বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

সে আমি এবং সিগারেটের গল্প

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ ছেলে (০ পয়েন্ট)

X আমি : আচ্ছা, পৃথিবীর সব প্রেমিকাই তার প্রেমিককে সিগারেট খেতে নিষেধ করে, নানা রকম ভয়ানক শর্ত জুড়ে দেয়! তুমি আমার সব বিষয়ে বিধি-নিষেধ আরোপ করলেও সিগারেট প্রসংগে কিছুই বলোনা, ব্যাপারটা কি বলো তো? তুমি আমায় নিষেধ করোনা কেন ?? সে : আমি নিষেধ করলেই তুমি সিগারেট ছেড়ে দিবে ? আমি: উমমম... (কিছুক্ষণ ভেবে চিন্তে) না! না আবার হ্যাঁ... সে: না আবার হ্যাঁ কেন ? আমি: নিষেধ করার সাথে সাথেই তো ছেড়ে দিতে পারব না (কিছুটা বিব্রত ভঙ্গিতে আমতা আমতা করে)! সে: আর হ্যাঁ কেন? আমি: তুমি একটা কাজ নিষেধ করবে আর আমি সেটা করবো ?? সে: হুমমম... এই কারণেই আমি তোমাকে নিষেধ করিনি। আমি: বুঝিনি, বুঝিয়ে বলো... সে: শোন, তোমাকে একদিন সিগারেট প্রসংগে জিজ্ঞেস করেছিলাম । তখনো তোমাকে আমি ভালবাসতে শুরু করিনি... তোমার মনে আছে ? আমি: নাহ্। কি জিজ্ঞেস করেছিলে ? আর আমি কি উত্তর দিয়েছিলাম ? সে: আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, সিগারেট কেন খান? কি মধু আছে এতে? তুমি বলেছিলে, কেন খাই জানিনা, তবে সিগারেট নিঃসঙ্গতার অনুষঙ্গ । হুমায়ুন আহমেদের ভাষায়, সিগারেট এক ধরণের আশ্রয়। আমি: তো ? সে: দ্যাখো, আমি জানি, আমি যদি তোমাকে নিষেধ করি, তুমি সিগারেট ছেড়ে দিবে। ৩-৪ দিন কিংবা এক সপ্তাহ তুমি সিগারেট খাবে না। কারণটা হলো, ঐ যে-তুমি বলেছিলে, সিগারেট নিঃসঙ্গতার অনুষঙ্গ, সিগারেট এক ধরণের আশ্রয়। এক সপ্তাহ পর তুমি আবার সিগারেট ধরবে। তখন হয়তো তুমি আমাকে বলবেওনা যে সিগারেট খাচ্ছ। কারণ তাতে আমি কষ্ট পাবো। আবার সিগারেট যেহেতু তোমার অনেক দিনের অভ্যাস এবং তোমার নিঃসঙ্গতার অনুষঙ্গ, তুমি সেটাকে ছাড়তেও পারবেনা। তখন কি হবে জানো? আমাকে মিথ্যে বলার কারণে তুমি নিজে নিজেকে অপরাধী ভাববে এবং এক সময় এই অপরাধবোধটাও আর কাজ করবেনা। আর অপরাধবোধ কাজ না করলে কি হবে জানো? তোমার-আমার মধ্যে বিশ্বাসটুকু হালকা হয়ে যাবে। আমি সেটা চাই না। আমি এও চাই না, তোমার আর মাঝখানে সিগারেট প্রতিদ্বন্দী হয়ে দাঁড়াক... আমি: (ওর কথায় পুরোপুরি তাজ্জব বনে গেছি) তুমি এত চিন্তা করেছ এটা নিয়ে? সে: হুমমম... অনেক ভেবেছি। আমি তোমার কাছ থেকে দোকানে আড্ডা মারা, সক্রিয় রাজনীতি করার ইচ্ছা, ওষুধ না খাওয়ার প্রবণতা, ক্লাস না করা, সারা-রাত ইন্টারনেটে বসে থাকা, সকালের ঘুম-সবই কেড়ে নিয়েছি। সিগারেটটাও নিতে পারতাম। কিন্তু ঐ যে, তোমার নিঃসঙ্গতার অনুষঙ্গ!! সিগারেটটাও যদি কেড়ে নিই, তাহলে তোমার নিজের আর কি থাকলো বলো? তাতে যদি তুমি আরো একলা হয়ে যাও... আমি: (আমার চোখ টলমল করছে ওর কথায়! স্রষ্টা আমার প্রতি এতটা করুণাময় হবেন ভাবিনি। ও এত মায়াবতী কেন ?) হুমমম... সে: হুমমম... কি? এখন আমি যেটা চাই সেটা শোন, তুমি আস্তে আস্তে সিগারেটটা ছেড়ে দাও। আমি খুব খুশি হবো... আমি তোমাকে জোর করব না। তুমি নিজের মত করে চেষ্টা করবে। একটু একটু করে কমাতে চেষ্টা করবে। তুমি যেভাবে পারো, সেভাবে প্ল্যান করে চেষ্টা করো। আমি লক্ষ্য করেছি, সিগারেটের প্রতি আসক্তির পাশাপাশি তোমার এক ধরণের মায়াও আছে। এত সুন্দর সিগারেট বক্স আর লাইটারই তার প্রমাণ। এটা স্বাভাবিক, এত দিনের পুরোনো অভ্যাস, মায়া থাকবেই। যেদিন তুমি একদম ছেড়ে দিতে পারবে সেদিন আমাকে বলো... আমি খুউব খুউব খুউব খুশী হবো। আমার চেয়ে খুশী আর কেউ হবেনা... আমি: হুমমম... চেষ্টা করবো, অবশ্যই করবো। সে: আমি কি তোমার মন খারাপ করিয়ে দিলাম? আমি: না, একদম নাহ্। কেন? সে: এমনি বললাম ... (তারপর অনেক্ষণ চুপ) আচ্ছা শোন... তোমায় খুব জরুরী একটা কথা বলতে ভুলে গেছি.... আমি: কি?? বলো... সে: কথাটা শুনে আবার রাগ করবে নাতো? আমি: রাগ করবো কেন?? (কিছুটা টেনশান হচ্ছে, বাসায় কি কোন প্রোপোজাল আসলো নাকি??) সে: (অনেক্ষণ চুপ) ...... আমি তোমায় ভালোবাসি, অনেক অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি... আমি কিছু বলার আগেই লাইনটা ও কেটে দিয়েছে। তবু ফোন সেটটা হাতে নিয়ে অনেক্ষণ বসে রইলাম চুপচাপ... তোমার আর আমার মাঝখানে সিগারেট প্রতিদ্বন্দী হতে পারেনা ! তুমি মিশে থাকো আমার শুদ্ধতার পৃথিবীতে... সিগারেটের ধোঁয়ায় সে পৃথিবীটা আমি কলুষিতকরবোনা। । (উৎসর্গ: আমার আজন্ম আকাঙ্খিত সৌভাগ্যের দেবী'কে, যে আছে বলে পৃথিবীটা এখনো অক্সিজেনহীন হয়ে যায়নি...)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৮১২ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now