বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

খালিদ বিন ওলীদ - রাঃ পর্ব-৩

"ইসলামিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান MD Shohidul Islam Sahid (০ পয়েন্ট)

X আগের পর্বের শেষ থেকে........ দ্বিতীয় নেতা জবাব দিল- “আমরা মুহাম্মাদকে হত্যা করব। এটা অবিচার কিংবা কোনরূপ অন্যায় হবে না। কেননা ভাতিজার বদলে আমরা তোমাকে নিজেদের সন্তান দিচ্ছি।” “এটা খুবই অসঙ্গত প্রস্তাব” আবু তালিব বলেন। “তোমরা আমার ভাতিজাকে নিয়ে কতল করবে। আর আমি তোমাদের সন্তান লালন-পালন করব, অর্থাৎ তার পিছনে খরচ করব এবং তার সুন্দর জীবন গড়ে দিব । তোমরা আমার কাছে এ কেমন অযৌক্তিক প্ৰস্তাব নিয়ে এসেছে?... সম্মানের সাথে আমি তোমাদের বিদায় দিচ্ছি।” খালিদ দুই নেতার সাথে ভাইকে ফিরে আসতে দেখে এবং এ বিনিময় প্রস্তাব গ্রাহ্য না হওয়ায় তিনি সেদিন মনে মনে বড় খুশি হয়েছিলেন। “মুহাম্মাদকে তুমি কি মনে করেছ - আবু সুলাইমান” খালিদের ভিতর থেকে একটি প্রশ্ন উদয় হয়। তিনি চিন্তার রাজ্যে থেকেই মাথা নাড়ান এবং মনে মনে বলেন- কিছু নয়. এটা ধ্রুব সত্য যে, মুহাম্মাদ (স)-এর শরীরে প্রচুর শক্তি আছে। কিন্তু তাই বলে রুকানা বিন আব্দে ইয়াযিদের ন্যায় বাহাদুরকে উচু করে আছাড় দেয়ার জন্য দৈহিক শক্তিই কখনো যথেষ্ট নয়। রুকানা নবী করীম (স)-এর চাচার নাম। সে তখনো অমুসলিম। বাহাদুর হিসেবে তার খ্যাতি ছিল সমগ্র আরব জুড়ে। বিভিন্ন সময় বহু বীর-বাহাদুর তাকে চ্যালেঞ্জ করেছে। কিন্তু কেউ তার সামনে এসে টিকতে পারেনি। প্ৰত্যেককে দুগ্ধপোষ্য শিশুর ন্যায় পাঁজাকোলা করে এমন আছাড় মারে যে, তারা আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। লড়াই-মারামারিই ছিল তার পেশা। খালিদের পরিষ্কার মনে আছে যে, একদিন মুসলিম বিদ্বেষ ৩/৪ জন লোক রুকানাকে খুব পানাহার করিয়ে বলে যে, তোমার ভাতিজা কারো কথা শোনে না। কাউকে মানে না। সে কাউকে ভয়ও করে না। ইসলামের প্রচার-প্রসার থেকে নিবৃতও হয় না। মানুষ তার কথার যাদুতে ফেসে যাচ্ছে। তাকে একটু শায়েস্তা করতে পারবে? “তোমরা আমার হাতে তার হাড় গোড় চূর্ণ-বিচূর্ণ করাতে চাও?” রুকানা চেহারা কিছুটা বিকৃত করে অহমিকার স্বরে লোকদেরকে বল “তাকে আমার মোকাবিলায় এনে দাও তো... । সে আমার নাম শুনামাত্রই মক্কা থেকে পালিয়ে যাবে। না, না; তার সাথে লড়াই করা আমি নিজের জন্য দুৰ্ণামের কারণ মনে করি।” রুকােনা প্ররোচকদের কথায় সাড়া দেয় না। মূলত সে কাউকেও নিজের তুল্য বলে স্বীকার করত না। রুকানাকে রাজি করাতে না পেরে মুসলিম বিদ্বেষীরা থ হয়ে যায়। কিন্তু তাই বলে আশা ত্যাগ করে না। যে কোন উপায়েই হোক রুকানার হাতে রাসূল (স)-কে পরাজিত করে তাঁকে শায়েস্তা করতে বদ্ধপরিকর। মক্কার ইহুদীরা ছিল নবী করীম (স)-এর ভয়ানক দুশমন। কিন্তু তারা কখনো প্রকাশ্যে দুশমনি করত না। ভিতরে ভিতরে কুরাইশদের বিভক্তি ও তাদের মধ্যে বৈরীতা সৃষ্টি করতে চাইত। তাদের কানে এ খবর পৌঁছে যায় যে, কুরাইশদের কিছু লোক রাসূল (স)-এর সাথে কুস্তি লড়তে রুকানাকে প্ররোচিত করছে, কিন্তু সে সম্মত হচ্ছে না। কিছু দিন পর এক রাতে মক্কার এক গলি দিয়ে রুকানা যাচ্ছিল। তার পাশ দিয়ে অপূর্ব সুন্দরী এক ষোড়শী কন্যা অতিক্রম করে। জ্যোৎসা রাতে মেয়েটি রুকানাকে চেনে এবং মুচকি হাসি দেয়। রুকান ছিল বর্বর। সে নিজেও থেমে যায় এবং মেয়েটিও পথ আগলে দাঁড়ায়। “তোমার জানা নেই, কোন নারী পুরুষের দিকে চেয়ে মুচকি হাসলে তার অর্থ কি দাঁড়ায়?” রুকােনা বাহাদুর তাকে প্রশ্ন করে বলে “কে তুমি সুন্দরী? তোমার পরিচয় কি?” যুবতী জবাব দেয় “আমি আরমানের কন্যা সাবতী।” “ওহু... আরমান ইহুদীর কন্যা ?” রুকােনা একথা বলতে বলতে যুবতীর স্কন্ধে হাত রেখে তাকে কাছে টেনে বলে- “আমার শরীর কি তোমার এতই প্ৰিয়? আমার শক্তি কি... ।” “তোমার শক্তি আমাকে হতাশ করেছে।” রুকানার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে তার নিকট থেকে সরে যেতে যেতে সাবত বলে- “ তোমার ভাতিজা মুহাম্মাদকে তুমি ভয় কর তা আমি জানি।” “ কে বলে এমন কথা?” রুকানা গর্জে উঠে জিজ্ঞাসা করে। “সবাই বলে।” সাবত উত্তর দেয়-“আগে মুহাম্মাদকে পরাজিত করে দেখাও। আমার শরীরটা তোমাকে উপহার হিসেবে দিয়ে দেব।” “খোদার ছেলে-মেয়েদের শপথ! তোমার দাবি বাস্তবায়ন করেই তোমার সামনে এসে দাঁড়াবো।” রুকানা বলে- “তবে এটা বাস্তব যে, “আমি মুহাম্মাদকে ভয় করি বলে যে কথা তুমি শুনেছি তা একদম ভুল। আসল কথা হলো, আমার চেয়ে দুর্বলের সাথে লড়াকে আমি নিজের জন্য লজ্জাকর মনে করি। তবে এখন আমার আর কোন পরোয়া নেই। তোমার দাবি পূরণ করবই।” প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক ইবনে হিশামের মতে, রাসূলুল্লাহ (স) স্বয়ং রুকানাকে কুস্তি লড়তে আহবান করেন। কিন্তু ঐতিহাসিক ইবনুল আহীর নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রুকানাই সর্বপ্রথম নবী করীম (স) কে কুস্তি লড়তে আহবান করে এবং তাঁকে এ কথাও বলে যে – “ভাতিজা! তুমি বড় হৃদয়বান এবং সাহসী। আমি জানি তুমি মিথ্যা বলা ঘূণা কর। কিন্তু মানুষের বাহাদুরী। আর সততার বাস্তব প্রমাণ হল। লড়াইয়ের ময়দান। কুস্তির মঞ্চে আস। আমাকে পরাজিত করতে পারলে তোমাকে আল্লাহর প্রেরিত নবী বলে স্বীকৃতি দেব। আল্লাহর শপথ করে বলছি, তোমার ধর্ম কবুল করব।” “এটা চাচা-ভাতিজার লড়াই হবে না।” নবীজী (স) রুকানার আহবানের জবাবে বলেন-“এক প্রতিমা পূজারী বনাম এক সত্য নবীর লড়াই হবে। দেখ, পরাজিত হয়ে যেন আবার ওয়াদার কথা ভুলে না যাও।” মরুভূমির আঁধারের ন্যায় মক্কার ঘরে ঘরে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, মহা কুস্তিগীর রুকানা বনাম মুহাম্মাদের মধ্যে কুস্তি হবে। এতে পরাজিত ব্যক্তি বিজয়ীর ধর্ম গ্ৰহণ করবে। নির্দিষ্ট সময়ে মক্কার ছোট-বড়, নারী-পুরুষ এবং ইহুদীরা কুস্তিমঞ্চের নিকট এসে প্রচণ্ড ভীড় করতে থাকে। সবাই অপেক্ষমাণ। সকলের দৃষ্টি মঞ্চের দিকে। কখন কুস্তি শুরু হবে। মন ভরে উপভোগ করবে। দুই অসম লড়াকুর কুস্তিলড়াই। মুসলমানদের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র। তারা তরবারি এবং বল্লমে সশস্ত্র হয়ে কুস্তিমঞ্চের আশেপাশে সতর্ক অবস্থান নেয়। কেননা, তারা আশংকা করে যে, কুরাইশরা কুস্তি লড়ার বাহানা দিয়ে রাসূল (স)কে হয়ত হত্যা করে ফেলতে পারে। আরবের সবচেয়ে বীর্যবান এবং বিশাল বপুধারী কুস্তিগীর রুকানা ইবনে আব্দে ইয়াযিদ নবী করীম (স)-এর সাথে কুস্তি লড়তে মঞ্চে আসে। রাসূল (স) ও যথাসময়ে হাজির হন। রুকানা রাসূল (স)-এর প্রতি অবজ্ঞার দৃষ্টি হানে এবং উপহাস করতে থাকে। রাসূল (স) সম্পূর্ণ নীরব থাকেন। তিনি পূর্ণ স্থিরচিত্তে রুকানার চোখে চোখ রাখেন, যেন সে তাঁর অগোচরে আক্রমণ কিংবা আঘাত হানতে না পারে। রুকান রাসূল (স)-এর চার পাশে এভাবে ঘুরতে থাকে যেভাবে বাঘ শিকারীর চারপাশে তাকে কাবু করার জন্য ঘুরে। কৌতুহলী দর্শকরা রাসূল (স)কে ঠাট্টা করলেও মুসলমানরা ছিল চুপচাপ। তারা মনে মনে আল্লাহকে স্মরণ করছিল। সর্বোচ্চ সতর্কতা হিসেবে তাদের সবার হাত ছিল তরবারির বাটের উপর। আল্লাহ্ পাকই ভাল জানেন এরপর হঠাৎ কি হল। রাসূল (স) এমন পাল্টা আক্রমণ করলেন যে, মুহূর্তেই লড়াইয়ের মোড় ঘুরে গেল। জনতার উচ্চকিত আওয়াজ হঠাৎ স্তব্ধ হয়ে যায়। অবাক বিস্ময়ে জনগণ দেখল রাসূল (স)-এর অপূর্ব রণকৌশল আর শক্তির বিশালতা। ইবনুল আহীর লিখেন, রাসূল (স) রুকানাকে দুহাতে উচু করে ধরে জোড়ে আছার মারেন। এতে রুকানা আহত ব্যাঘের ন্যায় গর্জে উঠে রাসূল (স)-এর প্রতি আক্রমণে তেড়ে আসে। তিনি এবারও অপূর্ব কৌশলে হামলা করেন এবং তাকে ধরে আবার মাটিতে ছুড়ে মারেন। সে পুনরায় আক্রমণ করতে উঠে দাঁড়ালে রাসূল (স) তৃতীয় বারের মত আবার তাকে উপরে তুলে আছাড় মারেন। বিশাল শরীরে পরপর তিনবার প্রচণ্ড আঘাত খাওয়ায় রুকানা কুস্তি লড়তে অযোগ্য হয়ে যায়। সে মাথা নিচু করে কুস্তি মঞ্চ থেকে নেমে আসে। উপস্থিত জনতার উপর পিন-পতন নীরবতা নেমে আসে। সরব মুখগুলো হঠাৎই নিরব হয়ে যায়। ঘটনার আকস্মিকতা এবং ফলাফল বিপর্যয়ে কুরাইশদের মাথা নীচু হয়ে চুপসে যায়। অপরদিকে হাতে গোনা মুসলমানরা আনন্দে নাঙ্গা তলোয়ার এবং বর্শা উর্ধ্বদিকে উচিয়ে মুহুর্মুহু গগনবিদারী আওয়াজ দিতে থাকে। “চাচা রুকানা” রাসূল (স) উচ্চঃস্বরে ডেকে বলেন “আপনার অঙ্গীকার পূরণ করুন এবং এখনই ঘোষণা করুন যে, আজ থেকে আপনি মুসলমান।” কিন্তু রুকােনা ইসলাম গ্ৰহণ করতে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে । “এটা কেবল দৈহিক শক্তি বলে সম্ভব হয়নি।” খালিদ খেজুর বাগানে শুয়ে শুয়ে মনে মনে বলছিলেন - “রুকানাকে এভাবে তিন তিনবার আছড়ে মারা তো দূরের কথা, তাকে কেউ আজোবধি চিৎ করতে পারেনি।” এ মুহুর্তে খালিদের চোখের সম্মুখে নবী করীম (স)-এর চেহারা মোবারক কমনীয় হয়ে ভেসে ওঠে। শৈশবকাল থেকেই তিনি রাসূল (স)কে ভাল ভাবেই চিনতেন-জানতেন। কিন্তু কাল ক্রমে রাসূল (স)-এর জীবনের মোড় অন্যদিকে ফিরে যায়। নবুওয়াত লাভের পর তাঁর জীবন যেরূপে আলোকিত হতে থাকে খালিদ সে রূপের সাথে মোটেই পরিচিত ছিলেন না। মক্কায় তিনি নবুওয়াতের দাবি করার পর খালিদ তাঁর সাথে কথা বলাই ছেড়ে দেন। তিনি রাসূল (স)কে উত্তম শিক্ষা দিতে চান, কিন্তু রুকানার মত কুস্তিগীর নন তিনি হচ্ছেন্ন রণাঙ্গনের লড়াকু বীর যোদ্ধা। এবং যুদ্ধ পরিচালনা করায় তখনকার সময় তাঁর জুড়ি ছিল না। কিন্তু তখন মুসলমানদের লড়াই করার পরিস্থিতি ছিল না। মুসলমানরা যখন রণাঙ্গনে অবতীর্ণ হওয়ার উপযোগী হলো তখন কুরাইশদের সাথে তাদের প্রথম ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। তখন খালিদ এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হন যে, ঐ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা তার পক্ষে সম্ভব হল না। এ জন্য তার দুঃখ ছিল সীমাহীন। এ যুদ্ধে ৩১৩ জন মুসলিম বীর মুজাহিদ ১০০০ কুরাইশকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করে। সেদিন খালিদ এ বেদনাদায়ক