বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

প্রতীক্ষা

"জীবনের গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মোঃ আল হাদী (০ পয়েন্ট)

X আজকাল আদিত্য এর বেশ ভালো দিন কাটছে।সারাদিন দেয়ালে আঁকাআঁকি করে।ভালো লাগলে গান গায়। নাইলে একা একা কথা বলে। গানের গলা একদম খারাপ না। রবীন্দ্রসংগীত ই ওর মুখে বেশি শোনা যায়। ও হ্যাঁ আদিত্যের পরিচয় ই দেয়া হলো না। সে বর্তমানে একজন মানসিক রোগী। আগে ভালো ছিলো। গত ৬ মাস ধরে পাবনায় আছে।আদিত্যর সাথে পরিবারের কেউ দেখা করতে এলে তাদের জিজ্ঞেস করে-" ও' কেমন আছে" সারাদিন এই 'ও' নিয়েই থাকে আদিত্য। ওর এই অবস্থার বিশদ জানার জন্য ১ বছর পূর্বে চলে যেতে হবে। ( ১ বছর আগে) -আদিত্য একটু গম্ভীর পদের ছিলো। সারাদিন কলেজে কাটিয়ে যেটুকু সময় বাসায় থাকতো তার মোবাইল সেটটি নিয়েই থাকতো। সারাদিন ঘরে থাকায় ওর আত্মীয়-স্বজনরা ওকে মেয়ে বলে ওর সাথে ঠাট্টা-তামাশা করত। কিন্তু ওর মুখে বেশি একটা কথা ছিলো না, ছিলো না হাসিও। একদিন বিকেল বেলায় ফেসবুক ঘাটতে গিয়ে জনৈক মেয়ের সাথে পরিচয় হলো। মাঝেমধ্যেই কথা হতো। হাই,হ্যালো, কেমন আছো ইত্যাদি দিয়েই কথা শেষ হতো। ধীরে ধীরে তারা দু'জন ভালো বন্ধু হয়ে যায়। আদিত্য কখনো ভাবেও নি যে এই মেয়ে তার ভালোবাসার মানুষে রূপ নেবে। যাইহোক এরপরে ঘটনা বলতে গেলে কতটি যে পৃষ্ঠা ব্যয় হবে তা আমার জানা নেই। শেষে আবার পাঠকদের রোষে পরে যেতে পারি। তাই সংক্ষেপেই সমাপ্ত করার চেষ্টা করব। ভালই চলছিলো ওদের দিনকাল। মেয়েটি ওকে আদি বলে ডাকতো। একদিন গোধূলি লগ্নে মেয়েটি আদির সাথে দেখা করার ইচ্ছাপোষন করে। দেখা করার পর যে কথপোকথন হয়েছিলো তা তাদের ভাষায় ই তুলে ধরলাম। - আদি, কেমন আছো? - ভালো। তোমার কী অবস্থা? - ভালো। একটি কথা বলার জন্য তোমায় ডেকেছিলাম। - ফোনে বললেই হতো, এতো কষ্ট করার কী দরকার ছিলো! - না আদি, ফোনে বলা যাবে না। - আচ্ছা বলো। - আদি তুমি আমকে ক্ষমা করো। - কি বলছো তুমি? তুমি কি করেছ? কেনো ক্ষমা চাচ্ছো? - আদি, তুমি অনেক ভালো ছেলে, আমার থেকে অনেক ভালো মেয়ো তোমার জীবনে আসবে। আমি আসলে অন্য কাউকে খুব ভালোবাসি। সে খুব ব্যস্ত থাকে তাই সময় কাটানোর জন্য তোমার সাথে কথা বলতাম। তুমি আমাকে খুব ভালোবাসো জানি। কিন্তু সরি। ক্ষমা করো। [আদির চোখ থেকে ২ ফোঁটা পানি পড়লো তা মেয়েটির নজর এড়ালো না।] আদি- তুমি খুশি তো? [মেয়েটি কথা বললো না। তার অজান্তেই চোখে পানি আসলো।] আদি-তুমি যাতে খুশি আমিও তাতে খুশি। শুধু একটি অনুরোধ রাখবে? মেয়ে- বলো। আদি- বিয়ের পর তোমার জামাইকে নিয়ে প্রতি ২-৩ বছর পর পর একবার আমার সাথে দেখা করবে? মেয়েটি- মাথা নাড়ল এবং চলে গেলো সন্ধ্যার দিকে আদিত্য খুব অসুস্থ হয়ে পড়লো। স্খানীয় হাসপাতাল থেকে ঢাকা রেফার করা হয়েছিলো। আদিত্য সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরলো ঠিক। কিন্তু ওর মাথা আর ঠিক রইলো না। এদিক