বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

মুখোশপরা জাদুকর

"ছোট গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিয়েন সরকার (০ পয়েন্ট)

X AXN নামের টিভি চ্যানেলের একটি অনুষ্ঠান আমি অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে কিন্তু খুব মন খারাপ করে দেখি। অনুষ্ঠানে একজন মুখোশপরা জাদুকর উপস্থিত হন এবং নির্বিকার ভঙ্গিতে জাদুবিদ্যার গোপন কৌশল একের পর এক ফাঁস করতে থাকেন। স্টেজে যে জাদু দেখে রোমাঞ্চিত হয়েছি, তার রহস্য জেনে মনটাই ভেঙে যায়। অসাধারণ জাদুর পেছনের কৌশল এত সাধারণ! মুখোশপরা জাদুকরের অনুষ্ঠান দেখছি, হঠাৎ ডিশের লাইনে কী যেন সমস্যা হলো। টেলিভিশনের পর্দা ঝিরঝির করতে লাগল। হঠাৎ মনে হলো, আরে তাই তো, এই মুহূর্তে আমি দেখছি প্রকৃতির অতিরহস্যময় এক জাদু। টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যাচ্ছে বিগ ব্যাং-এর পরবর্তী মাইক্রোওয়েভ রেডিয়েশন (After Glow)। অঙ্কবিদ জর্জ গ্যামো ১৯৪০ সালে অঙ্কের মাধ্যমে দেখিয়েছিলেন সত্যি সত্যি যদি বিগ ব্যাং হয়, তাহলে তার আফটার গ্লো চারদিকে ছড়িয়ে থাকা উচিত। মহাবিশ্ব যতই প্রসারিত হবে এর তাপ ততই কমবে। নিউ জার্সির বেল ল্যাবরেটরির দুই তরুণ রেডিও অ্যাসট্রোনমার নতুন ধরনের হর্ন অ্যান্টেনা নিয়ে কাজ করছিলেন। তাঁরা পড়ে গেলেন বেশ ঝামেলায়_অ্যান্টেনা যেদিকে ধরা যায় সেদিক থেকেই হিস হিস শব্দ আসে। নিশ্চয়ই অ্যান্টেনার সমস্যা। তাঁরা নানা চেষ্টা করলেন হিসিং শব্দ বন্ধ করার। কিছুতেই কিছু হয় না। আসলে তারা দেখছিলেন জর্জ গ্যামোর ভবিষ্যদ্বাণী, বিগ ব্যাং-পরবর্তী দীপ্তি। যার তাপ ৩ ডিগ্রি কেলভিন। অ্যাসট্রো পদার্থবিদ্যায় এই বিশাল আবিষ্কারের জন্য তাঁদের দেওয়া হলো পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার। বিজ্ঞানী দুজনের একজনের নাম আরনো পেনজিয়ার্স, অন্যজনের নাম রবার্ট উইলসন। বিগ ব্যাং বিষয়টা সম্পর্কে সাধারণ ধারণা আমাদের প্রায় সবারই আছে। সৃষ্টির শুরুটা হয় এখানে। বর্তমান দৃশ্যমান ও অদৃশ্য জগতের সবটাই শুরুতে একটি বিন্দুতে আটকে ছিল (অ্যাসট্রো ফিকিঙ্রে ভাষায় ংরহমঁষধৎরঃু)। হঠাৎ অকল্পনীয় গতিতে বিন্দু বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করল। আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরিফে সৃষ্টির শুরুর ঘটনা ঠিক এভাবেই উল্লেখ করা আছে। সুরা আম্বিয়ায় বলা হয়েছে_’অবিশ্বাসীরা কি দেখে না যে সব আকাশ এবং ভূমণ্ডল একটি একক ছিল এবং আমরা তাকে বিচ্ছিন্ন করলাম?’ (২১:৩০)। বিজ্ঞান একদিকে থাকুক, ধর্ম অন্যদিকে থাকুক। এ মুহূর্তে দুটিকে মেলানোর কিছু নেই। বিগ ব্যাং-এ ফিরে যাই। বিগ ব্যাং-এর পরপরই ফুটন্ত অগি্নগোলক কণার গতি ছিল আলোর গতির চেয়েও অনেক বেশি। তা কী করে সম্ভব? আমাদের আইনস্টাইন তো বলে গেছেন আলোর গতি ধ্রুবক। সেকেন্ডে এক লাখ ৮৬ হাজার মাইল থেকে বেশি কখনো হতে পারবে না। আইনস্টাইনের ‘থিওরি অব রিলেটিভিটি’ এবং ‘স্পেশাল থিওরি অব রিলেটিভিটি’র একটি আবশ্যকীয় শর্ত আলোর ধ্রুব গতি। সমস্যাটা কোথায়? আইনস্টাইন এই সমস্যা জানতেন। পদার্থবিদ্যা যখন নিউটনকে ছাড়িয়ে কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যায় চলে গেল, তখনই অতি অদ্ভুত কারণে আইনস্টাইন শঙ্কিত বোধ করলেন। সম্ভাবনার বিজ্ঞানে তাঁর আস্থা ছিল না। কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যায় যেকোনো ঘটনার জন্যই ঙনংবৎাবৎ বা দর্শক লাগবে। ঙনংবৎাবৎ ছাড়া ঘটনা কী, নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। আইনস্টাইন এতে বিরক্ত হয়ে বলেছিলেন, আমি আকাশের চাঁদের দিকে না তাকালে কি আকাশে চাঁদ থাকবে না? এই মহান বিজ্ঞানী ধরে নিয়েছিলেন কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যায় সর্বনাশের ঘণ্টা বাজতে বাধ্য। কারণ, কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা আলোর চেয়ে বেশি গতিশীল বস্তু/শক্তিতে বিশ্বাসী। তা হতে পারে না। কারণ, আলোর গতি ধ্রুব। হায়রে কপাল! আধুনিক ল্যাবরেটরিতে আলোর চেয়েও বেশি গতির সন্ধান পাওয়া গেল। ভুবনখ্যাত বাংলা ভাষাভাষী লেজার বিজ্ঞানী মণি ভৌমিকের ভাষ্য_’বিশেষ ধরনের ক্রিস্টালের উপর তীব্র লেজার বিম ফেলে বিজ্ঞানীরা তৈরি করলেন একজোড়া যমজ ফোটন। যমজ ফোটন বলা হয় এই কারণে যে এদের মধ্যে থাকে কিছু পারস্পরিক সাধারণ গুণ। বিজ্ঞানীরা এবার যমজ ফোটন দুটিকে বিপরীত দিকে পাঠিয়ে দিলেন। এই দুটি ফোটনের কোনো একটির মধ্যেও ছিল না এমন কোনো প্রোপার্টি বা প্রধান ধর্ম, যা তাদের নিজস্ব। ওদের প্রতিটি প্রোপার্টি যুগপৎ সহবাস করছে দুটির মধ্যেই। অত্যন্ত আশ্চর্যের কথা হলো, যেই আমরা ওই যমজের একটির মধ্যে কোনো বিশেষ প্রোপার্টি মাপছি, যমজের অন্যটি মুহূর্তেই সাড়া দিচ্ছে কমপ্লিমেন্টারি প্রপার্টি দেখিয়ে। মহাবিশ্বের দুই বিপরীত দিকে যত দূরেই পাঠানো হোক, ওই যমজ ফোটনকে তারা মুহূর্তেই পরস্পরের প্রতি এভাবে সাড়া দিবে। এবং সাড়া দিবে মহাজাগতিক স্পিড লিমিট আলোর গতির চেয়েও অসামান্য গতিতে। বহু পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রতিবারই পাওয়া গেছে এই ফল।’ এই দুটি ফোটন কণা কোনো না কোনোভাবে একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত। কিভাবে যুক্ত? মনে করা যাক যমজ ফোটন কণার একটি পৃথিবীতে অন্যটি এনড্রোমিডা ছায়াপথে। এদের ভেতরের দূরত্ব ২.৫ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। কিন্তু তারা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত। কল্পনাকে আরো ছড়িয়ে দিয়ে কি বলতে পারি যে আমরা সমগ্র মহাবিশ্বের সঙ্গে যুক্ত? শুধু যে এখন যুক্ত তা-ই নয়, অতীতেও যুক্ত ছিলাম, ভবিষ্যতেও যুক্ত থাকব। বিজ্ঞানে সময় বলে তো কিছু নেই। যখন বিগ ব্যাং হলো তখনো আমরা উপস্থিত–এই ভাবনাটা কেমন? মুখোশপরা জাদুকর জাদুর গোপন কৌশল বলে দিচ্ছে। আমাদের প্রয়োজন মুখোশপরা পদার্থবিদ্যা। আমরা তাদের অপেক্ষায় আছি। পাদটীকা শেষটায় আইনস্টাইন হেঁয়ালির কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। তাঁর নিজের আবিষ্কারও কিন্তু কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার চেয়ে কম হেঁয়ালিপূর্ণ ছিল না। তিনি দেখিয়েছেন সময় ও মহাশূন্য Absolute না। দুটোই নমনীয়।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৬৮৩ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • Md.sAiM aRaFAt
    User ৪ বছর পুর্বে
    হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে আর কি বলব!!রেটিং দিলাম রিয়েন ভাই!!

  • Joy
    Guest ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    Not bad

  • রিয়েন সরকার
    Author ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    স্বাগতম ৷৷রেটিং দিন প্লিজ

  • রিয়েন সরকার
    Author ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    স্বাগতম ৷৷রেটিং দিন প্লিজ

  • Adedin Shahin
    Guest ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    nice post Boss

  • shawon hasan
    User ৭ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    Thanks for nice post,,,,