বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

বইয়ের নামঃ "হ্যাপী থেকে আমাতুল্লাহ"

"বুক রিভিউ " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান আলোর পরশ (০ পয়েন্ট)

X বইয়ের নাম: হ্যাপী থেকে আমাতুল্লাহ সাক্ষাতকার গ্রহণে: সাদিকা সুলতানা সাকী সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল ফারুক প্রকাশনায়: মাকতাবাতুল আযহার মুদ্রিত মূল্য: ১৬০/= (বিক্রয়কেন্দ্র ভেদে মুল্যের ভেদাভেদ হতে পারে) সারসংক্ষেপ : ---------------- নাজনীন আক্তার হ্যাপীর কথা মনে আছে? সময়ের আলোচিত অভিনেত্রী। অভিনয় যার পেশা হলেও এটা ছিলো তার নেশা। নেশা না হলে কি কেউ সেই পিচ্চি বয়স থেকেই নিজেকে নাইকা ভাবতে পছন্দ করে?পেশা আপনি চাইলেই ছাড়তে পারেন, কিন্তু নেশা!! অসম্ভব! সেই ছোট্ট বয়সেই যার মাথায় ঢুকে গেছে নাইকা হবো,টিভিতে দেখবে সবাই আমাকে,হাত তালি দিবে, মানুষ আমাকে ফলো করবে, কত নাম হবে, যস, ক্ষ্যাতি, সম্মান সব সব থাকবে। তখন তার জীবনের একটাই লক্ষ্য, স্বপ্ন পুরন। আর সেইসাথে যদি পরিবারের মানুষের সহযোগিতা পায় তাহলে তো আর কথাই নেই! রাস্তা হয়ে গেলো আরও সহজ! অতঃপর সেই লক্ষ্যে পৌছে যখন গায়ে তারকা খ্যাতি, পকেটে প্রচুর অর্থ, সমাজে সম্মান (!), সার্কেলের মধ্যমণি, ১০-১২ টি ছবির জন্য ডাক পাওয়া নাইকা! আর কি লাগে স্বপ্ন পুরনের? হয়তো তখন মনে মনে বলে "এটাই তো চাচ্ছিলাম!"তৃপ্তির ঢেকুর! আহা.... কিন্তু না.......! সৃষ্টিকর্তার সেদিনের পরিকল্পনা ছিলো তার রোজকার রুটিনের বাইরে! যা সে কল্পনাও করেনি! কখনও ভাবেও নি! কি ঘটেছিলো সেদিন? চলুন প্রকাশকের মুখেই শুনি..... "............কিন্তু সে-সব ছেড়ে এখন তিনি আপদমস্তক পর্দাবৃত দ্বীনদার মুসলিম নারী। সিনেমার কৃত্রিম নিয়ন আলোর জগত ছেড়ে চলে এসেছেন হিদায়াতের আলোকিত ভুবনে। পড়াশুনা করছেন মাদরাসায়। যাচ্ছেন দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতে। নিজে যেমন দ্বীনের ওপর উঠে এসেছেন, তেমনই অন্যকেও দ্বীনের পথে ডেকে যাচ্ছেন নিরন্তর। এমনকি এতোদিনের সুপরিচিত নাম ‘হ্যাপি’ ছেড়ে এখন তিনি নিজের পরিচয় দিচ্ছেন ‘আমাতুল্লাহ’।" হ্যাঁ তিনি এখন আমাতুল্লাহ! আল্লাহর বান্দী! পুরপুরি নিজেকে সপে দিয়েছেন আল্লাহর কাছে! কিন্তু কিভাবে হলো এতো পরিবর্তন? কে এনে দিলো এমন আলোর দীপশিখাটি? যার আলোয় আলোকিত হয়েছেন নিজে এবং করে চলেছেন অন্যকেও আলোকিত। অন্ধকার থেকে আলোয় আসার সেই পথ কেমন ছিলো? যা জানতে ফিরে যেতে হবে আলোচ্যমান বইটিতে "হ্যাপী থেকে আমাতুল্লাহ"! বইটি যে শুধুই কারও জীবন পরিবর্তনের গল্প অথবা অন্ধকার থেকে আলোয় আসার গল্প তা কিন্তু নয়! দ্বীনের পথে আসা এক বোনের আর্তনাদ। যা ফুটিয়ে তুলেছে এ দেশের কোটি মুসলিম পরিবারের চিত্র।এবং এটাই যে কথিত মুসলিম উম্মাহের বাস্তবিক হালাত তা বলে দেয় প্রতিটি পাতা! চলুন মুল আলোচনায় যাওয়া যাক........ পর্যালোচনা : ------------------ বইটি মুলত একটি সাক্ষাৎকার কে হুবহু তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাতুল্লাহর রূপনগরের বাসায় তাঁর সামনে ১০৫টি প্রশ্ন লিখিত আকারে পেশ করেন সাদিকা সুলতানা সাকি। আমাতুল্লাহ সবকটি প্রশ্নের উত্তর পূর্ণ আন্তরিকতার সঙ্গে দিয়েছেন। সাক্ষাৎকারের যাবতীয় উত্তর দু-টি সাউন্ড রেকর্ডারে রেকর্ড করে নিয়েছেছিলেন সাদিকা সুলতানা সাকি। এরপর সেই সাউন্ড রেকর্ডার থেকে শ্রুতিলিখন করে কাগজের পাতায় তুলে আনেন প্রকাশক। যেমনটা যিনি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছিলেন এবং প্রকাশক তাদের দুজনের ভাষ্য...... " আমরা চেষ্টা করেছি, আমাতুল্লাহর কথাগুলো অবিকল আমাতুল্লাহর ভাষায় তুলে ধরতে। আমরা চেষ্টা করেছি তার কথাগুলো যথাসম্ভব অক্ষুণ্ণ রেখে আপনাদের হাতে তুলে দিতে।" অর্থাৎ সাক্ষাৎকারের বক্তব্যগুলো যে শতভাগ আমাতুল্লাহর মুখনিসৃত, সে ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশ্বস্ত হতে পারি। সাক্ষাৎকারে প্রশ্নগুলো পেশ করা হয়েছিলো লিখিত আকারের এবং তিনটি ভিন্ন ভিন্ন পর্বে। *(প্রথমেই বলে রাখি বইটি যেহেতু একটি সাক্ষাৎকার মুলক তাই সাক্ষাৎকার গ্রহনকারী সাদিকা সুলতানা সাকী (আপু) কে আমি রিভিউ এর সুবিধার্থে এখানে লেখিকা বলে সম্বোধন করছি।) অত্যন্ত দক্ষতার সাথে লেখিকা পর্বগুলো সাজিয়েছেন এবং প্রশ্নগুলোও ছিলো চমৎকার ধারাবাহিক। ১. -প্রথম পর্বের প্রশ্ন ছিলো মোট ৪২টি, যেখানে উঠে এসেছে "আমাতুল্লাহ"র পারিবারিক জীবন, পড়াশুনা, মিডিয়ায় পদার্পণ, হিদায়াতের পথে সংগ্রাম, স্বামী-সংসার, পরিবার- পরিজন ও নতুন জীবনের কথা। -তাকে জিজ্ঞেস করা হয় তিনি দ্বীনের পথে আসার ফলে তার পরিবারের সদস্যদের প্রতিক্রিয়ার কথা , উত্তরটি চুম্বকাংশ এমন ছিলো, ".........তারা আমাকে অনেক মেরেছেন। .......তখন আমার মনে হতো এটাই বুঝি দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি কষ্টের জায়গা। এরচেয়ে বেশি কষ্ট হতে পারেনা। ওই সময়টা ছিলো আমার জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃসময়। আমি তখন সবসময়ই ভয়ে কুচকে থাকতাম যে, এই বুঝি কেউ এসে আমাকে মারবে!" "আমার এতো আদরের আম্মু এতো আদরের বোন তারা আমার সাথে এমন করবে এটা আমি কখনও ভাবিনি। ওরা আমাকে ঠিকমতো খেতে দিতোনা। আমি না খেয়ে পরে থাকতাম। জ্বর হলে ওভাবে পরে থাকতাম।কেউ আমার গায়ে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করত না যে, তোমার কি জ্বর হয়েছে? ......"(পৃষ্ঠা ৩৭-৪০) (সাক্ষাৎকার এর এই পর্যায়ে তিনি (আমাতুল্লাহ) কান্নায় ভেঙ্গে পরেন .....সে কি কান্না! তার হৃদয়বিদারক কষ্ট ও অঝোর কান্না দেখে লেখিকা ও কান্না সংবরণ করতে পারেন নি) 2. -দ্বিতীয় পর্বে "আমাতুল্লাহ" কে ৩১ টি প্রশ্ন করা হয়। সেখানে ছিল তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত জীবন, শখ, চাওয়া- পাওয়া ও ভালোলাগার বিষয়গুলো। ওনাকে জিজ্ঞেস করা হয়, কোন কাজ করলে নিজের কাছে অনেক অনেক ভালো লাগে? উত্তর টি ছিলো এমন "যেদিন আমি সারাদিন এর কাজকর্মের হিসেব নিয়ে দেখি যে, আজ অমুক গুনাহটি করতে চেয়েছিলাম ;কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই গুনাহটি করিনি, তখন নিজের কাছে অনেক ভালো লাগে।" (পৃষ্ঠা ৬৬) ৩. -আর তৃতীয় পর্বের ৩২ টি প্রশ্নের মধ্যে ছিলো "আমাতুল্লাহ"র তাঁর দু-জীবনের পার্থক্যগুলো(শোবিজ এবং হেদায়াত প্রাপ্ত জীবন), বিশেষত শোবিজ জীবনের অন্ধকার দিক, বর্তমান অবস্থান, আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি ও ভবিষ্যৎ-পরিকল্পনা। যেখানে একটি প্রশ্ন ছিলো এমন ...... সাকী :আপনার কি মনে হয়, আপনার এই পরিবর্তন দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে? আপনি আবার প্রথম জীবনে ফিরে যেতে পারেন? আমাতুল্লাহ : "........