বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

সিলভার বুলেট

"ভৌতিক গল্প " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Mujakkir Islam (০ পয়েন্ট)

X সিলভার বুলেট ( ৩০ পর্বের উপন্যাস) লেখক : মার্ক এল এসট্রান্স ভাষান্তরে : সুপ্রিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় ১ ম পর্ব ঘন বনভূমির বড় বড় গাছগুলোর আড়ালে নিজেকে যতটা সম্ভব আড়াল করে গুঁড়ি মেরে এগোচ্ছেন লন্ডনের ওয়েস্ট সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অ্যানথ্রোপলজির পি.এইচ.ডি ডিগ্রিধারী জনৈক প্রফেসর গেরাল্ড ক্রস। হাতে ধরা নাইট-ভিশন ক্যামেরা। লন্ডন থেকেই তিনি রেকর্ডিং করার জন্য ক্যামেরা সহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এতদূর বয়ে এনেছেন। আজকের রাতটার ছবি তোলাই তাঁর কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যখন পশ্চিম আকাশে গোধূলির আলো ছড়িয়ে সূর্যটা ধীরেধীরে পাটে বসছে, যখন প্রকৃতির বুকে ক্রমশ নেমে আসছে আলো-আঁধারির খেলা, তার কিছু আগেই প্রফেসর ক্রস বেরিয়ে পড়েছেন তাঁর নাইট ভিশন ক্যামেরাটা নিয়ে। হ্যাঁ, প্রতি পূর্ণিমায় এই আধা মফস্বল শহরটায় একটা বিশেষ কান্ড হয়। অলৌকিক অপার্থিব কান্ড। অন্তত এখানকার বাসিন্দাদের তাই বিশ্বাস। তাই বিশেষ করে আজকের রাতটাতেই তারা বিকেল থাকতেই যে যার ঘরে ঢুকে খিল দিয়ে বসে থাকে। সুদূর লন্ডনে বসে সেই খবর পেয়েই প্রফেসর ক্রস ছুটে এসেছেন এই অখ্যাত আধা গ্রাম আধা শহর জায়গাটায়। এখানে বাড়িঘর এমনিতেই খুব অল্প, জনবসতিও খুব বেশী নয়। এই অঞ্চলে প্রকৃতিরই দাপট সবচেয়ে বেশী। যেদিকে যতদূর চোখ যায় শুধুই ঘন বন আর প্রান্তর। অলৌকিক কল্পকাহিনী গড়ে ওঠার চমৎকার পরিবেশ। প্রফেসর ক্রস একাই এসেছেন। আজ তিনি মাইক্রোফোন নিয়ে তৈরি। অলৌকিক দৃশ্যের ভিডিও এবং অডিও দুটোই যাতে রেকর্ডিং হয়, তাই-ই এই বিপুল ব্যবস্থা। সন্ধে নামতে এখনও দেরী আছে, তার আগেই প্রফেসর ক্রস অডিও-ভিডিও ইক্যুপগুলো পরীক্ষা করে দেখে নিয়েছেন, সেগুলো যথাযথ কাজ করছে কিনা। আজকের রাত! হ্যাঁ, আজকের রাতটাই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ রাত। প্রাচীন জাতি বা প্রাচীন কোনও সম্প্রদায়ের উৎসব অনুষ্ঠান এবং প্রথা নিয়ে পড়াশোনার প্রতি বিশেষ ঝোঁকের বশেই তিনি এ যাবত বলতে গেলে গোটা মধ্য ইউরোপ চষে ফেলেছেন। আজকের রাতে এই গ্রামে যদি সত্যি সত্যিই সেরকম আজব কিছু তাঁর চোখে ধরা পড়ে, তাহলে তাঁর এতদিনের গবেষণা সার্থক হবে। যদি তাঁর গবেষণা আজ সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে আজকের দুনিয়াজোড়া তাঁর যত কলিগ আছে, যারা এতদিন তাঁর মতবাদ, তাঁর চর্চা নিয়ে তাঁকে ব্যঙ্গবিদ্রূপ করে এসেছে, তাদের নতুন করে একটা চ্যালেঞ্জের সামনে ফেলে দেবে। বহু বছর ধরেই তথাকথিত বিজ্ঞানী মহলে প্রফেসর ক্রস তাঁর প্রাচীন মিথ, প্রাচীন জাতির আচার অনুষ্ঠান নিয়ে গবেষণার জন্য হাস্যাস্পদ হয়ে আসছেন। আর হবেন না-ই বা কেন? তিনি এখনও যে তাঁর গবেষণার স্বপক্ষে কোনও যুক্তিগ্রাহ্য প্রমাণ বের করতে পারেননি। এখনও তাঁর গবেষণা একটা বিশ্বাসের