বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

অবনীল(পর্ব-৮)

"সাইন্স ফিকশন" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান S O F I Y A (০ পয়েন্ট)

X কুশান চাপা গলায় বলল, ভাগ্য তৈরি করে নিতে জানলে কখনো শেষ হয় না। তুমি জান তৈরি করতে? জানতাম না। শিখছি। কোথা থেকে শিখছ? তোমার কাছ থেকে। রিরা এত কষ্টের মাঝেও একটু হাসার চেষ্টা করে বলল, আশা করি তুমি ভালো করে শিখেছ কুশান। কারণ আমি কিন্তু শিখি নি। কুশান বাইভার্বালটাকে একটা ধাক্কা দিয়ে বলল, এটা কি আর যাবে? রিরা একনজর দেখে বলল, কিছুক্ষণ সময় ব্যয় করতে পারলে আবার চালানো যাবে। কুশান চারদিকে একবার তাকিয়ে বলল, আমাদের সেই কিছুক্ষণ সময় নেই। প্রাণীগুলো ঘিরে ফেলেছে। আরেকটা ফ্লেয়ার জ্বালানো যায় না? না। ফ্লেয়ারগুলো গড়িয়ে নিচে চলে গেছে-এখন খুঁজে বের করার সময় নেই। তা হলে? আমার মনে হয় সবচেয়ে ভালো হবে যদি দৌড়ে মহাকাশযানের কাছে চলে যাই। রিরা ফ্লেয়ারটির দিকে তাকাল, সেটা প্রায় নিবুনিবু হয়ে এসেছে, যে কোনো মুহূর্তে নিবে যাবে। জিজ্ঞেস করল, পৌঁছাতে পারব মহাকাশযানের কাছে? পৌঁছাতে হবে। কুশান নিচু হয়ে একটা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বলল, দেরি করে লাভ নেই রিরা। দৌড়াও। কিন্তু— এখন কিন্তুর সময় নেই। কুশান রিরাকে ধাক্কা দিয়ে বলল, দৌড়াও। রিরা দৌড়াতে শুরু করেই হুঁমড়ি খেয়ে পড়ে গেল। কুশান তার হাত ধরে বলল, কী হয়েছে রিরী? কিছু না। পায়ে ব্যথা পেয়েছি। রিরা আবার উঠে দাঁড়াল, পায়ের ব্যথা সহ্য করে সে কোনোভাবে দৌড়াতে চেষ্টা করতে থাকে, কুশান তার পিছু পিছু আসছে, স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রটি হাতে নিয়ে সে সতর্ক দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে চারদিকে। ফ্লেয়ারটা হঠাৎ দপ করে নিবে গেল; অন্ধকার হয়ে গেল চারদিক—সাথে সাথে অসংখ্য প্রাণীর এক ধরনের হিংস্র ধ্বনি শুনতে পায় রিরা। সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো এক ধরনের শব্দ ভেসে আসতে থাকে, ঘুটঘুটে অন্ধকারে কিছু না দেখেও রিরা বুঝতে পারে ধারালো দাঁত বের করে অসংখ্য ক্লেদাক্ত প্রাণী হিংস্র নিশ্বাস ফেলতে ফেলতে ছুটে আসছে তাদের দিকে। রিরা ভয় পাওয়া গলায় বলল, আমি কিছু দেখছি না কুশান। আমি দেখছি। আমাকে ধর। রিরা হাত বাড়িয়ে কুশানকে ধরার চেষ্টা করল, কুশান এগিয়ে এসে রিরার হাত ধরে তাকে টেনে নিতে থাকে। একটু পরে পরে সে হুঁমড়ি খেয়ে পড়ে যেতে চায়, কিন্তু কুশান তাকে শক্ত করে ধরে রাখল, পড়ে যেতে দিল না। হিংস্র চিৎকার আর গর্জন বাড়ছে চারদিকে—পায়ের শব্দ শুনতে পাচ্ছে স্পষ্ট। অন্ধকারে একটা পাথরে হোঁচট খেয়ে রিরা হঠাৎ পড়ে গেল নিচে। প্রচণ্ড যন্ত্রণায় ছোট একটা আর্তচিৎকার করে ওঠে সে দাতে দাঁত চেপে যন্ত্রণাটা সহ্য করে ওঠার চেষ্টা করতে গিয়ে আবার হুঁমড়ি খেয়ে পড়ে গেল সে। কাতর গলায় বলল, আমি আর পারছি না কুশান। পারতে হবে। অন্ধকারে কুশানের চাপা গলার স্বর শোনা গেল, যেভাবে হোক। পারতে হবে। আমাদের