বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

আদরের কোলবালিশ

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রায়হান আহমেদ (০ পয়েন্ট)

X সাদমান আর আঁখির নতুন বিয়ে হয়েছে। পারিবারিক ভাবেই। সাদমান তাঁর বউকে একটু বেশিই ভালবাসে। এজন্য তাঁকে কেউ যদি বউ পাগল বলে তাতে তাঁর কোন আপত্তি নেই। তাঁর কথা হলো। নিজের বিয়ে করা বউ। তাঁকেই তো ভালবাসবে নাকি? আজ সে অফিস যাবেনা বলে বসে আছে। কিন্তু সে কোন কারণে অফিস যাবেনা সেটা সে নিজেই জানেনা। আঁখি সাদমানকে এভাবে বসে থাকতে দেখে বলে, . কি হলো এভাবে বসে আছো কেন? অফিসে যাবেনা? কথাগুলোর বিপরীতে সাদমান কি বলবে ভাবছে। সাদমানের নীরবতা দেখে আঁখি আবার বলে, . কি হলো চুপ করে আছো কেন? সাদমান বলে উঠলো, .এই চলোনা আমরা প্রেম করি। সাদমানের এরকম কথা শুনে আঁখি কাঁদবে না হাসবে বুঝতে পারছেনা। অফিস ছেড়ে আছে তার উপর...। আঁখি বলে, .অফিসে গিয়েও প্রেম করা যায়। তুমি রেডি হও তারাতারি বেশি সময় নেই অফিসের। সাদমান বিরক্ত হয়ে বলে, .ধুর একটু নিজের বউয়ের সাথে প্রেম করবো তাও হয়না। মনে হচ্ছে অন্য জায়গায় ডু মারতে হবে। এ কথা শুনে আঁখির চোখদুটো লাল হয়ে গেলো। বলে, .কি বললে তুমি? আবার বলোতো এই বুঝি তোমার মনে না? . তো কি করবো? তুমি বউ হয়েও প্রেম করতে চাওনা। . এই শুনো " তোমার বউ হয়েছি বলেই কি তোমার সাথে প্রেম করতে হব এমন কোন কথা আছে? মন বলেও একটা কথা আছে হুম। . তো তুমি রাজি হবেনা? . না। অফিস টাইম কি আবার আসবে? . ওকে ঠিকাছে যাচ্ছি। থাকো তোমার মন নিয়ে। তারপর একটু দেরি হলেও সাদমান অফিসে যায় প্রস্তুত হয়ে। আঁখি মনে মনে বলে। কি আজব জামাই আমার। বিয়ে করেছে তাও প্রেম করার জন্য অনুমতি চায়। ভালই তো সে ভাবে যখন সে তাঁরও তো প্রেম করার বাঁকি আছে। এতো বড় জীবনে সেও তো প্রেম করেনি। ইচ্ছে ছিলোনা বলেই। অফিসে থাকার সময় টেক্সট করে আঁখি যে আসার সময় তাঁর জন্য আইস্ক্রিম নিয়ে আসতে। যদিও বাসায় আছে তাও সে বলে। আর সাদমান বলে আনতে পারবোনা। আর আঁখি জানে ভালো করেই সাদমান আনবেই। ছেলেটার অভিমান একটু বেশি হলেও মন খুব কোমল। ঠিক তাই হলো অফিস থেকে আসার জন্য আঁখির জন্য আইস্ক্রিম নিয়ে আসে। . কি ব্যাপার তুমি না বললে আনবেনা? . ইচ্ছে ছিলোনা কিন্তু ভাবলাম আইস্ক্রিম'ই তো। . কেন আইস্ক্রিম ছাড়া অন্য কিছু হলে কি আনতে না? . না আনতাম না। . হয়েছে জানি, এখন আমাকে খাইয়ে দেও। . কিহ? এতো কষ্ট করে আনলাম আমি আর খাইয়েও দিতে হবে আমাকে? . হুম এতো কিছু জানিনা। আর মানুষ প্রেমিকার জন্য করে না? ঐযে মন পাওয়ার জন্য। তো তুমিও করো। সাদমান অসহায়। তবে মনে মনে সেও চাচ্ছে আঁখিকে খাইয়ে দিতে। কারন যদি বলতো "আমি তোমাকে খাইয়ে দিই? তাহলে নিশ্চিত না করতো এজন্য বিপরীত ব্যাবহার। চামচ দিয়ে আঁখিকে একটু একটু করে খাইয়ে দিচ্ছে। আঁখির টোটের নিচে হালকা আটকা পড়ছে আইস্ক্রিম। দেখতে অনেক অপরুপ লাগছিলো। তাই একটু গভীর ভাবে তাঁকিয়ে আছে সাদমান। আঁখি যখন খেয়াল করলো তখন, . এই এভাবে তাঁকিয়ে আছো কেন? কি দেখছো? . কিছুনা, ভালো করে খাও টোট মুখে লেগে আছে। . লাগুক, তুমি খাইয়ে দেও। এখনো অর্ধেক বাঁকি আছে। পুরোটা খাইয়ে দেয়ার পর। আঁখি বলে, .