গল্প : #অভিমানি_বউ !!!

X গল্প : #অভিমানি_বউ !!! Writer : Pantha Shahria !!! - ও সোনা... বাবু কইতেছি.. বউ ও বউ এত্ত রাগ করো ক্যান.. দুলদুলি সোনা বাবু এই দেখো টুনটুনি পাখি ধরছি নিবা... বউ একটু এই দিকে তাঁকাও দেখি তোমার মুখ খানি। ও বউ তাঁকাও না একটু পিলিজ...। - আর একবার যদি ভুলে ও বউ বউ বলিস তাইলে তোরে.. ধইরা গায়ের সব চামড়া ছিইলা রান্না করে খেয়ে ফেলমু....। - আমারে দেখতে অনেক টেষ্টি তাই না.. তাইতো খাইতে চাও খালি.. ওকে নো প্রবলেম এই না চাক্কু কাজে লাইগা যাও.. দশটা না বিশটা না একটাই মাত্র বউ , সামান্য একটা আবদার করছে এটা কেমনে ফেলি.. অন্য কাউরে তো আর খাইতে চাও নাই, আমারেই তো খাবা.. হি হি হি..। - এমন সময় দেখি চাক্কুটা নিয়ে আমার দিকে আসলো। আর খপ করে হাতটা ধরে ফেললো, - হায় হায় সত্যি সত্যি খেঁয়ে ফেলবে নাকি... যেমন রেগে আছে খেয়ে ফেলতেই পাড়ে..। - হাত সরাইলি ক্যান.. হাত দে আজকে সত্যি সত্যিই তোরে খেয়ে ফেলমু..। - না মানে বউ.. আজকে অনেক গরম তো আর তাঁর মধ্যে আবার হেব্বি ঘেঁমে গেছি... এই যে দেখো... এখন খেঁয়ে টেষ্ট পাবা না বুঝলা.. আমি বলি কী কালকে সকালে খাইয়ো কেমন..ভালো বুদ্ধি না বলো... আচ্ছা চলো আইসক্রিম খাইতে যাবো.. আজকে দোকানের সব আইসক্রিম কিনে দিমু তোমারে হুমমমমমম... ও বউ চলো না যাবা...। - শয়তান তুমি আমারে উল্টা পাল্টা বুঝাবা আর আমার রাগ ভেঁঙ্গে যাবে তাই ভাবছো না... আর আমি তো এখন পুরাতন হয়ে গেছি.. তাই তো অন্য মেয়ে গুলার দিকে উকি ঝুকি মারো... বুঝি না কী আমি সব বুঝি... খবরদার আর আমাকে বউ বলে ডাকবি না... আর একবার বউ বলছিস তো এক্ষুনি আমি বাবার কাছে চলে যাবো...। - ও বউ... আমি কী ইচ্ছে করে তাঁকাইছি বলো... সকালে উঠে বারান্দাই গান গাইতেছিলাম আর এমনি ঐ মেয়েটা ঐ দিক দিয়ে যাচ্ছিলো... মেয়েটা হয়তো ভাবছে আমার বিয়ে হয় নাই.. আর আমি দেখতে কত্ত কিউট দেখছো.. আগে ও কত মেয়ে তাঁকাইতো জানোই তো... আর সেই জন্যই হয়তো মেয়েটা আমার দিকে তাঁকাইছে... আর আমি যখন ঐ দিকে একটু চোখ দিছি আর ওমনি তুমি চলে আসছো... আর ভাবতেছো আমি ঐ মেয়েটার দিকে উঁকি ঝুঁকি মারছি.... এখানে আমার দোষ কই বলো। - এই যে শোন... আমি বাচ্চা না বুঝলা, কজেল লাইফে যে পরিমানের ছেঁচড়া ছিলা... আমি সব জানি, এখন ও ছেঁচড়ামি যাই নাই তাই না, আর এখন তো আমি পুরনো হয়ে গেছি। - ওহহহহহহ... পুরাতন হইবা ক্যান মাত্র দশ দিন হইছে বিয়ের... আর এর মধ্যই যদি এমন ঝগড়া করে করে