বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

অভাগা রাশেদ

"মজার গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Fabliha Naheen (০ পয়েন্ট)

X এই গল্পটার শুরু শুক্রবার রাতে। রাশেদের বাসায় কেউ ছিলো না। বাচ্চাদের নিয়ে বউ গেছে বাপের বাড়ি বেড়াতে। রাশেদ একা একা ভাবলো চা বানিয়ে খাবে। রান্নাঘরে গিয়ে শুরুতে চাপাতা খুজে পেল না কোনোভাবেই। দোকান থেকে কিনে এনে দেখে গ্যাস নেই। বিরক্ত হয়ে ছাদে গিয়ে পত্রিকায় আগুন ধরিয়ে চা বানালো। ঘরে এসে কোথাও চিনি খুজে পেল না। চা ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার পর চিনি পেল। আবার ছাদে গিয়ে গরম করে এনে চিনি মিশিয়ে চুমুক দিয়ে দেখে ওটা লবন ছিলো। প্রচন্ড রাগে চায়ের কাপ আছাড়া দিয়ে ভেঙে ফেললো রাশেদ। অন্য কিছু খাওয়ার আশায় ফ্রিজ খুলতে গিয়ে দেখে তালা দেয়া। বউএর কাছে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলো, 'চাবি কোথায়?' বউ যে কয় জায়গার কথা বললো তার কোথাও চাবি পেল না রাশেদ। টিভি দেখতে গিয়ে দেখে রিমোটের ব্যাটারি নষ্ট। একটা চ্যানেল চালু হয়ে আছে টিভিতে। দুই বিরক্তিকর ছেলেমেয়ে টাকে চুল গজানোর ঔষধ বিক্রি করার চেষ্টা করছে। দোকান থেকে রিমোটের ব্যাটারি কিনে টিভির চ্যানেল চেঞ্জ করার সাথে সাথেই কারেন্ট চলে গেল। রাশেদ চার্জার লাইট জ্বালাতে গিয়ে দেখে চার্জ করে রাখা হয়নাই জিনিসটা। সে অন্ধকারে বসে একা একা রাগে ফুসতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর কারেন্ট আসলো এবং রাশেদ কোথাও টিভির রিমোট খুজে পেল না। অথচ তার স্পষ্ট মনে আছে সোফার ওপরেই রাখছিলো একটু আগে। সিগারেটের তৃষ্ণা পেল কিন্তু তখন কোথাও দিয়াশলাই নাই। চা বানানোর জন্য ছাদে রেখে আসছে মেবি। ছাদে যাওয়ার জন্য দরজা খুলতে গিয়ে দেখে দরজা ভেতর থেকে লক হয়ে গেছে৷ আধাঘন্টা খুজেও চাবি না পেয়ে হাল ছেড়ে দিয়ে ক্লান্ত হয়ে রাশেদ এক গ্লাস পানি খেল। অর্ধেক পানি খাওয়ার পর খেয়াল হলো গ্লাসের মধ্যে মরা একটা পোকা ভেসে আছে। সে আর নিজের ধৈর্য ধরে রাখতে পারলো না। রাগে কাপতে কাপতে পানির গ্লাসটা ফেলে দিয়ে বিছানার নীচ থেকে হকিস্টিক এনে সর্বশক্তি দিয়ে ঘরের আসবাবপত্র ভেঙে গুড়োগুড়ো করে ফেললো। টিভি, ফ্রিজ, টেবিল, চেয়ার, বাসন, চুলা, আলমারি, শোকেস কিছুই রেহাই পেল না। . পরদিন সকালে রাশেদের রিয়েলাইজ হলো সর্বনাশ হয়ে গেছে। তার সব শেষ। সে নিজ হাতে নিজের সবকিছু শেষ করে ফেলেছে। দেখে মনে হচ্ছে ঘরের মধ্যে ট্রাক্টর চালিয়ে কেউ আসবাবপত্র চষে রেখে দিয়েছে। রাগে মাথায় রক্ত উঠে গেল রাশেদের। সে ভাবলো এই কাজ যে করেছে তার কঠিন শাস্তি পাওয়া উচিত। সে যেই হোক। রাশেদ নিজে হলেও কোনো মাফ নাই। তার এতোবড় সর্বনাশের শাস্তি সে যেভাবেই হোক দিয়েই ছাড়বে। . ঘরে টাকাপয়সা যা ছিলো সব পকেটে নিয়ে বের হলো রাশেদ। পুলিশ স্টেশনে গিয়ে মামলা করে দিলো। ওসি সাহেব আসামীর নাম জিজ্ঞেস করায় রাশেদ বললো, 'লিখেন, রাশেদুল হক, পিতা আফজাল হক, দৌলতপুর, খুলনা। ডাকাতি, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, হত্যাচেষ্টা সহ যত কেস আসে সব দিবেন। টাকাপয়সা ব্যাপার না। কিন্তু আসামী যেন কোনোভাবে বাঁচতে না পারে। আর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কথা, কেস দেয়ার আগে কঠিন মাইর দিবেন। হাত পা ভেঙে দিতে পারলে সবচাইতে ভালো হয়। শালা লোক চিনেনাই। আমার ঘরে ভাঙচুর করে।' ওসি সাহেব বললেন, 'আচ্ছা দেখছি, কি করা যায়।' রাশেদ পকেট থেকে বিশ হাজার টাকা বের করে ওসির হাতে দিয়ে বললো, 'দেখতেছি না, এক্ষুনি ফোর্স পাঠান। বিকালের মধ্যে আমি ঐ হারামজাদার হাড্ডি মাংস আলাদা দেখতে চাই।' টাকা পেয়ে ওসি সাহেব গদগদ হয়ে গেলেন খুশিতে। বললেন, 'আপনার শত্রু মানে আমারো শত্রু। দাড়ান দেখাইতেছি পুলিশ কি জিনিস। আপনি বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে একটা ঘুম দেন। আমি ঐ লোককে হাসপাতালে পাঠায়ে আপনাকে খবর দিব। এসআই মতিন থানায় আসার