গন্ডির মধ্যে রয়ে গিয়েছে। কিন্তু তিনি এবার মরিয়া হয়ে উঠেছেন, তিনি তাঁর গবেষণার স্বপক্ষে একটা জোরালো প্রমাণ আপামর বিজ্ঞানীমহলে পেশ করবেনই। সেই দৃঢ় পণ থেকেই তিনি সুদূর লন্ডন থেকে ছুটে এসেছেন এই অখ্যাত আধা মফস্বল জায়গাটায়। কিন্তু প্রফেসর ক্রস জানেন, তাঁর সহকর্মী বিজ্ঞানীরা যতই তাঁকে এবং তাঁর গবেষণা নিয়ে উপহাস করুক, তাঁরা সবাই আসলে একেকজন কাগুজে-বাঘ। তাঁদের যত হম্বিতম্বি বিজ্ঞানী মহলে, নিওন আলোর নীচে, কিন্তু সেরকম কোনও জায়গায় যদি এঁদের কাউকে নিয়ে যেতে চান তিনি, যেখানে তাঁদের মত পরিবর্তন হবার সমূহ সম্ভাবনা আছে, সেক্ষেত্রে কিন্তু তাঁরা বেঁকে বসবেন, কিছুতেই যেতে চাইবেন না। ওরা শুধু অন্যকে ঠাট্টা করতেই শিখেছে, কখনো গুরুত্ব দিতে শেখেনি। তবে, আজকের রাতটা যে তাঁকে তাঁর দীর্ঘদিনের নিরলস সাধনা ও গবেষণার কাজে শেষমেশ একটা সাফল্য এনে দেবে, এ ব্যাপারে তিনি যথেষ্টই আশাবাদী। তাই সমস্ত অডিও-ভিডিও ইক্যুইপমেন্ট তিনি সজ্জিত রেখে প্রায় প্রস্তুত হয়ে আছেন। হঠাৎ কোত্থেকে একটা দমকা ঠাণ্ডা বাতাস বনভূমির গাছগুলোর পত্ররাজি কাঁপিয়ে ভেসে এলো। প্রকৃতির বুকে ক্ষীণ একটা শব্দ উঠল। জোর বাতাসে গাছের পাতা নড়ার শব্দ। বনের সবকটা গাছের পাতা একসঙ্গে নড়ে নড়ে উঠছে সেই বাতাসে। বাতাসটা প্রফেসর ক্রসের গায়ে এসে লাগায় তাঁর আপাদমস্তক কাঁপিয়ে দিয়ে গেল। আজকের রাতটা যদিও উষ্ণ, এতক্ষণ একটা গুমোট গরম দিচ্ছিল, তার মধ্যে হঠাৎ করে এইরকম একটা ঠাণ্ডা বাতাস ওঠার ব্যাপারটা তাঁকে একটু অবাকই করে দিল। পরনের জ্যাকেটটা গলা পর্যন্ত আরেকটু টেনে নিয়ে ফের নিজেকে প্রস্তুত করে বসলেন প্রফেসর ক্রস। বাতাসটা এত ঠাণ্ডা যে তাঁর হাড়ের ভেতর পর্যন্ত কাঁপিয়ে দিল! দাঁতে দাঁত ঠোকাঠুকি হয়ে গেল। তবু অসম্ভব মনের জোর সম্বল করে তিনি অধীর প্রতীক্ষায় বসে রইলেন। এইভাবে প্রতীক্ষায় থাকতে থাকতে তাঁর ছোটবেলায় ক্রিসমাস ইভের দিনটার কথা মনে পড়ছিল। ছেলেবেলাতেও তিনি ক্রিসমাস ইভের রাতে ঠিক এইভাবেই প্রতীক্ষায় থাকতেন, কখন সান্টা ক্লজ তাঁর জন্য কিছু 'উপহার' নিয়ে আসে! সারাদিন চলত সেই প্রতীক্ষা! আজ এত বছর পর ছেলেবেলার দিনগুলোর কথাই মনে পড়ছিল। একসময় পশ্চিম আকাশের দিকে নজর পড়তে আকাশের এক কোণে অস্তমিত সূর্যের রক্তিম ছটার অপসৃয়মান শেষ চিহ্নটুকুকে মিলিয়ে যেতে দেখলেন। একটু পরেই সন্ধ্যার অন্ধকার পা টিপে টিপে নেমে আসতে লাগল প্রকৃতির বুকে। আকাশের গায়ে একটি দুটি করে তারা ফুটে উঠতে উঠতে শুরু করল। এইসময় হঠাৎ আকাশের অন্য পাশে দেখা গেল পূর্ণিমার বিশাল চাঁদটাকে। কখন যেন আকাশের গায়ের অন্ধকার পর্দাটা সরিয়ে উদিত হয়েছে পূর্ণিমার বিশাল চাঁদটা, তবে এখনও উজ্জ্বল বর্ণ ধারণ করেনি। একটু পরেই প্রকৃতির বুকে ধীরেধীরে ছড়াতে শুরু করবে রূপোলী জ্যোৎস্নাধারা। একটু পরেই দেখতে দেখতে সমগ্র গ্রাম, প্রান্তর, বনভূমির ওপর চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙে পড়বে। চাঁদের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলেন প্রফেসর ক্রস। যতটা অনুমান করা হয়েছিল, তার চেয়েও বিশালাকার ধারণ করেছে