ভাগ্য আমরা খরচ করে ফেলেছি কশান। এখনো খরচ হয় নি। রিরা হঠাৎ অনুভব করল, কুশান তাকে টেনে দাঁড় করিয়েছে, আমার অংশের ভাগ্যটুকু আমি তোমাকে দিচ্ছি। এখন তোমার কাছে দুজনের ভাগ্য। কী বলছ তুমি? ঐ যে সামনে তাকিয়ে দেখ—আমাদের মহাকাশযানটা দেখতে পাচ্ছ? রিরা আবছাভাবে দেখতে পেল, বলল, হ্যাঁ। তুমি সেদিকে যেতে শুরু কর। যেভাবে পার। দৌড়িয়ে হেঁটে হামাগুড়ি দিয়ে। আর তুমি? আমি আসছি তোমার পিছু পিছু তোমাকে কাভার দিয়ে। তুমি কীভাবে কাভার দেবে? আমার কাছে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র আছে। আমি আগুন জ্বালাব। তুমি কীভাবে আগুন জ্বালাবে? এখানে অক্সিজেন নেই। আছে, আমার কাছে অক্সিজেন আছে। রিরা চমকে উঠে বলল, কিন্তু সেটা নিশ্বাস নেবার অক্সিজেন। সেটা নিয়ে কথা বলার সময় নেই। প্রাণীগুলো চলে আসছে। আমি দেখতে পাচ্ছি রিরা আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। না। আমি একা যাব না। তোমাকে যেতে হবে। তোমাকে যেভাবে হোক বেঁচে থাকতে হবে। তোমাকে উদ্ধার করতে আসবে মনে নেই? না–রিরা চিৎকার করে বলল, না। হ্যাঁ। কুশান রিরাকে একটা ধাক্কা দিয়ে বলল, যাও। তাড়াতাড়ি। রিরা কুশানের পদশব্দকে মিলিয়ে যেতে শুনল। কোথায় গিয়েছে সে? ভয়ংকর হিংস্র শব্দ শুনতে পাচ্ছে সে। সমুদ্রের জলোচ্ছাসের মতো হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ প্রাণী ছুটে আসছে তাদের দিকে। রিরা আর চিন্তা করতে পারছে না। কোনোভাবে সে উঠে দাঁড়াল, তারপর একপায়ে ভর দিয়ে ছুটে যেতে শুরু করল মহাকাশযানের দিকে। পায়ের নিচে শক্ত পাথর, অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে সে এই পাথরের উপর দিয়ে হেঁটে যায়। তাকে ঘিরে হিংস্র জন্তুগুলি ছুটে যাচ্ছে, খুব কাছে থেকে ভয়ংকর গলায় ডেকে উঠছে হঠাৎ হঠাৎ। রিরা কিছু দেখতে পাচ্ছে না, অন্ধকারে হঠাৎ কোথা থেকে তার উপরে কিছু ঝাঁপিয়ে পড়বে এরকম একটা আতঙ্কে তার সমস্ত মায়ু টানটান হয়ে আছে। যন্ত্রণা আর পরিশ্রমে তার সমস্ত শরীর অবসন্ন হয়ে আসতে চাইছে। প্রচণ্ড তৃষ্ণয় বুকটা ফেটে যেতে চাইছে, তার মাঝে সে মহাকাশযানের দিকে ছুটে যেতে লাগল। হঠাৎ করে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলির শব্দ শুনল সে ছাড়া ছাড়াভাবে, সাথে সাথে ভয়ংকর প্রাণীগুলোর হিংস্র চিৎকার বেড়ে গেল কয়েকগুণ হুঁটোপুটি শুরু হয়ে গেল কোথাও। রিরা নিজেকে টেনে নিতে থাকে সামনে, মহাকাশযানের একেবারে কাছাকাছি এসে গেছে সে, আর কয়েক পা গেলেই পৌঁছে যাবে রিরা। আবার গুলির শব্দ শুনতে পেল, তাকে কাভার দিচ্ছে কুশান। বলেছিল তার ভাগ্যটুকু সে রিরাকে দিয়ে দিচ্ছে—সত্যিই কি একজনের ভাগ্য আরেকজনকে দেওয়া যায়? সত্যিই কি স্বার্থপরের মতো কুশানের ভাগ্যটুকু নিয়ে এসেছে সে? রিরা মহাকাশযানের দরজায় হাত দেয়, গোপন সংখ্যা প্রবেশ করাতেই ঘরঘর শব্দ করে দরজাটা খুলে গেল। ভেতরে ঢুকে টেনে দরজাটা বন্ধ করে দিতেই মূল প্রসেসরের কণ্ঠস্বর শুনতে পেল, জীবাণুমুক্ত করার জন্য বাতাস শোধনের প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছি— বাইপাস