বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

কালো পরী

"ভৌতিক গল্প " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Fahim (০ পয়েন্ট)

X ঘটনাটি আমার এক দুঃসম্পর্কের ভাবীর জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা। ঘটনাটি ছিল এরকম- ভাবী তখন অবিবাহিত ছিলো। তারা বগুড়ার একটি গ্রামে থাকত। তার তখন ১৫ বছর বয়স। ভাবীরা ৩ বোন মিলে একসাথে ঘুমোতেন। একবার ভাবীর দুবোন বেড়াতে গিয়েছিলো তাদের খালার বাসায়। তখন একদিন রাতে সে একটি অদ্ভূত স্বপ্ন দেখলো। সে দেখলো তাদের উঠোনের উপর খোলা আকাশে একটি মেয়েলি দেহ উড়ে যাচ্ছে। সে এটি দেখে বুঝতে পারলো যে, এটি একটি পরী। স্বাভাবিক ভাবে আমরা জানি, পরী দেখতে অসম্ভব সুন্দরী হয়। কিন্তু ভাবীর ভাষ্যমতে, এই ধারণাটি নাকি ঠিক নয়। কারণ সেদিন সে যেই পরীটিকে দেখেছিলো, সেটি দেখতে ভীষণ কুত্সিত ছিল। ভাবী এই কুত্সিত চেহারা দেখে আপন মনে বিদ্রুপ করে বলেছিলেন, "ইস! যেই না চেহারা! কি কালোরে বাবা! এই চেহারা নিয়ে আবার পরী হয় কি করে?" এটা বলার পরপরই সেই পরীটা ঝুপ করে উঠোনে নেমে এলো আর সাথে সাথে ভাবীর ঘুম ভেঙে গেলো। তখন ভাবী আবিষ্কার করেন, কি যেনো একটা তার গলা চেপে ধরেছে। ভাবী অনুভব করলেন জিনিসটা তার বুকের ওপর ভর দিয়ে রেখেছে, এবং অসম্ভব শক্তি দিয়ে তার গলা টিপে ধরেছে। সেটা মৃদু ঘড়ঘড় শব্দ করছিল। ভাবীর নিঃশ্বাস ভারী হওয়া শুরু করে। এর মধ্যে ভাবী হাত দিয়ে খাটের পাশের চেয়ারের ওপর রাখা গ্লাস, চিরুনী ফেলে শব্দ করতে থাকেন। শব্দ শুনে পাশের ঘর থেকে তার মা, বাবা, ভাই ছুটে আসেন। এবং ভাবীর উপর থেকে সেই জিনিসটা চলে যায়। ভাবী তখন জোরে জোরে চিত্কার করতে থাকেন। ভাবী শান্ত হলে তার বাবা, মা নিজেদের ঘরে চলে যান। তারা চলে যাওয়ার সাথে সাথে ভাবী জানালা থেকে আসা আবছা আলোয় দেখতে পান, কালো একটা অবয়ব ভাবীর ঘরের সিন্দুকের ওপর রয়েছে। আর সেটা ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে আসছে। সে সাথে সাথে চিত্কার করে ওঠে। তখন আবার তার মা, বাবা তার কাছে আসেন। এরপর থেকে ভাবী কখনও একা থাকতে পারতেন না। রাতে একা কোথাও যেতেও পারতেন না। একা থাকলেই সে ঐ কালো পরীটাকে দেখতে পেতেন। এবং রাতে ভাবীকে হ্যারিকেন জ্বেলে ঘুমোতে হতো। বেশ কিছুদিন পর একদিন তারা দুবোন একসাথে ঘুমোতে গেলেন। ভাবীর বড় বোন তখন বাড়িতে ছিলেন না। তখন রাতে ঘুমের মাঝে হঠাত্ ভাবী শুনতে পেলেন তার বড় বোন তাকে ডাকছেন। তাকে ডেকে তোলার পর তার বোন বললেন, "হ্যারিকেনটা একটু নিভিয়ে দে তো।" ভাবী হ্যারিকেন নিভিয়ে দিলেন। তারপর কয়েক সেকেন্ড পরই ভাবী অনুভব করলেন তার শরীর ভারী হয়ে গেছে। আস্তে আস্তে