বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
আমার স্ত্রীর প্রথম সন্তান হবে।আমার মন টা তাই খুব খুশি।আমি জানি আমার ছেলে হবে।
বাসায় কিছু বন্ধু এসেছে।তাদের সাথে আমি বাইরে বসে গল্প করছি।ঘরে কিছু মহিলা আমার স্ত্রীর সাথে আছে,তারা আমার স্ত্রীকে বাচ্চা প্রসব করতে সাহায্যে করছে।
খোশ গল্পে আমরা সবাই বাইরে মেতে রয়েছি।সবার মনে খুশি,যে আমার ছেলে হবে।
গল্প করতে করতে হঠাৎ করে আমকে আলিম বললো,দোস্ত, তোর যদি মেয়ে হয় তখন?
আমি হো হো করে হেসে উঠলাম,সাথে আমার বন্ধুরাও।
আমিঃ আরে আমার ছেলে হবে, চিন্তা করিস না।মেয়ে হওয়ার কোন সুযোগ নেই।
সবাই আমার সাথে তাল মিলিয়ে বললো,ঠিক ঠিক।
তবে আলিম এর কথা টা আমাকে একটু চিন্তিত করে তুললো।আসলেই যদি মেয়ে হয় তখন? আমার মতো সম্মানীয় ব্যক্তি আর কেউ নেই এই এলাকাতে। মেয়ে হলে তো মাথা কাটা যাবে।সমাজে মুখ দেখাতে পারবো নাহ।
নাহ! এসব কি ভাবছি আমি।
ছেলে-ই হবে আমার। সৃষ্টিকর্তা আছে না? তিনি জানেন আমার মনের খবর।
আবুলঃ কিরে বন্ধু,কি চিন্তা করিস?
আমিঃ আরে এমনি আরকি। তোর ভাবির জন্যে খুব চিন্তা হচ্ছে।
আলিমঃ ধুর...ভাবি অনেক স্বাস্থ্যবান। কিছু হবে নাহ। শোন তোরা, এক দিন হলো কি.....
আবার আমরা মেতে উঠলাম খোশ গল্পে।
হঠাৎ একটা বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম।
আলিমঃদোস্ত,অভিনন্দন! বাবা হয়ে গেলি রে।
আমার বুক টা চিনচিন করে উঠলো। খুব দেখার ইচ্ছা করছে আমার সন্তান টা কে।আচ্ছা,ছেলে হয়েছে তো না? কিছুক্ষণ পর একজন মহিলা ঘর থেকে বের হলো।হাতে ফুটফুটে একটা বাচ্চা কাপড় দিয়ে মোড়ানো। আমি দৌড়ে গিয়ে আমার সন্তান টাকে বুকে জড়িয়ে নিলাম।আহ! কি যে একটা অনুভুতি। বলে বোঝাতে পারবো নাহ। মনে হচ্ছে,আর কিছুর দরকার নেই আমার।আমার সব পেয়ে গেছি।
আমি মহিলার দিকে লক্ষ করলাম। তিনি মুখ কালো করে আছেন। আমি সামান্য একটু চিন্তিত হলাম। জিজ্ঞেস করলাম,
আপনি এরকম মুখ কালো করে রেখেছেন কেনো?
আসলে কি করে যে বলি আপনাকে।
আমি ভয় পেয়ে গেলাম।আমার স্ত্রীর কিছু হয় নি তো আবার?কপালে একটু একটু ঘাম আসছে।
আমি আবার উনাকে জিজ্ঞেস করলাম,কি হয়েছে? খুলে বলুন। আমি সামলে নেব। আমার স্ত্রীর কি কিছু হয়েছে?
তা না,আপনার স্ত্রীর ঠিক ই আছে।আসলে আপনার মেয়ে হয়েছে। তাই আরকি...
আমার হঠাৎ রাগে গা টা জ্বলে উঠলো। কি বলছে এই মহিলা! সম্ভব না এটা!
রেগে গিয়ে বললাম,মুখ সামলে কথা বলুন। আপনি ভালো করেই জানেন কার সামনে দাড়িয়ে আছেন!
মহিলা টি কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো। কিছু না বলে মাথা নিচু করে থাকলো। বুঝতে বাকি রইলো না আমার সত্যিই মেয়ে হয়েছে!