কর। এটি হবে অত্যন্ত অযৌক্তিক নিরাপত্তাবহির্ভূত কাজ। রিরা চিৎকার করে বলল, আমি যা বলছি তা-ই কর। বাইরের বাতাস ভেতরে ঢুকে সমস্ত মহাকাশযান দূষিত হয়ে যেতে পারে, ভয়ংকর বিপর্যয় হয়ে যেতে পারে। রিরা দরজায় লাথি দিয়ে বলল, আহাম্মক, খুন করে ফেলব আমি। দরজা খোল। নিরাপত্তার সব নিয়ম ভঙ্গ করে, ঘরঘর করে মহাকাশযানের মূল দরজা খুলে গেল। রিরা মহাকাশযানের ভেতরে ঢুকে ছুটতে থাকে, তার এখন একটা ফ্লেয়ার দরকার, জরুরি নিরাপত্তার জন্য সে অনেকগুলো আলাদা করে রেখেছে। ফ্লেয়ারটা হাতে নিয়ে রিরা যখন বাইরে ছুটে যাচ্ছিল, তখন সে আবার স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলির শব্দ শুনতে পেল, এবারে থেমে থেমে একটানা গুলি হতে লাগল। কুশানকে নিশ্চয়ই আক্রমণ করেছে প্রাণীগুলো নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে সে। দূরে একটা আগুন জ্বলছে আগুনটা নড়ছে ইতস্তত, কুশান আগুন দিয়ে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করছে প্রাণীগুলোকে, আগুনকে ঘিরে ছায়াকে সে ছুটোছুটি করতে দেখে, ভয়ংকর হিংস্র কিছু ছায়া। ফ্লেয়ারটার সুইচ টিপে ছেড়ে দিতেই আগুনের একটা হলকা বের হয়ে গর্জন করে সেটা আকাশে উঠে গেল, মহুর্তে দিনের মতো আলোকিত হয়ে উঠল চারদিক। সাথে সাথে হিংস্র প্রাণীগুলো কাতর আর্তনাদ করে ছুটে পালিয়ে যেতে শুরু করে। ভয়ংকর হুঁটোপুটি শুরু হয়ে যায় চারদিকে। রিরা চোখ কুঁচকে তাকাল সামনে, একটা বড় পাথরে হেলান দিয়ে বলে আছে কুশান, নিজের কাপড় খুলে সেটাতে আগুন ধরিয়েছে, নিশ্বাস নেবার অক্সিজেন দিয়ে আগুনটা জ্বালিয়ে রেখেছে কোনোভাবে। রিরা ছুটে গেল কুশানের কাছে, সমস্ত শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে আছে, ধারালো দাঁত দিয়ে খুবলে নিয়েছে তার ডান হাতের একটা অংশ। নীল রক্তে ভিজে যাচ্ছে শুকনো পাথর। রিরাকে দেখে কুশান দুর্বলভাবে হাসল, বলল, তুমি এসেছ? হ্যাঁ কশান, আমি এসেছি। বেঁচে গেলাম তা হলে আমরা? হ্যাঁ, কুশান। তোমার জন্য। তুমি তোমার ভাগ্যটা আমাকে দিয়ে দিয়েছিলে বলে আমরা বেঁচে গেলাম। ভাগ্য খুব বিচিত্র জিনিস কুশান নরম গলায় বলল, কাউকে দিয়ে দিলেও সেটা ফুরিয়ে যায় না। রিরা নিচু হয়ে কুশানকে স্পর্শ করল, তারপর গভীর মমতায় তার মাথাটিকে নিজের বুকে চেপে ধরল। ফিসফিস করে বলল, কুশান, আমার ভাগ্য ফুরিয়ে গিয়েছিল, আমার জীবনও ফুরিয়ে গিয়েছিল! তুমি সবকিছু ফিরিয়ে এনেছ। তুমি! কুশান অবাক হয়ে দেখল রিরার চোখে পানি চিকচিক করছে। মানুষকে মনে হয় সে কখনোই পুরোপুরি বুঝতে পারবে না। কুশান প্লেটের খাবারের টুকরোটা দেখে বলল, তুমি দাবি করছ এটা সত্যিকার তিতির পাখির মাংস? রিরা মাথা নাড়ল, বলল, হ্যাঁ। খাবারের টিনে পরিষ্কার লেখা আছে এটা সত্যিকার তিতির পাখির মাংস। কুশান শুকনো রুটির টুকরোগুলো দেখিয়ে বলল, আর এগুলো সত্যিকার যবের রুটি? হ্যাঁ। এগুলো সত্যিকার যবের রুটি। বিশাল একটা মাঠে এটা জনেছে। এটা কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয় নি। কুশান রুটির