বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

ভারত অভিযান (১ম খন্ড)

"ইসলামিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ(guest) (০ পয়েন্ট)

X এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ ভারত অভিযান ১ম খন্ড পর্বঃ৫ •••আলপ্তগীন জলদগম্ভীর কন্ঠে ঘোষণা করলেন,এই গর্ত ও দুর্ঘটনার কারণ অবশ্যই খুঁজে বের করা হবে।কেউ যদি এই গর্তের উৎস সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান করে ,তবে তাকে রাজকীয় পুরষ্কারে ভূষিত করা হবে। পরদিন বেলা ডোবার আগেই রহস্য বেড়িয়ে পড়লো।জানা গেল,এই রাতের মহড়ার আয়োজক যেমন আবু ইসহাক,গর্তের নায়ক ও সে।আবু ইসহাক তার একজন বিশ্বস্ত লোকের মাধ্যমে সবুক্তগীনকে মহড়ায় অংশগ্রহণে সম্মত করিয়েছিলো, আর অতি সংগোপনে রাতের আঁধারে বিশাল গর্ত খুঁড়ে মাটি ছড়িয়ে গর্তের উপরিভাগে গাছের পাটাতন দিয়ে তাজা ঘাস ও মাটি দিয়ে তা ঢেকে দেয়া হয়েছিলো।যাতে কেউ গর্তের অস্তিস্ব ঠাহর করতে না পারে।জায়গাটি নিজে চেনার জন্য একটা আলামত রেখেছিলো আবু ইসহাক। এজন্যই দৌড় শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সে সবুক্তগীনের রথকে ঠেলে গর্তে ফেলার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু বিচক্ষণ সবুক্তগীন আবু ইসহাকের চক্রান্তের আশঙ্কা আচঁ করে আগাগোড়া দৌড়ের মধ্যে থেকেও নিজেকে সচেতন রেখেছিলো সম্ভাব্য দূর্ঘটনা এড়ানোর জন্য। দুর্ভাগ্যবসত নিজের খনন করা গর্তে আবু ইসহাক নিজেই কুপোকাত হলো। আবু ইসহাক তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের বলেছিলো,মহড়ার মোড়কে সে আলপ্তগীনকে হত্যা করে সবুক্তগীনের কন্যাকে বিয়ে করবে।পথের কাঁটা সরিয়ে দেওয়ার জন্যই আবু ইসহাক আয়োজন করেছিলো ষড়ষন্ত্রের এই সামরিক মহড়া। কিন্তু নিজের পাতা ফাঁদে নিজেই ফেঁসে গেল। "আল্লাহ তোমার দ্বারা বড় কোনো কাজ নেবেন, এজন্যই নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন তোমাকে।" বললেন আলপ্তগীন।আমি তোমাকে ওয়াদা দিচ্ছি যে,আমার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য তুমি যে পরিকল্পনা পেশ করেছিলে সে অনুযায়ী এখনি কাজ শুরু করতে হবে।তুমিই আমার মেয়ের জামাতা হবে, এজন্য আমি গর্বিত। এ ঘটনার প্রায় এক বছর পর গজনীর শাসক আব্দুল মালেক মৃত্যুবরণ করলেন।আলপ্তগীন প্রানান্ত চেষ্টা করেও আব্দল মালিকের কনিষ্ঠ পুত্রকে গদীনশীন করাতে ব্যর্থ হলেন।বড় ভাই মনসুরের বর্তমানে বাস্তবায়িত হলো না তার সেই স্বপ্ন।দুদিন পর সবুক্তগীন তিনশ' নির্বাচিত অশ্বারোহী সৈনিক নিয়ে গজনী উপস্থিত হল।সে দৃশ্যত ভাব দেখালো যে,তারা বুখারার গভর্নরের পক্ষ থেকে নতুন গদীনশীনকে মোবারোকবাদ জানাতে এসেছে। কিন্তু রাজপ্রাসাদে ঢুকেই তারা মনসুরকে গ্রেফতার করলো।আর তার সাথীরা পূর্ব নির্দেশনামত প্রতিরক্ষা বাহিনীর চৌকিগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গজনী বাহিনীকে নিরস্ত্র করে ফেলল। পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্যায়ে দ্রুত বেগে আলপ্তগীন শহরের প্রধান প্রধান স্থাপনাগুলো দখল করে নিলেন।তিনি অগ্রভাগে সবুক্তগীনকে পাঠিয়ে বেশি সংখ্যক সৈন্য নিয়ে শহরের বাইরে অপেক্ষমাণ ছিলেন,যাতে প্রথম অপারেশনের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে দ্রুততার সাথে সমাধা করা যায়।হাটে বাজারে অলিতে গলিতে প্রচার করা হলো , জালেমদের শাসন শেষ,এখন থেকে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক শাসন চলবে। আমরা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান মতো শাসন কাজ চালাবো।প্রথমদিন থেকেই ইসলামী অনুশাসন চালু করা হলো।দিন মতো যেতে লাগলো , মানুষ দেখতে পেলো,সত্যিকার অর্থেই জুলুম ও নিপীড়নের পরিবর্তনে আদল ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। মানুষের মন থেকে জুলুম অত্যাচারের আতঙ্ক দূর হয়ে গেছে। শাসকদের প্রতি মানুষের মনে ঘৃনার বদলে শ্রদ্ধা জন্মাতে শুরু করেছে।