধান্তে অনড়। ভাবা যায়!!!! বৃদ্ধের পিঠের সব হাড় ভেঙ্গে গেছে,কাধের হাড় চুর্ন বিচূর্ণ। বেতের আঘাতে জামাও ছিড়ে খন্ড বিখন্ড হয়ে গেছে। রক্তে ভেসে গেছে রাজদরবার। উজির উপদেষ্টাদের চৌখে পানি ঝরছে। একটি মাসআলার জন্য দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেমের উপর এতো অত্যাচারে বেদনা বোধ করছে সবাই।দুপুরে সমস্ত জল্লাদরা ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে, এমন সময় এক দরবারি আলেম আসলো বৃদ্ধের নিকট। তার নাম মারওয়াযী। তিনি বৃদ্ধের নিকট গিয়ে বললেন “কি দরকার ছিলো এতো কষ্ট নিজের কাধে আনার? একটি মাত্র মাসআলায় বাদশার সাথে তাল মেলালেই বা কি হয়? আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, তোমরা নিজেদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিও না।” নির্যাতীত বৃদ্ধ লোকটি এ দরবারি আলেমকে বললো ‘একটু বাইরে দেখে আসেন।‘ মারওয়াযী দরবারের বাহিরে বের হলেন। দেখলেন যতদূর চৌখ যায় শুধু বৃদ্ধের ছাত্র ও ভক্ত।সবাই নিশ্চুপ। খাতা কলম হাতে সবাই কান পেতে বসে আছেন। মারওয়াযী তাদের একজনকে জিজ্ঞাস করেন আপনারা এখানে কি করছেন? জবাব দিলো বাদশা ও দরবারি আলেমদের বিপক্ষে আমাদের উস্তাদ কি ফতোয়া দেন,কি কি দলীল বর্ননা করেন তা লিখে রাখছি। মারওয়াযী দরবারে ফিরে এলেন। বৃদ্ধ আলেমটি বললো “শোন মারওয়াযী, আমি নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে এ মাসালায় সামান্য একটু ভুল বললে আমার অগনিত ছাত্র ও ভক্ত বিভ্রান্ত হবে, তারা ভুল মাসআলা আমল করবে। তাদের মাধ্যমে অনাগত প্রজন্মের কাছেওভুল মাসআলা পৌছে যাবে। আমি নিজে নিঃশেষ হবো তবু এতো এতো লোককে আমি ভুল মাসআলা দিতে পারবো না। এমন কাপুরুষতা আমারপক্ষে সম্ভব না। “আজ কোথায় বাদশাহ মুহতাসিম বিল্লাহ? কোথায় তার দাপট? তার গুনগ্রাহীও কেউ বেঁচে নেই। মুহতাসিম বিল্লাহ্ হারিয়ে গেছে ইতিহাসের অতল গহ্বরে। কিন্তু সেদিনের সে বৃদ্ধ আজো রয়ে গেছেন বিশ্বের প্রত্যেকটা মানুষের অন্তরে। বার্ধক্য বয়সে শারীরিক শাস্তি ও অত্যাচারের অসহনীয় এমন দুর্দশায় ও তিনি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব ভুলেন নি তাই পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে প্রান্তে অজস্র অগনিত মাদ্রাসা মসজিদে তাঁরনাম উচ্চারিত হচ্ছে পরম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সম্মানে। জগত বিখ্যাত এ ফকীহ আর কেউ নন, তাঁরনাম “ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রঃ)।" "হে আল্লাহ্ আপনি ইমাম আহমদ বিন হাম্বল(রঃ) কে জান্নাতুল ফেরদাউসের সর্বোচ্চ মর্যাদার স্থানটি দান করুন। আমীন"


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩০৩ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • M.Mofizul.Hossain
    Golpobuzz ৪ বছর, ২ মাস পুর্বে
    খুবই ভালো লাগল

  • মানসূর আহমাদ
    Golpobuzz ৭ বছর, ২ মাস পুর্বে
    আমিন!

  • আরাফাত হোসেন
    Golpobuzz ৭ বছর, ২ মাস পুর্বে
    আল্লাহ আপনাকে গল্পটি দেওয়ার জন্য উত্তম যাযাহ্ দান করুন। আমিন