বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

♦প্রণয়♦

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মফিজুল (০ পয়েন্ট)

X রোমান্টিক গল্প:: প্রণয় লেখকঃনাসির খান - সাবের দূর থেকে ছেলেটিকে দেখে বেশ মজা পেতে লাগলো। দুপুরের অলস সময় শুধুমাত্র চায়ের কাপ হাতে নিয়ে কাটানোর সাথে যদি দেখার মত কিছু পাওয়া যায়, তাহলে সময়টা খুব খারাপ যায় না বেকারদের জন্য। ছেলেটির বয়স কত হবে, সাতাশ-আটাশ সম্ভবত। অথচ চলাফেরায় এখনো কেমন বাচ্চা বাচ্চা ভাব। হাতের বোতল থেকে প্রতি এক মিনিটে একবার নিয়ম করে পানি খাচ্ছে। কাঠের বেঞ্চ থেকে উঠে স্টেশনের দিকে যাচ্ছে, আবার ফিরে আসছে। কিছুক্ষণ আগে গিয়ে আবার ফিরে আসলো। এবার দিয়ে গুনে গুনে মোট তেরোবার হলো। সাবের বেশ আগ্রহ নিয়েই গুনছে। সময় তো পার হচ্ছে এই অচেনা স্টেশনে। সাবের বাড়ি থেকে বেরিয়েছে গতপরশু। কোনো কাজ নেই। তবু বাড়িতে বলে এসেছে চাকরির খোঁজে রাজশাহী যাচ্ছে সে। বয়স পঁয়ত্রিশ হয়ে গেছে। এখন আর চাকরি খুঁজে কী হবে। এমনটা ভেবেই সে আর চাকরি নিয়ে মাথা ঘামায় না। বাড়ি থেকে এবিষয়ে কেউ কিছু বললে অযথা ক্ষেপে গিয়ে উত্তর দেয়, আরে রাখো তোমার চাকরি ফাকরি। আমি কি বসে খাচ্ছি নাকি। মাসের ত্রিশ দিনই তো বাইরে খাই। রাতেও থাকি না। মাঝে মাঝে দুই একরাতও কি নিজের বাড়ি ঘুমানো যাবে না? নাকি ভাড়া দিতে হবে? সাবেরের মা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। বলে, এত অল্প কথার এত বড় উত্তর দিচ্ছিস কেনো? সাবের তখন হেসে ফেলে বলে, মা প্লিজ এরপর এমন প্যানপ্যান করবে না। তাহলে এরচে বেশি বড় উত্তর দেবো। বিশ মার্কের রচনার মতো। রূপাতলী স্টেশনে ট্রেন ক্রসিং হয়। এমনিতেই ট্রেন লেট তার ওপর ক্রসিঙের ঝামেলায় অনেক সময় চলে যাবে। স্টেশন ভরা মানুষ গিজগিজ করছে। সাবেরের এ ব্যাপারে কোনো বিকার না থাকলেও সেই ছেলেটির আছে। দূর থেকে তার অস্থিরতা সাবের বেশ উপভোগ করছিলো বলেই সে ঠিক করলো ছেলেটির সাথে একটু কথা বললে মন্দ হয় না। মুদি দোকানের সামনের বেঞ্চে ছেলেটি এসে আবার বসেছে। সাবের পেছন থেকে গিয়ে হুট করে ছেলেটির ঘাড়ে হাত রেখে বললো, আছো কেমন? সাবের যা ভেবেছিলো তাই। ছেলেটা রীতিমত লাফিয়ে উঠলো। তাকিয়ে থাকলো ভয়ার্ত চোখে। যেনো ছেলেটি এইমাত্র সাবেরের পকেট মেরেছে। আর সাবের ধরে ফেলেছে। ছেলেটিকে স্বাভাবিক করার জন্য সাবের শান্ত হলায় বললো, আসো কৃষ্ণচূড়া গাছটার নিচে দাঁড়াই। গল্প করি। ছেলেটি কী করবে ভেবে পাচ্ছে না যখন, তখন সাবের ইয়ার বন্ধুর মত তার হাত ধরে বললো, ভয় নাই। আমি ভালো ছেলে। তোমাকে দেখে কেন যেন মায়া লাগছিলো দূর থেকে। দেখলাম প্রায় পনেরোবারের মত পানি খেলে। কোনো সমস্যায় আছো মনে হলো। তাই গল্প করতে চাইছিলাম। তুমি যেহেতু চাইছো না তাহলে থাক। সাবেরের ভালো মানুষের মত কথা বলাতেই হয়তো ছেলেটি সাহস পেলো। খুব দ্রুততার সাথে সাবেরকে ফাঁকে নিয়ে এসে প্রথমেই বললো, আমাকে একটা