আজকের চাঁদটা। এত বড় চাঁদও হয়! যত সময় গড়াতে লাগল, গেরাল্ডের ভেতর কিরকম একটা অস্থির ভাব ফুটে উঠতে লাগল। কিরকম অধৈর্য হয়ে উঠতে লাগলেন তিনি। তবু যথাসম্ভব চেষ্টা করছেন নিজেকে শান্ত, সংযত রাখার। গায়ে মশা বসলেও সেটাকে তাড়াবার চেষ্টা করছে না তিনি। সময় গড়াতে লাগল গাড়ির চাকার মতো। কতক্ষণ পর বেশ অনেকটা দূরে গুড়গুড় করে একটা শব্দ শোনা গেল। প্রফেসর ক্রস শব্দ অনুসরণ করে সেদিকে তাকিয়ে দেখলেন, ফাঁকা প্রান্তরের ওপর দিয়ে পাঁচটা ভেহিকল সারিবদ্ধভাবে এগিয়ে আসছে। "কারা আসছে ওরা?" নিজের মনেই স্বগতোক্তি করলেন প্রফেসর ক্রস। ডিজিটাল ক্যামেরাটা সেদিকে তাক করে রইলেন, ব্যাপারটা যা-ই ঘটুক, ক্যামেরায় রেকর্ডিং হওয়া চাই। বিশাল প্রান্তরের ওপর দিয়ে গাড়িগুলো সার দিয়ে আসছে বলে কিরকম একটা চলমান ছোট বিন্দুর মতো দেখাচ্ছে গাড়িগুলোকে, যেন একটা শোভাযাত্রা আসছে। একরাশ বিস্ময় আর কৌতূহল নিয়ে সারিবদ্ধভাবে এগিয়ে আসা দূরাগত গাড়িগুলোকে লক্ষ্য করছিলেন প্রফেসর ক্রস। কতক্ষণ পর দেখা গেল, সার দিয়ে এগিয়ে আসা গাড়িগুলো হঠাৎ যেন ভাগ হয়ে গেল দু'দিকে। মনে হলো, ওরা যেন আশেপাশে কোনও জায়গা টায়গা খুঁজছে, কোনওকিছুর জন্য। প্রফেসর ক্রস তখনো ওদের দিকে একরাশ বিস্ময় নিয়ে দেখতে দেখতে কখন যেন নিজের অজান্তেই কিরকম যেন সিঁটিয়ে গেছেন নিজের ভেতরেই। ওদিকে, সেই রহস্যের আধার দল'টা জায়গা খুঁজতে খুঁজতে ওদের চেয়ে কয়েক ফুট দূরত্বের মধ্যে এসে পড়েছে। মানুষগুলোর হাতে রয়েছে জ্বলন্ত টর্চ। আধো অন্ধকারের মধ্যে তাদের আলোগুলো চলেফিরে বেড়াচ্ছে। চাঁদ এখনও উজ্জ্বল হয়নি, তাই এখনও টর্চের আলো সম্বল ওদের। হঠাৎ প্রফেসর ক্রসের মনে হলো, ঝোপের ভেতর থেকে কিছু যেন অত্যন্ত দ্রুতবেগে ছুটে এসে বাম দিকের জঙ্গলে বিলীন হয়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে সেই রহস্যময় দল'টা, যারা এতক্ষণ ধরে স্থান খুঁজে বেড়াচ্ছিল, তারা যেন কোনওকিছুর আঁচ পেয়ে সচকিত হয়ে উঠল। কিন্তু মনে হলো যেন তখনো তারা প্রফেসর ক্রস'কে দেখতে পায়নি। তারপর প্রায় একঘণ্টা ধরে চলল স্থান অনুসন্ধান। যেন বিশেষ কোনও কার্যানুষ্ঠান সম্পাদনের উপযুক্ত জায়গা খুঁজছে দল'টা। এতক্ষণ প্রফেসর ক্রস শ্বাস রুদ্ধ অবস্থায় ওদের যাবতীয় গতিবিধি লক্ষ্য করছিলেন, একসময় যখন ওঁর মনে হল, এই লোকগুলোকে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই, তখন সে লম্বা করে একটা নিশ্বাস ছাড়ল। ততক্ষণে সেই দল'টা সেই বিশাল প্রান্তরের মাঝখানে এক জায়গায় জড়ো হয়েছে, যেন ওই জায়গাটাই তাদের মনে ধরেছে। ওদের ওপর গোপনে দৃষ্টি রেখে, গেরাল্ড ক্রস তার কোটের পকেট থেকে সাবধানে ইয়ারপিস'টা বের করে আনলেন, তারপর ওটাকে সন্তর্পণে স্লো মোশনে ঠেসে ধরলেন নিজের বাম কানের ওপর। রিসিভার অন করতেই কিছু অস্ফুট শব্দ তাঁর কানে ভেসে এলো। ওই লোকগুলো সেই প্রান্তরের মাঝে গোল হয়ে বসে কি কথাবার্তা বলছে। কতকগুলো শব্দ ওঁর কানে এলো। শুনতে পেলেন, ওদের একজন বলছে - " ওরা খুব শিগগীরই ফিরবে, তাই আর দেরী নয়। আগুন জ্বালানোর জন্য কাঠগুলো জড়ো করতে থাকো আমরা, আমি এদিকে লক্ষ্য রাখছি, দেখি ওরা কখন আসে"। প্রফেসর গেরাল্ড ক্রস ওঁর কানে গোঁজা ইয়ারপিস'টার সাহায্যে শুনলেন, দলের বাকি'রা লোকটির কথায় সম্মতি জানিয়ে অস্পষ্ট গুঞ্জন করে কিছু যেন বলল। তারপরেই ওরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে খুব দ্রুত নিজেদের কাজ সারতে লাগল। গেরাল্ড দেখলেন, লোকগুলো খুব দ্রুত এদিকওদিক থেকে কাঠ, লকড়ি যা হাতের সামনে পেলো কুড়িয়ে একটার ওপর একটা রেখে প্রান্তরের মাঝে বড়সড় একটা স্তুপ তৈরি করল। কাঠের স্তুপ। বোধহয় এবার আগুন টাগুন জ্বালাবে। লোকগুলোর কেউই কোনও কথা বলছে না, কিন্তু মনে হলো অস্ফুট মন্ত্রোচ্চারণের মতো কিছু যেন আওড়াচ্ছে ওরা। গেরাল্ড ক্রস ওর ক্যামেরাটা সেদিকে আরেকটু ভালো করে তাক করে তুলে ধরলেন যাতে ওদের কার্যকলাপগুলো ভালোভাবে রেকর্ডিং হতে পারে। একটু পরেই আরও কতকগুলো ভেহিকলের গুড়গুড় শব্দ কানে এলো প্রফেসর ক্রসের। তারপরেই তিনি দেখতে পেলেন, অন্তত আরও জনা পঞ্চাশেক লোক অদ্ভুত ক্রিয়ানুষ্ঠানে যোগ দিতে উপস্থিত হয়েছে। তারপর সবাই মিলে স্তুপাকার কাঠগুলোকে নিয়ে পাহাড়ের দিকে চলল। ইনফ্রারেড ক্যামেরা থাকা স্বত্তেও লোকগুলোকে ঠিকঠাক ক্যামেরায় আনতে পারছেন না গেরাল্ড। কেমন দেখতে ওদের, চেহারাই বা কেমন, কিছুই ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছে না। তবে মনে হলো, প্রত্যেকের পরনে পায়ের পাতা পর্যন্ত নেমে যাওয়া বিশেষ ধরনের লম্বা জোব্বা টাইপের পোশাক, যা সাধারণত কোনও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে পরিধান করা হয়ে থাকে। ঝোপের আড়ালে গা ঢাকা দিয়ে বসে অবাক হয়ে ওদের লক্ষ্য করছিলেন প্রফেসর ক্রস। তিনি বুঝতে পারছিলেন না, ওই মানুষগুলো ঠিক কি করতে যাচ্ছে। গেরাল্ড ক্রস লক্ষ্য করলেন, গ্রুপটায় কারোর কারোর হাতে ঝুলছে বড়সড় ক্যারিব্যাগ। যখন কাঠের স্তুপের মধ্যে আগুন প্রজ্বলিত হলো, তখন ওরা সেই ব্যাগের ভেতর থেকে অনেকগুলো বোতল টাইপের কিছু পাত্র বের করল। গেরাল্ডের মনে হলো, পাত্রগুলোয় সম্ভবত মদজাতীয় কিছু আছে। বোতলগুলো হস্তান্তরিত হতে লাগল একজনের থেকে অন্যজনের হাতে। আগুনটাকে ঘিরে বসে থাকা গ্রুপের সকল মেম্বার সেই বোতলগুলো থেকে খানিকটা করে পানীয় গলাধঃকরণ করতে লাগল। পাত্রগুলো একেবারে খালি হয়ে যাবার পর সেগুলো ফের ফিরে এলো প্রথমে যে গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে 'পাস' করেছিল, তার হাতে। কাঠের স্তুপে আগুন যখন আরও দাউদাউ করে জ্বলে উঠল, তখন গ্রুপের একজন মেম্বার হঠাৎ উঠে দাঁড়াল। আগুনের সামনে এসে সে সেই জ্বলন্ত আগুনের ওপর এক পা কয়েক ইঞ্চি ওপরে রেখে দাঁড়িয়ে রইল। স্থির হয়ে। তার আগে সে পরনের জোব্বাটা যখন খুলে ফেলল, তখন আগুনের আভায় ওকে দেখে গেরাল্ড বুঝল, মূর্তিটা একটা মেয়েলোক। ঘন কালো চুলওয়ালা একজন মহিলা সে। প্রফেসর ক্রস যেখানে বসেছিলেন, সেখান থেকে আগুনের আভায় সেই মহিলার দেহের প্রতিটি বাঁক ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে জরিপ করা যাচ্ছিল। গায়ের জোব্বাটা পেছনে খুলে রেখে সেই মহিলাকে দেখা গেল, সে তার দু-হাত দু'দিকে তুলে ধরল, কি যেন