গজনীর অধিবাসীরা নতুন শাসকদের মোবারকবাদ হৃদয়ের সবটুকু শ্রদ্ধা উজার করে। ঐতিহাসিকদের মতে ৯৬২ ইংরেজি মোতাবেক ৬৫১ হিজরী সনে আলপ্তগীন গজনীর শাসন ক্ষমতা গ্রহন করেন।তিনি সবুক্তগীনকে প্রধান উজির নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু অল্পদিনপর তার জীবন প্রদীপ নিভে গেল।পরের বছরই তিনি ইন্তেকাল করেন।তার মৃত্যুর পর ছেলে ইসহাক পিতার স্থলাভিষিক্ত হন। কিন্তু পিতার মতো ন্যায় ও ইনসাফের পরিবর্তে সে মোসাহেব ও তোষামোদকারীদের বেশি গুরুত্ব দিতে শুরু করে।স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী তাকে দিয়ে সুবিধাজনক সব নির্দেশ জারী করিয়ে নিতে থাকলে দেশে আবার অশান্তি দেখা দেয়।জনগণ আবার নতুন হয়রানির কবলে পড়ে। সবুক্তগীনকে আবারো দুঃসাহসী ভূমিকা নিতে হয়।তিনি বাধ্য হয়ে নীতি ও আদর্শচ্যুত শাসক ইসহাককে বন্দী করে কয়েদখানায় নিক্ষেপ করেন। দেশের মানুষ যখন শুনলো,বিপথগামী ইসহাককে বন্দী করে আমীরুল উমারা সবুক্তগীন ক্ষমতাসীন হয়েছেন তখন তারা স্বস্তিবোধ করে এবং শান্তির আশায় আশ্বস্ত হয়। ইসহাককে ক্ষমতাচ্যুত করা সবুক্তগীনের জন্য ছিলো কঠিন বিষয়।এই সুকঠিন ও অসম্ভব কাজটিকে তিনি সম্ভব করতে পেরেছিলেন মানুষের ভালোবাসা ও আস্থার জোরে। তার উন্নত চরিত্র ,ন্যায় নিষ্ঠা ও সদাচারে সেনাবাহিনীর সিপাহী থেকে সালার পর্যন্ত সবাই ছিলো তার প্রতি সশ্রদ্ধ ও অনুগত।ন্যায় বিচার ও সততায় যারা সাধারণ নাগরিকের হৃদয়ের মনিকোঠায় নিজের স্থান করে নিয়েছিলেন সবুক্তগীন।নাগরিকরা তার শাসনে নিশ্চিন্তে জীবন যাপন করার অধিকার পেয়েছিলো।যার ফলে তার প্রতিটি হুকুম ও নির্দেশ বাস্তবায়নে সাধারণ মানুষ নিজেদের উৎসর্গ করে দিয়েছিলো। অল্পদিনের মধ্যে আশেপাশের রাজ্যগুলোকে নিজের কব্জায় নিতে সক্ষম হয়েছিলেন সবুক্তগীন।গঠন করতে পেরেছিলেন এক জীবনবাজী সেনাবাহিনী।গজনীর অবস্থা কিছুটা স্থিতিতে এনেই তিনি মনোযোগী হয়েছিলেন হিন্দু শাসিত অত্যাচারিত ভারতীয়দের প্রতি। এক রাতে স্বপ্নে দেখলেন সবুক্তগীন "তার ঘরে ছাদ ভেদ করে একটি গাছ বেয়ে উঠেছে ।বাড়তে বাড়তে গাছটি এমন বিশাল ও বিস্তৃত হলো অর্ধেক পৃথিবী সেই গাছের ছায়ায় ঢেকে নিলো। স্বপ্ন দেখে খুব বিচলিত হলেন সবুক্তগীন ।স্ত্রীকে বললেন স্বপ্নের কথা।স্ত্রী নিরবে শুনলেন, কোনো মন্তব্য করলেন না।এ দিন ই তার ঘরে জন্ম নিলো প্রথম সন্তান ;স্বপ্নের সুবিস্তৃত মহীরুহ। পুত্রের আগমনে তার উৎকন্ঠা দূর হয়ে গেল।এবার স্ত্রী তাকে বললেন,আপনার দেখা স্বপ্ন আপনার চোখের সামনে বাস্তব হয়ে দেখা দিয়েছে।আমি সেই পুত্রটি প্রসব করেছি যে পৃথিবী থেকে মিথ্যা দূর করবে।আজ মুহাররম মাসের দশ তারিখ।আল্লাহর ইঙ্গিত অনুধাবন করে আমাদের তার দরবারে অবনত মস্তকে বিগলিত হৃদয়ে শুকরিয়া জ্ঞাপন করা উচিত। চলবে ইনশাআল্লাহ... [বিঃদ্রঃ গল্পের বিষয়বস্তুর বাহিরে কমেন্ট করা অথবা আড্ডা দেওয়া নিষেধ।]


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৫৬৯ জন


এ জাতীয় গল্প

→ ভারত অভিযান (১ম খন্ড)
→ ভারত অভিযান (১ম খন্ড)
→ ভারত অভিযান (১ম খন্ড)
→ ভারত অভিযান (১ম খন্ড)
→ ভারত অভিযান (১ম খন্ড)

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • M.H.H.RONI
    Golpobuzz ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    মনে রাখছেন তাহলে গল্পটার কথাgj অনেক অপেক্ষার পর পেলাম।গল্পের ব্যপারে আর কী বলার আছে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকেই বিজয়ী করেন। নিশ্চই আমি তুমাকে দিয়েছি সুস্পষ্ট বিজয় আর সেদিন তুমি লোকদেরকে দলে দলে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করতে দেখবে। জাযাকাল্লাহ"" পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।