সেদিক চলে যায় বলে তার স্থান হলো পাবনা মানসিক হাসপাতালে। এখানে বসে গান গায়, ইটের কুচো দিয়ে দেয়ালে ছবি আঁকে আর একটি কথা শোনা যায়-" তুমি ভালো আছো তো?" [বর্তমান] মেয়েটির এখনো বিয়ে হয়নি। কথাবার্তা চলছে। কিন্তু সেও খুব অন্যমনস্ক। রাতে ঘুমোতে পারে না। কি একটা স্বপ্ন দেখে কাঁদে। এজন্য প্রতি রাতে ঘুমের ইনজেকশন নিতে হয়। সেদিন সকালে বারান্দায় বসে মেয়েটি গল্প পড়ছিলো।হঠাৎ তার মোবাইল বেজে উঠলো। যদিও আদিত্যের কল ৬ মাস ধরে পায় না কিন্তু এখনো মোবাইল বাজলে ওর প্রথমে আদিত্যের কথাই মনে পড়ে। তার সেই ভাবনার ব্যতিক্রম হলো না। গিয়ে দেখলো ব্যর্থ ভাবনা। কোনো একটি অপরিচিত নাম্বার। বলে রাখা ভালো সেই ছেলেটি যার জন্য আদিত্য আজ মানসিক রোগি সে বিয়ে করে নিয়েছে। মেয়েটি প্রায়ই ভাবে যে আদিত্যই ভালো ছিলো। আবার ভাবে ভালো হলে তো খোঁজ নিতো। যাই হোক মোবাইল রিসিভ করলো। কথপোকথনটি তুলে ধরা হলো। -হ্যালো! কেমন আছো সোনা? -[মেয়েটি বাকরুদ্ধ, এ যে আদিত্যের গলা] - কথা বলছো না কেনো? - ভালো আছি। তুমি কোথায়? ফোন দিলে না একবারও। - কিভাবে ফোন দিবো? এরা আমাকে সারাক্ষণ আটকে রাখে।ফোন দেয় না আমাকে। আজ অনেক অনুরোধ করলাম তাই দিলো[কান্নাজড়িত কন্ঠে] - কারা তোমাকে আটকে রাখে? কোথায় তুমি? - আমি পাবনায়। আম্মু বললো এখানে বেড়াতে রেখে গেছে আমায়। -(মেয়েটির মনে মোচর দিলো) - শোনো, তুমি আমার সাথে একটু দেখা করতে আসবে? -কোথায়? - পাবনা মানসিক হাসপাতাল। -(মেয়েটি কান্নায় ভেঙে পড়লো) -আহ্ কান্না কেনো করছো? একটু এসো প্লিজ। আর আমার জন্য একটি জিনিস নিয়ে আসবা। এদের কাছে অনেক চাই দেয় না আমাকে। - কী? - এক বোতল বিষ নিয়ে আসবা, তুমি না করবে না দয়া করে। আমি জানি ওটা খেলে নাকি অনেক সুখে থাকা যায়, আমার না অনেক কষ্ট( কান্নায় ভেঙে পড়লো) [ফোন কেটে গেলো] ৫-৬ দিন পর মেয়েটি পাবনায় মানসিক হাসপাতালে আদিত্য নামের ছেলেটির খোঁজ করলো। জানা গেলো সে কিছু সময় আগে হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছে। মেয়েটি পাগলের মতো শুরু করলো। উপজেলা হাসপাতালে আদিত্যর লাশ দেখলো। তার হাতে একটি কাগজ ছিলো। কাগজটি খুলে দেখলো--- " প্রিয়া, তুমি আসবে আমার বিশ্বাস ছিলো। হয়ত এসে পড়বে। কিন্তু আমার সময় শেষ। বুকে প্রচন্ড ব্যাথা হচ্ছে। নিজের খেয়াল রাখবে। ঠিকমতো খাবে আর কাউ.......... (আর কিছু লেখা নেই)" পরিশিষ্টঃ আদিত্য যে কাজ করতো, মানে গান গাওয়া, দেয়ালে ছবি আঁকা সেগুলো এখন মেয়েটি করছে। খাওয়ার সময় তার সামনে আদিত্যের চেহারা ফুটে ওঠে। তার সাথে খাবার ভাগাভাগি করে খায় আর কত যে কথা বলে তার শেষ নেই। [সমাপ্ত]


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪০৫ জন


এ জাতীয় গল্প

→ প্রতীক্ষা
→ আব্বুর জন্য প্রতীক্ষা
→ আব্বুর জন্য প্রতীক্ষা
→ তোমার জন্য অপেক্ষা নয়, প্রতীক্ষা

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now