বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

বাগানবাড়ি রহস্য ২

"রহস্য" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মো রাকিবুল হাসিব (০ পয়েন্ট)

X মাসের পর মাস গোটা বাংলাদেশ চষে বেড়াতে হলো আমাকে। সে ভ্রমণ আর অভিজ্ঞতার বিশদ বিবরণ আমি দেব না। কোথায় না গেলাম, কত কিছুই না দেখলাম, কিন্তু আমার আসল উদ্দেশ্য যেমন ছিল, তেমনি অপূর্ণই থেকে গেল। সেই বাগান আর বাড়ি কোথাও আমি দেখতে পেলাম না। অবশেষে দীর্ঘ ট্যুর শেষ হতে চলেছে। গত বছরের মতো চলতি বছরও, প্রতিটি দিন সেই স্বপ্নটা দেখতে হচ্ছে আমাকে। স্বপ্ন নয়, বলতে গেলে ওটা এখন আমার জন্য প্রায় দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। শীত শেষে বসন্ত উঁকি দিচ্ছে, কিন্তু ওই সাদা বাড়ি না আমাকে ছাড়ছে, না ধরা দিচ্ছে। কুমিল্লার প্রত্যন্ত গ্রাম বিভাবরীতে এসেছি, এখানে মাস দুয়েক থেকে আবার ফিরে যাব ঢাকায়। গোমতী নদী থেকে জগন্নাথপুরের দিকে যেতে, প্রায় সীমান্তের লাগোয়া এই গ্রাম। গ্রামের মাঝখানে একটা দালানে আমাদের মেডিকেল ফ্যাসিলিটিজ সেন্টার, পাশের ছোট্ট দালানটায় আমাদের থাকার ব্যবস্থা। আমার এখন যা স্বভাবে দাঁড়িয়ে গেছে, কাজের ফাঁকে অবসর পেলেই ছোট্ট গাড়িটা নিয়ে বেড়াতে বেরিয়ে পড়ি। সেদিনও ঝোঁকের মাথায় বেরিয়ে এদিক-সেদিক ঘোরাফেরা করার পর মনে হলো আমি বোধ হয় পথ হারিয়ে ফেলেছি। এখনো বেলা আছে, তাই আতঙ্কিত না হয়ে ফিরতি পথ ধরার চেষ্টা করছি। এই সময় হঠাত্ অভিভূত হয়ে পড়লাম। এটাকে সেই কৌতূহল জাগানো আবেগের সঙ্গে তুলনা করতে হয়—দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার পর ভালোবাসতাম এমন কোনো মানুষ বা স্থানকে হঠাত্ চিনতে পারলে যেমনটি হওয়ার কথা; যদিও ওই এলাকায় আগে কখনো আসিনি আমি, তার পরও আমার ডানদিকে যে দৃশ্য রয়েছে, তা আমি পরিষ্কার চিনতে পারছি—এক জোড়া ছোট্ট পাহাড়ের মাঝখানে সরু উপত্যকা। গাড়ি নিয়ে সাবধানে এগোচ্ছি আমি। উত্তেজনায়, রোমাঞ্চে আমার হাতের রোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। প্রথমে চোখে পড়ল সুপারি আর নারকেলগাছের মাথাগুলো। আম-জাম-কাঁঠাল-লিচু-পেয়ারা-কলা-আতা-করমচা-বরই-ডালিম আর তেঁতুল...দ্রুত গাড়ি চালিয়ে একের পর এক এসব বাগান পার হয়ে যাচ্ছি। তারপর বাড়িটা দেখতে পেলাম। সাদা, নিচু আর লম্বা; চারদিক থেকে লেবু ঝোপগুলো যেন পরম মমতায় ঘিরে রেখেছে। ওটার বাঁ দিকে বিস্তীর্ণ ঘাসজমি, কিনারায় সারি সারি নারকেল আর সুপারিগাছ দাঁড়িয়ে—চমত্কার একটা ব্যাকগ্রাউন্ড; বিশেষ করে আকাশছোঁয়া গাছের পাতা সারাক্ষণ দোল খাওয়ায় এটাকে এখন নিরেট বাস্তবই লাগছে। বাস্তবেও অনুভব করলাম কী এক আকর্ষণ আছে বাড়িটার, ওটার টান অগ্রাহ্য করতে পারছি না। ধীরপায়ে ওটার দিকে এগোচ্ছি। এরপর সেই কাঠের সাদা গেট পেরোতে হলো। নির্দিষ্ট নকশা ধরে বাঁক নেওয়া সরু পাকা পথ ধরে