বাবার কাছে চলে যাও লোকে কী ভাঁববে বলো... তার থেকে বলি কীইইইই.... ওহহহহ বউ কই যাও দাঁড়াও না একটু বউ..... জানু... টুসটুসি পাখি, জান্টুস এই যে দেখো কান ধরছি আর কোন মেয়ের দিকে তাঁকামু না...। - তোরে আমি হাঁড়ে হাঁড়ে চিনি... আর খবরদার বউ বউ বলে দরোজাই টোকা দিবা না বলে দিলাম...। - কী মেয়েরে ভাই... কী করছি না করছি এমন অভিনাম করে দরোজা আটকাই বসে আছে....। ধপ করে দরোজা আটকাই যে পরীটা বসে আছে সেটা আমার একমাত্র বউ... নীলা। আর আমি সাহরিয়া.... নীলা আর আমার বিয়েটা পারিবারিক ভাঁবেই হয়েছে... পারিবারিক ভাঁবে মানে... আমার পরিবার বলতে খালি আমি, আর নীলার পরিবার বলে শুধু ওর বাবা... জীবনে অনেক মানুষ দেখেছি ,তবে.. নীলার বাবা আমার দেখা পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র মানুষ..। এমন শশুর পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার.. কোনদিন ভাঁবতেই পারি নাই.. ওনি হাঁসি মুখে আমার আর নীলার বিয়েটা দিবে.. শুধু বলেছিলো... সাহরিয়া আমি জানি পাগলিটা কোন ভুল করবে না। শুধু আমার একমাত্র মেয়েটাকে আগলিয়ে রেখো...। কীসের কী আমি আগলিয়ে রাখমু, সারাদিন তো আমারেই দৌঁড়ের উপড়ে রাখে... আর এখন যদি পাগলিটা ওর বাবার কাছে চলে যায়... এই বিয়ের দশ দিন পরেই.. তাহলে আমার কপালে যে কী আছে একমাত্র আল্লাহ্ জানে। পরীটার সাথে সাথে বড় একটা চাকরি ও পাইছি.. ওদের অফিসেই.. তবে আমার অফিস করতে হয় না। ওর বাবার কথা মতো পাগলিটাকে দেখে রাখলেই বেতন দিবে.... যেমন রাজকীয় অফার.... নীলার সাথে আমার প্রথম পরিচয়টা হয়েছিলো.. কলেজে। যখন আমি চোখ মুখ ধুয়ে মোছার জন্য রুমাল না দিয়ে নিজের গেঞ্জি খুলে মুছে আবার পড়ছিলাম.... সেদিনের কথা মনে পড়লে আজ ও হাঁসতে হাঁসতে পেঁট ব্যাথা হয়ে যায়.. আসলেই আমি তখন বড় সাইজ এর একটা গাধা ছিলাম, আর গাধা না হলে তো আর এই পরীটাকে পাইতাম না। যাই হোক আর যেভাবেই হোক পাগলিটা রাগ অভিমান ভাঙ্গাতেই হবে.. সাহরিয়া লাইগা পর বাপ ...। না হলে আমার কপালে শুনি আছে। - নীলা.... প্লিজ দরোজাটা একটু খোল... আচ্ছা বাবা মানছি আমার দোষ। ও বউ একবার আমার কথাটা একটু শোন...। আচ্ছা কী করলে তোমার রাগ অভিমান কমবে বলো... তুমি যা করতে বলে আমি তাই করবো হুমমমমমমমম। বউ ও বউ কী হলো। দেখলাম দরোজাটা খুলে গেলো। - যা করতে বলবো তাই করবা তো। - হুমমমমমমম, আগে বলেই দেখো না। - ঠিকআছে... তবে কোন ধরণের যদি চালাকি করছো.. তাহলে তোমারে ঐ ড্রেনে মধ্যে