বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ঘড়ির কাঁটা তিনটা ছুঁইছুঁই। টেবিল ল্যাম্পের আবছা আলোয় পুরো ঘরটা যেন একটু ঘুমিয়ে নিতে চাইছে। রঙ ওঠা পুরনো কাঠের চেয়ারটাতে বসে একের পর এক বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছেন রফিক সাহেব।
বিশাল এই বাড়িটাতে একাই থাকেন তিনি, স্ত্রীকে হারিয়েছেন প্রায় দশবছর হল। এক ছেলে, বউ বাচ্চা নিয়ে কানাডায় থাকে। টাকা পয়সা , বাড়ি গাড়ি সবই আছে তার, তবুও যেন কিছুই নেই। বিশাল এই বাড়িটাকে রাক্ষস বলে মনে হয় তার, একা পেঁয়ে সবসময় যেন গিলে খেতে চায় তাকে।
হঠাৎ কিচেনে কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ হলো। নিশ্চয়ই সেই কালো বিড়ালটা এসেছে, প্রায়ই আসে।তার কাছে মনে হয় যেন বিড়ালটা তারই খোঁজ নিতে আসে, তিনি ঘুমিয়ে পড়েছেন কিনা এসবই জানতে আসে বোধ হয়।
রফিক সাহেব চেয়ার ছেড়ে ওঠে কিচেনে গেলেন। যা ভেবেছিলেন ঠিক তাই, সেই বিড়ালটাই এসেছে। বিড়ালটা দেখতে একদম কুচকুচে কালো, রোগাটে শরীর, চোখগুলো যেন জ্বলজ্বল করছে। তাকে দেখে বিড়ালটা পেছন দিকে একটু সরে গিয়ে 'মেও' বলে আওয়াজ করল।
ফ্রিজ থেকে একবাটি গরুর মাংস বের করলেন তিনি। তার নিজের ও খুব খিদে পেয়েছে। আসলে রাত জাগলে প্রচুর খিদে পায়। বিশেষ করে তিনটার দিকে এমন খিদে পায় মনে হয় যেন গোটা ফ্রিজটাই খেয়ে ফেলতে পারবেন তিনি।
বাটি থেকে দু টুকরো মাংস মেঝেতে দিয়ে নিজের জন্য প্লেটে ভাত আর মাংস নিলেন। বিড়ালটা লেজ নাড়তে নাড়তে এগিয়ে এসে একটা টুকরা মুখে পুরে চিবোতে শুরু করলো। রফিক সাহেব বসে বসে বিড়ালের খাওয়া দেখছেন। বিড়ালের খাওয়া দেখতে দেখতে তিনি নিজের খিদের কথা কখন যেন ভুলে গেছেন।
হঠাৎ করে কেন জানি তার কমলাকান্ত হওয়ার ভীষণ ইচ্ছে হলো। নিজেকে কমলাকান্ত ভেবে বিড়ালের দিকে প্রশ্নও ছুড়ে দিলেন,
রান্না কেমন হইছে. .. আরেক টুকরা দিমু নাকি.??
বিড়াল কোনো উত্তর দিলো না।
তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, " কিরে, কথা কস না ক্যান.??"
বিড়ালটা ততক্ষনে মাংসের দ্বিতীয় টুকরাটা মুখে নিলো।
উত্তর না পেয়ে তার আর বুঝতে বাকি রইল না যে, তিনি কমলাকান্ত নন, আফিমও সেবন করেন নি। তাই আফিমের অভাবে তার আর দিব্যকর্ণ লাভ করা হয়ে ওঠলো না।
দেখতে দেখতে দ্বিতীয় টুকরাটাও শেষ করে আরেকবার তৃপ্তির 'মেও' শব্দটা উচ্চারণ করলো বিড়ালটা। তারপর আলগোছে মুখটা মেঝেতে ঘষে গুটি গুটি পায়ে বারান্দার দিকে এগনো শুরু করলো।
রফিক সাহেব স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে বিড়ালের চলে যাওয়া দেখছেন। দেখতে দেখতে রফিক সাহেব হঠাৎ বিড়ালকে উদ্দেশ্য করে সশব্দে বলে উঠলেন ,"কাল নাহয় আবার আসিস, আফিম নিয়ে অপেক্ষা করবো।"
নিঃসঙ্গতা
লেখা : তৌফিক রহমান
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
রামিশা নূর রাওহা
User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বেMd.SaiM ArAFaT
User ৩ বছর, ১০ মাস পুর্বে