একটা বাচ্চা মেয়েকেও ঠিক করে খাইয়ে দিতে পারোনা? . বাচ্চা আসলো কোথা থেকে? কোথায় বাচ্চা? . ও আমাকে কি তুমার বুড়ি মনে হয়? . তা নয়তো কি? . কি আমি বুড়ি? . হ্যা। . যাও আড়ি। . হুহ। আঁখি চলে গেলো সামনে থেকে। মনে মনে বলে," বাহ অনেক মজা লাগে তো নিজের জামাই'র হাতে তুলে খেয়ে",বিরক্ত হল নাকি জামাই। তার উপর শেষে ঝারি মেরে আসলাম। রাতে শুতে যাবে দুজন। এরকম সময় আবারো প্যাঁচ লাগলো কোলবালিশ নিয়ে। সাদমান কোলবালিশ'টাকে এতো সোহাগের সাথে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে যা দেখে আঁখির গা জ্বলছে আর হিংসে। . এইযে মিষ্টার উঠেন। . কেন? মশারী তো টাঙ্গানোঈ আছে। . হ্যা মশারী টাঙ্গানো আছে। কিন্তু এভাবে শুতে পারবেন না। . যা বাবা এখন আমি কিভাবে শুবো সেটাও তুমি ঠিক করে দিবে? . হ্যা, কোলবালিশ'টাকে এভাবে জড়িয়ে ধরার কি আছে? .ধরবোনা মানে? আমার সবচেয়ে আদোরের বালিশ। মা দিয়েছে অনেক আগের। . বালিশ'ও আদোরের হয়? কোলবালিশ'টা সরাবেন নাকি আমি অন্য রুমে চলে যাবো? . সব রুম আপাদত বন্ধ আছে যাবে কোনটায়? আঁখির'ও আর কিছু করার নেই। চুপটি করে বিপরীত পাশে শুয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ পর অনুভব করলো কেউ তাঁর হাতদুটো ধরে আছে। আর কে হবে সাদমান'ই তো। সেও আর ছাড়ালো না। হয়তো ঘুমের ঘোরে ধরে ফেলেছে সাদমান। আঁখি'ও কোলবালিশ এই মুহুর্তের জন্য তাঁর সতিনকে সরালো আস্তে করে। তারপর আঁখি নিজেই কোলবালিশ হয়ে যায়। সাদমানের বুকের গন্ধ'ই যেন আঁখির নিশ্বাস হয়ে গেলো। সকালে সাদমান যখন টের পেলো যে তার কোলবালিশের চুল তো নাই। তাহলে কি আঁখি। কিছুটা অবাক করা ব্যাপার। ঘুমের ঘোরেই সে আরো বেশি শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বুঝতে যদি কোলবালিশ হয় তো হাজারগুন জোরে যদি জড়িয়ে ধরে এর থেকে। তাহলেও কোলবালিলেশ কিছু হবেনা আর যদি আঁখি হয় তো ব্যাথা পেয়ে চিৎকার করবে নিশ্চিত প্রায়। আরো শক্ত করে জড়িয়ে যখন ধরলো তখনি আঁখি সজাক হয়ে যায়। ভীষণ লজ্জা পায়। মনে করেছে বুঝি.. । কিন্তু সাদমান বুঝতে পারলো যখন কোলবালিশ শ্বাস নিতে তো পারেনা। সে জলদি দুহাত দিয়ে চোখ মুছে যখন দেখলো আঁখি বুকে। সেও লজ্জা পেলো। এ মনে করে আরো। সারা রাত তাহলে আঁখিকে জড়িয়েই ছিলো। আঁখি যখন বুঝতে পারলো যে সাদমান জেগে গেছে তখন আস্তে করে সরে আসতে চাইলো। যদিও তাঁর সাদমানের বুক থেকে মাথাটা পর্যন্ত সরাতে চাইছেনা এক মুহুর্তের জন্যও। তখনি সাদমান আঁখির আচঁল ধরে বললো, . আরেকটু থাকলে কি খুব বেশি অসুবিধে হয় এভাবে? . নাহ ভুলে গেছো আমাদের এখনো প্রেম হয়নি। . কে বললো হয়নি? নাহলে কি আর তুমি আমার কোলবালিশটা সরাতে? . না মশাই আমি সরায়নি। . তাহলে কি আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে বুকে এনেছি? . এতো কিছু বুঝিনা এখন ছাড়ো। সাদমানও ছেড়ে দিলো। কিন্তু কি মনে করে আবার এসে সাদমানের মুখ তাঁর দুহাত দিয়ে চেপে ধরে কানের কাছে গিয়ে বললো, " এই শুনো আরেকবার যদি তোমার ঐ আদোরের কোলবালিশটার কথা মুখে আনো তো আমি বাপের বাড়ি চলে যাবো থাকবে তুমি কোলবালিশ নিয়ে বুঝেছো, " . অতঃপর জানা যায় আঁখি আর কোনদিন বাপের বাড়ি যায়নি কোলবালিশের জন্য।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ১১০৫ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now