বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

বেলা ফুরাবার আগে

"ইসলামিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান গেস্ট ইউজার(guest) (০ পয়েন্ট)

X লেখকঃ আরিফ আজাদ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম ০১। শুরুর আগে প্রিয় নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন সাহাবিদের চোখের মণি। তাকে এক মুহূর্তের জন্য দৃষ্টির অন্তরাল করা সাহাবিদের জন্য ছিল রীতিমতাে বিচ্ছেদের ব্যাপার। নবিজির উপস্থিতি তাদের হৃদয়কে প্রফুল্ল করে তুলত। তাদের ধ্যানধারণা, তাদের যাপিত জীবনের সকল অনুষঙ্গ আবর্তিত হতাে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ঘিরেই। ধু-ধু মরুভূমিতে পথহারা পথিকের বুক যেমন এক ফোঁটা পানির জন্য ছটফট করতে থাকে, সাহাবিদের কাছে নবিজির সঙ্গ ছিল ঠিক সে রকম। দুর্লভ, অমৃত সমান পানির মতন। নবিজিকে তারা চোখে হারাতেন। তিনি ছিলেন তাদের কাছে প্রাণের অধিক প্রিয়। যে মানুষটিকে এক পলক না দেখলে সাহাবিরা অস্থির হয়ে উঠতেন, ব্যাকুল হয়ে পড়তেন, যার মুহূর্তকাল অনুপস্থিতি সকলকে দিশেহারা করে তুলত, একদিন সেই মানুষটিই যখন দুনিয়ার পাঠ চুকিয়ে বিদেয় নিলেন, দুনিয়ার জীবন ছেড়ে পাড়ি জমালেন অনন্ত অসীম জীবনের পথে, সাহাবিদের মনের অবস্থা তখন কেমন হয়েছিল? প্রিয়তম মানুষটার সাথে দুনিয়ায় আর দেখা হবে না, একসাথে বসে গল্প করা হবে না, হৃদয়ের সমস্ত আবেগ ঢেলে “ইয়া রাসুলুল্লাহ’ বলে সম্বােধন করা যাবে না, তার ডাকে ‘লাব্বাইক’ বলে হাজির হওয়া হবে না’—এমন দৃশ্যগুলাে কল্পনা করা কি সাহাবিদের জন্য খুব সহজ ছিল? ছিল না। নবিজিকে হারিয়ে সাহাবিদের হৃদয়ে যে বিচ্ছেদের ঝড় উঠেছিল, সেই ঝড়ের খানিকটা আমরা বুঝতে পারি উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুর ঐতিহাসিক সেই ঘটনা থেকে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যুর দিন উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু একেবারে পাগলের মতাে হয়ে গেলেন। নবিজির মৃত্যু হতে পারে’–এই ব্যাপারটা তিনি বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। তিনি হয়তাে ভাবলেন, আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত একজন রাসুল, যাকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বাছাই করেছেন গােটা মানবজাতির জন্যে, যার ওপর নাযিল হয়েছে আসমানি গ্রন্থ আল-কুরআন, মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা যার সাথে সাত আসমানের ওপরে সাক্ষাৎ করেছেন, তার কীভাবে মৃত্যু হতে পারে? উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু তখন অধিক শােকে পাথর। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও একজন মানুষ। মানুষ হিশেবে তার মৃত্যু হওয়াটাই স্বাভাবিক। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সৃষ্ট কোনাে বস্তুকেই অমরত্ব দান করেননি’–এই ধ্রুব সত্য থেকে তার মন তখন খানিক সময়ের জন্য বিস্মৃত হলাে। নবিজির প্রয়াণ দিবসে এই কথাগুলাে বােঝার মতন অবস্থা উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুর ছিল না। শােকে মুহ্যমান অবস্থায় তিনি গর্জে উঠেন। বললেন, “যে বলবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যু হয়েছে, তাকেই আমি হত্যা করব।” [১] ভিড় ঠেলে এগিয়ে এলেন আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু। তিনি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুখমণ্ডল থেকে চাদরটা সরিয়ে, তার শুভ্রোজ্জ্বল চেহারায় দুটো চুমু খেলেন। এরপর উপস্থিত জনতার ঢলকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘অবশ্যই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুবরণ করেছেন।[2] আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুর এমন সাদাসিধে সরল বক্তব্যে উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুর মনের যাতনা যেন আরও দ্বিগুণ বেড়ে গেল। নবিজির প্রয়াণে যে শােকের সাগর জন্ম নিয়েছে হৃদয়ে, সেই সাগর যেন আরও অশান্ত, আরও বেপরােয়া হয়ে উঠল। উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু বলে উঠলেন, ‘না। কখনােই না। মুনাফিকরা চিরতরে নিঃশেষ না হওয়া পর্যন্ত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যু হতে পারে না।” [৩] উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুকে এমন বিস্মৃত হতে দেখে আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু বললেন, যারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইবাদত করত, তারা জেনে রাখুক যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মারা গেছেন। আর যারা আল্লাহ [১] তারিখুল ইসলাম, খণ্ড : ১; পৃষ্ঠা : ৩১৭; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খণ্ড : ৫; পৃষ্ঠা : ১৪; মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড : ৬; পৃষ্ঠা : ২১৯ [2] আর রাহিকুল মাখতূম, পৃষ্ঠা : ৫৩৫; বাংলা [৩] তাবাকাতু ইবনি সাদ, খণ্ড : ২; পৃষ্ঠা : ১১৪ সুবহানাহু ওয়া তাআলার ইবাদত করে, তারা জেনে রাখুক যে, আল্লাহ চিরঞ্জীব, চিরন্তন। [১] এরপর তিনি সুরা আলে ইমরানের সেই আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন— وما تتم إلا شول قد خلت من قبله الرسل أفإن مات أو قيل انقلبتم على أعقابكم ومن ينقلب على عقبيه فلن يضر الله شيئا ويجزى الله الشاکرین আর মুহাম্মাদ কেবল একজন রাসুল। তার পূর্বে নিশ্চয় অনেক রাসুল বিগত হয়েছেন। যদি মুহাম্মাদ মারা যান কিংবা তাকে হত্যা করা হয়, তবে কি তােমরা আল্লাহর রাস্তা থেকে পলায়ন করবে? (জেনে রাখাে) যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তা থেকে পলায়ন করে, সে আল্লাহর কোনাে ক্ষতি করতে পারে না। আর আল্লাহ শীঘ্রই কৃতজ্ঞদের প্রতিদান প্রদান করবেন।[২] আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুর মুখে এই আয়াত শুনে মুহূর্তেই স্তম্ভিত হয়ে যান উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু৷ তিনি বললেন, ‘মনে হলাে এই আয়াত আমি আজই প্রথমশুনলাম!’