বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

"বেকার"

"জীবনের গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান তামিম হাসান (guest) (০ পয়েন্ট)

X " বেকার " - তামিম হাসান সালটা ১৯৯৫। রুপপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত চাকরীজীবি ছিলেন জনাব রহমান। তার দুই ছেলে এক মেয়ে। মেয়ে, মায়ার বিয়ে হয়ে গেছে। বড় ছেলে জাহিদ লেখাপড়া শেষ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন। ছোট ছেলে মতিনের গ্র্যাজুয়েশন শেষ তবে এখনো চাকরি মেলাতে পারছে না, বেকার। মতিন চার বছর ধরে বেকার। পরিবারে সবসময় মতিনের বাবা রহমান সাহেব মতিনকে বকাঝকা করেন। পরিবারে সে তার বাবার নিকট বোঝা সরূপ। মতিনকে গ্রামের মানুষরা অপদার্থ হিসেবে চেনে। মতিন অতিশয় ভদ্র ছেলে। আচরণ সত্যি দারুন, তবে বেকার হওয়ার কারনে তাকে কেউ মূল্য দেয় না। সেদিন সকালে রহমান সাহেব মতিনের মা রিনাকে ডাকলেন তার ঘরে। (রহমান সাহেব ও মতিনের মায়ের মধ্যে কথপকথন) রিনা : কী হলো ডাকলে হঠাৎ? রহমান :তোমার ছেলে মতিনকে ডাকো!! রিনা, মতিনকে ডাকল মতিন তার বাবার রুমে আসল। রহমান : শোন মতিন আমার চাকরি শেষ! অবসর সময় এসেছে। কাউকে বসিয়ে খাওয়াতে পারব না। দেখ তোর বড় ভাই সে সরকারি চাকরি করে আর তুই! আরে তুইতো গাধা একটা পড়া-শুনা করছিলি কেনো? এখন বেকার হয়ে পরে আছিস কেনো যা কিছু একটা কর। চাকরি পাও না, গাধার মতো খাটতে তো পারিস শ্রমিক হয়ে যা দুটো পয়সা তো আয় করতে পারবি। আসল কথা শোন মতিন তোকে আমি আর বসিয়ে খাওয়াতে পারবো না,,!! এখন থেকে নিজের খরচ নিজেই বহন কর! মতিনের মা শাড়ির আচঁলে চোখ মুছে নিলো। মতিন দুঃখে দৌড়ে গিয়ে নদীর তীরে গিয়ে আম গাছের নিচে বসল। মতিন তার বাবার কথায় দুঃখ পেয়ে কাঁদতে শুরু করল। বেশ কিছুক্ষন পরে মতিন হেটে হেটে শহরে এসে পৌছাল । একটা ময়দা কোম্পানিতে মতিন ঢুকল। বিশাল ফ্যাকটরি,আর বড় বড় গুদাম ঘর। মতিন দোতালার অফিসে গেল। ম্যানেজার সাহেব জরুরি কাজ করছিলেন। মতিন সালাম দিয়ে বলল, ' স্যার একটা চাকরি দেওয়া যাবে? জবাবে ম্যানেজার বললেন : বাবা এখানে শ্রমিক পদ ছাড়া অন্য কোনো পদ খালি নেই। কী? শ্রমিকপদে নিয়োগ করবেন? মতিন বলল : জি স্যার। ম্যানেজার :এই খাতায় একটা সই করো!,,, মতিন সই করল। এবং সে কাজ শুরু করল গুদাম থেকে বস্তা বহন করে ট্রাকে লোড করল। এটাই মতিনের কাজ ছিলো তবে কিছুদিন এ ভারী কাজ করায় খুব অসুস্থ হয়ে পড়ল শারীরিক ভাবে। মাএ ২৬ দিন কাজ করেছিলো তাই ম্যানেজার মাএ ৮০০ টাকা দিয়েছিলো বেতন মতিনকে । মতিন এই চাকরিটা ছেড়ে দিল। মতিন সিদ্ধান্ত নিলো সে বিদেশে যাবে এবং অনেক টাকা