বলল, তারপরেই দেখা গেল, দলের বাকিরাও তাদের যে যার পরনের জোব্বা খুলে ফেলল। জোব্বা খুলে পড়তেই সবাই উলঙ্গ হয়ে গেল এবং ওদের দেহকাঠামোগুলো সুস্পষ্ট হয়ে ধরা দিল প্রফেসর ক্রসের চোখে। বোঝা গেল, গ্রুপটায় অনেকগুলো মহিলা এবং পুরুষ আছে। প্রত্যেকেই উলঙ্গ। কিন্তু কারোর চোখে মুখে লাজলজ্জার কোনও বালাই নেই। প্রথমে যে মহিলাটি জোব্বা খুলে আগুনের ওপর এক পা রেখে দু-হাত দু'দিকে ছড়িয়ে দাঁড়িয়েছিল, সম্ভবত সে-ই দলের অধিনায়িকা। দলের প্রত্যেকে তার চতুর্দিকে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়ল, যেন তার আদেশ পালনের অপেক্ষা করছে। "...সবাই একত্র হও..." শোনা গেল সেই মহিলা দলপতির কণ্ঠস্বর, "এক হও সবাই"। সঙ্গে সঙ্গে ওকে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা দলের বাকি সদস্যরা নাচতে শুরু করল। দলপতিকে ঘিরে ওরা চক্রাকারে নাচতে শুরু করল। অদ্ভুত সেই লোকনৃত্য! গোল হয়ে দাঁড়িয়ে তিড়িংবিড়িং করে নাচতে লাগল ওরা। দেখতে দেখতে ওরা গোল অবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এবার একে অপরের সাথে কোমর জড়িয়ে, কখনো হাত ধরাধরি করে, আবার কখনো একে অপরের সাথে মুখ এবং জিভ ছুঁইয়ে ছুঁইয়ে নাচ শুরু করল। নাচের সময় মূহুর্তে মূহুর্তে সঙ্গী বদলাতে লাগল ওদের। সবাই সবার সাথে নাচতে শুরু করেছে। কিছুক্ষণ পর, একটা সময়ে ওরা একেকটা জুটিতে ভাগ হয়ে পরস্পর যৌন ক্রীড়ায় প্রবৃত্ত হলো। একটু দূরে ঝোপের আড়ালে বসে চোখেমুখে প্রগাঢ় বিস্ময় আর কৌতূহল নিয়ে অদ্ভুত ওই মানুষগুলোকে প্রত্যক্ষ করতে লাগলেন প্রফেসর ক্রস। যেন ওঁর চোখের সামনে অদৃশ্য পর্দায় কোনও পর্ন ফিল্ম চলছে। গ্রুপের দলনেত্রীর অদৃশ্য অঙ্গুলি হেলনে গ্রুপের প্রত্যেক নারী-পুরুষ একে অপরের সাথে যৌনমিলনে রত হলো। ওদিকে, আগুনের ওপর এক পা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা সেই দলনেত্রী একাকী দাঁড়িয়ে রইল। একেবারে স্থির হয়ে। দৃষ্টি তার, চারপাশে মৈথুনরত নারী-পুরুষদের দিকে। অদ্ভুত, অবিশ্বাস্য দৃশ্য! গেরাল্ড ক্রস একের পর এক দৃশ্যগুলোকে তার ভিডিওতে রেকর্ডিং করতে লাগলেন। ক্যামেরার লেন্সটাকে 'জুম' করে আরও কাছে নিয়ে যেতেই গেরাল্ড বুঝলেন, অনুষ্ঠানের সময় যত গড়াচ্ছে, ওই গ্রুপের সবার চেহারা কিরকম যেন ঘন কালো আকার ধারণ করছে। এতক্ষণ সবার চেহারা মানুষের মতো ছিল, কিন্তু ধীরেধীরে তাদের চেহারার যেন পরিবর্তন ঘটছে। গেরাল্ডের কাছে ব্যাপারটা বাস্তবিকই অবিশ্বাস্য ঠেকল। তিনি ক্যামেরার লেন্সটাকে আরেকটু 'জুম' করতেই ব্যাপারটা আরও ভালো করে নজরে পড়ল ওঁর। সে লক্ষ্য করল, প্রত্যেকের শরীর যেন ভরে উঠেছে ঘন পুরু লোমে! কি লোমশ দেখাচ্ছে ওদের চেহারাগুলো! অদ্ভুত! তাজ্জব! এমনটা কি করে সম্ভব! অথচ ওদের দেখে মনে হচ্ছে, ওরা কেউ যেন এই ব্যাপারটা নিয়ে বিশেষ ভাবিত নয়। এই যে হঠাৎ করে ওদের চেহারায় এই অদ্ভুত পরিবর্তন, তা নিয়ে যেন ওদের কারোর মধ্যে কোনও ভাবান্তর নেই। সবাই যে যার মিলন সুখের আনন্দে মত্ত। বিস্মিত, হতভম্ব গেরাল্ড চোখ থেকে ক্যামেরা সরিয়ে নিলেন। এবার খালি চোখে অপার বিস্ময়ে দেখতে লাগলেন এই