বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ব্যাচেলর জীবনে পা দিয়েছি খুব বেশি দিন হয়নি। মা-বাবা শিফট করায় পুরনো বন্ধু আতিককে নিয়ে দোতলা একটা মেসে উঠছিলাম। প্রথম দুই দিন ডিম ভাজি আর ডাল-ভাতে বেশ চলে গেল। তৃতীয় দিন বন্ধু বায়না ধরল গোশত খাবে। তবে বিড়ালের গলায় ঘণ্টাটা কে বাঁধবে? এমন প্রশ্নে বন্ধু আতিক বিদ্রোহ ঘোষণা করল। সে দুদিন টানা রান্না করছে, এখন সিরিয়াল আমার।
বেশ তাই হবে। তবে আমাকে হেল্প করতে হবে এমন শর্তে আতিক সম্মতি দেওয়ায় লেগে পড়লাম গোশত রান্নার সরঞ্জাম, মানে উপকরণ গোছাতে। আদা, রসুন, পেঁয়াজসহ আর যা যা লাগে সব রেডি। তবে মুশকিল হলো এগুলো বাটা হবে কোথায়?
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য এ বয়সের গুণগান গেয়েছেন। এ বয়স থেমে থাকার নয়! আমরাও তাই থেমে থাকলাম না। পরনের লুঙ্গি মালকোচা করে আদাজল খেয়ে নেমে পড়লাম। বুদ্ধিটা আমার মাথা থেকেই বের হলো। যা যা বাটা লাগবে, তা সিদ্ধ করে আলুর মতো ভর্তা করলেই বাটার মতো মিহি হয়ে যাবে। ব্যস! বন্ধু আতিক বেশ আবেগ নিয়ে আমার পিঠ চাপড়ে দিল।
মসলাগুলো সিদ্ধ হয়ে এলে ফ্লোরে বাটির ওপর রেখে স্টিলের গ্লাস দিয়ে কয়েকবার চাপ দিতেই একেবারে চ্যাপ্টা। কিন্তু সমস্যা হলো দারুচিনি আর গোল মরিচ কেন মিহি হলো না? চিন্তা করছি, এমন সময় দেখি বন্ধু আতিক গ্লাস দিয়ে ফ্লোরে রাখা বাটিতে জোরে জোরে টাক মারছে। মনে হলো ছোটখাটো কোনো ভূমিকম্পে যেন পুরো বাড়িটা কেঁপে উঠল! আর তখনই ঘটল আসল ঘটনাটা। মসলাগুলো নিউটনের সূত্র উপেক্ষা করে বেশ দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ল।
যা হোক, পরিস্থিতি শান্ত হলে সেগুলো কুড়িয়ে পানিতে ধুয়ে চুলার পাশে রেখে দিলাম। বাড়িওয়ালার ফ্রিজ থেকে মাংস নিতে গিয়ে দেখি তাদের রুমে দুটো ইয়ে বড়ো তালা ঝুলছে। বুঝলাম তারা অগত্য যাত্রা করছে। তাই বলে থেমে থাকিনি। তত্ক্ষণাত্ দোকান থেকে মুরগি এনে কেটেকুটে রেডি করলাম। চুলায় তেল গরম করে ভর্তা করা মসলা, মরিচ, গুঁড়া মরিচ, ধনেপাতা, আলু দিয়ে নাড়তে লাগলাম। প্রথমে ধনেপাতাটা ঝামেলার মনে হলেও পাত্তা দিলাম না। তবে কেমন যেন তেল হচ্ছে না বলে মনে হচ্ছিল। তাই বন্ধুকে অনুরোধ করে তেল আনালাম। মাকে রান্না করার সময় দেখেছি আলুর ওপর পর্যন্ত তেল ভাসতে, আমাদের তরকারিটারও ভাসতে হবে। কিন্তু তেল এত বেশি লাগছে কেন? তখন মনে পড়ল মা তেলের পরে পানিও দিত। তেল নদীতে পড়লে যেমন উদ্ধার করা অসম্ভব ঠিক আমাদেরটারও একই দশা। কী আর করা!