উপকার করতে পারবেন? সত্যিই আমি সমস্যায় আছি। সমস্যায় আছি বলার সময় ছেলেটির গলা কেঁপে উঠলো মনে হলো। সাবেরের আসলেও বেশ মায়া লাগতে লাগলো। বাচ্চা একটা ছেলে। কী সমস্যায় আছে কে জানে। সাবের বলল, -আমি তো সাধারণত কারো উপকারে আসি না। বরং ক্ষতি করি। রাজশাহী থেকে ফিরছি। রাজশাহী বন্ধুর বাসায় ছিলাম। বাথরুমের বেসিন ভেঙে রেখে এসেছি। এই দেখো পা কেটে গেছে। ছেলেটি সমস্যার কথা ভুলে গেলো সম্ভবত। এত উদাসীন। অবাক হয়ে ব্যান্ডেজ করা পায়ের আঙুল দেখতে লাগলো। সাবের আরেকটু কাছে এগিয়ে গিয়ে বলল, : এবার তোমার সমস্যার কথা বলো। তার আগে বলো তোমার নাম কী? : আমার নাম মুরাদ। বাড়ি মাদারিপুর। আমার এক হাজার টাকার খুব প্রয়োজন। আপনি যদি দেন তাহলে যেভাবেই হোক আমি আপনাকে টাকাটা ফেরত দেবো। সাবের ওর টাকা চাওয়ার স্বাভাবিকতা দেখে অবাকই হলো। কোনোরকম কারণ জানতে না চেয়ে বলল- : আমার কাছে এত টাকা নাই। বেকার মানুষ। পকেটে চারশ ষাট টাকা মত আছে। নিতে পারো। : আমি নেবো। আপনাকে ফেরতও দেবো কসম করে বলছি। আমার এখন টাকার খুব প্রয়োজন। আমি বাড়ি থেকে পালিয়েছি। : খুব ভালো করেছো। এই বয়সে দুই একবার বাড়ি থেকে না পালালে হয় নাকি? জীবনের অনেক সময়ে এই বাড়ি পালানোর তাৎপর্য কাজে লেগে যায়। তা খুন টুন করে পালাওনি তো? মুরাদ এবার চুপ হয়ে গেলো। মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকিয়ে থাকলো। পাতলা পাঞ্জাবী পরা লিকলিকে শরীরের ফর্সা এই ছেলেটিকে দেখতে আসলেই অনেক মায়াবী লাগছে। যেনো নাক টিপলে দুধ বের হয় এমন বয়সী কোনো আদুরে ছেলে। ওর নির্লিপ্ততা দেখে সাবের ফিসফিস করে বলল- : কাহিনি কী? খুন করেছো কাকে? কথা বলো। চুপ কেনো? নির্ভয়ে বলতে পারো। আমি ভালো ছেলে। কোনো গোয়েন্দা পুলিশ না। আমার সারা শরীর চেক করতে পারো। কিছুই পাবে না। মুরাদ একটু হাসলো মনে হলো। নিচের দিকে তাকিয়েই বলল- : আমি একা পালাইনি। : তাহলে? কোনো মেয়েকে নিয়ে? প্রেম ট্রেম? : হু। আহারে। মুরাদের অসহায়ত্ব বা মানসিক অবস্থা বুঝতে সাবেরের একটুও সময় লাগলো না। ২০০৫ সালে সেও একবার এমনটি করেছিলো। দিঠিকে নিয়ে পালিয়েছিলো। হাতে কোনো টাকা পয়সা নাই। অথচ খালি হাতে দিঠিকে নিয়ে এক রাতে রওনা হলো বগুরা। দিঠির ভ্যানিটি ব্যাগে কয়েক হাজার টাকা ছিলো। ওটাই সম্বল। রাতে দিঠি বিয়ে করা স্ত্রীর মত অভিনয় করতে করতে ট্রেনে রওনা হলো সাবেরের সাথে। সাবের কিছুক্ষণ পরপর দিঠিকে বলতে লাগলো- ওখান থেকে পাঁচটা টাকা দাও তো। সিগারেট আনি। দিঠি বারবার ব্যাগ খুলে সাবেরকে টাকা দিতে দিতে বিরক্ত হয়ে বললো, তুমি কি ব্যাগের সব টাকা দিয়ে চা সিগারেট খেতে চাও? এই নাও সব টাকা। দিঠি মুঠ করে সব টাকা সাবেরের পকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে ঝিম ধরে বসে থাকলো। পরদিন বগুরায় সাবের আর দিঠির বিয়ে হলো কোট রেজিস্ট্রি করে। সাথে ছিলো সাবেরের মামার এক বন্ধু আর কে কে যেনো। বিয়ে হয়ে গেছে এখন