অদ্ভুত জীবগুলোর লীলাখেলা। চোখের সামনে ব্যাপারটা দেখেও যেন বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না তিনি। ফের ক্যামেরা তাক করার আগে দু হাতের আঙুলগুলো দিয়ে চোখদুটো একবার ভালো করে রগড়ে নিলেন তিনি। ফের ক্যামেরার ভিউফাইন্ডারে চোখ রেখে তিনি দেখলেন, না, ভুল দেখছেন না তিনি। গ্রুপের প্রত্যেকের চেহারা ঘন পুরু লোমে ছেয়ে গিয়েছে। আর মানুষের মতো দেখাচ্ছে না ওদের! কি বীভৎস লাগছে ওদের চেহারাগুলোকে! অদ্ভুত, ব্যাখ্যাতীত এই রূপান্তর চোখের সামনে লক্ষ্য করে গেরাল্ডের মনে হতে লাগল, তাঁর শিরদাঁড়া বেয়ে যেন বরফগলা জলের স্রোত নেমে যাচ্ছে। কাঁপতে লাগলেন তিনি। যেন জেগে জেগে কোনোও দুঃস্বপ্ন দেখছেন তিনি! এটা কেমন করে সম্ভব! মনে মনে কল্পনাতেও আনতে পারছেন না তিনি। ততক্ষণে তাঁর বিশ্বাস আরও বদ্ধমূল হয়েছে যে পৃথিবীতে সত্যিই ওয়্যারউলফের অস্তিত্ব আছে এখনও। লাইক্যানথ্রপি নিছকই কোনও কুসংস্কার নয়, হাজার হাজার বছর ধরে এই পৃথিবীতে এই রহস্যময় অতিপ্রাকৃত বিদ্যার অস্তিত্ব বর্তমান। ফিসফিস করে নিজের মনেই স্বগতোক্তি করলেন প্রফেসর ক্রস। সত্যিই! আজ এই ভরা পূর্ণিমার রাতে এই অখ্যাত অঞ্চলের এক গভীর বনভূমিতে বসে বসে নিজের চোখেই ব্যাপারটা প্রত্যক্ষ করছেন গেরাল্ড। আজ তিনি এই বিরল অদ্ভুত অপার্থিব রোমাঞ্চকর দৃশ্যের সাক্ষী। অথচ আধুনিক বিজ্ঞান আজ লাইক্যানথ্রপি'র নাম শুনে হাসে। এই একটা কারণে তাঁকে নিয়ে কত হাসাহাসিই না হয়েছে ইউনিভার্সিটিতে! সবার কাছে তিনি হাসির খোরাক মাত্র। কিন্তু আজ! আজ তাঁর চোখের সামনে জ্বলজ্বল করছে এক অকাট্য প্রমাণ; কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমেই এবার জটিল হয়ে উঠছে। গেরাল্ড দেখলেন, ক্যামেরা এখনও চালু এবং একের পর এক দৃশ্যগুলো রেকর্ডিং হয়ে চলেছে। ওদিকে, গ্রুপের সবাই ওয়্যারউলফে পরিণত হয়েছে। তারা কেউই এখন আর মানুষ নেই। প্রত্যেকের দেহ ঢাকা পড়েছে ঘন পুরু লোমের আচ্ছাদনের নীচে। প্রত্যেকের মুখ পরিবর্তিত হয়েছে জন্তুর মতো ছুঁচালো মুখে। চোয়াল চওড়া হয়ে দু'পাশের সার সার তীক্ষ্ণ দাঁত বেরিয়ে রয়েছে, নাকের জায়গায় জন্তুর মতো দুটো নাসাছিদ্র। কানদুটো সূঁচালো..আর...আর চোখদুটো যেন আগুনের গোলা! দ্রুত ক্যামেরায় একের পর এক রেকর্ডিং তুলতে লাগলেন গেরাল্ড ক্রস। আর তখনিই..... ভরা পূর্ণিমার রাতের আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে একসঙ্গে হাউলিং করে উঠল সবকটা নরবৃক। পূর্ণিমার গোল চাঁদটার দিকে তাকিয়ে সমস্বরে হাউলিং করে উঠল সবাই। যেন ওই চাঁদটা তাদের প্রভু। তাকেই তারা আজ উৎসর্গ করবে আজকের রাতের শিকার। থরথর করে কাঁপছেন হেরাল্ড! ঠিক এইসময়....