টুকরোর উপর মাখন লাগাতে লাগাতে বলল, আর এই মাখনটা সত্যিকারের মাখন? সেটা নিয়ে একটু বিতর্ক আছে। দাবি করা হয় কৃত্রিম এবং সত্যিকারের মাখনের মাঝে এখন আর কোনো পার্থক্য নেই। কাজেই কোনটা সত্যি কোনটা কৃত্রিম বোঝার কোনো উপায় নেই। কুশান রুটির টুকরোটা মুখে দিয়ে চিবুতে চিবুতে বলল, কিন্তু একটা জিনিস জান রিরা কী? আমি কিন্তু খাবার সময় সত্যিকার যবের রুটির সাথে কৃত্রিম যবের রুটির মাঝে। কোনো পার্থক্য খুঁজে পাচ্ছি না। রিরা শব্দ করে হেসে বলল, এটা কাউকে বলো না, তা হলে সবাই তোমাকে ভাববে সাধারণ রুচির মানুষ। যাদের রুচি খুব উন্নত, তারা এই পার্থক্যগুলো ধরতে পারে। কুশান বলল, তুমি বলেছিলে আমাদের এই ভোজের সময় আমরা কিহিতার সপ্তদশ সিম্ফনি শুনব। হ্যাঁ। আমি সেটার ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু সেখানে একটা ব্যাপার আছে। কী ব্যাপার? সপ্তদশ সিম্ফনি শুনে যদি তোমার ভালো নাও লাগে, তুমি সেটা বলতে পারবে না। কুশান চোখ বড় করে বলল, বলতে পারব না? না। তুমি ভান করবে তোমার খুব ভালো লাগছে। কেন? রিরা চোখে-মুখে একটা গাম্ভীর্য ফুটিয়ে বলল, এই সিম্ফনিটি আমার খুব প্রিয়। কেউ এটাকে অপছন্দ করলে আমিও তাকে অপছন্দ করি। কুশান তিতির পাখির মাংসের ছোট টুকরো মুখে দিয়ে হাসতে হাসতে বলল, তুমি নিশ্চিন্ত থাক রিরা, তুমি যেটাকে ভালো বলবে আমি সেটাকে কখনো খারাপ বলব না। দরকার হলে আমার চোখ-কান বন্ধ করে আমি সেটাকে ভালো বলব। ঠিক তো? ঠিক। রিরা গলা উঁচু করে বলল, প্রসেসর? প্রসেসর তার নিষ্প্রাণ ধাতব কণ্ঠে বলল, বলো রিরা। কিহিতার সপ্তদশ সিম্ফনিটা শুরু করে দাও। খুব সূক্ষ্ম একটা সঙ্গীতের ধ্বনি ভেসে এল, প্রায় শোনা যায় না এরকম। আস্তে আস্তে সেটি ঘরের ভেতরে অনুরণিত হতে থাকে। মহাকাশের মাঝে যে বিশাল শূন্যতা, যে তীব্র নিঃসঙ্গতার বেদনা, সেটি যেন বুকের ভেতর হাহাকার করে যেতে থাকে। মনে হতে থাকে এই জগৎ, এই জীবন, এই বেঁচে থাকা সবকিছু মিথ্যে, সবকিছু অর্থহীন। সিম্ফনিটা শেষ হবার পরও দুজন অনেকক্ষণ চুপ করে রইল। রিরা নিজের চোখ মুছে জোর করে মুখে একটা হাসি ফুটিয়ে বলল, আমি আসলে খুব আবেগপ্রবণ, অল্পতেই খুব কাতর হয়ে যাই। তবে সেটা কখনো কাউকে দেখাই নি। মহাকাশ একাডেমিতে সবাই জানত আমি খুব শক্ত একটি মেয়ে! আমার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়েও যেদিন তুমি ট্রিগার টান নি, আমি সেদিনই বুঝতে পেরেছিলাম যে তোমার ভেতরটা খুব নরম। আর কী বুঝেছিলে? আর বুঝেছিলাম তুমি— আমি? তুমি হয়তো জীবনে কষ্ট পাবে। রিরা একটু অবাক হয়ে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, ঠিক তখন মূল প্রসেসর বলল, রিরা। বলো। এইমাত্র একটা উদ্ধারকারী মহাকাশযান থেকে আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছে। রিরা চিৎকার করে উঠে দাঁড়াল, ছুটে গিয়ে কুশানকে জড়িয়ে ধরে বলল, শুনেছ? কুশান শুনেছ? আমাদের জন্য উদ্ধারকারী মহাকাশযান আসছে। কুশীন মাথা নাড়ল, বলল, শুনেছি। রিরা জিজ্ঞেস করল, প্রসেসর? কী বলছে উদ্ধারকারী মহাকাশযান? এখনো কিছু বলে