[৩] উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুর মতন একজন বিশিষ্ট সাহাবিও অল্প কিছু সময়ের জন্য বিস্মৃত হয়েছিলেন সেদিন। শােকের আতিশয্যে তিনি ভুলতে বসেছিলেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও মৃত্যুবরণ করতে পারেন। একজন নবি, প্রেরিত রাসুল; আসমানি কিতাবের ধারক-বাহক। জগতে পদচিহ্ন রাখা সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। এমন মানুষেরও মৃত্যু হতে পারে?—ভাবনার এমন দোটানায়, বিস্মৃতির এমন ঘােরে নিমজ্জিত ছিলেন উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু। আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুর মুখ থেকে কুরআনের একটি আয়াত শুনেই সেদিন তার এই ঘাের ভাঙল। বুঝতে পারলেন, অতি শােকে এক মহাসত্য, এক মহাবাস্তবতা থেকে বিচ্যুত হয়েছেন তিনি। এমন নয় যে, এই আয়াত এর আগে উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু শােনেননি। ইতঃপূর্বে অনেক অনেক বার তিনি এই আয়াত তিলাওয়াত করেছেন। অনেক মানুষকে তিনি এই আয়াত পড়ে শুনিয়েছেন, শিখিয়েছেন। তারপরও তিনি বললেন, ‘মনে হলাে এই আয়াত আমি আজই প্রথম শুনলাম! এই যে আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুর একটি [1] আর রাহিকুল মাখতূম, ৫৩৫-৫৩৬; বাংলা [২]সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪৪ [৩] তারিখুত তাবারি, খণ্ড : ২; পৃষ্ঠা : ৪৪২; তারিখু ইবনি আসির, খণ্ড : ২; পৃষ্ঠা : ২১৯; সিরাতু ইবনি হিশাম, খণ্ড : ৪; পৃষ্ঠা : ৬৫৬ ছােট্ট রিমাইন্ডার, একটি ছােট্ট নাসিহা, এতেই উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুর বিস্মৃত। অন্তর জেগে উঠেছিল সেদিন। যে মহাসত্য থেকে বিচ্যুত হয়েছিলেন তিনি, আর বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুর একটা ছােট্ট কথা সেদিন তাকে টেনে নিয়ে এলাে পরম বাস্তবতায়। তার অন্তর উপলব্ধি করল সত্যটাকে। উপস্থিত সকল সাহাবিও বুঝলেন যে, নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামেরও মৃত্যু হতে পারে। যদি সেদিন আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুর এই ভুল না ভাঙাতেন, তাহলে মুসলিম শিবিরে শিরকের মতাে একটা পাপ হয়তাে শেকড় গেড়ে বসত।[১] এই ঘটনা বলার উদ্দেশ্য হলাে এই—একটি নাসিহা, একটি রিমাইন্ডার, একটি উপদেশ মাঝে মাঝে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আমাদের জীবনে। বিস্মৃতির অতল তলে তলিয়ে যাওয়া আমাদের হৃদয়গুলােকে জাগিয়ে তুলতে এ রকম নাসিহার খুব বেশি দরকার মনে করি। একটি আয়াত কিংবা হাদিস অথবা একটি বাক্যও বদলে দিতে পারে আমাদের জীবন। হৃদয়ে মেলে দিতে পারে ভাবনার ডালপালা। বিস্মৃত অন্তরকে নতুন করে জাগাতে, মরচে ধরা ঈমানকে ঝালাই করতে, অবাধ্যতার অন্ধকার থেকে আমাদের তুলে আনতে অনেক সময় একটি লাইনও যথেষ্ট হতে পারে। জীবনের উদ্যম ফিরে পেতে, মহান রবের দিকে প্রত্যাবর্তনের জন্য এ রকম রিমাইন্ডারের বিকল্প নেই। সেই রিমাইন্ডারের উৎস হতে পারে কোনাে সত্যিকার আল্লাহওয়ালা ব্যক্তির সাহচর্য, হতে পারে ভালাে কোনাে আলিমের লেকচার, ভিডিও, কোনাে ভালাে কলারের লেখা আর্টিকেল কিংবা ভালাে কোনাে