বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

তিনটি রক্ষা কবচ

"রূপকথা " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান আল মামুন (০ পয়েন্ট)

X কোন এক সুন্দর সকালে একজন বালক সন্ন্যাসী মঠের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়েছিল। সে মনে মনে বলল, “ওঃ, এই রকম সুন্দর দিনে বাইরে বেরিয়ে বাদাম কুড়োতে কী ইচ্ছাই না করছে!” প্রার্থনা শেষ করে সে তাড়াতাড়ি প্রাত্যহিক কাজগুলো সেরে ফেলল, তারপর এক ছুটে প্রাচীন মঠটায় পৌঁছে গেল, মঠাধ্যক্ষকে সবিনয়ে জিজ্ঞাসা করল, “আমি কী আজ বাদাম কুড়োতে যেতে পারি?” সন্ন্যাসী বললেন, “না, না, তোমার বাইরে যাওয়া চলবে না। পর্বতে বসবাসকারী ডাইনী যদি তোমায় ধরে ফেলে তাহলে কী হবে?” সন্ন্যাসী বালকটি অনেক কাকুতি মিনতি করল। তার আকুলিবিকুলিতে নরম হয়ে সন্ন্যাসী অনুমতি জানিয়ে বললেন, “ঠিক আছে, যদি একান্তই যেতে ইচ্ছে করে তবে যাও। কিন্তু এই তিনটে কাগজের টুকরো সঙ্গে করে নিয়ে যেও। এইগুলি সৌভাগ্যদায়ী রক্ষাকবচ। যদি কোন সমস্যার মুখোমুখি হও তবে এদের কাছে সাহায্য চেও।” সন্ন্যাসী বালকটি মহা আনন্দে বেরিয়ে পড়ল। একছুটে পর্বতের ঢালে পৌঁছে ইতস্তত ঘুরল, ফিরল, তারপর এক সময় মঠ থেকে দূরে- বহুদূরে মিলিয়ে গেল। আহ্লাদে আটখানা হয়ে ভাবতে লাগল, “আজ আমি কত বাদামই না কুড়িয়েছি!” হঠাৎ তার কানে এলে কে যেন বলছে, “বাছা তুমি তো সন্ন্যাসীদের মঠ থেকে এসেছ, তাই না?” সে একজন বৃদ্ধা মহিলাকে তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল। বৃদ্ধা তাকে বলল, “আমার বাগানে অনেক ভালোজাতের বাদাম আছে। আমি নিজে বেছে বেছে বড় আর রসাল বাদামগুলো তোমার জন্য আগুনে ঝলসাবো আর ছোটগুলো সেদ্ধ করে দেব।” তার জাদুমাখা কন্ঠস্বরে বালকটি মোহিত হয়ে গেল। বৃদ্ধা বালকটিকে তার বাড়ি নিয়ে গিয়ে প্রতিশ্রুতিমত খাবার তৈরি করল। খাওয়া সারা হলে বৃদ্ধা তাকে বলল, “তোমার নিশ্চয়ই খুব ঘুম পেয়েছে। রাতে এখানেই শুয়ে পড়। কাল সকালে মঠে ফিরে যেও।” ছোট্ট সন্ন্যাসী বালকটি লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়েই গভীর ঘুমে অচেতন হয়ে গেল। মাঝরাত্তিরে হঠাৎ তার ঘুম ভাঙল। জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখল বৃষ্টি পড়ছে। আবার সে শুয়ে পড়ল। শুয়ে থাকতে থাকতে তার মনে হল, বৃষ্টির কণা যেন তাকে ডেকে বলতে চাইছে, “রিম্‌ ঝিম্‌, রিম্‌ ঝিম্‌ চোখ খোল, দেখ এ বুড়ি মানুষ নয় জাদুকরী এক” লেপের তলা থেকে উঁকি মেরে সে বৃদ্ধাকে সেখানেই বসে থাকতে দেখল। ভাবল বুড়িটা এখানে বসে বসে কী করছে? হঠাৎ সে শুনতে পেল বৃদ্ধা আপনমনে বলে চলেছে, “আমি কত না সুন্দরী, আমার শিংগুলো কী ছুঁচলো আর বড়ো!” ছেলেটি ভাবতে লাগল, “বুঝেছি, এই তাহলে পর্বতবাসিনী ডাইনী, “এ আমাকে খেয়ে ফেলবে, ভোর হতে না হতেই পালাতে হবে। ভীতসন্ত্রস্ত বালক চুপচাপ পাথরের মত শুয়ে রইল। ভোর হতে সে বলল, “বুড়িমা, আমি হাতমুখ ধুয়ে আসি?” বৃদ্ধা উত্তর দিল, “না- না, বাইরে প্রচন্ড ঠান্ডা, হাতমুখ ধুতে পারবে না, যেখানে রয়েছ সেখানেই শুয়ে থাকো।” “কিন্তু আমাকে যে পরিষ্কার হতেই হবে” নাছোড়বান্দা ছেলেটি জানাল। “বড্ড জ্বালাতন করছ, আমাকে বড়ো সমস্যায় ফেলছ তুমি! ঠিক আছে যেতে দেব, তবে একটি শর্তে। আমি তোমার কোমরে এই দড়িটা বেঁধে দেব।” এই কথা বলে ডাইনী বুড়ি তার কোমরে দড়ি বেঁধে দিয়ে নিজের হাতে দড়ির খুঁটটা ধরে ঘরের কাজকর্ম সারতে লাগল। বাইরে বেরিয়ে বালক সন্ন্যাসী ভাবল, “চটপট্‌ আমার কর্তব্য সেরে ফেলতে হবে।” তাই সে যত দ্রুত সম্ভব তার পকেট থেকে রক্ষাকবচের একটি বের করল। অমনি কোমরের দড়ি খুলে পড়ল। যখন ডাইনী বুড়ি হাঁক পাড়ল, “তুমি কোথায়? উত্তর দাও” ততক্ষণ্ব বালক সন্ন্যাসী নিঃশব্দে পিছনের খিড়কি দিয়ে বেরিয়ে বাতাসের বেগে ছুটে চলেছে। ওদিকে ডাইনীবুড়ি তো ঘরে অপেক্ষা করছে আর বাড়ি মাত করে বলছে, “তোমার কী এখনও হাতমুখ ধোওয়া হল না? জলদি কর।” আর বাইরে থেকে জাদু কাগজটা উত্তর দিচ্ছে, “হয়ে এসেছে, আর একটু অপেক্ষা কর।” বৃদ্ধা তো অপেক্ষা করেই চলেছে। খানিক বাদে অধৈর্য হয়ে সে আবার বলল, “আর কত সময় লাগবে? তাড়াতাড়ি চলে এস।” প্রত্যুত্তরে জাদু কাগজ জানাল, “আর সামান্যক্ষণ অপেক্ষা কর।” অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত ডাইনী অবশেষে লাথি মেরে দরজা খুলে ফেলেই বলে, “কী? পাখি পালিয়েছে! আমাকে ঠকিয়েছে? ঠিক আছে, আমি আসছি, এখনই তোমায় ধরে ফেলব।” ঝড়ের বেগে ছুটে ডাইনী তো ছোট ছেলেটিকে প্রায় ধরে ফেলার উপক্রম করেছে, এমন সময় সে তার দ্বিতীয় রক্ষাকবচের কাগজখানা বের করল। জাদু কাগজ বলল, “উঁচু বালির পাহাড়ে যা।” অমনি হুশ্‌ করে একটা শব্দ হল আর ডাইনীটা উঁচু এক বালির পর্বতের ওপরে উঠে গেল। সেখান থেকে গড়াতে গড়াতে নীচে পড়তে থাকে আর চিৎকার করে, দাঁড়া– আমি আসছি…… তোকে জ্যান্ত খেয়ে ফেলব!” সন্ন্যাসী বালকটি তো ছুটে চলেছে। তারপর যখন সে দূরে সন্ন্যাসীদের মঠে দেখতে পেল তখন তার রক্ষাকবচের তৃতীয়টা উপরে ছুঁড়ে দিয়ে বলল, “বিশাল নদীতে পরিনত হও।” কথা শেষ হতে না হতেই ঝপাং করে কী যেন একটা জলের পড়ার শব্দ পাওয়া গেল। ডাইনী বুড়ি বড়ো নদীটায় হুশ করে ডুবে গেছে। যতই সে তাতে প্রাণপণে সাঁতার কাটতে চেষ্টা করে ততই ঢেউয়ের প্রচন্ড আঘাত তাকে পেছনে ঠেলে দেয়। ইতিমধ্যে ছেলেটি তো তাদের মঠে পৌঁছে গেছে। মঠাধ্যক্ষকে দেখে সে ব্যাকুল কন্ঠে প্রার্থনা করল, “আমাকে বাঁচান প্রভু। পর্বতবাসিনী ডাইনী আমার পিছনে তাড়া করেছে।” সন্ন্যাসী বললেন,”চট্‌ করে এই আলমারির ভিতর ঢুকে পড়।” বালক যেই না কার্বাডের ভিতর ঢুকছে অমনি সেখানে ডাইনী বুড়ি এসে উপস্থিত। রেগেমেগে বলল, “সেই পাজী, নচ্ছার হতচ্ছাড়া ছেলেটা গেল কোথায়? আজ আমি তাকে দিয়েই সকালের খাওয়া সারব”। “ওঃ, সেই ছোকরা? সে তো গতকাল সকালে বাদাম কুড়োতে বেরিয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সে ফেরেনি।” সন্ন্যাসী সবিনয়ে জানালেন। “মিথ্যা কথা! তুমি ডাহামিথ্যা কথা বলছ। শিগগির বল, সে কোথায়?” সন্ন্যাসী বললেন, “আমি তো তোমায় বলেছি যে সে এখানে আসেনি।