বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

রাতের সওয়ারি

"অদ্ভুতুড়ে" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মোহাম্মদ মাজেদ (০ পয়েন্ট)

X সুপ্রিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিন রাত তখন ছিল দুটো। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। শুধু অন্ধকার নয়, সঙ্গে দোসর হয়েছিল মুষলধারে বৃষ্টি। বিদ্যুতের আলোয় মাঝেমাঝে পথঘাট দেখা যাচ্ছিল কিন্তু আবার সবকিছু ঢাকা পড়ে যাচ্ছিল ঘন অন্ধকারের আড়ালে। এত অন্ধকার যে নিজের হাতটুকুও দেখা যায় না। বাজের শব্দে কান পাতাই দায়। ঝাড়খন্ডের ঘাটশিলা স্টেশনের বাইরে রামদিন তার অটো নিয়ে তখনো দাঁড়িয়েছিল সওয়ারির আশায়। ওয়েদার যা, সওয়ারি পাবার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবু রামদিন অপেক্ষা সেদিন অপেক্ষা করে ছিল, যদি শেষ রাতের ট্রেন থেকে কোনো সওয়ারি পায় সে। তাকে তার গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েই ও আজকের রাতের মতো নিজের ঘরে গিয়ে বিশ্রাম নেবে। ট্রেন এলো প্রায় এক ঘন্টা পর। স্টেশনের বাইরে অটোয় বসেও রামদিন ট্রেনের আওয়াজ শুনতে পেলো। দূরপাল্লার কোনো ট্রেন ঢুকছে স্টেশনে। ট্রেনটা থামল। তারপর মিনিট খানেক পর আবার সিটি দিয়ে ধীরেধীরে স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে গেল। তারপরেই স্টেশন থেকে কাঁধে ব্যাগ ঝোলানো একটি ১৮-২২ বছরের মেয়ে বেরিয়ে এলো। পোশাকে-আষাকে বেশ আধুনিকা বলেই মনে হলো। মেয়েটি সোজা রামদিনের অটোর কাছে এলো। বলল, "...মুসাবনি যাবে?" এত রাতে মুসাবনি! রামদিন অবাক। সে বলল, "যাব। তবে এখন অনেক রাত, ওখান থেকে সওয়ারি না'ও পেতে পারি। পাঁচশো টাকা ভাড়া দিতে হবে। আর নয়তো,ভোর পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তখন একশো টাকায় আপনাকে পৌঁছে দেব"। মেয়েটির ভেতরে কিছুমাত্র বিচলিত ভাব দেখা গেল না। বলল, "ঠিক আছে। এখন দুশো টাকা রাখো। গন্তব্যে পৌঁছে বাকি তিনশো টাকা দিয়ে দেব", এই বলে সে অটোয় উঠে নিশ্চিন্তে গা এলিয়ে দিয়ে বসল। রামদিন অটোয় স্টার্ট দিল। ভরা দূর্যোগময়ী রাতের সুনসান রাস্তা। তাই যতদূর সম্ভব স্পিড বাড়িয়ে দিল রামদিন। অটোর হেডলাইটের আলোয় যতটুকু দেখা যায়, সে অটো চালিয়ে নিয়ে চলল। আধঘণ্টা একটানা চলার পর একটা বাংলোর সামনে সওয়ারি মেয়েটি অটো দাঁড় করাতে বলল। রামদিনের দিকে চেয়ে বলল, সে বাকি তিনশো টাকা আনতে বাড়ির ভেতর যাচ্ছে। রামদিন যেন এখানেই অপেক্ষা করে। মেয়েটি ভেতরে চলে গেল। এদিকে, সময় বয়ে যায়। মেয়েটির আসার কোনো নাম নেই। অটোয় বসে বসে রামদিন অধৈর্য হয়ে উঠছে। কাঁহাতক আর অপেক্ষা করা যায়! ঘরে গিয়ে বিছানায় পিঠ দিতে হবে ওকে। একসময় অটো থেকে অধৈর্য হয়ে নেমে এলো রামদিন। বাংলোর দরজায় জোরে জোরে কড়া নাড়তে লাগল। অনেকক্ষণ পর একজন বুড়ো মতো লোক চোখ রগড়াতে রগড়াতে দরজা খুলে দিল। হাই তুলে জিজ্ঞেস করল, "কি ব্যাপার? কে তুমি? এত রাতে কি দরকার?" রামদিন বলল, " একজন মেমসাব এইমাত্র এই বাড়িতে এসে উঠেছেন। আমিই আমার অটোয় ওঁকে পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু উনি আমার পুরো ভাড়া মেটাননি"। বুড়ো তো আকাশ থেকে পড়ল। বলল, "এখানে তো কেউই আসেনি। আমি তো এই বাড়িতে একাই থাকি। " কথা বলার সময় রামদিনের হঠাৎ নজর পড়ল বুড়োর পেছনে ঘরের দেওয়ালে ঝোলানো একটা বাঁধানো ফটোর ওপর। সেই মেয়েটির ছবি, যাকে সে অটোয় এক্ষুণি নিয়ে এলো। রামদিন সবিস্ময়ে বলল, "আরে! এই মেমসাব'কেই তো আমি একটু আগে নিয়ে এলাম! স্টেশন থেকে ইনি আমার অটোয় চড়েছিলেন"। বুড়োর বিস্ময় আরও চড়ল। বলল, "তা কি করে সম্ভব? আমার এই নাতনী তো মারা গেছে আজ থেকে আট বছর আগে। ও কি করে এখানে আসবে? দেখছেন না, ফটোর গায়ে মালা ঝুলছে, চন্দনের ফোঁটা লাগানো..?" রামদিন আর কিছু বলল না। সে চুপচাপ নেমে চলে গেল। অটোর কাছে গিয়ে সে আরও অবাক হয়ে গেল। দেখল, অটোর পেছনের সিটে যেখানে মেয়েটি বসে ছিল, সেখানে তিনশো টাকার কড়কড়ে নোট পরে আছে। রামদিন নোটগুলো চুপচাপ নিজের পকেটে রেখে দিল। ওইদিন থেকেই রামদিন রাতে অটো চালানো ছেড়ে দিল।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৫৩৪ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • মুহাম্মদ মাজেদ
    Golpobuzz ৪ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    Hmm..

  • fariamumpy
    User ৪ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    horror.....