কী করতে হবে সাবেরের জানা নাই। সে সারাদিন দিঠিকে নিয়ে অন্যের বাড়িতে ভ্যাবদা মেরে থাকে। দিঠি অযথা কথা বলে সারাক্ষণ। : কিছু করছো না কেন? আমরা কি এভাবেই থাকবো? এত কেয়ারলেস কেনো তুমি? সাবের অকারণে হেসে উত্তর দেয়- : এই অচেনা জায়গায় কী করবো দিঠি? কী করতে বলো? আমি কাউকে চিনি বলো? আমারও তো কিছু করতে ইচ্ছা করে। সাবের অনেক ঘোরাঘুরি করে কোনো কিছু করতে পারে না। তিন দিনের দিন এক রাতে বাসায় ফিরে কাউকে কিছু না বলে উদ্ভ্রান্তের মত কাঁদতে থাকে। দিঠি বুঝতে পেরে সাবেরকে কিছু বলে না। মন খারাপ করে সাবের পাশে দাঁড়িয়ে সাবেরের মাথায় হাত বুলাতে থাকে। তাদের কিছুই নেই, তবু দিঠির কেনো যেনো মনে হয় সে অনেক সুখে আছে। যে সুখ অনেকের কাছেই ধরা দেয় না। পরদিন কীভাবে কীভাবে দিঠির বাবা এসে দিঠিকে নিয়ে যায়। সাবেরও বাড়ি ফিরে আসে। কোনো কিছু বুঝে উঠবার আগেই ওদের ডিভোর্স হয়। সাবেরকে কয়েকমাস জেলেও থাকতে হয়। কত কঠিন কঠিন বিষয়গুলো কত সহজে হয়ে যায় সাবের একা একা ভাবে শুধু। মানুষ কতকিছু সহজে পেয়ে যায়, আবার শুধুমাত্র টাকার অভাবে কত কিছু পায় না। সাবের অনেক টাকার মালিক না, তার বাড়ি-গাড়ি নেই। ভালো চাকরি- ব্যবসা নেই শুধুমাত্র এই কারণে সমাজে তার স্ট্যাটাস নেই। যেকারণে দিঠির পরিবার মেনে নিতে পারেনি তার মেয়ের সুখ। দিঠির অন্য কোথাও বিয়ে হয়ে যায়। অনেক কষ্টেই ছিলো দিঠি। মাঝে-মধ্যে দেখা হয়ে গেলে কোনো কথা বলতো না সাবেরের সাথে। কিন্তু দিঠির চোখে যে মেঘ, তার ঘনঘটা বুঝতে পারতো সাবের। অথচ দুই-তিন বছরের মাথায় দিঠিও কেমন স্বাভাবিক হয়ে গেলো। সুপারশপের সামনে একবার দেখা হলো। খুব সহজে এগিয়ে এসে বললো, কেমন আছো সাবের? খবর ভালো না নিশ্চয়ই? কিছু একটা করো বুঝলা। সাবেরও হেসে হেসে কথা বলেছিলো। একটা কষ্ট ছিলো হয়তো দুজনের মনে। যার তীব্রতা খুব শক্ত নয় অথচ চিনচিনে। বুকের ভেতর কোথাও সেই ব্যথা চিনচিন করতো। কোনো কোনো রাতে সেই ব্যথাটা হয়তো গাল ভিজিয়ে দিতো সাবের আর দিঠি দুজনকেই। স্বপ্নে যেমন খুব অল্প সময়ে অনেক চিত্র দেখা যায়, তেমন সাবের খুব অল্প সময়ে অনেকগুলো স্মৃতির সামনে দিয়ে দৌঁড়ে গেলো। মুরাদকে টাকা দিতে দিতে বললো- : কাছে আরো টাকা থাকলে দিতাম। মেয়েটা কোথায়? পরিচয় করিয়ে দেবে? : ও ওয়েটিং রুমে বসে আছে। খুব লজ্জা পাচ্ছে। বাচ্চা মেয়ে। আমার সাথেই কথা বলছে না। কিছুক্ষণ পরপর কাঁদছে। নিষেধ করলে শোনে না। কাঁদলে লোকজন বেশি উৎসাহী হয়। লোকজন সন্দেহ করবে না বলেন? : তা তো অবশ্যই। চলো কিছুক্ষণ কথা বলি। আমি কথা বলে মানুষকে হালকা করতে পারি। মেয়েটিকে খুব দেখতেও ইচ্ছা করছে। তোমার মত বোকা ছেলেকে যে মেয়ে ভালোবাসে, তাকে দেখা উচিত। মুরাদ বেশ উশখুশ করতে থাকলে সাবের নিজেই আগ্রহ হারালো। সাবের ফরিদপুর যাবে আর মুরাদ যাবে খুলনা। বিপরীত দিকে। সাবেরের ট্রেন আগে। সাবের বিদায় নিতে চাইলে মুরাদ লজ্জিতভাবে বললো, : আপনি ওকে জানালা দিয়ে একবার