সাথে সাথে ফোর্স পাঠাচ্ছি।' . রাশেদ বাসায় আসার চল্লিশ মিনিটের মধ্যেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলো। এসআই মতিন এসেছে ধরতে। জিজ্ঞেস করলো, 'রাশেদুল হক, পিতা আফজাল হক, কি আপনি?' রাশেদ হ্যা বলার সাথে সাথে এসআই মতিন প্রচন্ড এক থাপ্পড় দিয়ে রাশেদকে নীচে ফেলে দিলো। একই সাথে একের পর এক লাথি। দশমিনিট প্রচন্ড মার খেয়ে রাশেদের মনে হলো নিজের নামে কেস করার ব্যাপারটা খুব বাজে ডিসিশন হয়েছে। কেস তুলে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে। . কিন্তু সব শুনে ওসি সাহেব অবাক হয়ে বললেন, 'আপনার সমস্যা কি ভাই? আপনি কি পাগল? নিজের নামে কেস কে করে?' - আমার ভুল হয়ে গেছে। আমাকে বাঁচান। - কিন্তু কেস লেখা হয়ে গেছে। এখন এভাবে তুলে ফেলা সম্ভব না৷ এটা কোর্টে উঠবে। কোর্ট ডিসিশন নিবে আপনি অপরাধী কি না। রাশেদ কেস বন্ধ করার জন্য দিলো আরো ত্রিশ হাজার। ওসি সাহেব আবারো গদগদ গলায় বললেন, 'আপনি বাসায় যান, আর কোনো সমস্যা নেই।' . এদিকে বাসায় এসে ঘরের অবস্থা দেখে পুনরায় রাশেদের মাথায় রক্ত উঠে গেল। সে কি করবে ভাবতে ভাবতে একটা আইডিয়া পেল। কয়েকজন সাংবাদিক ডেকে এনে প্রেস ক্লাবে গিয়ে এই মর্মে সংবাদ সম্মেলন করে ফেললো যে, 'ওসি আশরাফ টাকা নিয়ে তার কেস বন্ধ করে দিয়েছে। সে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চায়। সে দেশের নিরীহ একজন নাগরিক, তার ছোট ছোট দুইটা বাচ্চা, সে কারো সাতে পাচে নেই, অথচ তার বাসাতেই ভাঙচুর? কিন্তু পুলিশ টাকা খেয়ে আসামীকে ছেড়ে দিল। এই কি দেশের বিচার ব্যবস্থা? এভাবে চললে দেশের জনগন তাদের সাথে অবিচারের জন্য কার কাছে যাবে।' . এহেন ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচন্ড ভাইরাল হয়ে যাওয়াতে রাত দশটার মধ্যে রাশেদকে আবার বাসা থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেল পুলিশ। ওসি আশরাফকে সাময়িক সাসপেন্ড করা হলো। . ভারপ্রাপ্ত ওসি সাহেব বললেন, 'উপর থেকে চাপ আসছে। কেস আবার ওপেন করতে হবে। বাকি ফায়সালা কোর্টে।' সারারাত থানায় থেকে মশার কামড় খেয়ে রাশেদের মনে হলো সংবাদ সম্মেলন করা ঠিক হয়নাই। যথেষ্ট ভুল হইছে। কিন্তু এবার ওসি সাহেব টাকা নিয়েও কেস তুলতে রাজি হলেন না। বললেন, 'বিষয়টা মিডিয়াতে আসার কারণে এখন আর আমার হাতে নাই। আপনাকে ছেড়ে দিলে আগের ওসির মত আমার চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়বে।' রাশেদ আমতা আমতা করে বললো, 'কিন্তু স্যার কেস তো আমি নিজেই করেছি। আমি তুলতে পারবো না?' ওসি সাহেব সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে বললো, 'না, পারবেন না। কারণ আসামীও তো আপনি। আপনি যে ফাইজলামি শুরু করেছেন এটা আপনার হাত থেকে বের হয়ে গেছে। এমনকি আমারও কিছু করার নেই।' - তাহলে এখন আমি কি করব? ভারপ্রাপ্ত ওসি সাহেব উদাস গলায় বললেন, 'জানি না বাকিটা পরের পর্বে দেওয়া হবে


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪১৩ জন


এ জাতীয় গল্প

→ অভাগা রাশেদ ২

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • Fabliha Naheen
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ সবাইকে

  • Farhan Hossain
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    gj যা হাসি পাচ্ছে gj নিজের নামে নিজে…gj

  • SIAM The Deadman
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    : laughlaugh

  • মেহেরাজ হাসনাইন
    Golpobuzz ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    প্রথম বেলায় তার কপাল খারাপ ছিল কিন্তু পরে সে নিজের কপাল নিজেই.. .gj। এনিওয়ে ভালো হয়েছে ...

  • আমি কে.....
    User ৩ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    গল্পটা পড়ে হাসব না কাদব ভেবে পাচ্ছি না।।।।রাশেদের তার জিনিস ভাঙ্গা আর পুলিশ স্টেশনে ডায়রি করার জন্য হাসি পাচ্ছে।।।আর এখন কান্না করছে কারণ পুলিশ তারে কি না মার দিল।।