দ্বীনি পরামর্শমূলক বই। এই উৎসগুলাে আমাদের ঈমানকে ঝালাই করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এসবের সাথে জীবনকে ওতপ্রােতভাবে জড়িয়ে ফেলতে পারলে পথ হারাবার আশঙ্কা ক্ষীণ হয়ে আসে। একজন সাহাবির ঘটনা এ ক্ষেত্রে উল্লেখযােগ্য মনে করছি। যতক্ষণ। তিনি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহচর্যে থাকতেন, ততক্ষণ তার মনে হতাে যেন তিনি জান্নাতের বাগিচায় হেঁটে বেড়াচ্ছেন। মনে হতাে জান্নাতের সৌন্দর্য, জান্নাতিদের বিচরণ, কলকল নহরের ধ্বনি—সবকিছুই চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন। নবিজির কাছাকাছি থাকলে তার অন্তর সারাক্ষণ আল্লাহর ভয়ে কাঁপতে থাকে। হৃদয় টইটম্বর থাকে ঈমানে। কিন্তু যখনই তিনি নবিজির সাহচর্য ছেড়ে নিজের। ঘরে যেতেন, তখনই যেন সবকিছু থেকে ছিটকে পড়তেন। স্ত্রী-সন্তান-সংসারের। [1] এই ধারনাটা IOU ব্লগের একটি আর্টিকেলে পাওয়া। ভাবনায় ডুবে যেতেন। এই ব্যাপারটা তাকে খুব পীড়া দিত। ভাবতেন, নবিজির সাহচর্য ছেড়ে আসলেই বুঝি তিনি মুনাফিক হয়ে যান। না হয় তার কাছ থেকে বিদায় নেওয়ামাত্র কেনই-বা তার মনে হয় যে, তিনি দুনিয়ার ভাবনায় ডুবে গেছেন? স্ত্রী- সন্তান-সংসার কেনই-বা তার কাছে অধিকতর প্রিয় হয়ে ওঠে? কেন তিনি আবদ্ধ হয়ে পড়েন দুনিয়ার শেকলে? এই চিন্তাগুলাে যখন তার হৃদয়পটে উদয় হতাে, তখন তিনি অঝােরে কাঁদতে শুরু করতেন। এত বেশি কাঁদতেন যে, মনে হতাে তার খুব প্রিয় কোনাে মানুষ বুঝি মৃত্যুবরণ করেছে। যেন কোনাে এক নিদারুণ বিচ্ছেদব্যথায় তিনি কাতর। একদিন আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু তাকে এভাবে কাঁদতে দেখে কান্নার কারণ জানতে চাইলেন। ওই সাহাবি বললেন, আমি যখন নবিজির সাহচর্যে থাকি, তখন মনে হয় আমি যেন জান্নাতে হেঁটে বেড়াচ্ছি। আমার হৃদয় তখন হিদায়াত, নুর আর ঈমানের জোয়ারে টইটম্বর থাকে। কিন্তু যখনই ঘরে ফিরি, মনে হয় যেন দ্বীন থেকে ছিটকে পড়েছি; দুনিয়াকে আপন করে নিয়েছি; মুনাফিক হয়ে গেছি। নবিজির সাথে থাকলে এক রকম লাগে, তাকে ছেড়ে এলে অন্য রকম। আমি জানি না, কেন আমার এমন হয়! কেন আমি দুই সময়ে দু-রকম অনুভূতি পাই! তখন আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু বললেন, “তােমার মতাে আমার সাথেও ঠিক একই ঘটনা ঘটে। নবিজির পাশে যখন থাকি, মনে হয়, এই তাে দেখতে পাচ্ছি জান্নাত! এই তাে সবুজ মিনার! ওই যে টলটলে স্বচ্ছ পানির ঝরনা! সবুজ গালিচার মতন দিগন্তবিস্তৃত মাঠ! কিন্তু যখনই নবিজির সাহচর্যের বাইরে আসি, যখন নিজের পরিবার-পরিজনদের আসরে উপস্থিত হই, মনে হয় এই বুঝি ছিটকে পড়লাম জান্নাতের পথ থেকে। এই বুঝি বিপথে চলে গেলাম। বিভ্রান্ত হয়ে গেলাম। তােমার মতাে ঠিক একই সমস্যায় আমিও নিপতিত। চলাে, আমরা বরং নবিজির কাছে গিয়ে আমাদের সমস্যার কথা জানাই।[1] সাহাবিরা নবিজির পাশাপাশি যখন থাকতেন, তখন একটা জাগরণের মধ্যে সময় কাটত তাদের। ঈমানের আলােচনা, আমলের আলােচনা। জান্নাতের বাহারি বর্ণনা, জাহান্নামের ভয়, তা থেকে পরিত্রাণের উপায় ইত্যাদি আলােচনায় মজে থাকতেন তারা। নবিজির সঙ্গ ত্যাগ করামাত্রই তাদের মনে হতাে, এই বুঝি তারা দ্বীন থেকে ছিটকে পড়লেন। এই বুঝি আবার ডুব দিলেন দুনিয়ায়। নবিজির সঙ্গে থাকলে তারা এক রকম থাকতেন, নবিজির সঙ্গ ত্যাগ করলেই অনুভব করতেন অন্য [1] জামি তিরমিযি : ২৫১৪, হাদিসটি সহিহ রকম অনুভূতি। নাসিহা তথা রিমাইন্ডারের গুরুত্বটা এখানেই। যখন আমরা কোনাে ভালাে ইসলামি বই পড়ি, আমলের বই পড়ি, তখন আমাদের হৃদয়ে একটা দোলা। কাজ করে। ইচ্ছে করে আমল করার, বদলে যাওয়ার। নতুন করে সবকিছু সাজিয়ে নেওয়ার। কিন্তু, যখনই আমরা আবার দুনিয়ার অনুষঙ্গে মিশে যাই, আমাদের সেই উদ্যম ফুরিয়ে যায়। যখনই এ রকম অবস্থা হবে, তখনই আমাদের উচিত ঈমানের আলােচনা হয় কিংবা ঈমানের আলােচনা আছে এমন বিষয়বস্তুতে ফিরে আসা যা আমাদের জন্য রিমাইন্ডার হিশেবে কাজ করবে। এই বইটিকে আমি এ রকম একটি রিমাইন্ডার হিশেবে দাঁড় করাতে চেয়েছি। অন্তত আমার জন্য। এই বইতে আমি তরুণদের সমস্যাগুলােকে প্রাধান্য দিয়েছি সবচেয়ে বেশি। মােটাদাগে বলা চলে, এটা তরুণদের উদ্দেশ্যেই লেখা। একজন তরুণ হিশেবে আমি যে সমস্যাগুলাের মুখােমুখি হই কিংবা হয়েছি, সেগুলাে নিয়েই আমি আগাতে চেয়েছি এখানে। নিজে একজন তরুণ হওয়াতে তরুণদের মনস্তত্ত্ব বােঝাটা আমার জন্য দুরূহ ছিল না অবশ্যই। নিজের যাপিত জীবনের অধ্যায়ে একজন তরুণ যে সমস্যাগুলাের ভেতর দিয়ে যায়, জীবনের অলিতে-গলিতে সে যে প্রতিবন্ধকতা, যে সমস্ত বাধার সম্মুখীন হয়, সেগুলাে থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কিছু নাসিহা তুলে ধরেছি মাত্র। এই নাসিহাগুলাে সবার আগে আমার নিজের জন্য। আমি এও জানি, আমার মতন হাজারাে যুবককে এই প্রতিবন্ধকতাগুলাের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। যদি এই বই তাদের সামান্য উপকারে আসে, যদি কোনাে তৃষার্ত হৃদয় খুঁজে পায় একপশলা বৃষ্টি, অন্ধকারাচ্ছন্ন পথের কোনাে এক পথিক যদি খুঁজে পায় এক টুকরাে আলাে, তবে আমার এই কাজ সার্থক। তরুণদের নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন আমার অনেক দিনের। এই তরুণরাই তাে আমাদের উম্মাহর শক্তি। পিচ্ছিল পথ মাড়িয়ে আমাদের তরুণরা যত বেশি জীবনের সঠিক গন্তব্যের দিকে ফিরে আসবে, এই উম্মাহর বিজয় তত বেশি ত্বরান্বিত হবে। জীবনের আদি এবং আসল উদ্দেশ্যকে তারা যখন চিনতে শিখবে, তখন তাদের ভেতর থেকেই উঠে আসবে নতুন যুগের হামযা, খালিদ, আলি এবং উমারের দল। তাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখতে এবং স্বপ্ন দেখাতেই আমার এই ছােট্ট প্রয়াস, যে প্রয়াসের। সবটুকুজুড়ে আছে তারুণ্য। নিজেকে নতুনভাবে চিনতে, নতুন আঙ্গিকে আবিষ্কার। করতে এবার চলুন আমরা ভেতরে প্রবেশ করি… চলবে ইনশাআল্লাহ


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২৭২ জন


এ জাতীয় গল্প

→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে
→ বেলা ফুরাবার আগে

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • M.H.H.RONI
    Golpobuzz ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    এটা তো দিলেনই একবারgj