আমি বাচ্চা টার দিকে তাকালাম। একটু আগে যেখানে অসম্ভব ভালোবাসা ছিল সেখানে অসীম ঘৃনা আর রাগ এসে জায়গা করে নিলো। বাচ্চাটাকে রাখতে পারলাম না আর হাতে। ছুড়ে দিলাম মহিলার হাতে। বাচ্চাটার ভাগ্য ভালো,মহিলাটা ধরতে পেরেছে। না হলে বাচ্চাটি পড়ে গিয়ে মারা যেরে পারতো। অবশ্য, আমি সেটাই চাই,যাতে সে মরে যায়।
আমি পিছনে ঘুরে বন্ধুদের দিকে তাকালাম। তারা সবাই অট্টহাসি হাসছে।
আমার রাগটা আরো বেড়ে গেলো।বের হয়ে আসলাম বাসা থেকে।
****************************************
আজ আমার মেয়ের পঞ্চম জন্মবার্ষিকী।তার নাম। রেখেছি হাফসা। তার মা,ফাওনি তাকে সুন্দর করে সাজিয়েছে। এই মেয়ের জন্যে আমাকে অনেক অপমান সহ্য করতে হয়েছে। আমার স্ত্রী,হাফসা কে খুব ভালোবাসে। তাই,আমি তাকে অন্য সকলের মতো তাকে জীবন্ত কবর দিতে পারিনি।
।
বাসার সামনে বসে আছি। রাগে আমার গা জ্বলছে আজ। বাজারে গিয়েছিলাম। আজ এক দোকানদার আমার মেয়ের কথা তুলতেই বাজার এর সবাই তার সাথে তালে তাল মিলায়। সবার হাসির পাত্র হয়ে যাই। তাই,তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসলাম।
আমার মেয়েটা আমাকে এভাবে হঠাৎ চলে আসতে দেখে আমার জন্যে দৌড়ে গিয়ে পানি নিয়ে আসলো সামনে। আমার দিকে পানির গ্লাস টা বাড়িয়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।
আমার তার দিকে তাকালাম। কি সুন্দরী একটা মেয়ে! আমার মেয়ে পরীর চেয়েও সুন্দর! আমি হঠাৎ একটু মায়া অনুভব করাম তার জন্যে। তার হাত থেকে পানির গ্লাস টা নিলাম। ঠিক তখনি মনে পরলো বাজার এর কথা গুলো। কি হাসির পাত্রই না হয়েছি এই মেয়ের জন্যে!
একটু আগে যেখানে যার জন্যে মায়া ছিল সেখানে ঠিক তখনি ভয়ংকর রাগ জমা হলো।
গ্লাস টা ছুড়ে মারলাম দূরে। ছোট মেয়ে,খুব ভয় পেয়ে গেলো।আতংকিত হয়ে দৌড়ে গেলো তার মায়ের কাছে। খুব কান্না করছে তার মা কে জরিয়ে ধরে।ফাওনি, হাফসা জড়িয়ে ধরে দাড়িয়ে রয়েছে। তার চোখেও জল।করুন ভাবে মা-মেয়ে তাকিয়ে রয়েছে আমার দিকে। হয়তোবা বলতে চাইছে, মেয়ে হয়ে জন্ম নিলেও আমরা তো মানুষ! আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার আছে!
কিন্তু তারা কিছুই বললো না। চুপ করে দাঁড়িয়ে চোখ দিয়ে জল ফেলতে লাগলো।
তাদের কান্না দেখে আমার বিন্দু মাত্র দয়া হলো না। বরং,হাফসার চোখে ভয় আর আতংক দেখে খুব ভাল লাগলো আমার।
আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম আজই তাকে জীবন্ত কবর দিয়ে দিব।
***************************************
হাফসার জন্মদিন উপলক্ষে ফাওনি আজ অনেক জিনিস রান্না করেছে। সবাই এক সাথে আজ খেতে বসেছি। যার জন্মদিন তাকে আজ নাকি খুব সুন্দর লাগে। আমার মেয়ে টাকেও লাগছে। তবে তার মুখে হাসি নেই। একটু আগে আমি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি। হয়তোবা এই অবুঝ শিশুটিও বুঝতে পেরেছে তার বাবা তাকে ঘৃনা করে, সমাজ তাকে ঘৃনা করে। তার চোখে এখনো ভিজে রয়েছে। তার মা-ও চুপ চাপ খাবার খাচ্ছে।তারও মন খারাপ।
নিরবতা ভেংগে আমি বললামঃ ফাওনি,আজ তো হাফসার জন্মদিন।তাকে নিয়ে একটু বাইরে যেতে চাচ্ছি।
আমি স্পষ্ট দেখলাম দেখলাম মা-মেয়ে আমার দিকে অবিশ্বাস এর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি চোখ নামিয়ে খেতে লাগলাম।
এভাবে বললে ফাওনি আমার মতলব বুঝে যাবে।তাই বিশ্বাস যোগ্য করার জন্য বললামঃ হাফসা কে তৈরি করে দিও। ওকে নিয়ে একটু ঘুরে আসি বাইরে থেকে। হাজার হোক আমার মেয়ে। সমাজ কি বলে বলুক।আমি তাকে তবুও বড় করে তুলবো।
আমার কথা শুনে হাফসা আনন্দে লাফিয়ে উঠলো।
হাফসা আনন্দের সঙ্গে আমাকে
জিজ্ঞাসা করলোঃ আব্বা, তুমি সত্যি আমাকে নিয়ে বাইরে যাবে?