আয় করবে। মতিন তার বন্ধু শুভর বাসায় আসল। শুভ মালদ্বীপে থাকে ছুটিতে বাড়ি এসেছে আবার মাস এক পরে চলে যাবে মালদ্বীপ। মতিন শুভকে বলল সেও মালদ্বীপ যেতে চায়। শুভ মতিনকে বলল তুই ভিসা ও পার্সপোর্ট কর বাকি দায়িত্ব আমার। মতিন এ কথা শুনে কিছু টাকা জোগাড় করে পার্সপোর্ট ভিসা করল এবং ঠিক এক মাস পরে শুভর সাথে মতিনও পাড়ি জমাল মালদ্বীপে। মালদ্বীপ সত্যি এক মায়া ভূমি। অপরুপ সুন্দর দেশটি। শুভ মালদ্বীপে এক মাছ ব্যবসায়ীর ট্রলার চালায়, শুভ তার মালিকের সাথে মতিনকে দেখা করালেন এবং একটা কাজ দিতে বললেন।মালিক মতিনকে বলল মাছ ধরতে হবে সমুদ্রে গিয়ে!! কী পারবে?? মতিন বলল জী সাহেব পারব। প্রায় এক সপ্তাহ মতিন মাছ ধরা শিখলেন। তারপরের মাসে মতিন ভালোই মাছ ধরা শিখে গেছিলো। মতিনকে মালিক ৭০০০ হাজার রুপিয়া ( মালদ্বীপ এর মুদ্রা) বেতন দিয়েছিলো। মতিন বেতন থেকে কিছু টাকা বাড়িতে পাঠিয়েছিলো। তাই মতিনের বাবা খুব খুশি হয়ে ছিলেন। দিনটা ছিলো ১৫ তারিখ।। বিকেলে মতিন, হামিদ আর শুভ মাছ ধরতে সমুদ্রে এসেছিলো। শুভ ট্রলার চালাচ্ছিল আর মতিন ও হামিদ মাছ ধরছিলো।আকাশে হঠাৎ মেঘ জমাট বাধঁতে শুরু করলো কিছুক্ষন পরেই জোড়ে সমুদ্রের ঢেউ বেড়ে গেল মুষল ধারায় বৃষ্টি শুরু হলো। সমুদ্রে পানির স্রোত ক্রমশ বেড়ে চলছিলো। হঠাৎ একটা ঝড় শুরু হলো। শুভ ট্রলার থামিয়ে তীরে ওঠার চেষ্টা করছিলো। কিন্ত সেদিন তারা ঝড়ের কবলে আটকা পড়েছিলো,,, ট্রলার এর মধ্যে পানি ঢুকে গেল এবং ট্রলার টা ডুবে গেল।।। সন্ধ্যায় ঝড় থেমে যায়। সন্ধ্যার সময় মালদ্বীপ কোস্টগার্ড সমুদ্রে টহল দিচ্ছিল, হটাৎ একজন অফিসার লাইটের আলোতে দেখল দুইটা লাশ ভাসছে। স্পিডবোর্ট এ করে তারা দুটি লাশ উদ্ধার করল।লাশ দুটি ছিলো মতিন ও হাসানের কোস্টগার্ডরা একটু এগোতেই দেখল একটা লোক তীরের বালিভূমিতে শুয়ে আছে অচেতন অবস্থায়। শুভর চিকিৎসা হলো সে সুস্থ হলো। শুভ পুলিশকে জানায়, সেদিন প্রচুর ঝড়ে ট্রলার ডুবে যায় আর পানিতে অধিক স্রোতের কারনে হাসান,ও মতিন সাঁতার কাটতে পারেনি। অন্যদিকে শুভ ঢেউয়ের ধাক্কায় এসে বালিভূমিতে অচেতন অবস্থায় পরে থাকে । পুলিশ মতিনের বাবা রহমান সাহেবকে চিঠি দিয়ে সব জানায়। এবং লাশের দাফনের জন্য মতিনের লাশকে দেশে পাঠানো হয়। মতিন বেকার ছিলো তাই কিছু টাকা আয়ের জন্য মালদ্বীপে যায় । তবে মতিনের ভাগ্যে যা ছিলো তাই হলো। মতিন মালদ্বীপ এর নীল সমুদ্রে ডুবে চলে গেল না ফিরে আসার দেশে "" " সমাপ্ত "


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪০৭ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • SAIMA
    User ৫ বছর, ১ মাস পুর্বে
    so sad....