দেখবেন। আসেন প্লিজ। সাবের মুরাদের সাথে স্টেশনের ভেতরে। প্রচণ্ড ভীর। কথা চেঁচিয়ে বলতে হয়। সাবেরর ফোনে অচেনা নম্বরের ফোন। সাবের ফোন ধরতেই আবার বিরক্ত হলো। : তুই আবার নিখোঁজ? : মা আবার প্যানপ্যানানি? : বাড়ি আসবি না? : না। এটা কার নম্বর? : নম্বর যারই হোক, আমারে বিষ কিনে দে। খাই। : খাইলে খাও। আমাকে কিনে দিতে হবে কেনো? আব্বাকে বলো। সাবের তার মায়ের সাথে কথা বলবে না বলবে না করেও প্রায় দশ মিনিট কথা বললো। সন্তানের জন্য মায়ের উদ্বীগ্নতা দেখে সাবেরর বেশ ভালো লাগলো। সব সময়ই লাগে। কিন্তু অনুভূতি আর বাস্তবতায় বিস্তর ফারাক দেখা যায়। পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে যারা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে না। সাবের পারে না। সাবেরের মা পারে না। অথচ তাদের কথোপকথন আর অনুভূতির পার্থক্য যোজন যোজন। ট্রেনে সাবের বসে আছে। সাবের পাশে মুরাদ। মুরাদের পাশে মেয়েটি। প্রথম থেকেই মেয়েটি শক্ত হয়ে বসে আছে। একটা কথাও বলেনি। সাবের তার বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে মুরাদ ও মেয়েটিকে। সাবের খুবই অবাক। একটা ছেলে একটা মেয়েকে ভালোবাসে। ফোনে পরিচয়। কেউ কাউকে দেখেনি। অথচ তাদের ভালোবাসার টান এত গভীর। মেয়েটির বিয়ে ঠিক হচ্ছে, শুধুমাত্র এটুকু শুনেই সে মেয়েটির শহরে গিয়ে তাকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। কোথায় যাবে তাও জানে না। মেয়েটির নাম সাহানা। সে জানতো না মুরাদ দেখতে কেমন, ছেলে কেমন। অথচ সে তার জীবনটাকে তুলে দিয়েছে মুরাদের কাছে। তার পরিবারের কথাকে একটাবার ভাবেনি। ভালোবাসা আর প্রণয় শব্দদ্বয়ের মাঝে কি কোনো পার্থক্য রয়েছে? তা না হলে একজন মানুষ প্রেমের জন্য পরিবারের সবার ভালোবাসাকে কীভাবে বিসর্জন দেয়? প্রণয়ে এত শক্তি? এত টান? এত মোহ-মায়া? এসব চিন্তা করেই সাবের ভেবেছে এই দুজনকে সে সাহায্য করবে। বাড়ি নিয়ে যাবে। এদের বিয়েতে সাহায্য করবে। সাবেররা যখন বাড়িতে পৌঁছেছে, তখন রাত। ঝুম বৃষ্টিতে এক হাঁটু কাদায় মাখামাখি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তিনজন। তিনজনই উঠোনে দাঁড়িয়ে ভিজছে। সাবেরের মা টর্চ লাইট মেরে মেরে তিনজনের মুখ দেখছে বারবার। সাবের আগে বললো, : মা তুমি কোনো বেশি কথা বলবে না আজ প্লিজ। সাবেরর মা রাগ, আনন্দ মেশানো কণ্ঠে প্রায় চেঁচিয়ে বললো- : তুই সাহানাকে কই পেলি? সাবের সাহানার হাত ধরে বললো- : তুমি যখন ফোন দিলে, সব ঘটনা খুলে বললে তার এক মিনিট পরই। সাহানা সাবেরের ছোটবোন। তার বিয়ের কথা চলছিলো। তাই সে মুরাদকে নিয়ে সকালে বাড়ি থেকে পালিয়েছে। চিঠি লিখে গেছে- মা, বেশি বিয়ে বিয়ে করছিলে তোমরা। আমার খুব অস্থির লাগছিলো। আমার এদিকে বিয়ে হয়ে গেলে ওদিকে মুরাদ মরে যাবে বলেছে। মুরাদ আর আমার সম্পর্ক আছে। ওকে আমি চিনি না। তবু ভালোবাসি। কথা দিয়েছি। আমি কথা না রাখতে পারলে গলায় দড়ি দিতাম। তারচে ভালো ওর সাথে চলে যাচ্ছি। এখন বলো গলায় দড়ি দিলে খুশি হতে? নাকি পালিয়ে গিয়েছি, এটাই ভালো? ভাইয়াকে সব জানাবে। ভাইয়ার মোবাইল নম্বর তোমার জর্দার কৌটার মধ্যে রেখে এসেছি। - সাহানা। সাবেরের মা যখন সাবেরকে ফোন করে জানায় তখনই তার সন্দেহ হয়। দ্রুত মুরাদকে নিয়ে ওয়েটিং রুমে গিয়ে দেখে সাহানা বসে আছে। সাহানা সেই যে সাবেরকে দেখে চমকে যায়, তারপর একটা কথাও বলতে পারেনি। সাবের আশ্বাসভরা চোখে কথা বলেছে। নির্ভয়ে রেখেছে ওদের। কথা দিয়েছে ওদের বিয়ে দেয়ার দায়িত্ব তার। ভালোবাসা ভাঙার মত খারাপ ছেলে সাবের নয়। সাবের তার মাকে বললো, : মা শোনো, সংসার করবে সাহানা। তুমি, আমি বাবা না। তাই ও যদি এই চিকনা ছেলের সাথে থেকে সুখী থাকে, তাতে তোমার কিছু বলার থাকতে পারে না। তাই চুপ থাকবা। সাবেরের মা এগিয়ে এসে বললো, : আমরা তো কিছুই জানি না। আমাদের জানালে আমরা কী বলি শুনতো। তারপর পালাইতো। আগেই কেনো পালালো? এমন গর্ধবেরা আমার পেটে জন্মায় কেনো? পরিবেশটা খুব আনন্দময়। বাড়িতে এত কিছু হয়ে যাচ্ছে অথচ সাবেরের বাবা ঘুমাচ্ছে। উঠানে তিনজন ভিজেই চলেছে। সাবেরের মা রাজি-অরাজি অভিব্যক্তিতে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। সাবের একসময় বললো- মা তুমি ভিজতে চাও? আসতে পারো। উঠানে অনেক জায়গা আছে। সাবেরর মা ভেতরে চলে গেলো। হয়তো তিনি কাঁদছেন। অথবা এত সহজ সরল সন্তান জন্ম দেয়ার প্রশান্তিতে চোখ বুজে আছেন। এদিকে তিনটি পাখি প্রণয় বৃষ্টিতে ভিজছে। সাবের তার বোনের কাছে গিয়ে বলল- : সাহানা তোদের বিয়ে দেবো আমি। আমি একবার পালিয়েছিলাম মনে আছে তোর? তুই তখন ছোটো। আমি পারিনি একজনকে ধরে রাখতে। কিন্তু আমি চাই তোকে একজনকে ধরে দিতে। তুই খুশি না? সাহানা কোনো উত্তর দিচ্ছে না। অনেকক্ষণ ভেজার কারণে সে কাঁপছে। এমনও হতে পারে এমন রাতে একজন অসাধারণ ভাই পাওয়ার উত্তেজনায় সে কাঁপন। অথবা প্রণয়ের পথ তার পায়ের নিচে, এই পাওয়ার আনন্দে। সাহানার খুব লজ্জা লাগছে অথচ শব্দ করে গাইতে ইচ্ছে করছে- "আমার পরানে আজি, যে বাণী উঠিছে বাজি অবিরাম বর্ষণধারে॥ আজি তোমায় আবার- চাই শুনাবারে।" ♦


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৫১৭ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • মোহাম্মদ মফিজুল হোসেন
    Golpobuzz ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ

  • Mehedi Hasan Prova
    User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    gjgj

  • মোহাম্মদ মফিজুল হোসেন
    Golpobuzz ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ দুজনকে

  • Sushmita
    User ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    gj ভুল দেখছি না তো??? যাই হোক ভাল লাগলgj

  • M.H.H.RONI
    Golpobuzz ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    বাহ তুমি দেখি আবার এসব গল্পও শেয়ার করোgj gj gj