বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

কৈশোরের চাঞ্চল্য, একটি অপমান ও কিছু কথা (১)

"শিক্ষণীয় গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Rocky (০ পয়েন্ট)

X পনের বছর আগের কথা। তখন ২০০১ সাল, এস এস সি পরীক্ষা দেবার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সম্ভবত, কলেজে শুধু আমরাই আছি। পরীক্ষার দিন তিনেক বাকি। সবার মন খারাপ, গ্রেডিং সিস্টেম চালু হচ্ছে। কেউ জানেনা কিভাবে গ্রেডিং হবে। স্যাররাও কনফিউজড। সবারই বেশ টেনশন । এর মধ্যে কারো একজনের উর্বর মাথা থেকে আসলো, শেড ক্রিকেট খেলতে হবে। টেনশন কমে যেতে পারে। যেই কথা সেই কাজ, কর্ক এর বল জোগাড় করা হল, আর টেবিল এর পাদানি ভেঙ্গে বানানো হল ব্যাট। এরপর খেলা শুরু হল রীতিমত।বলে রাখি, এটা ছিল কলেজের আইনে তখন মারাত্মক অপরাধ। সবাই জানতাম, ধরা পড়লে একেবারে টার্ন আউট।তারপরেও সবাই কিভাবে যেন খুব সাহসী হয়ে উঠেছিলাম।বলা ভুল হল, গ্রেডিং সিস্টেম নিয়ে একটু ফেডআপ হয়ে গিয়েছিলাম। তাছাড়া, কিছুদিন পরেই তো ক্লাস ১১ হব, একটু সাহসী না হলে চলে? আর সুকান্তর কবিতা পড়লে কারই বা আর মাথা ঠিক থাকে! যাহোক, সাবধানতার মার নেই, হাউস বেয়ারাকে সিস্টেম করা হল যাতে সময়মত সিগনাল দেয়। কিন্তু ভাগ্য খারাপ, ভিপি স্যার একাডেমী ব্লক থেকে তার পাওয়ারফুল দূরবীন দিয়ে ঠিকই বুঝে ফেললেন হুনাইন হাউসের শেডে খেলা হচ্ছে। ডাক পড়ল সবার। তারপর থেকে হাউস বেয়ারাদের উপর থেকে বিশ্বাস উঠে যায় ! অনেকে আগেই নানাবিধ কারণে ভিপি স্যার এর সাথে দেখা করলেও ওটাই আমার জন্য প্রথম তলব ছিল। এর আগে একটি মাত্র এক্সট্রা ড্রিল খেয়েছিলাম, সে হিসাবে কলেজের চোখে বেশ শৃঙ্খল ক্যাডেট। মনে মনে ভাবছিলাম, হাউ টু ব্যাক আপ দিস সিচুএশান। যাহোক, বন্ধু কায়সার এর গালে ভিপি স্যার এর চড় দেখার পর, সব উলট পালট হয়ে যায়। এমন না যে আগে কখনও চড় খাইনি। সমস্যা হচ্ছে, এই চড়ের প্রবল ভরবেগ, কলেজ থেকে যে কোন ক্যাডেট কে ছিটকে ফেলার জন্য যথেষ্ট ছিল। মনে হচ্ছিল, এই বুঝি বাড়ির বাস ধরতে হবে। যাহোক, প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু। ভিপিঃ কেন খেলা করছিলে? আমিঃ গ্রেডিং সিস্টেম আমাদের হতোদ্যম করেছে। পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। (সম্পূর্ণ সৎ উত্তর) ভিপিঃ তোমার কি মনে হয়, তুমি এ+ পাবে? (রেগে গিয়ে) আমিঃ আমার মনে হয় পাব। (আত্মবিশ্বাস এর সাথে) তারপর কি হয়েছিল আর মনে নেই। তবে আমার উত্তরটা তার মনমত হয়নি, এটা বুঝে ছিলাম। কে যেন একজন বলেছিল গ্রেডিং দুই প্রকার- আমেরিকান আর ব্রিটিশ। আমেরিকান গ্রেডিং সিস্টেম এ সব কয়টা সাবজেক্ট মিলিয়ে ৮০%+ পেলে এ+ হয়। পরীক্ষার ফলাফল দেয়ার আগের দিন পর্যন্ত জানতাম, আমেরিকান গ্রেডিং সিস্টেম ফলো করা হচ্ছে। তাছাড়া, টেস্ট আর প্রিটেস্ট পরীক্ষায় ৯০০-৯৫০ পেয়েছিলাম। তাই আমেরিকান এ+ খুব একটা অসম্ভব মনে হয়নি আমার কাছে। আমি সেটা মনে করেই বলেছিলাম। কিন্তু কে জানত, ওই বাক্যটা ই কাল হয়ে দাঁড়াবে আমার জন্য। যাহোক, কলেজ থেকে বের করে দেয়া হলনা, তবে একটা কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে দেয়া হল। কিন্তু এরপর থেকে আমি সবসময় ভিপি স্যার এর কাছে কালারড হয়ে গেলাম, এবং ভাগ্য তার সহায় হওয়া শুরু করল। যেই আমার পরীক্ষায় অন্যদের না দেখানো নিয়ে বদনাম আছে, সেই আমি এস এস সি পরীক্ষায় অন্যকে দেখাতে গিয়ে ধরা খেলাম এবং খাতা কেড়ে নেয়া হল পুরোপুরি। যখন এক্সটারনাল ইনভিজিলেটররা ব্রেক নেয়, সেই সময়ও নিজের উদ্যোগে ভিপি স্যার গার্ড দেয়া শুরু করল। মোটকথা, আমার এস এস সি লাইফ তেজপাতা করে ফেলার উপক্রম ! যাহোক, কয়েক মাস পরে এস এস সির ফলাফল দিয়েছে। নো এ+ ফ্রম ঝকক। পুরো বাংলাদেশে ৫০-৬০ জন এ+, যশোর বোর্ড এ এ+ ১ জন, এবং দুভাগ্যক্রমে সেই একজন ঝকক থেকে নয়। ক্যাডেট কলেজ গুলোর মধ্যে কেবল মগকক ই সবচেয়ে সফল।সুতরাং ভিপি স্যার এর মাথা গরম। ছুটির পর কলেজে গেলে ক্লাস ১১ কে একটি গ্যালারিতে একত্র করা হল, তারপর শুরু হল বিচার। কী ভয়ংকরই না ছিল সে বিচার ! ওটাই সম্ভবত জীবনের সবচেয়ে বড় অপমান ছিল। (চলবে) বিঃ দ্রঃ কিছু বানান ভুল থাকতে পারে, সেগুলো অনিচ্ছা বশত আর যুক্তাক্ষরে একটু সমস্যা হচ্ছে। লেখক: মাসুদ (১৯৯৭-২০০৩)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৭৬৫ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now