নি। তারা মহাকাশযানের আইডি কোড এসব মিলিয়ে নিচ্ছে। কিছুক্ষণের মাঝে সরাসরি যোগাযোগ করবে। কিন্তু– কিন্তু কী? তুমি শুধু তাদের কথা শুনতে পাবে। তাদেরকে কিছু বলতে পারবে না। হ্যাঁ। রিরা কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলল, এখানে আমরা একটা দুর্বল রিসিভার দাঁড় করিয়েছি কিন্তু আমাদের ট্রান্সমিটার ত্রিশ কিলোমিটার দূরে। কুশান বলল, আমার মনে হয় সেটা কোনো বড় সমস্যা নয়। যখন সামনাসামনি দেখা হবে তখন তোমার ট্রান্সমিটার আর রিসিভার কিছুই লাগবে না! রিরা মাথা নাড়ল, বলল, তুমি ঠিকই বলেছ। তারপর হাত নেড়ে উত্তেজিত গলায় বলল, আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না যে, সত্যি সত্যি আমাদের উদ্ধার করতে চলে আসছে! কী আশ্চর্য! তাই না কুশান? কুশান খুব ধীরে ধীরে মাথা নাড়ল। রিরা উত্তেজিত হয়েছিল বলে লক্ষ করল না মাথা নাড়ার সময় কুশান খুব সাবধানে একটি দীর্ঘশ্বাস গোপন করেছে। রিসিভারের কাছে সারাক্ষণ বসে থাকার প্রয়োজন নেই, তারপরেও রিরা কমিউনিকেশান ঘরে ধৈর্য ধরে বসে বইল। প্রাথমিক যোগাযোগের প্রায় তিন ঘণ্টা পর রিরা প্রথমবার উদ্ধারকারী দলের কণ্ঠস্বর শুনতে পেল। মহাকাশযানের ক্যাপ্টেন ভারী গলায় বললেন, মহাকাশযান ভেগা সাত সাত তিন চারের বেঁচে থাকা মহাকাশচারীদের উদ্দেশে বলছি। আমি আবার বলছি মহাকাশযান ভেগা সাত সাত তিন চারের অভিযাত্রীরা, আমরা তোমাদের পাঠানো জরুরি উদ্ধারবার্তা পেয়েছি। আবার বলছি, জরুরি উদ্ধারবার্তা পেয়েছি। তোমাদের বার্তা মূল মহাকাশ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে, সেখান থেকে আমাদের জরুরি বার্তা। পাঠিয়ে তোমাদের উদ্ধার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি আবার বলছি, তোমাদের উদ্ধার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি তাই আমার মহাকাশযানের গতিপথ একটু পরিবর্তন করে এদিকে এসেছি। আমাদের একটা স্কাউটশিপ তোমাদের উদ্ধার করার জন্য রওয়ানা দিয়েছে। কিছুক্ষণের মাঝে সেটা এই গ্রহটির কক্ষপথে পৌঁছে যাবে। স্কাউটশিপ থেকে জানানো হয়েছে তারা তোমাদের বিধ্বস্ত মহাকাশযানটি খুঁজে পেয়েছে এবং গ্রহে অবতরণ করেই সেখানে পৌঁছে যাবে। ভারী গলার স্বরটি কয়েক মুহূর্ত অপেক্ষা করে বলল, তোমাদের পক্ষে যদি সম্ভব হয় তা হলে আমাদের এই বার্তার প্রত্যুত্তর দাও। আবার বলছি, প্রত্যুত্তর দাও। রিরা হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রিসিভারের উপর আঘাত করে নিজের হতাশাটা প্রকাশ করে। বলল, কেমন করে দেব? আমি খালি শুনতে পাই, বলতে পারি না। রিসিভারে ভারী কণ্ঠস্বরটি বলল, যদি প্রত্যুত্তর দেবার মতো সুযোগ না থাকে তা হলেও কোনো সমস্যা নেই। আমাদের স্কাউটশিপে উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে, তারা নিশ্চিতভাবেই তোমাদের উদ্ধার করবে। স্কাউটশিপের দায়িত্বে আছে ক্যাপ্টেন বিহান, গ্রহটির কক্ষপথে পৌঁছেই সে তোমাদের সাথে যোগাযোগ করবে। ব্যাপ্টেন রিহান আমাদের সবচেয়ে কর্মদক্ষ তরুণ অফিসার। সে আমাদের মহাকাশযানের বারো জন দক্ষ এবং সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মীকে নিয়ে রওয়ানা দিয়েছে। আমি নিশ্চিত সে সাফল্যের সাথে তোমাদের উদ্ধার করতে পারবে। তোমাদের জন্য অনেক শুভ কামনা। রিরা উতেজিত চোখে ইশানের দিকে তাকিয়ে বলল, শুনেছ কুশান, সবচেয়ে কর্মদক্ষ তরুণ অফিসার আসছে আমাদের উদ্ধার করতে? কুশান মাথা নাড়ল, বলল, শুনেছি। তোমার কী মনে হয় কুশান, আমরা কি তাদের অভ্যর্থনা করার জন্য কিছু ব্যবস্থা করে রাখব? কুশান একটু হেসে বলল, তোমার মহাকাশ একাডেমি এ ব্যাপারে তোমাদের কোনো কোর্স দেয় নি? রিরা মাথা নাড়ল, বলল, না। মজার ব্যাপার হচ্ছে কীভাবে উদ্ধার করতে যেতে হয়, সেটার ওপরে দুটি কোর্স নিয়েছিলাম, কিন্তু উদ্ধার করতে এলে কী করতে হয় তার ওপরে একটি কোর্সও দেয় নি। কুশান বলল, ক্যাপ্টেন বিহান যখন এসে দেখবে তুমি জীবিত, সুস্থ এবং আনন্দে চিৎকার করছ, সে এত খুশি হবে যে সেটাই হবে তার অভ্যর্থনা। রিরা মাথা নাড়ল, বলল, তুমি ঠিকই বলেছ। একজন মানুষকে জীবিত উদ্ধার করতে পারাই খুব বড় একটা কাজ। মানুষের জীবন খুব বড় একটি ব্যাপার। অসম্ভব বড় একটি ব্যাপার। তাই না কুশান? কুশান রিরার দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ল, তারপর ফিসফিস করে বলল, ঠিকই বলেছ। মানুষের জীবন খুব বড় একটি ব্যাপার। ঘণ্টা দুয়েক পর গ্রহটির কক্ষপথ থেকে ক্যাপ্টেন বিহান একবার যোগাযোগ করে তার অবস্থানটি জানিয়ে দিল। কক্ষপথ থেকে রওয়ানা দিয়ে গ্রহটির বায়ুমণ্ডল ভেদ করে দ্বিতীয়বার যোগাযোগ করল আরো ঘণ্টাখানেক পর। এরপর সবকিছু ঘটতে লাগল খুব দ্রুত। তারা স্কাউটশিপটিকে মহাকাশযানের উপর দিয়ে গর্জন করে উড়ে যেতে দেখল, স্কাউটশিপটি বৃত্তাকার ঘুরে আবার তাদের কাছে ফিরে এল এবং বৃত্তটি ছোট করতে করতে একসময় মহাকাশযানের এক কিলোমিটারের কাছাকাছি একটি সমতল জায়গায় এসে অবতরণ করল। কোয়ার্টজের জানালা দিয়ে রিরা দেখল, উদ্ধারকারী দল নেমে আসছে। ছোটখাটো মানুষটি নিশ্চয়ই ক্যাপ্টেন রিহান, যোগাযোগ মডিউলে কথা বলতে বলতে সে তার দলটিকে প্রস্তুত করে নেয়। কিছু যন্ত্রপাতি, অস্ত্র, মেডিকেল টিম নিয়ে তারা দ্রুত মহাকাশযানটির দিকে ছুটে আসতে থাকে। রিরা হাত দিয়ে নিজের চুলগুলোকে বিন্যস্ত করে কুশানের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, কুশান, আমাকে কেমন দেখাচ্ছে? কুশান হেসে বলল, আমি তোমাকে আগেও বলেছি, তোমার গায়ের রঙ যদি পচা আঙুরের মতো না হত, তা হলে তোমাকে সুন্দরী বলে চালিয়ে দেওয়া যেত। আকাশের জন্য নীল রঙ ভালো হতে পারে কিন্তু গায়ের জন্য পচা আঙুরের রঙ কিন্তু খারাপ না! সেটা নিয়ে বিতর্ক করার সময় আরো পাবে, তুমি এখন যাও, মহাকাশযানের দরজাটা খুলে দাও। তা না হলে তারা ভেঙে ঢুকে যাবে! রিরা বলল, ঠিকই বলেছ। একেবারে সত্যি কথা। রিরা দ্রুত মহাকাশযানের দরজার কাছে ছুটে গিয়ে তার হ্যান্ডেলটা ঘুরিয়ে সেটা খুলতে শুরু করে। কয়েক মিনিটের মাঝেই উদ্ধারকারী দলটি মহাকাশযানের ভেতরে ঢুকল, সবার আগে ক্যাপ্টেন রিহান, তার পিছনে সশস্ত্র লোকজন। ক্যাপ্টেন রিহান এক ধরনের বিস্ময় নিয়ে