বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
এক
একটা কাঠের চেয়ারে আষ্ঠেপৃষ্ঠে বাধা রয়েছে জনি।বয়স ২৬ এর মত।পেটানো শরীর, চুলগুলো সোনালি।বাধা অবস্থায় মাথাটা বুকের উপর ঝুলে রয়েছে।নিথর আর অনর দেহটা হঠাৎ করে মৃদু কেঁপে উঠল।বুকের উপর থেকে মাথাটা সরে গেল।জ্ঞান ফিরেছে জনির।প্রথমে কিছু বুঝতে না পারলেও পরবর্তিতে হাত-পা টেনে নিজেকে ছাড়াবার অনেক চেষ্টা করল সে।কিন্তু চেষ্টাগুলো বৃথাই গেল।এভাবে আরও কিছুক্ষণ চেষ্টা করার পরও যখন নিজেকে ছাড়াতে পারল না তখন তাকে হাল ছাড়তেই হল।টুক করে একটা আওয়াজ হতেই মাথা তুলে সামনে তাকাল সে।একটা ছায়ামূর্তি হাতে একটা সিরিঞ্জ নিয়ে সামনে এগিয়ে আসছে।ছায়াটা স্পষ্ট হতেই জনির চোখে আতঙ্ক ফুটে উঠল।
'না স্যার', ভয়ার্ত কণ্ঠে বলল সে। 'আ-আ-আপনি আমার সাথে এমনটি করতে পারেন না'
'আমিতো তেমন কিছু করছি না জনি', শান্ত কণ্ঠে বলল ছায়ামূর্তিটা। 'শুধু এ সিরিঞ্জটা ইনজেক্ট করব তোমার শরীরে।'
'না ড. আমি এটা ইনজেক্ট করব না'।
'আমিতো তোমার শরীরে এটা ইনজেক্ট করাবই,আমার এত বড় একটা ইনভেনশানন পৃথিবীকে জানাতে হবে না', কথাটা বলেই অট্টহাসি জুড়ে দিল ড.এর ছায়ামূর্তি। হাসি থেমে গেল।কঠিন হয়ে উঠল তার চেহারা।
'আমাকে পৃথিবীর কোনো বাধাই আজ আটকাতে পারবে না।আমি আজ তোমার উপর এক্সপেরিমেন্ট করবোই।'
এরপর ছায়ামূর্তিটা হাতে থাকা সিরিঞ্জটা ইনজেক্ট করে দিল জনির দেহের ভেতর।যার সাথে গত ১০ বছর ধরে কাজ করছে সে, যে বিজ্ঞানীর সবচেয়ে আস্তাভাজন ছিল, সে খেপা বিজ্ঞানী আজ তাকে শিকার বানিয়েছে কথাটা ভাবতেই চোখে জল চলে আসলো জনির।কিন্তু পরক্ষণেই চোখের জল চলে গেল তার।সে ভেতরে অনুভব করল হিংস্রতা।ক্রমশ তার ভেতরটা হিংস্র হয়ে উঠছে।আরও কিছুক্ষণ বাদে জনির গলা গিয়ে বেরুতে লাগল অদ্ভূদ এক আওয়াজ।এ শব্দটার সাথে জনি কোনো কালেই পরিচিত নয়।অনেকটা যেন হিংস্র কোনো জন্তুর আওয়াজ।হঠাৎ করে সে তার শরীরের ভেতর শক্তি অনুভব করল।একটানে চেয়ারের দড়ি ছিড়ে ফেলল।হুংকার দিয়ে ছিটকে ফেলে দিল খেপা বিজ্ঞানীকে।
দক্ষিণের পাহাড়ের সারির নিচে দিয়ে পাহাড়ি বুনো পথে নিজ মনে সাইকেল চালাচ্ছে দুইকিশোর।পরন্ত বিকেলের প্রাকৃতিক দৃশ্যটা নিজের মনের মত করে উপভোগ করাই হচ্ছে ওদের একমাত্র লক্ষ্য।একজন সামনে আরেকজন পেছনে।হঠাৎ করে একটা হুংকারের শব্দ দুইকিশোরের কানে আসতেই ব্রেক কষে দাড়িয়ে গেল সামনে থাকা কিশোরটা।৫ ফুট ৬ ইঞ্চির উচ্চতা ছেলেটার মাথা ভর্তি চুল।একদিকে পরে রয়েছে সেগুলো।গায়ের রং ফরসা।পরনে রঙিন শার্ট আর প্যান্ট।পাশে এসে ঘ্যাচ করে ব্রেক কষে এসে দাড়াল দ্বিতীয় কিশোর।গোলগাল চেহারা,মাথা ভর্তি হালকা বাদামি চুলগুলো খাড়া।গায়ের রং হালকা কালো।পরনে রয়েছে হাফ-হাতা ধুসর রংয়ের একটি শার্ট আর জিন্সের প্যান্ট।
'আওয়াজটা কিসের ছিল?', অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল দ্বিতীয় কিশোর।
'বুঝতে পারছি না', বিড়বিড় করে বলল প্রথম কিশোর। 'মনে হচ্ছে কোনো জন্তুর।'
সাইকেল ঘুরিয়ে ওরা বাড়ীর দিকে রওনা দিল।সূর্যটা ইতিমধ্যে পশ্চিম আকাশে একটু একটু করে ডুবে চলছে।আর ধীরে ধীরে অন্ধকার চারপাশটা গ্রাস করছে।তারই মধ্য দিয়ে বুনো পথে সাইকেল চালিয়ে বাড়ী ফিরছে দুইগোয়েন্দা জাহিদ আর রিনক।দ্বিতীয়বার একটা বাড়ীর কাছে এসে দাড়িয়ে পরল জাহিদ।আর তার পাশে এসে দাড়াল রিনক। 'কি হয়েছে?', জিজ্ঞাসা করল সে। 'আবার থামলে কেন?'