আমিঃহ্যা রে মা। খেয়ে তৈরি হয়ে আয়।
হাফসা আরেক বার আনন্দে লাফিয়ে উঠলো।
সে তার মায়ের গলা জড়িতে ধরে বলতে লাগলো,
দেখছো আম্মা,দেখছো! আব্বা আমাকে কত্তো ভালবাসে!
ফাওনি তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে আবার আমার দিকে অবিশ্বাস এর দৃষ্টিতে তাকালো।ভাবছিলাম আমাকে মনে হয় প্রশ্ন করবে।কিন্তু,সে কোন প্রশ্ন করলো না। বেশ খুশিই হলাম আমি তাতে।
সে হয়তোবা বুঝতে পারছে না, হচ্ছে টা কি?
*************************************
হাফসা কে নিয়ে বের হলাম। পিছনে তাকিয়ে দেখি ফাওনি এখনো দরজায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।আমাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।আমি যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব হাফসা কে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম। পথিমধ্যে বাজার পরবে।
বাজার টা বেশি দূরে না কাছেই। হাফসা আমার সাথে বের হতে পেরে খুব খুশি হতেছে। সে আপন মনে গান গাচ্ছে, নাচছে আর আমার সাথে কথা বলে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে আজ তার অনেক খুশির দিন।এমনো হতে পারে যে,সব বাবার সাথে যখন কোন মেয়ে ঘুরতে বের হয় তখন সেও এরকম আনন্দিত হয়। কিন্তু,এরকম চিন্তা করার কোন কারন নেই। কেননা, এখন কোন বাবা তার মেয়ে কে বাঁচিয়ে রাখে না। জন্ম হওয়ার সাথে সাথে জীবন্ত কবর দিয়ে দেয়। আমি-ই হয়তোবা এমন একজন যে তার মেয়েকে এখনো বাঁচিয়ে রেখেছে।
।
হাফসার প্রশ্ন গুলোর উত্তর আমি শুধু হ্যাঁ-না দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছি। হ্যাঁ-না বলতেও আমার কেমন জানি ঘৃনা হচ্ছে। তবুও সে এইটুকু উত্তর শুনে প্রবল উৎসাহ নিয়ে আবার প্রশ্ন করছে।
।
বাজারে পৌঁছালাম। সবাই আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। হাসার কথা। আমার মেয়েটাও দেখি তাদের দেখাদেখি হাসছে। অবুঝ শিশু,বুঝতে পারেনি তাকে অবজ্ঞা করে হাসছে সবাই।
আমি তাড়াতাড়ি একটা কোদাল কিনে মরুভূমির দিকে রাওনা হলাম। ওদিক বেশি মানুষ নেই। আমার কাজ টার জন্যে আদর্শ জায়গা।
কিছুক্ষণের মাঝে আমরা মরুভূমিতে পৌছে গেলাম। আজ খুব গরম পরেছে। সূর্য টাও একেবারে মাথার উপরে। অবাক করা ব্যাপার হাফসা এই গরম কে পাত্তাই দিচ্ছে না।সে আপন মনে চলতে চলতে তার খেলা চালিয়ে যাচ্ছে।
সুনশান একটা জায়গায় খুঁজতে লাগলাম। কিছুক্ষণের মাঝেই পেয়ে গেলাম। হাফসা কে একটা গাছের নিচে বসিয়ে রেখে কোদাল দিয়ে বালুর মাঝে কবর বানাতে লাগলাম। হাফসা দূর থেকে আমাকে দেখছে আর গাছের নিচে বসে বসে বালু দিয়ে খেলছে।
বালুর মাঝে কবর বানানো খুব সহজ ব্যাপার নয়। কবরে বার বার বালু পরে কবর টাকে ভরাট করে ফেলছে। হততোবা,প্রকৃতিও চায় যাতে আমি আমার এই নোংরা কাজে সফল না হই।
কিন্তু,আমি আমার কাজ চালিয়ে যেতে লাগলাম।আমার সম্মান বাঁচাতে হবে যে।
এক সময় কাজ করতে করতে হাপিয়ে গেলাম।সারা গা ঘামে ভিজে একাকার। খুব ক্লান্ত লাগছে। তাই, কবরের পাশে বসে একটু জিড়িয়ে নেয়ার জন্যে বসলাম। একটু পর দেখলাম হাফসা আমার দিকে আগিয়ে আসছে। সে আমার পাশে আসলো,আমার কপালের ঘাম সে তার জামা দিয়ে মুছলো। তারপর সে যে কাজ টি করলো তা দেখার জন্যে আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না!