কড়াইয়ে গলা সমান পানি দিয়ে ঢেকে দিলাম। বেশ নিশ্চিন্ত মনে রুমে এসে ফেসবুকে ঢুকে বেশ ইমোশনাল একটা স্ট্যাটাস আপডেট দিলাম। ‘বন্ধুরা, ছোটবেলা থেকে মা রান্না করে খাইয়েছে, আর সব ঠিকঠাক থাকলে সাত বছর পরে হয়তো বউ খাওয়াবে। কিন্তু এখন? সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। তাই বলে না খেয়ে থাকব সেটা কি হয়! তাই মুরগি রান্না করছি। চলে আসো, চিল হবে উইথ চিকেন!’
অতি উত্সাহী কেউ কেউ কমেন্টে বাসা কোথায় জানতে চাইলে রিপ্লাইয়ে জানিয়ে দিলাম। যদিও প্রথম রান্নাটা একটু বেশি করে বেশ মজা করে খাবার ইচ্ছেতে পেটে ছুঁচো দৌড়াচ্ছিল।
পাকা আধা ঘণ্টা পরে ডাক পড়ল। পাশের বাসার বড় ভাইরা জানতে চাইছিল আমাদের রান্না কখন শেষ হবে! আর তখন মনে পড়ল, চুলায় তো তরকারি বসানো!
ঢাকনা খুলে নাড়া দিয়ে লবণ চেক করব, তখন মনে পড়ল, আহারে লবণই তো দিইনি! বন্ধুকে তলব করতেই নিয়ে এল। তবে লবণ দিতে গিয়ে খেয়াল হলো তরকারির রং কেমন কালচে হয়েছে! ও হ্যাঁ! কারণটা হলুদও দেওয়া হয়নি!
প্যাকেট থেকে হলুদ ছিটিয়ে দিয়ে নাড়া দিচ্ছি কিন্তু তরকারি হলুদ হওয়ার নাম-গন্ধই নেই! দিলাম এক খাবলা ঢেলে। বেশ কিছুক্ষণ পরে কেমন যেন হলুদ হলুদ একটা গন্ধ আসতে লাগল নাকে। থোড়াই কেয়ার করলাম গন্ধের!
আরো কয়েক মিনিট পরে তরকারি এনে খেতে বসেছি। তবে খাওয়ার আগে অবশ্যই সেলফি। প্রথম বলে কথা! জীবনে প্রথম সবকিছুতেই একটা আলাদা আবেগ কাজ করে। আমারও করল। মুখের কাছে হলুদে গন্ধওয়ালা মুরগির রান ডান হাতে ধরে ক্লিক করলাম। সঙ্গে সঙ্গে স্ট্যাটাস, ‘চলে আসো বন্ধুরা, চিল হবে উইথ চিকেন।’
দেখলাম যে বন্ধু পাশে বসা ছিল সেই আতিকই হাওয়া। ভাবলাম, খাওয়ার আগে হয়তো কমাতে গেছে; বেশি খেতে পারবে ভেবে, কী এক্সট্রাঅর্ডিনারি!
আমি খেতে শুরু করলাম। একটু ঝাল আর হলুদ বেশি হলেও চলছিল। কিন্তু গোশতে কামড় মারতেই বোমাটা ফাটল। এর মধ্যে আতিক রুমে এসে গ্লাসের পর গ্লাস পানি খেয়ে শুয়ে পড়ল। বেচারা বমি করতে করতে বেশ ক্লান্ত! আমি এঁটো রান্নাঘরে রেখে মোড়ের দোকান থেকে দুইটা ডিম আনলাম। কড়াইয়ে তেল দিয়ে চুলার কর্নারে টাক দিয়ে ছেড়ে দিলাম। দু-চিমটি লবণ দিয়ে এপিঠ-ওপিঠ ভেজে নিয়ে আবারও খেতে বসলাম।
ঘটনাটা এখানে থামলে ভালো হতো! কিন্তু হলো না! বাড়িওয়ালা ভাড়া নিতে এসে বলল, ‘বাবারা এ মাসে আরো বিশ দিন আছে, তোমরা অন্য জায়গায় বাসা দেখ। তোমাদের বাসা ভাড়া দেব না!’
কেন দিতে পারবে না, সেটা আর জানতে চাইলাম না। তবে গোশত রান্নার ঘটনায় শুধু বাসাই না, এর মাঝে হারিয়ে ফেলেছি পুরনো গার্লফ্রেন্ড শান্তাকে। তাকে কথা দিয়েছিলাম, ছয় মাসের মাথায় সম্পর্কটা পরিণত করব, কিন্তু ফেসবুকে স্ট্যাটাসে বলেছিলাম, সাত বছর পর বউ রান্না করে খাওয়াবে! আর সেটাই ব্রেকআপের কারণ! ফেরাতে চাইনি, কারণ, রাগে যেভাবে তুই-তুকারি করে শাসিয়েছে, তাতে আমার আত্মারাম খাঁচাছাড়া।
তবে এর থেকেও বাজে ঘটনা ঘটল দুই দিন পরে। পুলিশ রুমে এসে খানাতল্লাশ করে গেল। অনেক ভাবে জেরা করতে লাগল, ফ্লোরে কেন এমন শব্দ হচ্ছিল, বোম-টোম বানাই কিনা? এমন প্রশ্ন অফিসারসহ এলাকার প্রায় সবাই জিজ্ঞাসা করতে লাগল। তবে সন্দেহ, যদি তাদের সঠিক উত্তরটা দিতাম, তাহলে তারা বিশ্বাস তো করতই না, বরং পাগল ভাবত! তাই চেপে গেলাম। কেউ বলবেন না যেন!
(গল্পটি দৈনিক ইত্তেফাকের ফান ম্যাগাজিন ‘ঠাট্টা’য় প্রকাশিত।)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
কাব্য চৌধুরী•_•নীড়-হারা-পথিক
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেকাব্য চৌধুরী•_•নীড়-হারা-পথিক
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেEra Islam (Rafa)
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMH2
GJ Writer ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেকাব্য চৌধুরী•_•নীড়-হারা-পথিক
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেকাব্য চৌধুরী•_•নীড়-হারা-পথিক
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMH2
GJ Writer ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেEshrat Jahan
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMH2
GJ Writer ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেEshrat Jahan
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেকাব্য চৌধুরী•_•নীড়-হারা-পথিক
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেকাব্য চৌধুরী•_•নীড়-হারা-পথিক
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMH2
GJ Writer ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেEshrat Jahan
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেকাব্য চৌধুরী•_•নীড়-হারা-পথিক
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেEshrat Jahan
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেকাব্য চৌধুরী•_•নীড়-হারা-পথিক
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেEshrat Jahan
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বে⏩المامون ⏩
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেEshrat Jahan
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেEshrat Jahan
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেEshrat Jahan
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেকাব্য চৌধুরী•_•নীড়-হারা-পথিক
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেM.H.H.RONI
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেইশিকা ইশু
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেইশিকা ইশু
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেইশিকা ইশু
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেকাব্য চৌধুরী•_•নীড়-হারা-পথিক
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMH2
GJ Writer ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেহেলাল নিরব
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMH2
GJ Writer ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেহেলাল নিরব
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেSM Samiya Mahejabin
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেহেলাল নিরব
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেSM Samiya Mahejabin
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেহেলাল নিরব
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেEshrat Jahan
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেহেলাল নিরব
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেহেলাল নিরব
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেTasnova Afrin
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেTasnova Afrin
User ৪ বছর, ১ মাস পুর্বেMr.Mofi(Mofizul)
Golpobuzz ৪ বছর, ১ মাস পুর্বে