বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
প্রিয়মের কোনো খবর নেই। আমি আরও ব্যাকুল হয়ে গেলাম। পুরো পাগলের মতোই,চার মাসে ১২০ টা রাত আমি ঠিক ঘুমাইনি যদি প্রিয়ম ফোন করে আমি যদি সেই কল ধরতে না পারি এমন মনে হতো, তাই ঘুমাতে না পারি না, ওকে প্রত্যেক সপ্তাহে চিঠি লিখি কিন্তু তার উত্তর আসে না।পড়ালেখায় তো মনোযোগ নেই, কোনোদিন ক্লাসে যাই না, আম্মু আপু কারণ জিজ্ঞাস করে বলি শরীর ভালো লাগে না। তারপর সারাদিন রুমে দরজা বন্ধ করে রাখি। মাঝে মাঝে ক্লাস করতে গেলেও বন্ধুদের এড়িয়ে যেতাম। একদিন ক্লাস করে বাইরে আসছিলাম হঠাৎ করেই পুষ্প বললো,
--দোস্ত,কি হয়ছে তোর?
-- কিছু না
-- ওহ,, আমাদের বাসায় চল তো, আজকে আমার বোন মুনিয়ার জন্মদিন।
-- না, আমার না ভালো লাগছে না।
-- আরে ভালো লাগবে চল,আমার সাথে।
আমার কোনো কথা না শুনেই পুষ্প জোর করেই আমাকে ওর বাসায় নিয়ে গেলো। আমি ওর বাসায় গিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কোনো চিহ্নই নেই। আমি পুষ্পর দিকে জিজ্ঞাসু চোখে তাকাতেই পুষ্প বললো,
-- চল আমার রুমে বসি!
আমি কোনো কথা না বলে পুষ্পর রুমে গিয়ে বসলাম।পুষ্প আমার পাশে বসে আমার কাঁধে হাত রাখতেই আমি কেঁদে দিলাম। পুষ্প সব বুঝে গেছে, ও সব বুঝে যায়। পুষ্প বললো,
-- মিথ্যা কথা না বললে তো তুই আসতি না। কি হয়েছে তোর! কেনো করছিস এসব! তোর কি হাল হয়েছে তুই দেখেছিস, এই কয় মাসে তুই শুকিয়ে হাড্ডি হয়ে গেছিস।কি হয়েছে তোর? আমাকে বল
আমি কিছুই বলতে পারছি না, আমার কান্নার বেগ ক্রমশও বৃদ্ধি পাচ্ছে, এতদিনের কষ্টগুলো কান্না হয়ে বের হচ্ছে। পুষ্প আবার বললো,
-- আরে বল না, কি হয়েছে! প্রিয়মের সাথে কিছু হয়েছে! নাকি আঙ্কেল তোর আর প্রিয়মের সম্পর্কটা মেনে নিচ্ছে না!
-- চাআ, চার মাসে ধরে আমার প্রিয়মের সাথে কোনো যোগাযোগ হয় নি।
কথাটা বলতে আমার অনেক কষ্ট হচ্ছিলো, ঠিক মতো শব্দগুলো উচ্চারণ করতে পারছিলাম না।পুষ্প বললো,
-- ঝগড়া করেছিস ওর সাথে? ঝগড়া করে সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছিলি?কোনো কথা কাটাকাটি?
আমি মাথা নেড়ে না করলাম।পুষ্প একটু রেগে গিয়ে বললো,
-- আরে এভাবে কি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দিবে! ভালো না লাগলে ব্রেকাপ করে দিতো। এভাবে তোকে কষ্ট দেওয়ার মানে কি! তুই জানতে চাস নি ওর কাছে?
-- আমি কি করে জানতে চাইবো ওর কাছে! ওর আমার ফোন ধরছে না, চিঠির উত্তর দিচ্ছে না। আমি ওকে কোথায় পাবো এসব জিজ্ঞেস করার কেনো?
-- কেনো ওকে যেখানে পেয়েছিলি আগে, সেখানে!
পুষ্পর কথা শুনার পর আমি ওর দিকে তাকালাম। পুষ্প ঠিক কথায় বলেছে, আমি ঢাকা গেলেই তো প্রিয়মকে পাই।এই কথাটা আমার মাথায় এতদিন আসে নি কেনো। আমি পুষ্পকে জড়িয়ে ধরলাম। পুষ্প আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বললো,
-- দেখলি, আমিও কিন্তু ভালো আইডিয়া দেই, আচ্ছা তোর সমস্যা থাকলে আমার সাথে শেয়ার তো করতে পারিস, তাহলে তো কোনো একটা সাজেশন পাবি ঐ সমস্যাটা সমাধান করার জন্য।না, ওনি সব কিছু নিজের মধ্যে চেঁপে রাখবে।
আমি পুষ্পর বাসা থেকে আসার পর মনে মনে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম ঢাকায় যাওয়ার জন্য। কিন্তু হঠাৎ করেই জ্বর উঠে গেলো। তাও রাতে খাবার টেবিলে বসে আব্বুকে বললাম,
-- আমি ঢাকায় যাবো, কালকে।
আব্বু কিছু বলার আগেই আম্মু বললো,
--ঢাকা কেন? এখন ঢাকা যাওয়ার দরকার নাই।দুইদিন পর ঐ প্রফেসর পাত্রটা তোকে দেখতে আসবে।
আমি আব্বুর দিকে তাকিয়ে বললাম,
-- আব্বু প্লিজ!
আব্বু কিছু না বলে চুপচাপ খেয়ে উঠে গেলো। আম্মু চেয়ারের আমার চেয়ারের পাশে বসে বললো,
-- এই তুই কি চাস বলতো! আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না। তোর মতিগতি আমার ভালো লাগছে না।
আমি বিরক্ত হয়ে উঠে গেলাম, আম্মুর সাথে কথা বলার আমার কোনো ইচ্ছা নেই। আব্বু অনুমতি দেওয়ার সাথে সাথেই ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। কিন্তু আব্বু এতো তাড়াতাড়ি অনুমতি কেনো দিলো তা বুঝলাম পরে, যখন আব্বু বললো,
-- বাসার সবার মন মেজাজ ভালো থাকে না, তোমার ফুপি সব দিক একা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে, তুমি তাকে হেল্প করো কিন্তু।
বুঝাতে পারলাম আমাকে ঢাকা যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলো কেনো, কিন্তু বাসার সবার মন মেজাজ কেনো ভালো থাকে না এটা জানার জন্য যখন আব্বুকে জিজ্ঞাস করলাম আব্বু আমাকে বলবে তার আগেই আব্বুর ফোন আসাতে আব্বু চলে গেলো।
এখন ঢাকায় একা যাওয়া আসা করতে পারি। তারপরও ফুপি তাদের গাড়িটা পাঠিয়ে দিলো আমাকে নেওয়ার জন্য। যাই হোক আমার জন্য ভালোই হলো। গাড়ি ঢাকার উদ্দেশ্যেই চলছে,স্বাভাবিক গতিতেই,কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে গাড়ি ধীরে ধীরে চলছে, আমি ড্রাইভার কে জিজ্ঞেস করলাম,
-- ভাইয়া, আর কতক্ষণ লাগবে।
ড্রাইভার আমার কথাশুনে হেসে বললো,
-- ম্যাডাম সবে তো রওনা দিলাম, আরোও অনেক দেরি। কেনো! আপনার খারাপ লাগছে নাকি! গাড়ি থামাবো?
--নাহ, গাড়ি থামালেই দেরি হবে।
আমার অনেক খারাপ লাগছে, জ্বর আরো বেড়েছে, মাথা ব্যাথা করছে, গলা শুকিয়ে গেছে।
পানি খেতে হবে। ড্রাইভারকে জিজ্ঞাস করলাম,
--ভাইয়া পানি আছে!
-- আছে ম্যাডাম,তবে গরম মনে হয়। সামনে দোকান থেকে ঠান্ডা পানি কিনবো নাকি!
--হুম।
সবার আগে গল্প পড়তে আমাদের, নীল ক্যাফের ভালোবাসা, অ্যান্ড, নীল ক্যাফের ডায়েরী,২টা পেজের সাথেই থাকুন,ধন্যবাদ
অনেকক্ষণ যাওয়ার পর দোকান পাওয়া গেলো।ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে পানির বোতল কিনে আনলো, কিন্তু এক চুমুকের বেশি পানি খেতে পারলাম না, পানি তিতটুকে লাগছিলো।ঢাকায় যখন পৌঁছালাম তখন আটটা বাজে। আমি বাসায় ঢোকার পর ডাইনিং টেবিলে বসা ছেলেটার উপরেই প্রথম চোখ পড়লো, চিন্তে ভুল হয় নি, প্রিয়ম আর সৃজন ভাইয়া বসে আছে। সৃজন ভাইয়া প্রিয়মকে কিছু বলছিলো। নাবা ফুপি আমাকে দেখে বললো,
-- তুই এমন শুকিয়ে গেছিস কেনো তমা? চোখ তো ভিতরে বসে গেছে।
সৃজন ভাইয়া আমার দিকে তাকালো। প্রিয়মও তাকালো আমার দিকে,কিন্তু সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নিলো।নাবা স্বভাবতই অনেক কথা বলছিলো, কিন্তু আমি সায় না দেওয়াতে তেমন কিছু বললো না। আমার প্রিয়মের কাছে অনেক কিছুই জানার ছিলো, আর যেহেতু আমি প্রিয়মকে পেয়ে গিয়েছিলাম সেহেতু আমি সময় নষ্ট করতে চাইছিলাম না, সুযোগটা ব্যবহার করতে চাইছিলাম, হয়তো এরপর প্রিয়ম আমার সামনে আর নাও আসতে পারে।আমি কোনোমতে ব্যাগটা রেখে তাড়াতাড়ি ডাইনিং রুমে গেলাম। না প্রিয়মকে পেলাম, আর না সৃজন ভাইয়াকে। ফুপি আমাকে দেখে বললো,
-- কিরে ফ্রেশ হয়ে, খেয়ে নে। সারাদিন তো মনে হয় কিছুই খাস নি।
আমি রুমের দিকেই যাচ্ছিলাম, হঠাৎ প্রিয়মের গলা শুনে থমকে গেলাম।
প্রিয়ম ফুপিকে বললো,
-- মামি, আমাকে এখন যেতে হবে।অনেক রাত হয়ে গেছে।
ফুপি এগিয়ে গিয়ে বললো,
-- রান্না হয়েই গেছে, খেয়ে দেয়ে তারপর যাও।
প্রিয়মকে দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম।আমি ভেবেছিলাম, প্রিয়ম বোধহয় চলে গেছে। আমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ফুপি বললো,
-- কি রে, যাস না। তাড়াতাড়ি যা
আমি কিছু না বলে ফ্রেশ হতে গেলাম।কোনোমতে ফ্রেশ হয়ে বের হতেই নাবা বললো,
-- আপু তোমার কি হয়েছে বলো তো?
-- কই! কিছু হয় নি।আচ্ছা প্রিয়ম কোথায়?
--সৃজন ভাইয়ার রুমে মনে হয়।
--সৃজন ভাইয়া!
-- ও বাইরে গেছে।আম্মু কি যেনো আনতে পাঠালো।
-- আমি প্রিয়মের সাথে কথা বলতে চাই।তুই চল সাথে,
আমি নাবার হাত ধরে সৃজন ভাইয়ার রুমের দিকে যাচ্ছিলাম। নাবা সবসময় আমাদের সাহায্য করতো। আমি রুমে ঢুকতেই প্রিয়ম আমাকে দেখলো,তারপর নাবার দিকে তাকালো।
নাবার হাত ছেড়ে আমি প্রিয়মের কাছে গেলাম, ইচ্ছা করছে কিছু বলার বা শুনার আগেই ওকে কয়েকটা চড় মেরে নেই।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
♦রিয়াদুল ইসলাম রূপচাঁন♦
Golpobuzz ৪ বছর, ৬ মাস পুর্বেIshika
User ৪ বছর, ৬ মাস পুর্বেIshika
User ৪ বছর, ৬ মাস পুর্বেIshika
User ৪ বছর, ৬ মাস পুর্বেTanisha Tabassum Taha
User ৪ বছর, ৬ মাস পুর্বেTanisha Tabassum Taha
User ৪ বছর, ৬ মাস পুর্বেTanisha Tabassum Taha
User ৪ বছর, ৬ মাস পুর্বে♦রিয়াদুল ইসলাম রূপচাঁন♦
Golpobuzz ৪ বছর, ৬ মাস পুর্বেTanisha Tabassum Taha
User ৪ বছর, ৬ মাস পুর্বেতরী
User ৪ বছর, ৮ মাস পুর্বে