আমি দেখলাম সে গুটি গুটি পায়ে কবর টির কাছে গেলো। নিজ হাতে কবর এর মাটি সরাতে লাগলো !
সে কি সত্যিই জানে না এটা তারই কবর? একটু পর তাকেই এখানে জীবন্ত দাফন করা হবে!
আমার বুক টা কেমন জানি মুচড়ে উঠলো।
নাহ আর ভাবতে পারছি না,তার প্রতি কেমন জানি মায়া জন্মাচ্ছে!
নাহ, মায়া জন্মাতে দেয়া যাবে না! এই অভিশাপ টাকে আজই বিদায় করতে হবে!
বলে নিজেই নিজেকে ধমকালাম।
আমি আর না ভেবে কাজে নেমে পরলাম আবার। মেয়ে আর আমি মিলে কবর খোড়া শেষ করলাম।
এখন শুধু তাকে এখানে পুতে ফেলতে হবে ভেবেই কেন জানি মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
আমিঃ মা,এদিকে আসো।
হাফসা কবর খুড়ে ক্লান্ত হয়ে পাশেই বসে ছিল।
সে উঠে আমার কাছে এসে দাড়াল।
বুঝলাম নাহ কি হলো, আমি তাকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে উঠলাম। ও কি বুঝলো জানি না কিন্তু কেন জানি সেও কেঁদে উঠলো। আচ্ছা,সেও কি বুঝতে পেরে গেছে তার বাবা তাকে জীবন্ত দাফন দিবে!
আর ভাবতে পারছি না,এখন আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, সে তো আমার মেয়ে! আমার কন্যা! তাকে কিভাবে কবর দিব!
ঠিক তখনি মন টা বলে উঠলো,আরে কি করছিস! অভিশাপ টাকে পুতে ফেল!
আমার মনে হলো ঠিকই তো। আমাকে এখনি একে দাফন করতে হবে।
জীবন্ত দাফন!!!!
তাকে ছাড়িয়ে তার কান্না ভেজা -মায়া ভড়া মুখটার দিকে অশ্রুশিক্ত চোখে তাকিয়ে বললামঃ মা একটা খেলা খেলবে?
হাফসাঃ আব্বা,বলো কি খেলবে?জানো আমি অন্নেক খেলা পারি।মা শিখিয়েছে।তোমাকে একদিন শিখিয়ে দেব।
কথা টা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম।
চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসলো।অনেক কষ্টে চোখের পানি লুকিয়ে রাখালাম। মনে মনে ভাবলাম,মা রে, তুমি আর ওইদিন টা কখনো দেখতে পাবা না।
আমিঃ আচ্ছা মা,শিখিয়ে দিও মা,এখন তুমি আমি একটা খেলা খেলবো। তুমি ওই যে গর্তটা দেখছো ওই গর্তে দাঁড়িয়ে থাকবে।আমি মাটি দিব তোমাকে। যখনই মাটি তোমার গলা পর্যন্ত আসবে তখন আবার তোমাকে টেনে তুলবো। কেমন?
হাফসাঃ আচ্ছা আব্বা। আমি নামছি গর্তে তুমি মাটি দিও।যদি কষ্ট হয় তাহলে আমাকে বলিও।
আমি নিরবে দুফোঁটা চোখের পানি মরুভূমির উত্তপ্ত বালুতে ফেললাম।
আমিঃআচ্ছা মা,তাই হবে।
হাফসা গর্তে রেখে মাটি দিতে লাগলাম। অবাক করা বিষয়, সে আমার কষ্ট কমানোর জন্যে নিজেই নিজের গায়ে মাটি দিতে লাগলো।
আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে মাটি দিতে লাগলাম।
মাটি দিতে দিতে যখন তার গলা পর্যন্ত মাটি ভরাট হয়ে এলো তখন সে বললঃআব্বা,এখন ওঠাও। শরীর ব্যাথা করছে।
এই কথা টা শোনার সাথে সাথে হাউ মাউ করে কেঁদে উঠলাম।
আমি তবুও মাটি দেয়া থামালাম নাহ।সে চিৎকার কেঁদে যাচ্ছে আর বলছে,,
আব্বা,আব্বা! খুব ব্যাথা করছে আব্বা! আমাকে উঠাও!! আব্বা,আব্বা......
বন্ধ হয়ে গেল তার চিৎকারের শব্দ। মাটিতে তার মাথা টাও চাপা গেছে এখন। চিৎকারের আর শব্দ আসছে নাহ।
এসময় আর নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না। উন্মাদের মতো চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে মাটি দিতে থাকলাম।
নিজ কন্যার জীবন্ত কবর দিল এক পাষাণ বাবা!!!
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Mehedi Hasan Prova
User ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বেমোহাম্মদ মফিজুল হোসেন
Golpobuzz ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে