বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

হালুম হুলুম...শেষ

"মজার গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রামীম (০ পয়েন্ট)

X মানুষ খুঁজতে-খুঁজতে হালুম এক সময় এক গেরস্থের বেগুন-খেতের কাছে এসে হাজির। এদিকে গেরস্থ করেছিল কী, কাক তাড়ানোর জন্যে একটা কাকতাড়ুয়ার মূর্তি বানিয়ে বসিয়ে রেখেছিল বেগুন-খেতের মধ্যে। খড় দিয়ে বাঁধা লম্বা লম্বা হাত-পায়ের উপর একটা ঢোলা জামা পরানো, মাথার দিকে একটা কালো হাঁড়ি উপুড় করে চুন দিয়ে তার উপর চোখমুখ আঁকা। অবিকল মানুষের মত। তাই দেখে হালুম তো আহ্লাদে আটখানা। এতক্ষণে একটা মানুষ পাওয়া গেছে। মামার বর্ণনার সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে। খিদের মুখে গোটা মানুষটাকে চিবিয়ে এক্খুনি অন্নপ্রাশন করে ফেলবে সে। এই না ভেবে পেছন থেকে গুটিসুটি মেরে এগোতে এগোতে হালুম করল কী, লেজ বাঁকিয়ে থাবা বাগিয়ে সোজা মারল এক তিড়িং লাফ। ক্যাঁক করে কামড়ে ধরল মানুষটার এক পায়ে। ইসস্— ওয়াক্-থু-থু! কী সব গজগজ করছে তার মুখের মধ্যে! তাড়াতাড়ি পা ছে়ড়ে দিয়ে প্রাণপণে থুথু ফেলতে লাগল হালুম। মুখটা তার বিচ্ছিরি বিস্বাদ হয়ে গেছে একেবারে। রেগেমেগে মেজাজ খারাপ করে হালুম তখন আর-একটা পা কামড়ে ধরল। ওমা— সেই একই রকম যে, কোন রসকস কিচ্ছুটি নেই। দূর-দূর, এমন অখাদ্য হয় নাকি মানুষগুলো? কিন্তু সিঙ্গিমামা যে বলেছিল এত করে? ভেবেচিন্তে হালুম তখন মাথা লক্ষ্য করে মারল আর এক চিড়িং লাফ। অমনি হল কী, হালুমের মাথার জোর ধাক্কা লেগে কাকতাড়ুয়ার মাথার কালো হাঁড়িটা ফটাস করে ফেটে ছড়িয়ে পড়ল চারধারে। ব্যস্, আর যায় কোথা! মানুষ খাওয়া তো হালুমের মাথায় উঠল। কোত্থেকে কিসে যে কী হয়ে গেল কে জানে। কিছুই তার মাথায় ঢুকল না। বিলকুল ঘাবড়ে গিয়ে হালুম তক্‌খুনি এক লাফে পগার পার। ভয়ের চোটে চোঁচা কোনদিকে যে দৌড় মারল, তার ঠিকঠিকানা নেই। এদিকে হুলুমও বাঁদিকে যেতে যেতে এদিক পেরিয়ে ওদিক পেরিয়ে সেদিক পেরিয়ে মাঝরাত্তিরে এক শহরের কাছে এসে হাজির। যেখানে এসে পৌঁছল, সেখানে এক বড়লোকের বিরাট বাগানবাড়ি। হুলুম অবাক হয়ে চারপাশে তাকাল। এ আবার কোথায় এলাম রে বাবা! যা হোক বাড়ির চারপাশের বাগানে অনেক গাছপালা দেখে হালুম তো সাহস করে ঢুকল ভেতরে। ঢুকে গাছের আড়ালে আবডালে এদিক ওদিক ঘুরঘুর করতে লাগল। এখন তাড়াতাড়ি একটা মানুষ যোগাড় করা দরকার। কোথায় যে থাকে হতচ্ছাড়া মানুষগুলো! খিদের চোটে এদিকে যে পেটের নাড়িভুঁড়ি ছিঁড়ে যাচ্ছে সব। ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ এক জায়গায় হুলুমের চোখ আটকে গেল। ঐ তো একটা মানুষ না? হ্যাঁ, ঠিক— মামার বর্ণনার সঙ্গে কাঁটায়-কাঁটায় মিলে যাচ্ছে একেবারে। ঐ যে ওখানে লম্বা মতন একটা দেখা যাচ্ছে। ব্যস অমনি হুলুমকে আর পায় কে! খিদের জালায় হুলুমের আর তর সইল না। মানুষটাকে যেই না দেখা, সঙ্গে-সঙ্গে পাগলের মত ছুটে গেল হুলুম। গিয়ে একটা মোক্ষম কামড় বসিয়ে দিল মানুষটার পায়ে। আর দেখতে হল না! বাগানের সেই মানুষটা তো আসলে মানুষ নয়, পাথরের পরী মূর্তি একটা। কিন্তু হুলুম অতশত বুঝবে কী করে? খিদের মুখে যেই না হুলুম কামড় মেরেছে তার পায়ে, অমনি তার কচি-কচি দাঁতগুলো একেবারে মট মট মটাস— আর কী! আর ভাঙা দাঁত দিয়ে গলগল করে সে কী রক্ত! বাবা রে— মামা রে— হালুম রে— গেলুম রে— বলতে বলতে হুলুমের তো মূর্ছা যাবার যোগাড়। কিন্তু মূর্ছা গেলে চলবে কেন? কোন রকমে প্রাণ নিয়ে পালাতে হবে তো। দাঁতের যন্ত্রণা ভুলে হুলুম তখন আর পালাবার পথ পায় না। পরের দিন ভোরবেলা হালুম হুলুমের আবার দেখা হল সেই বনের ধারে। কিন্তু কেউ কাউকে তখন আর চিনতেই পারে না। কাকতাড়ুয়ার হাঁড়ি ভেঙে ভুষোকালি লেগেছে হালুমের মুখ জুড়ে। আর হুলুমের সারা মুখ তো রক্তে মাখামাখি। বাঘের বাচ্চা বলে আর তাদের চেনার জো নেই। দুজনেই অনেকক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল দুজনের দিকে। হালুম বললে, ‘‘তুই কে রে?’’ হুলুমও বললে, ‘‘তুই কে রে?’’ হালুম বলে, ‘‘আমি হালুম।’’ হুলুমও বলে, ‘‘আমি হুলুম।’’ তারপর দুজনের গলা জড়াজড়ি করে সে কী কান্না! কাঁদতে কাঁদতে হালুম হুলুম যে সেখান থেকে কোথায় চলে গেল, কে জানে। তবে সিঙ্গিমামার বাড়িতে আর তারা ফিরে যায়নি।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৫৩৯ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • বকুল রায়
    Golpobuzz ৪ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    ভালো