“ বলতেবলতেই সে ফের বলে, “এইরে, আমার চালের পিঠেটা বোধ হয় পুড়ে গেল।” “হুম্‌ চালের পিঠে!” লোভী ডাইনী তার বিশাল নাকটাতে মৃদু টান দিল, “আমি চালের পিঠে খেতে খুব ভালবাসি, বাছা, আমায় একটা দাও।” “যত খুশি খেতে চাও তা পাবে কিন্তু তার আগে তোমার জাদুশক্তির পরীক্ষা দিতে হবে। কী, রাজি তো?” ডাইনীবুড়ির জিভ্‌ তো লোভে লক্‌ লক্‌ করছে। সে বলল, তাকে যা করতে বলা হবে তাতেই সে রাজি। সন্ন্যাসী বললে, “ঠিক আছে, তুমি কতটা বড় হতে পার আমি দেখতে চাই। শুনেই বোকা বুড়ি এত বড়ো হয়ে উঠল যে তার মাথা আকাশ ছুঁয়ে ফেলল। “বাঃ! খুব ভালো। খুব ভালো জাদুপরীক্ষা দিয়েছ। এবার দেখাও তো দেখি কতটা ছোট আকার ধরতে পার?” যতক্ষণ পর্যন্ত না ডাইনী আগুন তোলার চিমটার মত ছোট হতে পারল ততক্ষণ পর্যন্ত সে ছোটো হতেই লাগল এবারে। “এর থেকেও ছোট হতে পারবে কী?” কোন উত্তর না দিয়েই ডাইনী আরও ছোট হতে থাকল। “বাঃ! তুমি এখন একটা সয়াবিনের দানার মত হয়েছ দেখছি!” বলেই বৃদ্ধ সন্ন্যাসী খুব দ্রুত ডাইনীকে সোনালী রঙের দুটি পিঠের মাঝখানে রেখে মুখে পুরে ফেললেন। ডাইনীবুড়িও অক্কা পেল।্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৮৬৩ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • Hafsa
    User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    Ha Ha Ha He He He Ho Ho Ho ......

  • আভা(the queen of beauty)
    User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    হাহাহাহাহিহিহিহিহিহিহাহাহা যত পার হাসো হাহাহা

  • Hafsa
    User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    He Ha Ho He Ha Ho

  • Jubayer Ahmed
    Golpobuzz ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    হাহাহাহাহাহাহাহা হিহিহিহিহিহি

  • আভা(the queen of beauty)
    User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    হুম,, হিহিহিহি,,

  • Jubayer Ahmed
    Golpobuzz ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    Tnx

  • আভা(the queen of beauty)
    User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ অনেক সুন্দর হয়েছে হু

  • Jubayer Ahmed
    Golpobuzz ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    And you

  • Hafsa
    User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    Welcome,vaiya....

  • Jubayer Ahmed
    Golpobuzz ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    Thanks hafsa

  • Jubayer Ahmed
    Golpobuzz ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    Tnx All

  • Hafsa
    User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    Wonderful ! Story

  • Farabi Ahmed ( mamun )
    User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    Nice

  • Farabi Ahmed ( mamun )
    User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    Excellent

  • Farabi Ahmed ( mamun )
    User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    Wow

  • ☠KM Saju Ahmed⚠/
    User ৫ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    অসাধারণ!!!