সংবাদ দাঁত কামড়ে সহ্য করেছিলেন। কিন্তু আজ তিনি এক খৰ্জ্জুর বাগানে শায়িত। তার এখনো ভাবতে অবাক লাগে যে, নিরস্ত্ৰপ্ৰায় হাতে গোনা কয়েকজন লোক কিভাবে সশস্ত্ৰ এক দুর্ধর্ষ বিশাল বাহিনীকে এভাবে পরাভূত করে? তাইতো সেদিন তিনি পরাজিত কুরাইশ যোদ্ধাদের নিকট জানতে চান যে, তাদের মধ্যে এমন কোন বিশেষত্ব রয়েছে, যার ফলে তারা এমন অসম যুদ্ধেও বিজয়ের তাজ কেড়ে নিতে সক্ষম হল? খালিদ। এ সমস্ত কথা আওড়াতে আওড়াতে হঠাৎ উঠে বসেন এবং আঙ্গুলোর সাহায্যে বালুকাময় ভূমিতে বদর রণাঙ্গনের ছক একে কুরাইশ ও মুসলমানদের অবস্থান এবং যুদ্ধ চলাকালীন সময় গৃহীত বিভিন্ন কৌশল পরীক্ষা করেন। তার বাবাই তাকে যুদ্ধবিদ্যায় পারদশী করেছিল। বেয়াড়া এবং দুষ্ট ঘোড়া বাগে আনার প্রশিক্ষণও তাকে দিয়েছিল। ফলে যৌবনে পদার্পণের সঙ্গে সঙ্গে তিনি একজন বিখ্যাত অশ্বারোহী হয়ে উঠেন। উক্টারোহী হিসেবেও তিনি ছিলেন সমান দক্ষ। সে খালিদ কে কেবল সৈনিকই নয়, যোগ্য সিপাহসালার হিসেবে গড়ে তুলেছিল। ফলে হযরত খালিদ এমন যুদ্ধপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, সমর বিষয়ক বিভিন্ন কলা-কৌশল নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করতে শুরু করেন। সবেচি যোগ্যতা হাসিল করতে সক্ষম হন। বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে না পারার দুঃখ ছিল খালিদের। এ যুদ্ধে কুরাইশদের পরাজয় তাকে এমন বেদনাহত করে যে, তিনি এর চরম প্রতিশোধ গ্রহণের দৃঢ় শপথ করেন। কিন্তু তাঁর বর্তমান চিন্তা-ভাবনা ভিন্ন ধারায় পরিচালিত। মক্কা হতে যাত্রার ক'দিন আগে তিনি দুটি বিষয়ে গভীর চিন্তা করেন। এক. রাসূল (স) কর্তৃক বিখ্যাত কুস্তিগীর রুকানাকে উপযুপরি তিনবার কপোকাত করা । দুই, বদর যুদ্ধে মাত্র ৩১৩ জন দ্বারা হাজার সৈন্যের সশস্ত্ৰ বাহিনীকে পর্যদুস্ত করা। তিনি কিছুতেই একে দৈহিক শক্তির ফল বলে মানতে পারছিলেন না। তার সব সময় মনে হয়েছে, এটা অদৃশ্য শক্তিরই ফল। যার কাছে তারা বারবার পরাজিত হচ্ছে। অকেজো হয়ে যাচ্ছে তাদের হাতিয়ারগুলো। অসহায় হয়ে পড়ছে আরবের বিখ্যাত বীর-যোদ্ধারা, তারপরও বদর যুদ্ধের প্রতিশোধের আগুন তার মধ্যে দাউ দাউ করে জ্বলছিল। বন্দরের রণাঙ্গন হতে বহু সংখ্যক কুরাইশের বন্দির ব্যাপারটি কুরাইশ নেতৃবৃন্দের জন্য একটি মারাত্মক চপেটাঘাত ছিল। খালিদের মধ্যেও এর বিরাট প্রভাব পড়েছিল। তাঁর সুস্পষ্ট মনে আছে, বদর যুদ্ধ চলাকালে মক্কার সাথে কুরাইশ বাহিনীর যোগাযোগ ছিল সম্পূর্ণ বিছিন্ন। রণাঙ্গনের সংবাদ মক্কাবাসীরা কিছুই জানত না। এদিকে মক্কাবাসী অত্যন্ত উদ্ধেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে প্রতিটি দিন অতিবাহিত করছিল। তারা প্ৰতিদিন এ আশায় বদর পানে অপালক নেত্ৰে চেয়ে থাকে যে, ওদিক থেকে কোন অশ্বারোহীর আগমন ঘটবে। আর সে বিজয়ের সুসংবাদ শুনিয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করবে। শেষ কালে কোন অশ্বারোহী নয়; বরং এক উট্রারোহী তারা দেখতে পায়। অপেক্ষমাণ উৎকষ্ঠিত জনতা তার দিকে ছুটে যায়। কিন্তু এ আগম্ভক তাদের জন্য সুসংবাদ বয়ে আনেনি। সমবেত জনতার আবেগ-উচ্ছাস স্তদ্ধ হয়ে যায়, যখন তারা দেখে যে, সংবাদ বাহকের গায়ের জামা ছিড়া এবং সে ক্ৰন্দনরত। (চলবে)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৫৫৭ জন