জাহান্নামের পথে আবার হাটা শুরু করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি এতো বোকা নই যে, এমন আগুনে ঝাপ দেব যেই আগুনের শেষ নেই, যে আগুনে অনন্তকাল পুড়তে হবে। আমি তো এখনও জানি না আমার ঠিকানা জান্নাত হবে কি, হবে না! মৃত্যু ছাড়া জানা সম্ভব ও না। আল্লাহ্ মাফ করুন। সাক্ষাৎকার এর ব্যাপারে লেখিকা বলেন, "আমাতুল্লাহ যথেষ্ট সময় নিয়ে ভেবে-চিন্তে উত্তর দিয়েছেন।....কাউকে আঘাত করে স্পষ্টভাবে বা অস্পষ্টভাবে, আকারে- ইঙ্গিতে কোনো কথা বলেননি। আর নেহায়েত কৌতূহল মেটাতে এমন কোনো প্রশ্ন করা হয়নি, যা তাঁকে বিব্রত করতে পারে।" অর্থাৎ বইটি কাউকে আঘাত বা তোষামোদ অথবা কাউকে তিরস্কার বা কারও প্রচারণাও করা হয়নি বলা যায়! উপলব্ধি : ----------------- বইটা পড়ে যে দুটি উপলব্ধি প্রবল হয়েছে, ১. "শহরের ধুলাবালি থেকে সুন্দর চেহারা কে বাচাতে ফেস মাস্ক ব্যাবহার করছি!শুধুমাত্র কাদা, ময়লা থেকে সুন্দর প্যান্ট কে রক্ষা করতে টাখনুর নিচের প্যান্ট গুটিয়ে উপরে উঠাচ্ছি কিন্তু জাহান্নাম থেকে বাচার জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি কি আমরা? " ২. হ্যাপি অন্ধকার মিডিয়া থেকে ফিরতে পারলো, হে আমার বোন তুমি কেন নয়? ভাববার বিষয়...... শিক্ষনীয় বিষয় : ---------------- আল্লাহর এই বান্দীকে দুনিয়াবি আলোক ঝলমলে জীবন, টাকা, যস্, ক্ষ্যাতি ছেড়ে যখন আল্লাহ্ হেদায়েতের আলোর নিচে জায়গা দিয়ে আলোকিত করলেন তখন তার নিজ পরিবারের অসহনীয় নির্যাতন, অত্যাচার তাকে সে আলো থেকে সরিয়ে আবার অন্ধকারে নিয়ে যেতে পারেনি! এই যে মানসিক শক্তি এই যে ঈমানী দৃঢ়তা!জোড়! এটা অকল্পনীয়! আল্লাহু আকবার! আল্লাহু আকবার! এই ঈমানদীপ্ত কাহিনী যে কারও মনকে আন্দোলিত করবে। মন্তব্য : --------------- দুনিয়ার জাঁকজমকপূর্ণ জীবন ত্যাগ করে আল্লাহর পথে চলা যেমন কঠিন তেমনি এখানে রয়েছে অপার্থিব সুখ,শান্তি এবং পরকালিন জীবনে মহামূল্যবান জান্নাতের নিশ্চয়তা। অপরদিকে দুনিয়াবি জাঁকজমকপূর্ণ, অনিয়ন্ত্রিত, ভোগবিলাসি, অনৈসলামিক জীবনে যেমন রয়েছে পার্থিব অশান্তি সেই সাথে পরকালিন ভয়ংকর জাহান্নামের নিশ্চয়তা। আল্লাহ্ আমাতুল্লাহ বোনটিকে কবুল করুক। আল্লাহ্ সবাইকে দ্বিনের সঠিক বুঝ দান করুক এবং হেদায়েতের বৃষ্টিতে সবাইকে ভিজিয়ে দিক যেমনি বোন আমাতুল্লাহ কে করেছেন। প্রতিটি ঘরে তৈরি হউক এক একটি আমাতুল্লাহ যার আলোয় আলোকিত হবে পরিবার, সমাজ, তথা রাষ্ট্র। ইসলামের আলোয় আলোকিত হবে চারদিক। বাবা মার সচেতন চোখ যেন ছেলেমেয়েদের বাইরে না যায় তারা যেন বেপথে গিয়ে জাহান্নামের টিকেট ক্রয় না করে আল্লাহ্ কাছে সেই দোয়া ও আবেদন রেখে রিভিউ টি শেষ করলাম। আসসালামু আলাইকুম অরহমাতুল্লাহি অবারকাতুহ। পরবর্তী রিভিউ নিয়ে আসছি ইনশাআল্লাহ।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪৬৩ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • Duaa...
    Golpobuzz ২ বছর, ৬ মাস পুর্বে
    ভালো...gj

  • tasfiya khan
    Guest ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    ভাইয়া আপনি আরো বেশি বেশি ইসলামিক ঘটনা গুলো রিভিউ করেন,আমার পড়তে অনেক ভালোলাগে। ভাইয়া আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো''''""""""""

  • Md:Rafie Khan
    User ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    verry nice

  • tasfiya khan
    Guest ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    Amin.......... verry nice

  • আলোর পরশ
    User ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ তাজু ভাই।

  • Ajidur Rahman Taju
    Golpobuzz ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    বইটি অনেক ভালো,, ,,

  • আলোর পরশ
    User ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    বোন, হ্যাপি আক্তার আপনার জন্য দোয়া করি।

  • হ্যাপি আক্তার
    Guest ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    আমিও আমাতুল্লাহ হতে চাই।

  • আলোর পরশ
    User ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ বোন। আপনার কাছ থেকে অনেক অনুপ্রেরনা পেলাম।

  • Nusrat Jahan Mim
    Guest ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    বইটার কথা জানতাম। তবে আপনার বই রিভিউ পড়ে প্রচন্ড কিনার আগ্রহ জাগল। আজকে কিছুক্ষণ আগে রকমারিতে অর্ডার করছি। ভাইয়া আপনার বেশি বেশি বই রিভিউ চাই।

  • Nusrat Jahan Mim
    Guest ৫ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    বইটার কথা জানতাম। তবে আপনার বই রিভিউ পড়ে প্রচন্ড কিনার আগ্রহ জাগল। আজকে কিছুক্ষণ আগে রকমারিতে অর্ডার করছি। ভাইয়া আপনার বেশি বেশি বই রিভিউ চাই।