যাচ্ছি, দুই ধারে ডজন ডজন পাতাবাহার আর ফুলগাছ দেখতে পাচ্ছি। সাদা গোলাপই বেশি, তবে বাসন্তীকুসুম, তারাফুলসহ নাম না-জানা আরও অনেক ফুল আছে, ঠিক এত বছর ধরে স্বপ্নে যেমনটি দেখেছি। একসময় পথের শেষ মাথায় পৌঁছে গেলাম, দালান থেকে আর মাত্র কয়েক কদম দূরে আমি। বাড়ির সামনে চোখ জুড়ানো লন, নিয়মিত যত্ন করা হয়। লম্বা ফ্লাওয়ার বেডে নীললোহিত, লাল আর সাদা রঙের গোছা গোছা ফুল ফুটেছে, সবুজ বিস্তৃতির মাঝখানে ভারি সুন্দর দেখাচ্ছে। সাদা পাথরের বাড়ি, বিশাল ছাদটা নীলচে স্লেট দিয়ে তৈরি। রং ও পালিশ করা দামি কাঠের দরজা, পাল্লায় বাহারি নকশা; ওটার সামনে পৌঁছাতে হলে প্রথমে কয়েকটা ধাপ টপকাতে হবে। গাড়ি থামিয়ে নামলাম, ধাপগুলো টপকালাম, তারপর চাপ দিলাম কলবেলের বোতামে। খুব ভয় পাচ্ছিলাম, কেউ সাড়া দেবে না। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে একজন দারোয়ান বা কেয়ারটেকার গোছের লোক দরজা খুলল। লোকটার সারা মুখে বিষণ্নতার ছাপ, বয়সও হয়েছে প্রচুর, গায়ে কালো কোট চাপানো। আমাকে দেখে ভারি অবাক হয়েছে বলে মনে হলো, কথা না বলে সপ্রতিভ একটা ভাব নিয়ে তাকিয়ে থাকল আমার দিকে। ‘মাফ করবেন,’ বললাম আমি। ‘আমার একটা অনুরোধ আছে, শুনতে হয়তো একটু অদ্ভুত লাগবে। কে বা কারা এই বাড়ির মালিক, আমি জানি না, তবে তাঁরা যদি দয়া করে বাড়িটা আমাকে একবার দেখার অনুমতি দেন, আমি খুব কৃতজ্ঞবোধ করব...’ ‘এই বাগানবাড়ি ভাড়া হবে, বেগমসাহেবা,’ বাধা দিয়ে বলল লোকটা। ‘লোকজনকে দেখাব বলেই না এখানে আমি আছি।’ ‘ভাড়া হবে?’ বললাম আমি। ‘আরে, আমার ভাগ্য তো দেখা যাচ্ছে দারুণ...কিন্তু, এত সুন্দর একটা বাড়িতে মালিকেরা কেন বসবাস করেন না?’ ‘মালিকেরাই এখানে বাস করতেন, বেগমসাহেবা। তাঁরা চলে গেলেন এখানে ভূতের উপদ্রব শুরু হবার পর।’ ‘ভূতের উপদ্রব?’ ভ্রু কোঁচকালাম আমি। ‘উঁহু, অসম্ভব, এসব বলে আমাকে ভয় দেখানো যাবে না! কী আশ্চর্য, এই যুগে কেউ ভূতটুত বিশ্বাস করে নাকি!’ ‘বিশ্বাস আমিও করতাম না, বেগমসাহেবা,’ অত্যন্ত গম্ভীর সুরে বলল লোকটা, ‘যদি যে ভূতটা ওঁদেরকে ভাগিয়েছে, তার সঙ্গে আমারও রাতের বেলা বাগানের ভেতর বার কয়েক দেখা না হতো।’ ‘ভালো কাহিনি ফেঁদেছেন!’ অবাক হওয়ার সুরে বললাম, চেষ্টা করলাম হাসতে, তবে সে হাসিতে অদ্ভুত আড়ষ্টতা থেকেই গেল। ‘কিন্তু, বেগমসাহেবা, এই কাহিনি শুনে আপনার অন্তত হাসা উচিত নয়,’ বুড়ো লোকটা যেন খানিকটা তিরস্কারের সুরে বলল, ‘যেহেতু আপনিই সেই ভূত।’ বিদেশি কাহিনি অবলম্বনে। gj(ভাল লাগলে অবশ্যই জানাবেন)gj


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৫১২ জন


এ জাতীয় গল্প

→ রহস্যময় বাগানবাড়ি
→ বাগানবাড়ি রহস্য ১

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • ¤-ইশিকা-¤
    User ৫ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    হুমম,,,ভাল হয়েছে গল্পটা