পুরো দেহ অসার হয়ে আসছে। সে সময় ভাবী জোরে জোরে শ্বাস-প্রঃশ্বাস নিতে লাগলেন। হঠাত্ তার মেঝো বোন পাশ থেকে তার নিঃশ্বাস নেওয়ার শব্দ শুনতে পান। তিনি জেগে উঠে হ্যারিকেন জ্বালিয়ে দেন, আর সাথে সাথে ভাবীর উপর থেকে ভারি জিনিসটির অনুভূতি উধাও হয়ে যায়। তখন ভাবীর বোন তাকে জিজ্ঞাসা করেন, "কিরে তুই হ্যারিকেনটা নিভিয়েছিলি কেনো?" ভাবী বললেন, "বড় আপা নিভাতে বলেছে, তাই।" তখন তার বোন হতবাক হয়ে বলেন, "বড় আপা তো বাসায়ই নেই। তুই বড় আপাকে কোথায় পেলি?" ভাবীর তখন মনে পড়ল তার বড় বোন আজ বেড়াতে গেছে। তখন বাইরে থেকে একরকম অমানবিক শব্দে কে যেন গোঙাতে লাগল। ভাবী ভয় পেয়ে চেঁচাতে লাগলেন। তখন পাশের ঘর থেকে ভাবীর মা, বাবা ও ভাই এলেন। তারা প্রত্যেকে সেই গোঙানির আওয়াজ শুনতে পেলেন। গোঙানির আওয়াজ ধীরে ধীরে বাড়তে লাগলো। তখন ভাবীর বৃদ্ধা নানী তাদের বাড়িতে ছিলেন। উনি উঠে এসে সেই আওয়াজ শুনলেন। উনি অনেক বয়স্ক ছিলেন, এসব ব্যাপারে উনার অভিজ্ঞতাও অনেক বেশি। তাই এসব খুব একটা ভয় করতেন না তিনি। উনি জোরে জোরে চেঁচিয়ে বলতে লাগলেন, "কে ওখানে? চলে যা ওখান থেকে।" উত্তরে ঐ জিনিসটা জোরে জোরে নাকিস্বরে কান্নার আওয়াজ করতে লাগলো। নানী আবার বলেন, "গিয়েছিস তুই? ভালো চাস তো এখনি চলে যা এখান থেকে।" প্রত্যুত্তরে সেটি আরো জোরে কান্নার শব্দ করতে লাগলো। সে আবারও বললো, "এখনও যাসনি তুই?" তবুও সেটা বসে বসে জোরে কান্নার শব্দ করতে থাকলো। তখন ভাবীর নানী ভাবীর ভাই ও বাবাকে লাঠি হাতে বাইরে পাঠালেন। তারা কান্নার আওয়াজের উত্স খুঁজতে খুঁজতে সেটির কাছে পৌছে হঠাত্ দেখতে পেলেন একটি বিড়াল বসে আছে। তারা সামনে যাওয়া মাত্র বিড়ালটি বিকট আওয়াজ করে ডাকতে শুরু করলো। লাঠিটা দিয়ে তাড়া করা মাত্র সেটি সেই স্থান ত্যাগ করল। এরপর সে রাতে আর কোনো আওয়াজ পাওয়া যায় নি। এবং সারারাত সবাই ভাবীর সাথেই ছিলেন। পরের দিন তারা একজন নামকরা হুজুরকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসলেন। তিনি সবকিছু শুনে এসবের একটা ব্যাখ্যা দিলেন। ব্যাখ্যাটি ছিলো এরকম- যে কোন কারনে ভাবীদের বাড়ির ওপর দিয়ে পরীটা উড়ে যাওয়ার সময় ঐ পরীটাকে স্বপ্নে দেখেছিলেন ভাবী। পরীটার রূপ নিয়ে তাচ্ছিল্য করায় পরীটা ভাবীর উপর প্রচন্ড রেগে যায় এবং সে ভাবীর ক্ষতি করতে চায়। এবং সুযোগ পেলে সে ভাবীর মারাত্মক ক্ষতি করে দেবে। এরপর হুজুর কিছু দোয়া দুরূদ পড়ে ভাবীর মাথায় ফু দিয়ে দেন এবং ভাবীদের বাড়িটা বন্ধ করে দেন। এরপর থেকে ভাবীর আর কোনো সমস্যা হয়নি।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৭৮০ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now