এ জাতীয় গল্প

→ খালিদ বিন ওলীদ - রাঃ পর্ব-৪
→ খালিদ বিন ওলীদ - রাঃ পর্ব-২
→ খালিদ বিন ওলীদ - রাঃ পর্ব-১

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • MD Shohidul Islam Sahid
    Golpobuzz ৪ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    বুঝবো কিভাএ যে আছো

  • সাদ আহমেদ
    Golpobuzz ৪ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    আছিরে ভাই ...

  • MOSSADDIQE AL MAHMU TAMIM
    User ৪ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    কোনভাবে হইয়া গেছে

  • MD Shohidul Islam Sahid
    Golpobuzz ৪ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    কিভাবে ভাই আমি আলগা হলাম

  • MOSSADDIQE AL MAHMU TAMIM
    User ৪ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    ভাই কেউ আলগা হয় নাই ভাই আপনিই আলগা হয়ে গেছেন

  • MD Shohidul Islam Sahid
    Golpobuzz ৪ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    তোমরা আলগা হইয়া গেলা,,, তাই আর বেশ ডুকা হয় না

  • সাদ আহমেদ
    Golpobuzz ৪ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    খবরই নাই তো তোমার ??

  • MD Shohidul Islam Sahid
    Golpobuzz ৪ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    Tnx dear

  • সাদ আল হ্যারিরী
    Golpobuzz ৪ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    খুব সুন্দর