একটা ওয়্যারউলফের মুখ এদিকে ঘুরে গেল। সরাসরি ওটার দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো যেখানে গেরাল্ড বসে আছেন সেখানে। মনে মনে প্রমাদ গুনলেন গেরাল্ড। তাঁর মনে হলো, তিনি যেন বরফের স্ট্যাচুতে পরিণত হয়েছেন। চাইলেও হাত-পা নাড়াতে পারছেন না। ঠিক এই ভয়টাই তিনি করছিলেন। ওরা ওঁকে দেখে ফেলেছে! ওদের ইন্দ্রিয় সাধারণ পার্থিব জন্তু জানোয়ারের মতো নয়, তাই ঘন ঝোপের আড়াল ভেদ করেও ওদের দৃষ্টি তাঁকে ধরে ফেলতে পেরেছে। এখন কি হবে! কিভাবে নিজেকে বাঁচাবেন! মৃত্যুর শ্যেন দৃষ্টি নিবদ্ধ যে তাঁর দিকেই! তিনিও ভয়কাতর চোখে চেয়ে রইল সামনে দাঁড়ানো ওয়্যারউলফটার দিকে। ওদিকে, সেই দলনেত্রী মেয়েটি এখনো মানুষের রূপেই আছে। তার দেহে এখনও কোনও পরিবর্তন দেখা যায়নি। কিন্তু তারও দৃষ্টি নিবদ্ধ ঝোপের আড়ালে বসে থাকা গেরাল্ডের দিকে। লক্ষ্য করছে তাঁকে। ....হঠাৎ একসঙ্গে সবকটা ওয়্যারউলফ ওঁর দিকে ধেয়ে আসতে লাগল। সেই দলনেত্রীর নীরব সঙ্কেতেই ওরা পায়ে পায়ে এগিয়ে আসতে লাগল, ঠিক গেরাল্ড ক্রস যেখানে বসে আছেন, সেদিকে। গেরাল্ড বাঁচার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেন। তিনি বুঝল্রন, এখন আর ক্যামেরা আর অডিও ইক্যুপমেন্ট গোছাবার সময় নেই। এখন প্রাণের দামই সবার আগে। এখুনি গাড়িতে গিয়ে না উঠে পড়তে পারলে সমূহ বিপদ। অবশ্য সে সুযোগ সে পেলে তো! আর দেরী করলেন না ক্রস। গলায় ক্যামেরার স্ট্র‍্যাপ জড়ানো অবস্থাতেই উঠে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছুটতে লাগলেন তিনি। জঙ্গল ভেঙে ছুটতে লাগল যেদিকে দুচোখ যায়। ছুটছেন...ছুটছেন...সে ছুটছেন! প্রফেসর ক্রস তখন মরিয়া হয়ে ছুটছেন। গলার সঙ্গে বাঁধা ক্যামেরাটা অনবরত বাড়ী খাচ্ছে তার থুতিনির সাথে কিন্তু ছোটার গতি কমালেন না তিনি। কোথায় যাচ্ছেন, কোনদিকে যাচ্ছেন, তিনি জানেন না। শুধু জানেন তাঁকে ছুটতে হবে। .....কতক্ষণ ধরে ছুটছিলেন তিনি জানেন না। মনে হচ্ছিল যেন অনন্তকাল ধরে ছুটছিলেন। একসময় যখন একটা জায়গায় থামলেন, তখন তিনি রীতিমতো হাঁফাচ্ছেন। বুকটা দ্রুতলয়ে ওঠানামা করছে, ঘামে ভিজে উঠেছে সর্বাঙ্গ। মুখ হাঁ করে বাতাস টানার চেষ্টা করছে গেরাল্ড। ফুসফুসদুটো যেন এখুনি ফেটে যাবে। শরীরের সমস্ত স্নায়ুগুলো যেন একসঙ্গে বিদ্রোহ শুরু করেছে। আর পারছে না...আর পারছে না সে দাঁড়িয়ে থাকতে! পা দুটো টলছে। ....হঠাৎ খুব কাছেই অনেকগুলো হাউলিং শোনা গেল। সচমকে সেদিকে তাকাতেই প্রফেসর ক্রস যেন আতঙ্কে হিম হয়ে গেলেন। তিনি দেখলেন তাঁর ঠিক মাথার ওপরে, পাহাড়ের ওপরে যেখানে পূর্ণিমার গোল চাঁদটার ওপর দিয়ে ভেসে ভেসে যাচ্ছে সাদা মেঘের ভেলা, সেই চাঁদটাকে অর্ধেক আড়াল করে দাঁড়িয়ে আছে সেইসব ভয়াবহ অপার্থিব জীবেরা। বিশাল তাদের শরীর, পুরু লোমে ঢাকা, দুই চোখে বন্য লোলুপ দৃষ্টি। ক্রোধে ফুলে উঠেছে ওদের শক্তিশালী পেশীবহুল শরীর। প্রমাদ গুনল গেরাল্ড। মাথার ওপর মৃত্যু! আর পালাবার পথ নেই! ....সমস্বরে ফের আরও একবার হাউলিং করেই সবকটা অপার্থিব প্রাণী লাফিয়ে পড়ল তাদের বাঞ্ছিত শিকারের ওপর। শেষ নিশ্বাস ফেলার আগে প্রফেসর গেরাল্ড ক্রস শুধু জেনে যেতে পারলেন, লাইক্যানথ্রপি মোটেও কোনও কাল্পনিক বিষয় অথবা কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষের উদ্ভট কল্পনা নয়। ( ক্রমশ)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪১৪ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • Nishita Fahmeem
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    Next please

