বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

মর্গ♣রহস্য-১

"রহস্য" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান ♥Imran khan♥ (০ পয়েন্ট)

X মর্গ♣রহস্য ১ম পর্ব লেখক-ইমরান খান লাশকাটা ঘর। ইংরেজিতে mortuary। একে মর্গ বা ডোমঘরও বলা হয়। লাশকাটা ঘরে বিভিন্ন লাশকে কেটে কুটে মৃত্যুর রহস্য উদ্ধার করা হয়। একজন ফরেনসিক স্পেশালিষ্ট এর তত্ত্বাবধানে কয়েকজন ডোমের দ্বারা লাশ কাটা হয়। কেউ লাশ কাটে, কেউ শুধু মাথা ফাটিয়ে মগজ বের করে, কেউ শুধু কাটা লাশ সেলাই করে, আর কেউ মেঝে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা, দেয়ালে লেপ্টে থাকা রক্ত পরিষ্কার করে। কোন কোন জায়গায় আরও একজন মানুষ থাকে। সে বেওয়ারিশ অর্থাৎ লাশকাটা ঘরের ফ্রিজে অনেকদিন যাবত পরে থাকা লাশের কোন অভিভাবক না পেলে সে সেগুলো এম্বুলেন্সে করে গণহারে কবর দেয়। লাশকাটা ঘর শুধু সরকারি মেডিকেলেই থাকে। আর এই ঘরটা হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ সব ভবন থেকে যথেষ্ট দূরে,নির্জন স্থানে থাকে। রাতের বেলা তো দূরে থাক, দিনের বেলাতেও সেদিকে যেতে মানুষ ভয় পায়। আর ঘরের ভিতর এত বিশ্রী গন্ধ! কোন সুস্থ্য স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে ঘন্টাখানেক টিকে থাকা সম্ভব না। প্রথমদিন যদি আপনি যান, কোন পঁচা লাশ কাটার গন্ধ পেয়ে আপনি অজ্ঞান ও হয়ে যেতে পারেন। আর সেই ঘরের গন্ধ আপনি পরবর্তী ১০-১৫ দিন পাবেন। যেখানেই যান, যত স্প্রে মেরেই যান এই গন্ধ আপনার পিছু ছাড়বে না। আপনি খেতে বসেও সেই গন্ধ পেতে পারেন! আমি ১০ দিন ছিলাম। সে এক তিক্ত অভিজ্ঞতা!! এরকমই এক সরকারি মেডিকেলের লাশকাটা ঘরের দায়িত্বে আছেন কাল্লু মিয়া। সবাই অবশ্য লাশকাটা কাল্লু বলে ডাকে। বিগত ৩৫ বছর ধরেই সে লাশ কাটে। তার দুই ছেলে ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। আর এক মেয়ে এবার এস এস সি দিবে। অবশ্য কাল্লু মিয়ার পরিচয় তার ছেলেরা দেয়না। বাবা ডোমের কাজ করে এটা বলতে তারা নারাজ। এলাকায় ও সবাই কেমন আড়চোখে দেখে তাকে। মনে হয় তাকে এড়িয়ে যেতে পারলেই সবাই বাঁচে। সংসারে তেমন শান্তি নেই তার। তাই ছুটি পেলেও গ্রামে আসেনা সে। দুই ঈদ ছাড়া তেমন বাড়ি যাওয়া হয়না তার। সেদিন মর্গের দ্বিতীয় তলায় নিজের রুমে বসে সিগারেট খাচ্ছিল সে। কিছুক্ষণ পর তার এক সহকারী রাজিব আসলো। রাজিবও লাশ কাটায় মোটামুটি দক্ষ। ৮ বছর চাকরির বয়স। এখন অবশ্য আপাতত মাথা ফাটায়। তবুও মাঝে মাঝে কাটতে দিলে ৩ -৪ মিনিটেই এক লাশ কেটে শেষ করে ফেলতে পারে। অনেকদিন ধরেই কাল্লু চাইছিল তার আরও ২ জন সহকারী থাকুক। রুম পরিষ্কার করা, লাশ সেলাই করার জন্য দক্ষ মানুষের প্রয়োজন। কলেজ থেকে লোভনীয় টাকার অফার থাকলেও ভয়ে কেউ এই চাকরি করতে চায় না। আজ রাজিব সাথে করে দুজনকে নিয়ে এসেছে। রাজিবের পূর্ব পরিচিত। যেকোন চাকরি দিলেই তারা করতে রাজি ছিল। লাশকাটাঘরে থাকতে হবে এটা শুনে প্রথমবার নাক শিঁটকালেও পরে রাজি হয় তারা। একজন রাজিবের বন্ধু আরিফ, অন্যজন এলাকার ছোট বোন রাজিয়া। কাল্লু দুজনকেই কাছে ডাকলো। --আরিফ ভাই, পড়ালেখা কতদূর? --এইট পাশ। --তুমি কি চাকরি নিয়েছ, সেটা সম্পর্কে জানো? --লাশ সেলাই? --হ্যা। ভয় পাইবা না? লাশ ডরাও না? --ডরাই। কিন্তু পেটের দায়ে