রিরার দিকে তাকিয়ে বলল, এই মহাকাশযানটি যেভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে, তার ভেতরে কোনো জীবন্ত মানুষ খুঁজে পাব আমি একেবারে আশা করি নি। রিরা তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল, আশার বাইরেও অনেক কিছু ঘটে যায়। উদ্ধার করতে আসার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ক্যাপ্টেন রিহান হাত মিলিয়ে বলল, আমি রিহান। ক্যাপ্টেন রিহান। আমি রিরা। আর–কুশানকে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য সে মাথা ঘুরিয়ে তাকাল। ঠিক তক্ষুনি সে একটা চিৎকার শুনতে পায়। কে একজন চিৎকার করে বলল, সর্বনাশ! নীলমানব। কিছু বোঝার আগে রিরা বিস্ফারিত চোখে দেখতে পেল সশস্ত্র মানুষগুলো একসাথে তাদের অস্ত্রগুলো উপরে তুলেছে, একমুহূর্ত সময় লাগল তার ব্যাপারটি বুঝতে। যখন সে বুঝতে পারল তখন ভয়ংকর আতঙ্কে সে তার সমস্ত শক্তি দিয়ে চিৎকার করে উঠল, না—না–না– কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। রিরার মনে হল তার চোখের সামনে অনন্তকাল নিয়ে মানুষগুলো অস্ত্রগুলো কুশানের দিকে তাক করেছে। মনে হল খুব ধীরে ট্রিগারে টান দিয়েছে। তার মনে হল লে বুলেটগুলোকে ছুটে যেতে দেখল। রিনার মনে হল সে দেখতে পেল একটি একটি বুলেট কুশানকে আঘাত করছে আর সেই আঘাতে তার শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে। রিরার মনে হল সমস্ত সৃষ্টিজগৎ বুঝি থমকে দাঁড়িয়েছে, বুঝি সময় স্থির হয়ে গেছে। তার মনে হল কুশান বুঝি দুই হাতে দেয়াল আঁকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকার চেষ্টা করছে—পারছে না। রির দেখল তার বুকের কাছাকাছি কাপড়ে বিন্দু বিন্দু নীল রঙের ছোপ, দেখল কুশানের চোখে এক ধরনের বিস্ময়। রিরা দেখল কুশান খুব ধীরে ধীরে হাঁটু ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে তার মাঝে বুঝি অনন্তকাল পার হয়ে গেছে। রিরা ছুটে যেতে থাকে কুশানের কাছে মনে হয় সে বুঝি কখনোই আর তার কাছে পৌঁছতে পারবে না। রিরা কুশানের মাথাটা দুই হাতে চেপে তার দিকে তাকিয়ে থাকে। কুশানের দুই ঠোটের মাঝখানে নীল একফেঁটা রক্ত, সে স্থির চোখে রিরার দিকে তাকিয়ে আছে। কুশানের ঠোঁট দুটি নড়ে উঠল। কিছু একটা বলছে সে। রক্তের ফোঁটাটি চিবুক বেয়ে গড়িয়ে পড়ল। আবার ঠোঁট দুটি নড়ল কুশানের, কিছু একটা বলছে সে, রিরা শুনতে পাচ্ছে না। রিরা কুশানের মাথাটা নিজের বুকে চেপে ধরে বলল, না। না কুশান, না… না… কুশান ফিসফিস করে বলল, মনে নেই রিরা—আমি তোমাকে আমার ভাগ্যটা দিয়ে দিয়েছিলাম! দেখেছ সত্যিই দিয়ে দিয়েছি। রিরা চিৎকার করে বলল, না, না, না। কুশান বলল, রিরা, তুমি আমার দিকে তাকাও। রিরা কুশানের দিকে তাকাল। কুশান বলল, আমার দৃষ্টি ঝাঁপসা হয়ে আসছে। কিন্তু আমি যতক্ষণ দেখতে পারি, আমি তোমাকে দেখতে চাই রিরা। তুমি আমার হাত ধরে থাক—তুমি আমার দিকে তাকিয়ে থাকি। রিরা কুশানের হাত ধরে তার মাথাটা নিজের কোলে নিয়ে একদৃষ্টিতে তার চোখের দিকে তাকিয়ে রইল। ক্যাপ্টেন রিহান এবং তা উদ্ধারকারী দল অবাক বিস্ময়ে লক্ষ করল, অপরিচিত এই নীলমানবটি মারা যাবার পরও দীর্ঘ সময় মহাকাশচারী রিরা তার চোখের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। নাইনা গ্রহের জাতীয় সমাধিক্ষেত্র যে সমাধিটিতে ফুল দেবার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে এখনো মানুষ এবং নীলমানবেরা নিয়মিতভাবে উপস্থিত হয়, সেই সমাধিটি মহীয়সী রিরার। জনশ্রুতি আছে তার একক প্রচেষ্টায় চতুর্থ সহস্রাব্দের গোড়ার দিকে মানুষ এবং নীলমানবের বিরোধের সমাপ্তি ঘটে। মানুষ এবং নীলমানবেরা এখনো গভীর আগ্রহ এবং ভালবাসা নিয়ে এই মহীয়সী মহিলার কথা স্মরণ করে।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪৯০ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • arfan suvo
    User ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    আহারে কুশান weepweep আমার তো চোখে পানি এসে গিয়েছিল

  • MH2 (Mysterious Some one)
    GJ Writer ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    gjgjgj

  • Tuba Rubaiyat
    User ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    তো আপনার কি মনে হয়??huhআমাদের রিরা আপার ইয়ে মানে আমাদের কুশান দুলাভাই মরে গেসেgjএটা কি আপনার কাছে চাট্টিখানি কথা মনে হয়??huhআহারেgjgjgjgjgjgjযাইহোক আপনি এত ইমোশনাল হয়ে যাইয়েন না মানে আকিতার জন্য ও কিছু বাচিয়ে রাখেনgjgjgj

  • Tuba Rubaiyat
    User ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    তো আপনার কি মনে হয়??huhআমাদের রিরা আপার ইয়ে মানে আমাদের কুশান দুলাভাই মরে গেসেgjএটা কি আপনার কাছে চাট্টিখানি কথা মনে হয়??huhআহারেgjgjgjgjgjgjযাইহোক আপনি এত ইমোশনাল হয়ে যাইয়েন না মানে আকিতার জন্য ও কিছু বাচিয়ে রাখেনgjgjgj

  • M.H.H.RONI
    Golpobuzz ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    তো ইমুশনের কারনে শেষ লেখাটাও ভুলে গিয়েছেন?gj আহারে গল্পটাতে যা ইমুশন হয়েছিল এদের দেখে তারচেয়ে বেশি ইমুশনে হয়ে পরছিgj

  • Tuba Rubaiyat
    User ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    আমার ও খুব খারাপ লেগেছিলো গল্পটা পড়ে,,,,,কান্না এসে পড়েছিলোgjgjgjgjgjgjgj

  • SHUVO SUTRADHAR
    Golpobuzz ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    সরি তুবা আপু এটি পড়ে এতই ইমুশনাল হয়ে গেছিলাম যে গল্পটি শেষ হয়ে গেছে তা বুঝতেই পারিনি।

  • Tuba Rubaiyat
    User ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    এটা এখানেই শেষ gjgjgjgj

  • M.H.H.RONI
    Golpobuzz ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    ধ্যাএএএএতgjgjgjgjgjgj gj gj gj gj

  • M.H.H.RONI
    Golpobuzz ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    বাহ্:clalp: তারপর?

  • SHUVO SUTRADHAR
    Golpobuzz ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    nice.next part please.