'হিসসসস', মুখে আঙুল দিল জাহিদ। 'চুপ করে থাক,দেখ কিছু শুনতে পাও কিনা।'
কান পেতে চারপাশটায় চোখ বুলাতে লাগল রিনক।হঠাৎ করেই একটা ভয়ংকর আওয়াজ তার কানে বাজতেই ভয় পেয়ে ঘাবড়ে গেল সে।
'জা-জা-জাহিদ', জিব দিয়ে ঠোট চাটল ও। 'শ-শ-শব্দটা কোথা থেকে আসছে?'
আঙুল দিয়ে রাস্তার ডান পাশে থাকা একটা বাড়ীর দিকে ইশারা করল জাহিদ।ভয়ে ভয়ে সেদিকে তাকাল রিনক।ঘন ঝোপঝারের ঠিক মধ্যখানে রয়েছে কাঠের পাটাতনের বাড়ীটা।কাঠ দিয়েই সম্পূর্ণ বাড়ীটা তৈরি।বাড়ীটার বেশ কিছু অংশে কাঠের পচন ধরে গিয়েছে।বাড়ীর পেছন সাইডে বিশাল একটা পাহাড়ের দেয়াল সোজা ৩০ ফুট উপরের দিকে উঠে গিয়েছে।বাড়ীর বা-পাশে একটা ছোটখাট খাদ,ডান পাশে ঘন জঙ্গল আর ঠিক উল্টো পাশে রয়েছে বুনো একটা পথ যেখানে ওরা এখন দাড়িয়ে রয়েছে।
অধির আগ্রহে বাড়ীটার দিকে তাকিয়ে রয়েছে জাহিদের চঞ্চল দুটি চোখ।বাড়ীর ভেতর দপ করে একটা আলো জ্বলে উঠল।পরক্ষণেই ভেসে আসলো রক্ত হিম করার মত শব্দটা।শব্দটা এতটাই ভয়ংকর ছিল যে জাহিদ পর্যন্ত ভয়ে কুকড়ে গেল।বাড়ীটায় গত ৩০ বছর ধরে কেউ থাকে না সেটা জানে দুইগোয়েন্দা।তাহলে এ আওয়াজটা কিসের? আর আলোটাইবা জ্বলল কিভাবে? এমন হাজারো প্রশ্ন ঘুরতে লাগল জাহিদের অদম্য কৌতুহলি মনে।এদিকে রিনকের অবস্থা দেখার মত।ভয়ে একদম কুকড়ে রয়েছে।৩০ বছর পুরোনো একটা বাড়ী থেকে এভাবে হঠাৎ করে এমন ভয়ংকর আওয়াজ আসবে সেটা কল্পনাও করতে পারেনি সে।তৃত্বীয়বারের মত ভয়ংকর সে আওয়াজটা ওদের কানে আসতেই 'জাহিদ চল ভাগি', বলেই সাইকেল ঘুরিয়ে উদ্ধশাসে ছুটটতো শুরু করল রিনক।
দুই
পরদিন সকাল বেলা।হেডকোয়াটারে এসে মিলিত হল দুইগোয়েন্দা।জরুরি মিটিং ডেকেছে গোয়েন্দা প্রধান।ডেস্কের ওপাশে নিজের চেয়ারে গম্ভির হয়ে বসে রয়েছে সে।তার উল্টোপাশে বসে রয়েছে রিনক।
'আমরা আজ আবার যাব', অবশেষে মুখ খুলল জাহিদ।গতকালের বেপারটা তাকে খুব ভাবিয়ে তুলেছে।
'ঐ ভূতুরে বাড়ীতে যাবে!', চোখে অবিশ্বাসের ছাপ ফুটে উঠল রিনকের।
'হ্যা, এ রহস্যের কিনারা না করা পর্যন্ত আমি থামছি না।'
'তারমানে তুমি বলতে চাচ্ছ তদন্ত করার মত একটা কেস পেয়ে গিয়েছ?'
সহকারির কথায় প্রশস্ত এক হাসি ফুটে উঠল গোয়েন্দা প্রধানের মুখে।ঠিক হল আজ বিকেলে যাবে ওরা সে বাড়ীতে।উদ্দেশ্য শব্দটার উৎস খুজে বের করা।পরিকল্পনানুযায়ি বিকেলের দিকে রহস্যময় বাড়ীটার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরল ওরা।দক্ষিণ পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত রহস্যময় কাঠের বাড়ীটার কাছে পৌছুতে বেশিক্ষণ লাগল না ওদের।সাইকেল দুটো ঝোপের আড়ালে রেখে পায়ে পায়ে বাড়ীটার দিকে এগুতে লাগল দুইগোয়েন্দা।চারদিকে শুনশান নিরবতা।বেশ শিথল পরিবেশ।শুধু ওরা হাঁটার সময় শুকনো পাতাগুলো পায়ের তলায় পরে মচমচ করে উঠছে।যখনি ওরা বাড়ীটা থেকে কয়েক মিটার দূরে ছিল তখনি ওদের পেছন থেকে ভেসে আসলো অদ্ভূদ এক গোঙানির আওয়াজ।পেছনে ঘাড় ফিরে তাকাতেই চমকে উঠল দুজনে।চোখেমুখে আতঙ্ক ফুটে উঠল জাহিদ আর রিনকের।
চলবে......
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Prachi
User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বেPrachi
User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে¤-ইশিকা-¤
User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে¤-ইশিকা-¤
User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বেPrachi
User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বেPrachi
User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে