বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

হার্ট এটাক ( পর্ব-২ )

"ফ্যান্টাসি" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান FahMiDa SulTaNa (OboNti ) (০ পয়েন্ট)

X হিমু হওয়ার পথে আরও একটা প্রতিবন্ধকতা। একটা আছাড় দিতে পারলেই অবশ্যি কেল্লা ফতে! কিন্তু এই একটা জিনিসই বলতে গেলে আমার একার। ছাত্র জীবনে শখের বশে টিউশনি করে জমিয়ে কিনেছিলাম। বড়লোক বাপের একমাত্র ছেলে, এমন আট-দশটা ফোন আমার নিজস্ব জাদুঘরেই আছে! কিন্তু সবক'টাই বাবার টাকায়। এটাই শুধু আমার। তাই মোহভঙ্গ করে আছাড়টা মারতে পারছি না। আমি ফিরে গেলাম টেবিলে। অজ্ঞাতনামা মেয়ে কফির মগের দিকে গরম চোখে তাকিয়ে আছে। চরম বিরক্তি সেই চাহনিতে। এই দৃষ্টিতে তাকে বেশ মানিয়েছে। মেয়ে বলেই কি মানিয়ে গেছে? কোন ছেলে যদি এভাবে তাকাতো, মানাতো? আমি ডিপজলকে কল্পনা করলাম, "গরম চাওনি নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। ধরতে পারলেই গিলে খেয়ে নিবে!" না আ আ আহ! ভাগ্যিস এটা সত্যি না। শেষ পর্যন্ত ডিপজলের 'ইয়া ঢিশুমা' মার্কা ঘুষি খেয়ে নিজের পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বহুদিনের সাধ পূরণ করতে চাই না।  পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আরও অনেক পথ আছে। আমি আবার অপরিচিতার দিকে তাকালাম। সে এখনও গরম চোখেই তাকিয়ে আছে। তবে লক্ষ্যবস্তু ভিন্ন। এবারের লক্ষ্যবস্তু কফিমগ না, আমি। ডিপজলের মত ঘুষি না দিক, হাতের কাছের টবটা ছুঁড়ে মারলেও আমি ইমার্জেন্সি ইউনিটে ভর্তি হতে পারব।  হঠাৎই মনে হলো, যখন-তখন যার-তার উপর রাগ করাটা মেয়েদের জন্মগত অধিকার! এই অধিকারটুকু তাদের দেওয়া উচিত। এটা শুধু মেয়েদেরই মানায়।  বিশেষ করে এই মেয়েটাকে। যদিও ডিপজলের হাতের ঘুষি খাওয়ার ব্যাপারে আমার কিঞ্চিৎ আগ্রহও ছিল না, কিন্তু মেয়েটার হাতের টবের বাড়ি খেতে আমার কোনো আপত্তি নাই।  আমি চেয়ারে বসতে বসতে বললাম, "আপনাকে অনেক বিরক্ত করছি। তাই না?" মেয়েটা ভ্রু কুঁচকালো। এবার তাতে বিরক্তি ছিল না। ছিল বিস্ময়। 'বলে কী মিয়া' টাইপ বিস্ময়। তবে মুখে কিছু বলল না।  "সরি। আপনি আমাকে একটা সম্ভাব্য এক্সিডেন্টের হাত থেকে বাঁচালেন, আর আমি ব্যাপারটা প্যাঁচাতে প্যাঁচাতে এতদূর পর্যন্ত নিয়ে এলাম। আই'ম রি'লি সরি!" "হুম, ইট'স ওকে।" ভ্রুদুটি কিঞ্চিৎ স্বাভাবিক হলো। "আসলে ধন্যবাদ দিতে গেলে আপনাকে ছোট করা হয়। তাই চাচ্ছিলাম আপনার সাথে এককাপ কফি খেয়ে হয়ত বা একটু পুষিয়ে দেয়া যাবে। আর তখন আপনাকে সরাসরি বললে হয়ত আপনি আসতেন না। তাই একটু নাটক করলাম।" অপরিচিতা হেসে ফেলল। ভ্রুজোড়া পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে এল।  "এবার যেহেতু সব ঠিক-ঠাক আপনার সাথে আরেক কাপ কফি খেতে পারি?" "আপনার ডাক্তার আংকেল আপনাকে বলেন নি? বেশি কফি খাওয়া-ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।" আমি প্রশ্নবোধক দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম। সে বলল, "তিন কাপ অলরেডি হয়ে গেছে। পরে যদি হার্ট এট্যাক হয়েও যায়, জরিমানা তো আমাকেই দিতে হবে!" আমি হা হা করে হেসে উঠলাম। "তাহলে? প্রাণে বাঁচানোর জরিমানা তো শোধ হলো না!" "এরা খুব ভাল পেস্ট্রি বানায়। কফি ছাড়াও আরও অনেককিছু আছে। চিন্তা করবেন না। আজ আপনার জরিমানা শোধ না করে যাব না। হাহাহা!" আমি পেস্ট্রি খেতে খেতে বললাম, "আপনি কী বোকা! আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে তো সাংঘাতিক সমস্যায় পড়তে পারতেন।" মেয়েটা চশমাটা নাকের দিকে ধাক্কা দিয়ে বলল, "কেন? কী এমন ভুল করলাম?" "যখন আমরা কফিশপ খুঁজছিলাম, রাস্তাতেই একটা ট্রাফিক পুলিশ ছিল। আপনি চাইলেই বলতে পারতেন যে আমি আপনাকে বিরক্ত করছি। তখনই আপনি ছাড়া পেয়ে যেতেন।" মেয়েটা গুরুগম্ভীর ভঙ্গিতে মাথা নেড়ে বলল, "হুম। ভুল হয়ে গেছে।" আমি হেসে বললাম, "আমার জন্যে অবশ্য ভালই হয়েছে। সেরকম হলে আমাকে আর দেখতে হতো না।" মেয়েটা হাসলো । আমি বললাম, "তবে আর যদি কখনও কেউ এমন প্যাঁচে ফেলতে চায়, প্যাঁচে পড়বেন না কিন্তু! দিন কাল ভাল না। মনে থাকবে?" "মনে থাকবে। ধন্যবাদ।" ""আরে না! আমার জীবনরক্ষাকারিণীর জন্য এইটুকু তো করতেই পারি।" "আপনার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার প্রশংসা করতে হয়। ট্রাফিক পুলিশ যে ছিল, পুলিশকে যে বলা যেত, খেয়ালই করি নি! আচ্ছা! আপনি কি শখের গোয়েন্দা নাকি?" "না। তবে বইয়ের গোয়েন্দা। মানে তুখোড় বইপোকা। বইপোকাদের পর্যবেক্ষণশক্তি ভাল হয়। হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়।" "ও! আপনার তো তাহলে বিশাল সংগ্রহ নিশ্চয়ই!" "অবশ্যই! প্রায় তের হাজার।" "আমার তো হিংসা হচ্ছে।" "দেখলে আরও হিংসা হবে।" "দেখব না হয় একদিন।" "তাহলে আমার ফোন নাম্বারটা রেখে দিন। যেদিন দেখতে মন চাইবে, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে চলে আসবেন। আমার আবার বই দেখাতে ভালোই লাগে।" "তাড়াহুড়ো কীসের? নাম্বার নেওয়া যাবে এক সময়। ডাক্তার আংকেল বলেছেন না তাড়াহুড়া না করতে?" বলেই হেসে ফেলল অপরিচিতা। সে তখন আর অপরিচিতা নেই। তাকে খুব কাছের কেউই মনে হচ্ছে। তাকে কি ব্যাপারটা খুলে বলা যায়? আমি পায়ের কাছে থাকা টবগুলোর দিকে ভীতসন্ত্রস্ত চোখে তাকিয়ে একটা ঢোক গিললাম। "আপনার কি তাড়া আছে?" জিজ্ঞেস করলাম আমি। "ছিল। এখন নেই।" রহস্য রেখে বলল সে। "আমার একটা উপকার করা যায়?" মেয়েটা কৌতূহলী হলো, "বলুন দেখি।" "আসলে আজ আমার পাত্রীর সাথে দেখা করার কথা। পাত্রী বলতে বিয়ের পাত্রী। আমার বাবা বিয়ে নিয়ে আমার পেছনে পড়ে গেছে। মোটামুটি সব বিয়েই আমি ভেঙ্গে দিয়েছি। কিন্তু এটা মনে হয় না আমি নিজে পারব। আমি বিয়ে করতে চাচ্ছি না। কিন্তু, এটা আমার কথায় ভাঙ্গবে না। কারণ, পাত্রী আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে। কিন্তু ভাঙ্গতে পারে, যদি পাত্রী নিজে বিয়েটা ভেঙ্গে দেয়।" "ও... তো কী করতে বলছেন?" "আপনি আমাকে একটু সাহায্য করবেন?" "কীভাবে?" "সারা আর কিছুক্ষণের মাঝেই চলে আসবে। বাবা ওকে এই ঠিকানাই দিয়েছে। আপনাকে শুধু একটু অভিনয় করতে হবে। যেন আপনি আমার প্রেমিকা।" মেয়েটা একটু ভাবনায় পড়ে গেল। "দেখুন! না করবেন না। নেহাতই বিপদে পড়েছি। নাহলে কখনও এ কথা বলতাম না।" "আচ্ছা।" মেয়েটা হেসে রাজি হয়ে গেল। আমরা পরবর্তী ঘটনা ঘটানোর সরঞ্জামাদি তৈরি করে তুলে রাখলাম। ততক্ষণে আরও দুটো ব্ল্যাকবেরী আইস্ক্রিম পটল তুলল। , চলবে,,,,


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩৬৩ জন


এ জাতীয় গল্প

→ হার্ট এটাক ( শেষ পর্ব )
→ হার্ট এটাক ( পর্ব-১ )
→ হার্ট এটাক

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • হৃদয়
    GJ Writer ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    অসাধারণ, wowwowwow আগে কেন পড়লাম নাweepweepweep লেখার ধরণ এবং প্রতিটা শব্দ বুনন অসম্ভব ভালো হয়েছে।অনেক সুন্দর করে লিখেছ gjgjgj