ফেলে দিমু হুমমমমমম.. মনে থাকে যেনো। - ঠিকআছে... বলবা তো আগে.. তা না হলে তো এমনিই ভয় লাগতেছে। - আজকে তুমি আইসক্রিম ওয়ালা হবে। - কীইইইই মানে। - ঐ যে আগে বলতা না যে চাকরি না পাইলে আইসক্রিম বেঁচবা সেইটা.. আজকে করবা বুঝলা। - হুমমমমমমম.... কে যেনো বলছিলো কপালে বাঁশ থাকলে বাঁশ বাগানের কাছে যাওয়া লাগে না এমনিই চলে আসে....। - ঐ কী বললা, আবার জোরে বলো। - না কিছু না....। - তাহলে চলো কাজর লেগে পড়ো। - হুমমমমমমমমমম চলো, কী আর করমু। - আইসক্রিম.. এই আইসক্রিম.. আসেন ভাই আইসক্রিস খান আর এই গরমে ঠান্ডা হয়ে যান... বউয়ের মাথা গরম এখুনি আসুন আর আমার কাছ থেকে সংগ্রহ করুন.. আইস কুলকা, এটা যেমন আপনার বউয়ের মাথা ঠান্ডা করবে আর সাথে দেহের ক্লান্তি ও ফিরে আনবে... মারে কিনলে সন্তান ফ্রি.. আর এই সুযোগ আজকে সীমিতো সময়ের জন্য... দেখি কোন ভাগ্য বানের কাছে আমাদের প্রথম আইসক্রিমটা যায়.... আসুন আসুন আর তাঁড়াতাড়ি সংগ্রহ করুন.....। - এই যে ভাই যদি আমি আইস কুলকা কিনি... তাহলে কী আমার গফ এর মাথা ঠান্ডা হবে। - ১০০% হতেই হবে... শুধু গফ না.. বউ, ভাবি, মামি, চাচি সবাইরে ঠান্ডা করতে পারবেন.... এটা তো আর কোন হালতু ফালতু জায়গা থেকে আমদানি ক্রিত না... সুদূর হিমাল থেকে এই আইস কুলকা আনা হয়েছে.... শুধু আমার কাছেই পাবেন...। - ভাই তাহলে আমারে পাঁচটা দেন। - এই নে ধরেন.... মায়ের সাথে বাচ্ছা ফ্রি। - বাচ্চা মানে। - বড় গুলা মা আর ছোট গুলা বাচ্ছা বুঝলেন... ভাই নিছেন আর এখন কেঁটে পড়েন জানতো...। বেঁচা বিক্রি শেষ..... - হা হা হা হা হা হা হা.............. (নীলা)। - এমর হা হা করার কী আছে হুমমমম, যা ইজ্জত ছিলো সেটা ও গেলে। - না না সোনা.. তুমি আইসক্রিম ওয়ালা হইলে না দেশের মধ্যে বিখ্যাত আইসক্রিম ওয়ালা হইতে.... এখন যখনি কোন মেয়ের দিকে তাঁকাবা তখনি.. আইসক্রিম ওয়লা বানাই দিমু হি হি। - হাঁসো হাঁসো তোমার তো হাঁসার দিন রাত সব। - অনেক কাজ করছো বাবু..আসো একটা পাপ্পি দেই। - সারাদিন রোদের মধ্যে দাঁড়াই রেখে আবার দরদ দেখাইতে আসছে। - ওলে বাবা...লাগ করছো বাবু। - না না আমার আবার রাগ আছে তাই। - হি হি হি.... উমমমমমমমমমমমম্মা। - দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা। বলেই একটা কামড় দিয়ে দৌড়........ - সাহরিয়য়য়য়য়য়া..... হারামি তোরে আজকে খালি পাই একবার... কালে তোরে আবার আইসক্রিম ওয়ালা বানামু হুমমমমমমমম.... শয়তান পোলা। >>সমাপ্তThe End