  • Nishita Fahmeem
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    Nice

  • Nishita Fahmeem
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    Nice

  • Nikita
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    I like horror story

  • Tanjika
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    নেক্সট প্লিজ

  • Tanjika
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    দারুণ হয়েছে

  • Mujakkir Islam
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    নাফি ভাইয়া আপনাকে ধন্যবাদ আর এইভাবে একই কমেন্ট বারবার করবেন না প্লিজ

  • A.H.M NAFI
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    Best

  • A.H.M NAFI
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    Best

  • A.H.M NAFI
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    Best

  • Tanjid
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    তোর গল্পগুলি দেস না কেন। বেস্ট ফ্রেন্ড, আপুর বান্ধবী, ভূত অভিযান, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে ও পরে, সেক্রফাইস,একশন বিপ্লব এগুলো দিলে তো পারিস

  • Tanjid
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    ভূতে বিশ্বাস করিস না আবার খালি ভূতের গল্প দিস

  • Tanjid
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    কি সব আজেবাজে পোস্ট দিস

  • Mujakkir Islam
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ সিনিয়া আপু

  • Siniya
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    Next pls

  • Siniya
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    Awesome

  • Siniya
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    Awesome

  • SIAM The Deadman
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    অ অসাধারণ

  • SIAM The Deadman
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    অ অসাধারণ