আসতে হল। মানুষ পারেনা এমন কিছু নেই। আপনি শুধু শিখিয়ে দিবেন। পারবো আমি। --আচ্ছা রাজিয়া, তোমার কি কাজ কিছু জানো? --রুম পরিষ্কার করা, আপনাদের রান্না করা। --তুমি মেয়ে মানুষ হয়ে এই কাজ করতে আসলা কেন? এটা অনেক রিস্কের কাজ। রাতে লাশেরা কথা বলে, হাঁটে, হাসে, এসব যদি দেখ, ঠিক থাকতে পারবা? এটা শুনে রাজিয়া কান্না করে দিল। সে কি কান্না! কাল্লুই তাকে স্বান্তনা দিল। কিভাবে থাকতে হবে সব বুঝিয়ে দিল। ওদের বিদায় দিয়ে দরজা লাগিয়ে ঘুমিয়ে গেলো। পরদিন সকাল ১১ টার দিকে ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টের হেড আসলেন। সাথে ৫০ জন মেডিকেল স্টুডেন্ট। স্যার তাদের কিভাবে পোস্ট মর্টেম করতে হয় তা দেখাবেন। তার আগে বেসিক কিছু জিনিস সম্পর্কে ধারণা দিলেন। কিছুক্ষন পর কাল্লু মিয়ার ডাক পরলো। মাত্রই একটা লাশ মর্গে ঢুকেছে। বাইরে আত্নীয় স্বজন বসে আছে। কান্নাকাটি করতেছে। তাড়াতাড়ি লাশটা কেটে দিয়ে দিতে বলছে। বাসায় নিয়ে কবর দিয়ে দিবে। তাই স্যার কাল্লু মিয়াকে তাড়াতাড়ি হাত লাগাতে বললেন। কাল্লু ধারালো ছুরি টা হাতে নিয়ে, লাশের মাথার নিচে রাখা শক্ত কাঠের টুকরো তে শান দিয়ে লাশের নাভি থেকে এক হ্যাঁচকা টানে গলা অব্ধি আসলেন। তারপর আস্তে আস্তে বুকের হাড় কাটলো। হৃদপিন্ড বের করে মাঝ বরাবর চাকু চালালেন। তারপর স্টমাক কাটলো। ক্ষুদ্রান্ত, বৃহদান্ত কাটলো। বৃহদান্তে চাকু লাগার পরেই এক বিশ্রী গন্ধে পুরো মর্গ ছেয়ে গেছে। এই গন্ধেই অজ্ঞান হয়ে গেল রাজিয়া। তাকে বাইতে পাঠানো হল। রাজিব হাতুড়ি দিয়ে মাথা ফাটিয়ে মগজ বের করল। মোটামুটি সবকিছু পরীক্ষা করার পর আরিফ লাশটা সেলাই করে একটা সাদা কাফন পেঁচিয়ে বাইরে অপেক্ষারত আত্নীয়ের কাছে দিয়ে দিল। সেদিন সব মিলিয়ে আটটা লাশ কাটা হলো। বেশ কয়েকদিন লাশকাটাঘরে থাকতে থাকতে আরিফ আর রাজিয়া বেশ মানিয়ে নিল নিজেদের। এখন আর কেউ লাশের গন্ধে অজ্ঞান হয়ে যায় না,নাক চেপে ধরে না,রুম থেকে বের হয়ে বমি করে না। সেদিন রাতের বেলায় একটা লাশ আসলো। রাতে সচরাচর পোস্ট মর্টেম করার নিয়ম নেই। পরদিন সকালে স্যার যখন পোস্ট মর্টেম করতে আসলেন, কাল্লুকে লাশ বের করতে বললেন। চাদরে ঢাকা লাশ বের করতে এমন এক জিনিস দেখা গেল যা উনারা এর আগে দেখেন নি। লাশের পায়ের এবং হাতের মাংস অনেকখানি নেই। বুঝা যাচ্ছে কেউ দাঁত দিয়ে কামড়ে দিয়েছে। দাঁতের ছাপ স্পষ্ট। কে করতে পারে এই কাজ? কাল্লু?রাজিব?আরিফ?রাজিয়া? নাকি অন্য কেউ? স্যার সেদিন এই লাশ কাটেন নি। মর্গে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার রহস্য উনাকে বের করতেই হবে। নইলে দেখা যাবে সব লাশের সাথেই এমন হচ্ছে। লাশটা প্যাকেট করে রেখে দিলেন। পরদিন যখন আবার অন্য লাশ কাটতে গেলেন তখন স্যার এই লাশটা একবার দেখতে চাইলেন। কাল্লু,রাজিব,আরিফ,রাজিয়া সবাই তন্যতন্য করে পুরো মর্গ খুঁজল। কিন্তু কোথাও সেই লাশের অস্থিত্ব নেই! ডিপ ফ্রিজেও খোঁজা হল। না সেখানেও নেই। স্যার দারুণ চিন্তায় পড়লেন। জীন,ভূতের কাজ কি? আসলেই এমন কিছু আছে? লাশ তো চলতে পারেনা। তাহলে কোথায় গেল? কিভাবে গেল? এর উত্তর যে করেই হোক বের করতেই হবে।!!! চলবে,,,,, ♥♥♥♥


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৬৩৫ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now